মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহের সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যা খাতটিতে আরও চাপ বাড়িয়েছে।
এতে প্যারেন্ট স্টক (পিএস) থেকে উৎপাদিত এক দিনের মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে খামারিরা বলছেন, এর ফলে তাঁদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে, যা ন্যায্য মুনাফা অর্জনের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা। বাড়তি দামে বাচ্চা কিনে উৎপাদন চালানো তাঁদের জন্য ক্রমেই অসম্ভব হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার ডিম ও মুরগির নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এক দিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর ফলে বাচ্চার সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না; দেশের পোলট্রি খাতও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
করপোরেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ
দেশের পোলট্রি খাতের জিপি স্টক সরবরাহে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে পোলট্রি বাচ্চার উৎপাদন এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতায়ও বড় প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং খামারিরা অভিযোগ করেছেন, প্যারাগন পোলট্রি, সিপি বাংলাদেশ, প্রভিটা ফিড, নাহার অ্যাগ্রো, নারিশ ফার্মস ও আফতাব হ্যাচারির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে বাচ্চার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ১১০ টাকায়।
বিপিএর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা বিক্রি হয়। সেই হিসাবে বাচ্চাপ্রতি ৩০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হলে ৬০ দিনে করপোরেট চক্র খামারিদের কাছ থেকে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
খামারি ও ডিলারদের অসন্তোষ
চট্টগ্রামের খামারি রাইসুল কবির জানান, দেড় মাস ধরে লেয়ারের বাচ্চার অর্ডার দিয়ে কোনো সাড়া পাননি। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা দ্বিগুণ দামে কিনতে গিয়ে তাঁর খামার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রয়লার বাচ্চা ৫৫ টাকা এবং লেয়ার বাচ্চা ৬৭ টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করছি। তবে বাচ্চার সংকটের কারণে দাম বেড়েছে।’
প্রভিটা ফিডের ডিলার মো. নিজাম বলেন, ‘আগে যে বাচ্চা ২৮-৩০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫৭-৫৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই দ্বিগুণ মূল্য আমাদের বিপাকে ফেলছে।’
নাহার অ্যাগ্রোর ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, ‘লেয়ার মুরগির বাচ্চা এখন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। একইভাবে সোনালি মুরগির বাচ্চা, যা আগে ১৮-২০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আমাদের জন্য এটি একটি অভাবনীয় চাপ।’
ফেনীর খামারি মারুফ আদনান অভিযোগ করেন, ‘২৫ হাজার লেয়ারের বাচ্চার প্রয়োজন, কিন্তু ৮৪ টাকায়ও পুরো চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ছোট খামারিদের আরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, যা তাঁদের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলেছে।’
ডিলার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা সরবরাহ করছে না; বরং কালোবাজারে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করছে। এটি বাজারকে অস্থিতিশীল এবং খাতটি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
এই সংকট প্রান্তিক খামারিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।
ফিডের দামও বেড়েছে
মুরগির বাচ্চার পাশাপাশি ফিডের দামও বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের উৎপাদন খরচ লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় তাঁরা মুরগি ও ডিমের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর।
সিন্ডিকেট ভাঙার পরামর্শ ক্যাবের
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘পোলট্রি খাত করপোরেট চক্রের হাতে বন্দী। তারা মুরগির বাচ্চা, ফিড, ওষুধ ও ডিম বিক্রি করে। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে খাতটিকে চরম অস্থিরতায় ফেলা হচ্ছে।
নাজের হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও বাচ্চা ও ফিডের ক্ষেত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। এই সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা লুটছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সরকারকে দ্রুত বাচ্চা, ফিড এবং ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
ভবিষ্যৎ শঙ্কা ও করণীয়
প্রান্তিক খামারিরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলে বাজার পুরোপুরি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে, যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি মূল্য চাপাবে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার সতর্ক করে বলেন, ‘সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, পোলট্রি খাত গভীর সংকটের মুখে পড়বে।’ এই সংকট মোকাবিলায় তিনি কয়েকটি করণীয় প্রস্তাব করেন, সেগুলো হলো: বাচ্চা ও ফিডের সুনির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; বিশেষ কমিটি গঠন, যা চাহিদা-সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করে সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে; প্রান্তিক খামারিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা। সুমন হাওলাদারের মতে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে পোলট্রি খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভোক্তা ও খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহের সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যা খাতটিতে আরও চাপ বাড়িয়েছে।
