Ajker Patrika

শেভরনের অর্থায়নে উদ্যোক্তা প্রকল্পের সমাপনী ঢাকায় উদ্‌যাপন

শেভরনের অর্থায়নে উদ্যোক্তা প্রকল্পের সমাপনী ঢাকায় উদ্‌যাপন। ছবি: সংগৃহীত
শেভরনের অর্থায়নে উদ্যোক্তা প্রকল্পের সমাপনী ঢাকায় উদ্‌যাপন। ছবি: সংগৃহীত

শেভরনের অর্থায়নে আইডিই বাংলাদেশের উদ্যোক্তা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত হয়েছে। ‘টেকসই উন্নয়নের যাত্রায় উদ্যোক্তার ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে প্রায় চার বছরের যাত্রা উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন খাতের গ্রাম উন্নয়ন সমিতির মধ্যে প্রয়োজনীয় সংযোগ স্থাপন, ব্যবসায়িক দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান বাড়ানোর জন্য নিবেদিত ছিল।

‘উদ্যোক্তা-এম্পাওয়ারিং এন্টারপ্রেনার্স’ প্রকল্পটি শেভরন দ্বারা অর্থায়িত এবং আইডিই দ্বারা বাস্তবায়িত। যার লক্ষ্য ছিল ১১০টি ভিডিও সমবায় সমিতি এবং ১ হাজার ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগের (এমএসএমই) অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদের মূলধন সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করা। ২০২০ সাল থেকে, প্রকল্পটি সিলেট এবং হবিগঞ্জের শেভরনর গ্যাস ক্ষেত্র এলাকায় সক্রিয় ছিল, প্রায় ৪২ হাজার ৫০০ মানুষকে ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে উপকৃত করেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের অর্থ পরিচালক গ্রেগ বার্নস এবং শেভরন বাংলাদেশের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) ফেরোজ আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা)-আইসিটি উইং এফ এম মাহবুবুর রহমান এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের সিই এবং এসআই ম্যানেজার এ কে এম আরিফ আকতার, শেভরন বাংলাদেশের ফিল্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার খন্দকার তুষারুজ্জামান, আলিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. হুমায়ুন কবির, আইডিই বাংলাদেশের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর-প্রোগ্রাম মোহাম্মদ শোয়েব ইফতেখার, আইডিই বাংলাদেশের হেড অব স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ মো. আফজাল হোসেন ভূঁইয়া এবং আইডিই বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক-উদ্যোক্তা মো. হান্নান আলী। অনুষ্ঠানে শেভরন বাংলাদেশের কর্মকর্তা, আইডিই প্রতিনিধিরা, উন্নত বীজ সরবরাহকারী, জৈব কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতিত্ব করেন আইডিই বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সমীর কার্কি এবং সঞ্চালনা করেন আইডিই বাংলাদেশের মনিটরিং এবং ইভালুয়েশন বিশেষজ্ঞ পারমিতা দত্ত। পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজন পরিচালনা করেন আইডিই বাংলাদেশের ‘উদ্যোক্তা’ প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

উদ্যোক্তা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৮০ জন অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তাঁরা প্রকল্পের সাফল্য এবং অর্জন সম্পর্কে জানেন এবং সমাজের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে শেভরন বাংলাদেশের ভূমিকা সম্পর্কে অবগত হন। বিভিন্ন খাতের সমবায় সমিতি এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিরা তাঁদের অসাধারণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সুযোগ দেওয়ার জন্য উদ্যোক্তা প্রকল্প এবং শেভরন বাংলাদেশকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেভরন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সমন্বিত জ্বালানি কোম্পানি, যা প্রায় প্রতিটি জ্বালানি শিল্পের ক্ষেত্রে জড়িত। শেভরন বাংলাদেশ ব্লক টুয়েলভ লিমিটেড এবং শেভরন বাংলাদেশ ব্লকস থার্টিন ও ফোরটিন লিমিটেড (শেভরন বাংলাদেশ) বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদক, যা মোট দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৬০ পারসেন্ট এবং দেশীয় কনডেনসেট উৎপাদনের ৮৩ পারসেন্টের বেশি উৎপাদন করে। শেভরন বাংলাদেশ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র পরিচালনা করে। শেভরন বাংলাদেশ তার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে কাজ করে, দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্ব গড়ে তোলে যা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থায়ী সুবিধা প্রদান করে।

