Ajker Patrika

ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ

খুলনা প্রতিনিধি
ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ

খুলনার কয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্থানীয় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই অধ্যক্ষের স্ত্রী পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান। বর্তমানে তিনি খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কয়রা উত্তরচক আমিনীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। থানায়ও অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগ ও এজাহারে অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান উল্লেখ করেছেন, গত সোমবার (১৮ জুলাই) মাদ্রাসায় নিজ কক্ষে বসে কাজ করছিলেন। এ সময় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম এবং ওই মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তফা আব্দুল মালেকের নির্দেশে স্থানীয় ইউনুসুর রহমান বাবু, মো. নিয়াজ হোসেন, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মণ্ডল, রফিকুল গাজী, সাদিকসহ ১৫/২০ জন লোক তাঁকে কক্ষ থেকে কলার ধরে বের করে নিয়ে আসে। এ সময় তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এরপর মাটিতে ফেলে চোখে, ঘাড়ে, কানে পিঠে এলোপাতাড়ি পেটায়।

এরপর সেখান থেকে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলামের অফিসের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাঁকে মারার নির্দেশ দেন। এরপর তাঁকে বেদম মারপিট করা হয়। এতে তাঁর চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কানের পর্দা ফেটে যায়। সেখানে চেয়ারম্যান তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পরিবার প্রথমে তাঁকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে, পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মাদ্রাসায় ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি না করায় তাঁর নির্দেশে আমাকে মারপিট করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাকে তাঁর অফিস কক্ষে তুলে নিয়ে গালিগালাজ ও মারপিট করা হয়েছে। আমার স্ত্রী পুলিশ নিয়ে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। কয়রা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখনো মামলা হয়নি। কয়রা থানার ওসি আমাকে কল দিয়েছিলেন। তিনি মূল কপি আমাকে দিতে বলেছেন। আমি হাসপাতালে থাকায় লোক মারফত অভিযোগ থানায় পাঠিয়েছি এবং জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমার যদি কোনো অপরাধ থাকে তাহলে পুলিশ আছে, আইন আছে। কেন আমাকে তুলে নিয়ে মারপিট করা হলো?’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘ওই মাদ্রাসায় আমাকে সভাপতি করার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করা হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার মনোমালিন্য হয়।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মূলত মাদ্রাসার এক স্টাফকে অধ্যক্ষের লোকজন মারপিট করে। এ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। পরে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানকে নিয়ে কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদে আসে। আমি বিষয়টি মীমাংসার করে তার স্ত্রীর কাছে দিয়ে দেই এবং বলি আপনারা থানায় যাবেন নাকি বাড়িতে? তারা বলল, বাড়িতে যাবে। সেইভাবে তাদের যেতে দেওয়া হয়। এখানে পূর্বের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আমাকে মারপিটের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে কয়রা থানা পুলিশের ওসি এবিএমএস দোহা বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ যোগদান করেছি, বিষয়টি শুনেছি। তিনি ভুক্তভোগী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সেটি ফটোকপি। মূল কপি দিতে বলা হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