এতে প্যারেন্ট স্টক (পিএস) থেকে উৎপাদিত এক দিনের মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে খামারিরা বলছেন, এর ফলে তাঁদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে, যা ন্যায্য মুনাফা অর্জনের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা। বাড়তি দামে বাচ্চা কিনে উৎপাদন চালানো তাঁদের জন্য ক্রমেই অসম্ভব হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার ডিম ও মুরগির নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এক দিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর ফলে বাচ্চার সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না; দেশের পোলট্রি খাতও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
করপোরেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ
দেশের পোলট্রি খাতের জিপি স্টক সরবরাহে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে পোলট্রি বাচ্চার উৎপাদন এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতায়ও বড় প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং খামারিরা অভিযোগ করেছেন, প্যারাগন পোলট্রি, সিপি বাংলাদেশ, প্রভিটা ফিড, নাহার অ্যাগ্রো, নারিশ ফার্মস ও আফতাব হ্যাচারির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে বাচ্চার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ১১০ টাকায়।
বিপিএর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা বিক্রি হয়। সেই হিসাবে বাচ্চাপ্রতি ৩০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হলে ৬০ দিনে করপোরেট চক্র খামারিদের কাছ থেকে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
খামারি ও ডিলারদের অসন্তোষ
চট্টগ্রামের খামারি রাইসুল কবির জানান, দেড় মাস ধরে লেয়ারের বাচ্চার অর্ডার দিয়ে কোনো সাড়া পাননি। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা দ্বিগুণ দামে কিনতে গিয়ে তাঁর খামার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রয়লার বাচ্চা ৫৫ টাকা এবং লেয়ার বাচ্চা ৬৭ টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করছি। তবে বাচ্চার সংকটের কারণে দাম বেড়েছে।’
প্রভিটা ফিডের ডিলার মো. নিজাম বলেন, ‘আগে যে বাচ্চা ২৮-৩০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫৭-৫৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই দ্বিগুণ মূল্য আমাদের বিপাকে ফেলছে।’
নাহার অ্যাগ্রোর ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, ‘লেয়ার মুরগির বাচ্চা এখন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। একইভাবে সোনালি মুরগির বাচ্চা, যা আগে ১৮-২০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আমাদের জন্য এটি একটি অভাবনীয় চাপ।’
ফেনীর খামারি মারুফ আদনান অভিযোগ করেন, ‘২৫ হাজার লেয়ারের বাচ্চার প্রয়োজন, কিন্তু ৮৪ টাকায়ও পুরো চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ছোট খামারিদের আরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, যা তাঁদের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলেছে।’
ডিলার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা সরবরাহ করছে না; বরং কালোবাজারে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করছে। এটি বাজারকে অস্থিতিশীল এবং খাতটি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
এই সংকট প্রান্তিক খামারিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।
ফিডের দামও বেড়েছে
মুরগির বাচ্চার পাশাপাশি ফিডের দামও বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের উৎপাদন খরচ লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় তাঁরা মুরগি ও ডিমের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর।
সিন্ডিকেট ভাঙার পরামর্শ ক্যাবের
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘পোলট্রি খাত করপোরেট চক্রের হাতে বন্দী। তারা মুরগির বাচ্চা, ফিড, ওষুধ ও ডিম বিক্রি করে। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে খাতটিকে চরম অস্থিরতায় ফেলা হচ্ছে।
নাজের হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও বাচ্চা ও ফিডের ক্ষেত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। এই সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা লুটছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সরকারকে দ্রুত বাচ্চা, ফিড এবং ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
ভবিষ্যৎ শঙ্কা ও করণীয়
প্রান্তিক খামারিরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলে বাজার পুরোপুরি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে, যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি মূল্য চাপাবে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার সতর্ক করে বলেন, ‘সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, পোলট্রি খাত গভীর সংকটের মুখে পড়বে।’ এই সংকট মোকাবিলায় তিনি কয়েকটি করণীয় প্রস্তাব করেন, সেগুলো হলো: বাচ্চা ও ফিডের সুনির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; বিশেষ কমিটি গঠন, যা চাহিদা-সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করে সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে; প্রান্তিক খামারিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা। সুমন হাওলাদারের মতে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে পোলট্রি খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভোক্তা ও খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহের সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যা খাতটিতে আরও চাপ বাড়িয়েছে।