আইডিই একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যা নিম্নআয়ের মানুষদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষমতায়ন করতে কাজ করে যাতে তাঁরা একাধিক প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে পারে। আইডিই ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশে তাঁর প্রথম দেশীয় প্রোগ্রাম হিসাবে যাত্রা শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৩
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা দ্বিতীয় দফায় আরও এক মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, করদাতারা কোনো জরিমানা ছাড়াই আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ই-রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এর আগে দুই দফা সময় বাড়িয়ে শেষ সময় নির্ধারিত ছিল ৩১ ডিসেম্বর।

আজ রোববার এনবিআরের সচিব মো. একরামুল হক স্বাক্ষরিত এক জরুরি আদেশে এই সময়সীমা বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। এনবিআর সূত্র বলছে, মূলত করদাতাদের সুবিধার্থে এবং অনলাইন সিস্টেমে চাপ সামলাতে এই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু চলতি বছর থেকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তাই অনেক নতুন ব্যবহারকারী কারিগরি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। সেই জটিলতা নিরসনেই এই বাড়তি সময় দেওয়া হলো।

সময় বাড়ানোর আগে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো অনলাইন ব্যবস্থাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করেছি। এটি একটি বড় ধরনের সংস্কার। আমরা চাই না কোনো করদাতা পদ্ধতিগত কারণে ঝামেলার মুখে পড়ুক। সরকার করদাতাদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা করেই এই সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দেবেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী বিলম্ব জরিমানা আরোপ হতে পারে।

এনবিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ডিজিটাল কর ব্যবস্থার প্রতি জনগণের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এ পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি করদাতা সফলভাবে তাঁদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্ট থেকে সরকারি কর্মকর্তা, বড় কোম্পানি এবং নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার পর থেকেই ই-রিটার্ন পোর্টালে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে করদাতারা ঘরে বসেই যেকোনো সময় রিটার্ন সাবমিট করতে পারবেন। রিটার্ন দাখিলের পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র (Acknowledgment) এবং ট্যাক্স সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা যাবে। বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে কর পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।

যেকোনো যান্ত্রিক ত্রুটি বা আইনি জটিলতা এড়াতে করদাতাদের সহায়তার জন্য এনবিআর একটি কল সেন্টারও চালু রেখেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ফুটি কার্পাসে নতুন সম্ভাবনা

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
বাংলার ঐতিহ্য মসলিনের প্রধান কাঁচামাল ফুটি কার্পাস তুলাগাছে ফুল ফুটেছে। গাজীপুরের শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্র থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলার ঐতিহ্য মসলিনের প্রধান কাঁচামাল ফুটি কার্পাস তুলাগাছে ফুল ফুটেছে। গাজীপুরের শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্র থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। দীর্ঘ বছর পর সে হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্র।

ফুটি কার্পাসের পুনর্জাগরণকে ঘিরে গবেষক, ঐতিহ্য অনুরাগী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উদ্দীপনা। এটি শুধু একটি বিপন্ন উদ্ভিদের পুনরুদ্ধার নয়; বরং বাংলার হারানো শিল্প-ঐতিহ্য ও সম্ভাব্য উচ্চমূল্যের টেক্সটাইল খাত পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা।

শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে। গবেষণার মূল লক্ষ্য—ফুটি কার্পাস তুলা কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে চাষযোগ্য করা যায়, উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা যায় এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে মসলিনকে আবার পরিচিত করা যায়। গবেষকদের প্রত্যাশা, সঠিক নীতিগত সহায়তা ও বিনিয়োগ পেলে আগামী দিনে মসলিন আবার বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করবে।

সম্প্রতি তুলা গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা যায়, সারি সারি ফুটি কার্পাস তুলাগাছ। প্রায় সব গাছেই প্রচুর ফুল এসেছে, যেগুলোর অনেক ফলেও পরিণত হয়েছে। গবেষকদের তথ্যমতে, পুনরুদ্ধার করা ফুটি কার্পাস গাছের উচ্চতা ১৩ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। বীজের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হলেও আঁশ সূক্ষ্ম ও স্বল্প, যা মসলিন তৈরির জন্য উপযোগী।

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ফুটি কার্পাসের অস্তিত্বের সূত্র প্রথম পাওয়া যায় দৃক গ্যালারি ও জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে। সাংস্কৃতিককর্মী সাইফুল ইসলাম এর খোঁজ পান। কার্পাস তুলা থেকেই ‘কাপাসিয়া’ নামের উৎপত্তি।

