Ajker Patrika

ফিরে দেখা /কনসার্টে অস্থিরতার বছর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০২
ঢাকার কনসার্টে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার কনসার্টে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সংগীতাঙ্গনে ২০২৫ সাল বিশেষ কোনো সুখবর বয়ে আনতে পারেনি। নতুন গান প্রকাশ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। নতুন গান প্রকাশ না করলেও বছরজুড়ে শিল্পীরা দর্শকদের কাছাকাছি থাকেন লাইভ কনসার্ট দিয়ে। এ বছর কনসার্ট নিয়েও ছিল অস্থিরতা। নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় একের পর এক কনসার্ট বাতিল হয়েছে।

ভিনদেশি সংস্কৃতি রুখে দিতে গত ১১ এপ্রিল চার বিভাগীয় শহরে স্বাধীনতা কনসার্টের আয়োজন করা হয়। প্রথমে কনসার্টের তারিখ এক দিন পেছানো হলেও পরবর্তী সময়ে পুরো আয়োজনই বাতিল করা হয়। ১১ এপ্রিল পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জাহিদের কনসার্ট আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। মেলোডি আনলিশড নামের এ কনসার্টে দেশের বেশ কয়েকজন শিল্পী ও ব্যান্ডের গাওয়ার কথা ছিল। এতে অংশ নিতে শিল্পী ঢাকায়ও এসেছিলেন। তবে অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক আগে আয়োজনটি বাতিল করা হয়।

ঢাকায় এসেও দর্শকদের গান শোনাতে পারেননি পাকিস্তানের আরেক সংগীতশিল্পী আলী আজমত। ‘লিজেন্ডস লাইভ ইন ঢাকা’ শীর্ষক এ কনসার্টে জেমসেরও গাওয়ার কথা ছিল। তবে ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্থগিত ও পরে বাতিল করা হয় আয়োজনটি। পাকিস্তানের জনপ্রিয় ব্যান্ড জালের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল ২৮ নভেম্বর। ‘সাউন্ড অব সোল’ শিরোনামের এ কনসার্টে আরও পারফর্ম করার কথা ছিল দেশের দুই ব্যান্ড ওয়ারফেজ ও লেভেল ফাইভের। সেটিও বাতিল হয়ে যায়। ভারতীয় সংগীতশিল্পী অনুভ জৈনের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল ১২ ডিসেম্বর। আয়োজনের সপ্তাহ দুয়েক আগে এটিও বাতিল হয়ে যায়। এর আগে বাতিল হয়েছে পাকিস্তানি ব্যান্ড কাভিশের কনসার্ট।

এ ছাড়া, ১৩ ডিসেম্বর মেইন স্টেজ আয়োজিত এক কনসার্টে গান শোনানোর কথা ছিল আতিফ আসলামের। তিনি ঢাকায়ও এসেছিলেন। প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় কনসার্টটি হয়নি। তার বদলে কয়েকটি প্রাইভেট কনসার্টে গান শুনিয়ে ঢাকা ছাড়েন আতিফ। তবে যে কনসার্ট বাতিলের খবর দেশ-বিদেশে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি করেছে, সেটা জেমসের কনসার্ট। গত শুক্রবার ফরিদপুর জেলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে গাওয়ার কথা ছিল জেমসের। গান শোনাতে যথাসময়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তবে বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে কনসার্টটি বাতিল হয়ে যায়, শেষ পর্যন্ত গান না গেয়েই ফরিদপুর ছাড়েন জেমস।

দেশের কনসার্টে যখন অনিশ্চয়তা চলছিল, তখন শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে সংগীতসফরে গিয়েছিলেন জেমস, আসিফ আকবর, বাপ্পা মজুমদার, প্রতীক হাসান, প্রীতম হাসান, ব্যান্ড অর্থহীন ও মাইলস। অস্ট্রেলিয়ায় গান শুনিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ ও তানযীর তুহীন। সিঙ্গাপুরে গাইতে গিয়েছিলেন কনা। আর্ক, শিরোনামহীন, ওয়ারফেজ, অ্যাশেজ, মিলাসহ একাধিক ব্যান্ড ও শিল্পী কনসার্ট করেছেন কানাডায়।

বছরজুড়ে যেসব গান নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ঈশান মজুমদার ও শুভেন্দু দাস শুভর ‘গুলবাহার’, কোনাল-নিলয়ের ‘ময়না’, পান্থ কানাইয়ের ‘সেই এক সময় ছিল’, সাইফ জোহানের ‘কিছু মানুষ মরে যায় পঁচিশে’, শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’, ইমরানের ‘পারব না তোমাকে ছাড়তে’ ইত্যাদি। কোক স্টুডিও বাংলায় রুনা লায়লার গাওয়া ‘মাস্ত কালান্দার’, তানযীর তুহীনের ‘ক্যাফে’, হাবিবের ‘মহা জাদু’ এবং অঙ্কনের গাওয়া ‘লং ডিসট্যান্স লাভ’ উপভোগ করেছেন শ্রোতারা।

সিনেমায় এ বছর হাতে গোনা কয়েকটি গান আলোচিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাণ্ডব সিনেমায় প্রীতম ও জেফারের গাওয়া ‘লিচুর বাগানে’, বরবাদ সিনেমায় প্রীতম ও দোলার ‘চাঁদমামা’, জ্বীন থ্রি সিনেমায় ইমরান ও কনার ‘কন্যা’। জংলি সিনেমার ‘ও বন্ধু গো শোনো’, দাগির ‘একটুখানি মন’ গান দুটিও প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়া, হৃদয়ের কথা নাটকে হাবিব-ন্যান্‌সির গাওয়া ‘আমার দিনগুলো সব যায় হারিয়ে আঁধারে’, আশিকি নাটকে কনা-সজীবের গাওয়া ‘যদি মনটা চুরি করি’ এবং ‘গুলমোহর’ ওয়েব সিরিজে তানযীর তুহীনের গাওয়া ‘সুরের হাহাকার’ গানগুলো শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...