এতে প্যারেন্ট স্টক (পিএস) থেকে উৎপাদিত এক দিনের মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে খামারিরা বলছেন, এর ফলে তাঁদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে, যা ন্যায্য মুনাফা অর্জনের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা। বাড়তি দামে বাচ্চা কিনে উৎপাদন চালানো তাঁদের জন্য ক্রমেই অসম্ভব হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার ডিম ও মুরগির নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এক দিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর ফলে বাচ্চার সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না; দেশের পোলট্রি খাতও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
করপোরেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ
দেশের পোলট্রি খাতের জিপি স্টক সরবরাহে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে পোলট্রি বাচ্চার উৎপাদন এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতায়ও বড় প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং খামারিরা অভিযোগ করেছেন, প্যারাগন পোলট্রি, সিপি বাংলাদেশ, প্রভিটা ফিড, নাহার অ্যাগ্রো, নারিশ ফার্মস ও আফতাব হ্যাচারির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে বাচ্চার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ১১০ টাকায়।
বিপিএর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা বিক্রি হয়। সেই হিসাবে বাচ্চাপ্রতি ৩০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হলে ৬০ দিনে করপোরেট চক্র খামারিদের কাছ থেকে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
খামারি ও ডিলারদের অসন্তোষ
চট্টগ্রামের খামারি রাইসুল কবির জানান, দেড় মাস ধরে লেয়ারের বাচ্চার অর্ডার দিয়ে কোনো সাড়া পাননি। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা দ্বিগুণ দামে কিনতে গিয়ে তাঁর খামার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রয়লার বাচ্চা ৫৫ টাকা এবং লেয়ার বাচ্চা ৬৭ টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করছি। তবে বাচ্চার সংকটের কারণে দাম বেড়েছে।’
প্রভিটা ফিডের ডিলার মো. নিজাম বলেন, ‘আগে যে বাচ্চা ২৮-৩০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫৭-৫৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই দ্বিগুণ মূল্য আমাদের বিপাকে ফেলছে।’
নাহার অ্যাগ্রোর ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, ‘লেয়ার মুরগির বাচ্চা এখন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। একইভাবে সোনালি মুরগির বাচ্চা, যা আগে ১৮-২০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আমাদের জন্য এটি একটি অভাবনীয় চাপ।’
ফেনীর খামারি মারুফ আদনান অভিযোগ করেন, ‘২৫ হাজার লেয়ারের বাচ্চার প্রয়োজন, কিন্তু ৮৪ টাকায়ও পুরো চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ছোট খামারিদের আরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, যা তাঁদের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলেছে।’
ডিলার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা সরবরাহ করছে না; বরং কালোবাজারে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করছে। এটি বাজারকে অস্থিতিশীল এবং খাতটি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
এই সংকট প্রান্তিক খামারিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।
ফিডের দামও বেড়েছে
মুরগির বাচ্চার পাশাপাশি ফিডের দামও বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের উৎপাদন খরচ লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় তাঁরা মুরগি ও ডিমের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর।
সিন্ডিকেট ভাঙার পরামর্শ ক্যাবের
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘পোলট্রি খাত করপোরেট চক্রের হাতে বন্দী। তারা মুরগির বাচ্চা, ফিড, ওষুধ ও ডিম বিক্রি করে। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে খাতটিকে চরম অস্থিরতায় ফেলা হচ্ছে।
নাজের হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও বাচ্চা ও ফিডের ক্ষেত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। এই সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা লুটছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সরকারকে দ্রুত বাচ্চা, ফিড এবং ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
ভবিষ্যৎ শঙ্কা ও করণীয়
প্রান্তিক খামারিরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলে বাজার পুরোপুরি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে, যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি মূল্য চাপাবে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার সতর্ক করে বলেন, ‘সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, পোলট্রি খাত গভীর সংকটের মুখে পড়বে।’ এই সংকট মোকাবিলায় তিনি কয়েকটি করণীয় প্রস্তাব করেন, সেগুলো হলো: বাচ্চা ও ফিডের সুনির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; বিশেষ কমিটি গঠন, যা চাহিদা-সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করে সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে; প্রান্তিক খামারিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা। সুমন হাওলাদারের মতে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে পোলট্রি খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভোক্তা ও খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহের সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যা খাতটিতে আরও চাপ বাড়িয়েছে।
এতে প্যারেন্ট স্টক (পিএস) থেকে উৎপাদিত এক দিনের মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে খামারিরা বলছেন, এর ফলে তাঁদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে, যা ন্যায্য মুনাফা অর্জনের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা। বাড়তি দামে বাচ্চা কিনে উৎপাদন চালানো তাঁদের জন্য ক্রমেই অসম্ভব হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার ডিম ও মুরগির নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এক দিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর ফলে বাচ্চার সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাব শুধু খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না; দেশের পোলট্রি খাতও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
করপোরেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ
দেশের পোলট্রি খাতের জিপি স্টক সরবরাহে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে পোলট্রি বাচ্চার উৎপাদন এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতায়ও বড় প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং খামারিরা অভিযোগ করেছেন, প্যারাগন পোলট্রি, সিপি বাংলাদেশ, প্রভিটা ফিড, নাহার অ্যাগ্রো, নারিশ ফার্মস ও আফতাব হ্যাচারির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে বাচ্চার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ১১০ টাকায়।
বিপিএর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা বিক্রি হয়। সেই হিসাবে বাচ্চাপ্রতি ৩০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হলে ৬০ দিনে করপোরেট চক্র খামারিদের কাছ থেকে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
খামারি ও ডিলারদের অসন্তোষ
চট্টগ্রামের খামারি রাইসুল কবির জানান, দেড় মাস ধরে লেয়ারের বাচ্চার অর্ডার দিয়ে কোনো সাড়া পাননি। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা দ্বিগুণ দামে কিনতে গিয়ে তাঁর খামার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রয়লার বাচ্চা ৫৫ টাকা এবং লেয়ার বাচ্চা ৬৭ টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করছি। তবে বাচ্চার সংকটের কারণে দাম বেড়েছে।’
প্রভিটা ফিডের ডিলার মো. নিজাম বলেন, ‘আগে যে বাচ্চা ২৮-৩০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫৭-৫৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই দ্বিগুণ মূল্য আমাদের বিপাকে ফেলছে।’
নাহার অ্যাগ্রোর ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, ‘লেয়ার মুরগির বাচ্চা এখন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। একইভাবে সোনালি মুরগির বাচ্চা, যা আগে ১৮-২০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। আমাদের জন্য এটি একটি অভাবনীয় চাপ।’
ফেনীর খামারি মারুফ আদনান অভিযোগ করেন, ‘২৫ হাজার লেয়ারের বাচ্চার প্রয়োজন, কিন্তু ৮৪ টাকায়ও পুরো চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ছোট খামারিদের আরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, যা তাঁদের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলেছে।’
ডিলার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা সরবরাহ করছে না; বরং কালোবাজারে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করছে। এটি বাজারকে অস্থিতিশীল এবং খাতটি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
এই সংকট প্রান্তিক খামারিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।
ফিডের দামও বেড়েছে
মুরগির বাচ্চার পাশাপাশি ফিডের দামও বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের উৎপাদন খরচ লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় তাঁরা মুরগি ও ডিমের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর।
সিন্ডিকেট ভাঙার পরামর্শ ক্যাবের
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘পোলট্রি খাত করপোরেট চক্রের হাতে বন্দী। তারা মুরগির বাচ্চা, ফিড, ওষুধ ও ডিম বিক্রি করে। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে খাতটিকে চরম অস্থিরতায় ফেলা হচ্ছে।
নাজের হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও বাচ্চা ও ফিডের ক্ষেত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। এই সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা লুটছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সরকারকে দ্রুত বাচ্চা, ফিড এবং ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
ভবিষ্যৎ শঙ্কা ও করণীয়
প্রান্তিক খামারিরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলে বাজার পুরোপুরি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে, যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি মূল্য চাপাবে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার সতর্ক করে বলেন, ‘সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, পোলট্রি খাত গভীর সংকটের মুখে পড়বে।’ এই সংকট মোকাবিলায় তিনি কয়েকটি করণীয় প্রস্তাব করেন, সেগুলো হলো: বাচ্চা ও ফিডের সুনির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; বিশেষ কমিটি গঠন, যা চাহিদা-সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করে সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে; প্রান্তিক খামারিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা। সুমন হাওলাদারের মতে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে পোলট্রি খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভোক্তা ও খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহ সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো...
২০ নভেম্বর ২০২৪
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহ সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো...
২০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহ সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো...
২০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

দেশের পোলট্রি খাতে সংকট যেন লেগেই আছে। ডিম ও মুরগির দামে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারনির্ধারিত মূল্য কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার পর এবার নতুন করে দেখা দিয়েছে এক দিনের মুরগির বাচ্চা সরবরাহ সংকট। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো...
২০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে