রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব সমস্যার পেছনে মূল কারণ ছিল সীমাহীন দুর্নীতি, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে পাওয়ার প্ল্যান্ট অনুমোদন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মতোই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তথ্যকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগ।
শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৫ বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের করা অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে এমন তথ্য উঠে আসে। গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাদের দায়িত্বকালে বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের দাবি করে আসছিল। উৎপাদনক্ষমতা ৫ হাজার ৭১৯ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে বলে দাবি করে। তবে দেশ এখনো ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে দুর্নীতির জন্য ডিজাইন করা একটি ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিতে নির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে জ্বালানি তেলের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের ট্যারিফ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা নাগরিকদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে। যদিও জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হয়েছে, তবে সরবরাহ অনিয়মিত এবং অবিশ্বাস্য ব্যয়বহুল, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঘুষ-বাণিজ্য
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিশন আদায়ের মধ্য দিয়ে দুর্নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের লেনদেনের কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকলেও প্রকল্প ব্যয়ের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ ঘুষ হিসেবে লেনদেন হয়েছে বলে অনুমিত হচ্ছে। সে হিসাবে, ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে হাতবদল হয়েছে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (এমপিইএমআর) কোনো পূর্ণকালীন মন্ত্রী ছিলেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তাই সরকারি দলের সদস্য, লবিস্ট, বেসরকারি ব্যবসায়ীরা এবং স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছিল অঘোষিত অংশীদার। এ খাতের প্রায় সব প্রকল্পই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতির মাধ্যমে। জ্বালানি উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদ্যুৎ বিভাগ ছিল এসব দুর্নীতির প্রধান মাধ্যম ও অংশীদার। ছোট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে আদানির মতো বড় প্রকল্প—প্রতিটি চুক্তিই পিএমও দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল; যাদের আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। সামিট, রিলায়েন্স এবং ইউনাইটেড গ্রুপের মতো গোষ্ঠীগুলোকে ৩৫০ মেগাওয়াটের বেশি গ্যাস প্ল্যান্টের জন্য নির্বাচিত করা হলেও এস আলম গ্রুপের মতো সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা প্ল্যান্টের চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ফোলানো তথ্যে বিপাকে মজুত
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার অন্যতম কারণ হলো সঠিক তথ্য না দেওয়া। টাকার মজুতের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিসংখ্যানেও সরকার রাজনীতিকরণ করেছিল। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ২০২১ সালের জন্য নির্ধারিত ২৪ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দাবি করা হয়েছিল, যাতে ৩ হাজার মেগাওয়াটের নন-গ্রিড ক্যাপটিভ পাওয়ার এবং ৪৫০ মেগাওয়াটের সোলার হোম সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে এগুলোকে গ্রিড ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সরবরাহে ৭-৮ শতাংশ চুরি
উচ্চ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের সময় গ্যাসের ক্ষতি ১০-১২ শতাংশে পৌঁছায়; এর ৭-৮ শতাংশই চুরি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়; যা প্রায় ২০০ মিলিয়ন সিএফডি। আর এই গ্যাসের মূল্য এলএনজি আমদানির হিসাবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এই আস্থা থেকে উত্তরণে কমিটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বরাদ্দ ও মূল্যায়ন নীতিতে সংস্কারের সুপারিশ করেছে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয়ে সন্দেহ
রুশ প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করে রূপপুরে দুটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভিভিইআর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। প্রাথমিক খরচ ৫৫০ মিলিয়ন ডলারসহ মোট খরচ হবে ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়া ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে, যার সুদের হার লাইবর প্লাস ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। তবে অনেকে মনে করেন, এই চুক্তি অতিমূল্যায়িত এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্ল্যান্টগুলোর একটি।
ভারতের তামিলনাড়ুর কুদাঙ্কুলাম নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিটও একই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিচ্ছে। সেখানে তারা ২ হাজার মেগাওয়াটের জন্য খরচ নিচ্ছে ৬ দশমিক ৭২১৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া রোসাটম মিসরে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে, যার আনুমানিক খরচ ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এলএনজিতে ক্ষতি ৩০০০ কোটি টাকা
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর এলএনজিতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের মোট বকেয়া প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা (৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার)।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব সমস্যার পেছনে মূল কারণ ছিল সীমাহীন দুর্নীতি, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে পাওয়ার প্ল্যান্ট অনুমোদন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মতোই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তথ্যকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগ।
শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৫ বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের করা অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে এমন তথ্য উঠে আসে। গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাদের দায়িত্বকালে বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের দাবি করে আসছিল। উৎপাদনক্ষমতা ৫ হাজার ৭১৯ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে বলে দাবি করে। তবে দেশ এখনো ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে দুর্নীতির জন্য ডিজাইন করা একটি ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিতে নির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে জ্বালানি তেলের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের ট্যারিফ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা নাগরিকদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে। যদিও জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হয়েছে, তবে সরবরাহ অনিয়মিত এবং অবিশ্বাস্য ব্যয়বহুল, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঘুষ-বাণিজ্য
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিশন আদায়ের মধ্য দিয়ে দুর্নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের লেনদেনের কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকলেও প্রকল্প ব্যয়ের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ ঘুষ হিসেবে লেনদেন হয়েছে বলে অনুমিত হচ্ছে। সে হিসাবে, ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে হাতবদল হয়েছে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (এমপিইএমআর) কোনো পূর্ণকালীন মন্ত্রী ছিলেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তাই সরকারি দলের সদস্য, লবিস্ট, বেসরকারি ব্যবসায়ীরা এবং স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছিল অঘোষিত অংশীদার। এ খাতের প্রায় সব প্রকল্পই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতির মাধ্যমে। জ্বালানি উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদ্যুৎ বিভাগ ছিল এসব দুর্নীতির প্রধান মাধ্যম ও অংশীদার। ছোট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে আদানির মতো বড় প্রকল্প—প্রতিটি চুক্তিই পিএমও দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল; যাদের আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। সামিট, রিলায়েন্স এবং ইউনাইটেড গ্রুপের মতো গোষ্ঠীগুলোকে ৩৫০ মেগাওয়াটের বেশি গ্যাস প্ল্যান্টের জন্য নির্বাচিত করা হলেও এস আলম গ্রুপের মতো সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা প্ল্যান্টের চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ফোলানো তথ্যে বিপাকে মজুত
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার অন্যতম কারণ হলো সঠিক তথ্য না দেওয়া। টাকার মজুতের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিসংখ্যানেও সরকার রাজনীতিকরণ করেছিল। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ২০২১ সালের জন্য নির্ধারিত ২৪ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দাবি করা হয়েছিল, যাতে ৩ হাজার মেগাওয়াটের নন-গ্রিড ক্যাপটিভ পাওয়ার এবং ৪৫০ মেগাওয়াটের সোলার হোম সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে এগুলোকে গ্রিড ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সরবরাহে ৭-৮ শতাংশ চুরি
উচ্চ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের সময় গ্যাসের ক্ষতি ১০-১২ শতাংশে পৌঁছায়; এর ৭-৮ শতাংশই চুরি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়; যা প্রায় ২০০ মিলিয়ন সিএফডি। আর এই গ্যাসের মূল্য এলএনজি আমদানির হিসাবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এই আস্থা থেকে উত্তরণে কমিটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বরাদ্দ ও মূল্যায়ন নীতিতে সংস্কারের সুপারিশ করেছে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয়ে সন্দেহ
রুশ প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করে রূপপুরে দুটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভিভিইআর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। প্রাথমিক খরচ ৫৫০ মিলিয়ন ডলারসহ মোট খরচ হবে ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়া ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে, যার সুদের হার লাইবর প্লাস ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। তবে অনেকে মনে করেন, এই চুক্তি অতিমূল্যায়িত এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্ল্যান্টগুলোর একটি।
ভারতের তামিলনাড়ুর কুদাঙ্কুলাম নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিটও একই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিচ্ছে। সেখানে তারা ২ হাজার মেগাওয়াটের জন্য খরচ নিচ্ছে ৬ দশমিক ৭২১৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া রোসাটম মিসরে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে, যার আনুমানিক খরচ ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এলএনজিতে ক্ষতি ৩০০০ কোটি টাকা
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর এলএনজিতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের মোট বকেয়া প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা (৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার)।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব সমস্যার পেছনে মূল কারণ ছিল সীমাহীন দুর্নীতি, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে পাওয়ার প্ল্যান্ট অনুমোদন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মতোই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তথ্যকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগ।
শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৫ বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের করা অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে এমন তথ্য উঠে আসে। গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাদের দায়িত্বকালে বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের দাবি করে আসছিল। উৎপাদনক্ষমতা ৫ হাজার ৭১৯ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে বলে দাবি করে। তবে দেশ এখনো ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে দুর্নীতির জন্য ডিজাইন করা একটি ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিতে নির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে জ্বালানি তেলের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের ট্যারিফ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা নাগরিকদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে। যদিও জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হয়েছে, তবে সরবরাহ অনিয়মিত এবং অবিশ্বাস্য ব্যয়বহুল, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঘুষ-বাণিজ্য
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিশন আদায়ের মধ্য দিয়ে দুর্নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের লেনদেনের কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকলেও প্রকল্প ব্যয়ের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ ঘুষ হিসেবে লেনদেন হয়েছে বলে অনুমিত হচ্ছে। সে হিসাবে, ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে হাতবদল হয়েছে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (এমপিইএমআর) কোনো পূর্ণকালীন মন্ত্রী ছিলেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তাই সরকারি দলের সদস্য, লবিস্ট, বেসরকারি ব্যবসায়ীরা এবং স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছিল অঘোষিত অংশীদার। এ খাতের প্রায় সব প্রকল্পই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতির মাধ্যমে। জ্বালানি উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদ্যুৎ বিভাগ ছিল এসব দুর্নীতির প্রধান মাধ্যম ও অংশীদার। ছোট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে আদানির মতো বড় প্রকল্প—প্রতিটি চুক্তিই পিএমও দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল; যাদের আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। সামিট, রিলায়েন্স এবং ইউনাইটেড গ্রুপের মতো গোষ্ঠীগুলোকে ৩৫০ মেগাওয়াটের বেশি গ্যাস প্ল্যান্টের জন্য নির্বাচিত করা হলেও এস আলম গ্রুপের মতো সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা প্ল্যান্টের চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ফোলানো তথ্যে বিপাকে মজুত
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার অন্যতম কারণ হলো সঠিক তথ্য না দেওয়া। টাকার মজুতের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিসংখ্যানেও সরকার রাজনীতিকরণ করেছিল। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ২০২১ সালের জন্য নির্ধারিত ২৪ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দাবি করা হয়েছিল, যাতে ৩ হাজার মেগাওয়াটের নন-গ্রিড ক্যাপটিভ পাওয়ার এবং ৪৫০ মেগাওয়াটের সোলার হোম সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে এগুলোকে গ্রিড ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সরবরাহে ৭-৮ শতাংশ চুরি
উচ্চ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের সময় গ্যাসের ক্ষতি ১০-১২ শতাংশে পৌঁছায়; এর ৭-৮ শতাংশই চুরি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়; যা প্রায় ২০০ মিলিয়ন সিএফডি। আর এই গ্যাসের মূল্য এলএনজি আমদানির হিসাবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এই আস্থা থেকে উত্তরণে কমিটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বরাদ্দ ও মূল্যায়ন নীতিতে সংস্কারের সুপারিশ করেছে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয়ে সন্দেহ
রুশ প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করে রূপপুরে দুটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভিভিইআর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। প্রাথমিক খরচ ৫৫০ মিলিয়ন ডলারসহ মোট খরচ হবে ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়া ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে, যার সুদের হার লাইবর প্লাস ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। তবে অনেকে মনে করেন, এই চুক্তি অতিমূল্যায়িত এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্ল্যান্টগুলোর একটি।
ভারতের তামিলনাড়ুর কুদাঙ্কুলাম নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিটও একই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিচ্ছে। সেখানে তারা ২ হাজার মেগাওয়াটের জন্য খরচ নিচ্ছে ৬ দশমিক ৭২১৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া রোসাটম মিসরে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে, যার আনুমানিক খরচ ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এলএনজিতে ক্ষতি ৩০০০ কোটি টাকা
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর এলএনজিতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের মোট বকেয়া প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা (৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার)।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব সমস্যার পেছনে মূল কারণ ছিল সীমাহীন দুর্নীতি, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে পাওয়ার প্ল্যান্ট অনুমোদন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মতোই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তথ্যকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগ।
শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৫ বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের করা অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে এমন তথ্য উঠে আসে। গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাদের দায়িত্বকালে বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের দাবি করে আসছিল। উৎপাদনক্ষমতা ৫ হাজার ৭১৯ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে বলে দাবি করে। তবে দেশ এখনো ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে দুর্নীতির জন্য ডিজাইন করা একটি ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিতে নির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে জ্বালানি তেলের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের ট্যারিফ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা নাগরিকদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে। যদিও জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হয়েছে, তবে সরবরাহ অনিয়মিত এবং অবিশ্বাস্য ব্যয়বহুল, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে।
ঘুষ-বাণিজ্য
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিশন আদায়ের মধ্য দিয়ে দুর্নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের লেনদেনের কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকলেও প্রকল্প ব্যয়ের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ ঘুষ হিসেবে লেনদেন হয়েছে বলে অনুমিত হচ্ছে। সে হিসাবে, ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে হাতবদল হয়েছে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (এমপিইএমআর) কোনো পূর্ণকালীন মন্ত্রী ছিলেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তাই সরকারি দলের সদস্য, লবিস্ট, বেসরকারি ব্যবসায়ীরা এবং স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছিল অঘোষিত অংশীদার। এ খাতের প্রায় সব প্রকল্পই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতির মাধ্যমে। জ্বালানি উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদ্যুৎ বিভাগ ছিল এসব দুর্নীতির প্রধান মাধ্যম ও অংশীদার। ছোট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে আদানির মতো বড় প্রকল্প—প্রতিটি চুক্তিই পিএমও দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল; যাদের আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। সামিট, রিলায়েন্স এবং ইউনাইটেড গ্রুপের মতো গোষ্ঠীগুলোকে ৩৫০ মেগাওয়াটের বেশি গ্যাস প্ল্যান্টের জন্য নির্বাচিত করা হলেও এস আলম গ্রুপের মতো সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা প্ল্যান্টের চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ফোলানো তথ্যে বিপাকে মজুত
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার অন্যতম কারণ হলো সঠিক তথ্য না দেওয়া। টাকার মজুতের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিসংখ্যানেও সরকার রাজনীতিকরণ করেছিল। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ২০২১ সালের জন্য নির্ধারিত ২৪ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দাবি করা হয়েছিল, যাতে ৩ হাজার মেগাওয়াটের নন-গ্রিড ক্যাপটিভ পাওয়ার এবং ৪৫০ মেগাওয়াটের সোলার হোম সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে এগুলোকে গ্রিড ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সরবরাহে ৭-৮ শতাংশ চুরি
উচ্চ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের সময় গ্যাসের ক্ষতি ১০-১২ শতাংশে পৌঁছায়; এর ৭-৮ শতাংশই চুরি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়; যা প্রায় ২০০ মিলিয়ন সিএফডি। আর এই গ্যাসের মূল্য এলএনজি আমদানির হিসাবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। এই আস্থা থেকে উত্তরণে কমিটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বরাদ্দ ও মূল্যায়ন নীতিতে সংস্কারের সুপারিশ করেছে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয়ে সন্দেহ
রুশ প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সই করে রূপপুরে দুটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভিভিইআর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। প্রাথমিক খরচ ৫৫০ মিলিয়ন ডলারসহ মোট খরচ হবে ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়া ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে, যার সুদের হার লাইবর প্লাস ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। তবে অনেকে মনে করেন, এই চুক্তি অতিমূল্যায়িত এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্ল্যান্টগুলোর একটি।
ভারতের তামিলনাড়ুর কুদাঙ্কুলাম নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিটও একই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিচ্ছে। সেখানে তারা ২ হাজার মেগাওয়াটের জন্য খরচ নিচ্ছে ৬ দশমিক ৭২১৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া রোসাটম মিসরে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে, যার আনুমানিক খরচ ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এলএনজিতে ক্ষতি ৩০০০ কোটি টাকা
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর এলএনজিতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের মোট বকেয়া প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা (৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার)।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণ
২০ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
২ দিন আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
২ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
২ দিন আগেখালেদা জিয়ার মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
চিঠিতে বিজিএমইএ বলে, ‘দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প কারখানায় আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
পৃথক বিবৃতিতে বিজিএমইএ বলেছে, বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামীকাল এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সারা দেশের বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিজিএমইএ ছাড়াও শোক জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), টেক্সটাইল মিলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
এ ছাড়া শোক জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ), রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসসহ (বেসিস) আরও অনেক সংগঠন।
সংগঠনগুলো পৃথক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত চেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
চিঠিতে বিজিএমইএ বলে, ‘দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প কারখানায় আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
পৃথক বিবৃতিতে বিজিএমইএ বলেছে, বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামীকাল এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সারা দেশের বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিজিএমইএ ছাড়াও শোক জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), টেক্সটাইল মিলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
এ ছাড়া শোক জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ), রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসসহ (বেসিস) আরও অনেক সংগঠন।
সংগঠনগুলো পৃথক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত চেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে।
০২ ডিসেম্বর ২০২৪
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
২ দিন আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
২ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে।
০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণ
২০ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
২ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে।
০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণ
২০ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
২ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
২ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বিশ্বে গড়ে যেখানে মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হয় ৩ হাজার কিলোওয়াট, সেখানে দেশে মাত্র ৪৬৫ কিলোওয়াট। কিন্তু তারপরও দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে শিল্প খাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে।
০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণ
২০ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
২ দিন আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
২ দিন আগে