ব্রিটিশ আলবার্ট মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মোগল আমলের মসলিন শাড়ির অংশবিশেষ পরীক্ষা করে গবেষকেরা নিশ্চিত হয়েছেন, সে সময়ে ফুটি কার্পাস থেকেই এসব বস্ত্র তৈরি হতো। ইতিহাস বলছে, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এই তুলার চাষ হতো এবং ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে মসলিন রপ্তানি করা হতো।

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমিন বলেন, ‘ফুটি কার্পাস শুধু একটি তুলা নয়, এটি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক। ইংরেজ শাসনামলে নিজস্ব শিল্প রক্ষার জন্য ব্রিটিশরা পরিকল্পিতভাবে মসলিনশিল্প ধ্বংস করেছিল। আমরা এখন সে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১ জানুয়ারি কার্যকর: দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ল ৫ শতাংশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
১ জানুয়ারি কার্যকর: দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ল ৫ শতাংশ

দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস। প্রতিবছরের মতো এবারও মাশুল বাড়ানো হয়েছে, যা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তবে অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মাশুল বেশি হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য বর্ধিত মাশুলের আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরে যাত্রীদের জন্য ২০২৫ সালের মাশুল ছিল ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির মাশুল নতুন বছরে ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের তুলনায় প্রায় ৯ টাকা বেশি। মোটর কার, জিপ ও পিকআপের জন্য এখন নতুন মাশুল ১১০ টাকা ৮২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের জন্য ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।

বেনাপোল বন্দরে ট্রাক ও লরির জন্য ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা দিতে হবে। কাগজপত্র প্রক্রিয়ার মাশুল এখন ১৯৫ টাকা ০৭ পয়সা। কোনো যানবাহন যদি রাতভর বন্দরে থাকে, তবে মাশুল ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। গুদামে পণ্য রাখার মাশুলও পণ্যের সময় অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে।

বেনাপোল ছাড়াও অন্যান্য স্থলবন্দরে মাশুল ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য বন্দরে যাত্রীদের মাশুল ২০২৫ সালে ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য নতুন মাশুল ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা, মোটর কার ও জিপের জন্য ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল, স্কুটার ও থ্রি-হুইলারের জন্য ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর: ফসল ব্যবস্থাপনায় উত্তরের চার জেলায় কৃষির নতুন প্রকল্প

  • ২৫২ কোটির প্রকল্পে বিতরণ হবে ৩,১৮৫টি কৃষি যন্ত্রপাতি
  • উৎপাদন ৫% বৃদ্ধি ও শস্য নিবিড়তা ২৪১ শতাংশে উন্নীত হবে
  • ২০০টি পেঁয়াজ ও ৩টি সবজির সংরক্ষণাগার স্থাপন
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।

বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নামের এই প্রকল্প ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০৩০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস্তবায়িত হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং পুরো ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনা, পানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে প্রকল্পের কাঠামো তৈরি হয়েছে।

ডিএই মহাপরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন বলেন, যমুনা-করতোয়া-পদ্মা-বাঙ্গালীবিধৌত বগুড়া অঞ্চলের কৃষি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, কম বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা ও নদীভাঙন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে আবাদি জমি কমছে। অপর দিকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে। সার্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নথিপত্রে দাবি করা হয়েছে, আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন ৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি শস্য নিবিড়তা ২৩৬ শতাংশ থেকে ২৪১ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এক হাজার নতুন দক্ষ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং ৩৫ হাজার কৃষি মানবসম্পদকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন ব্যয় কমানোও প্রকল্পের লক্ষ্য।

এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে থাকছে বগুড়ায় উপপরিচালকের কার্যালয় ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ, ২০০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার, তিনটি আধুনিক ফল-সবজি ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার স্থাপন এবং ৩ হাজার ১৮৫টি কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ। কৃষকদের জন্য মোট ৪ হাজার ৮৪০ ব্যাচ প্রশিক্ষণ আয়োজনের পাশাপাশি ৪১ হাজারের বেশি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী এবং ৭০০টি মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনাসচিব এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত কর্মসূচি মাঠপর্যায়ে কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় কি না, সেটাই প্রকল্পের সাফল্য নির্ধারণ করবে।

একই বিষয়ে কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজকের পত্রিকাকে জানান, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার আবাদি জমির সঠিক ফসল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। উৎপাদিত ফসলের সংরক্ষণব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষকের ক্ষতি কমবে এবং আয়ের সুযোগ বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত