ড. বনানী বিশ্বাস

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্গিক পরিচয়। নারীর পূর্ণবিকাশে তাই রাষ্ট্র এবং সমাজের ভূমিকা নিরীক্ষাসাপেক্ষ বিষয়।
এ কথা অনস্বীকার্য যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা ঈর্ষণীয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন ২০২০-এ উঠে এসেছে লিঙ্গবৈষম্য নিরসনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দূরদর্শী দার্শনিক তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সুগম করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বত্র নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে রাষ্ট্রের বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতাও সংযোজন করা হয়। শিক্ষায় নারীর শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষা প্রদান ও অধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানামুখী কর্মপরিকল্পনায় প্রতীয়মান হয় যে নারী-পুরুষের সমতা বর্তমান রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। নারীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসন, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, পারিবারিক আইন এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মতো উদ্যোগসমূহ সমাজকে নারী অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারীশিক্ষার হার পুরুষের সমান, যা ১৯৭১ সালে ছিল ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র এত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ কেন হতাশাব্যঞ্জক? কেন সমাজে নারীর প্রতি এত ঘৃণা ও সহিংসতা? তবে কি নারী প্রসঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের অবস্থান বিপরীতমুখী?
একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে নারী প্রশ্নে আমাদের সমাজ মূলত দ্বিধাবিভক্ত। নারীর বিষয়ে সমাজ কখনো আদর্শিকভাবে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। অজ্ঞতা, উদারপন্থী দার্শনিক চিন্তাভাবনার অনুপস্থিতি এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যাসহ সঠিক ধর্মজ্ঞানের অপ্রতুলতার সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতির মিশেলে তৈরি হয়েছে সমাজের ভেতর আরেক সমাজ, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। এই শক্তি মানুষের মনোজগতে এতটাই ক্রিয়াশীল যে রাষ্ট্র যেন অসহায়। সে বিবেচনায় নারী প্রশ্নে আদর্শিক দ্বন্দ্বের এক প্রান্তে রয়েছে রাষ্ট্র ও সুস্থ সমাজ ও অন্য প্রান্তে রয়েছে একটি অপশক্তি, যা ধর্মীয় অজ্ঞতা ও অপব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নারীর। আর নারীর বড় পরাজয় ঘটেছে তখনই, যখন সে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে নিজেই নিজের অবদমনের অংশ হয়ে পড়েছে। অচেতন মনটিই যেন তার চেতনাজুড়ে। নিজেকে আবিষ্কার করা কিংবা ‘নিজ’ হয়ে ওঠার বিষয়টি কখনো অনুভূত হয়নি তার। নিজ সত্তার বাইরে সমাজে তার বাস। অস্তিত্বহীনতাই তার অস্তিত্ব!
লৈঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গির স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াটি সমাজজাত। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সকাল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জীবিকার উৎস নিশ্চিতকরণ, বিবাহ ও সন্তান জন্মদানের মতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ থাকে সবার। তবে এই সময়ে যেখানে একজন পুরুষ উচ্চশিক্ষার পাট চুকিয়ে চাকরির তুমুল প্রতিযোগিতমূলক বাজারে লড়াই করে, সেখানে একজন নারী সংগ্রাম করে নতুন পরিবারে মানিয়ে নিয়ে ৩০ বছরের মধ্যে নিদেনপক্ষে দুটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে। কোনো কারণে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হলে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতিরেকে নারীর বয়সকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয় প্রথমে। স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত একটি মেয়ের বাবা-মায়ের প্রধান লক্ষ্য থাকে মেয়েটিকে পাত্রস্থ করা। এক অদৃশ্য ভয়ে তাঁরা সর্বদা থাকেন আতঙ্কিত। প্রতিদিন সুস্থ শরীরে মেয়ে ঘরে ফিরলে তাঁরা যেন একটি দিন বেঁচে যান। উচ্চশিক্ষা শেষ হতে না–হতে কেবল অধিকাংশ মেয়ের বিয়েই হয় না, এই বিয়ে বিষয়টি এতটাই অমোঘ যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়ের বিয়ে হতে দেখা যায় পরীক্ষার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কল্যাণে দেখেছি প্রায় প্রতিটি সমাপনী পরীক্ষার আগে একঝাঁক বন্ধুবৎসল মুখ দরজায় কড়া নাড়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার দাবি নিয়ে, যাতে তাদের বন্ধুর সন্তান জন্মদান নির্বিঘ্ন হয়। আর যেখানে সেই দাবি জানানোর সুযোগ নেই? ধরা যাক আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জীবন বড় হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মেয়ে শিক্ষার্থীর রয়েছে একাধিক সন্তান। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার মতো একাগ্র ও শ্রমনিষ্ঠ বিষয়টি তাদের সে স্বাভাবিক জীবনে এতটুকু ছন্দপাত ঘটাতে পারেনি। যখন পরিণত গর্ভাবস্থা আলগা কাপড়ে ঢেকে একজন শিক্ষার্থী অটোরিকশা করে কিংবা দৌড়ঝাঁপ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা বাস ধরে, রুদ্ধশ্বাসে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে শীতকালেও গলদঘর্ম হয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে আরজি জানায়, তখন আমার ভেতরে যেন কী হয়। সেটি রাগ, ক্ষোভ নাকি দুঃখ–এখনো সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। হয়তো সবকিছুর সংমিশ্রণ, যা এক হয়ে চোখ ভিজিয়ে দেয়। প্রশ্নের উত্তর ফেলে বলি, ‘তুমি বসো। পানি খাবে?’ যাঁরা ভাবতে পারছেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়, তাঁরা সমাজের সেই স্বাভাবিক মানুষ। আমার কাছে এটি চরম অমানবিকতার নিদর্শন। মেয়েটির চেহারার দিকে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। কখনো কখনো ব্যথিতচিত্তে সাহস করে বলেছি, ‘থিসিস করার সময়টা অপেক্ষা করতে পারতে।’ কয়েকজন স্বামীর বয়স কিংবা দূরবাসের কথা বললেও অধিকাংশের কাছ থেকে পেয়েছি এক ভয়ানক বার্তা। বিয়ের পরে মা হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য কোনো ভাবনা কস্মিনকালেও তাদের মনের কোণে আবির্ভূত হয়নি। যখন অন্য বন্ধুরা রাত জেগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তার কাছে তখন ২৪ ঘণ্টাই দিন! কখনো কখনো পত্রপত্রিকায় সগর্বে বলতে শোনা যায় ভোররাতে সন্তান জন্ম দিয়ে সকালে পরীক্ষা দেওয়া মেয়েটি এখন বিসিএস ক্যাডার। মেয়েটির সফলতায় গর্ববোধ করেছেন বলে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু একবারও ভেবেছেন তাঁর সংগ্রামের কথা? সমাজের এই মনোভাব মিশেল ফুঁকোর উল্লেখিত সেই পশ্চিমা ডিসকোর্সের কথাই মনে করিয়ে দেয় যে ‘কালোরা’ প্রসব করে ঘোড়ার মতো সোজা কোনো গোঙানি ছাড়া। ব্যথা বোঝার কেউ না থাকলে কি ব্যথা হয়? তা ছাড়া সন্তান জন্মদানের আনন্দ তো সব ব্যথাই ভুলিয়ে দেয়। শরীর আর মনের দ্বন্দ্ব বাধিয়ে লাভ কী! মেয়ের শরীর তো কখনোই তার নিজের নয়। তবে কি হয় উচ্চশিক্ষা নাহয় সন্তান জন্মদান? জীবনের এই অতিগুরুত্বপূর্ণ কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন একটু সহানুভূতি আর চিন্তাপ্রসূত সঠিক একটি পরিকল্পনা। নিজের প্রয়োজন কিংবা ভালো লাগা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সমাজে নয়; ব্যক্তির কাছে থাকা প্রয়োজন। আর এর থেকেও বেশি প্রয়োজন নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারার মতো জেন্ডার-নিরপেক্ষ সামাজিকীকরণ। জেন্ডার-নিরপেক্ষতা বলতে কেবল নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার সমানাধিকারকে বোঝায় না, বরং লিঙ্গনির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণকে বোঝায়। যে সমাজ নারীর মা হওয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, সেই সমাজই একজন কর্মজীবী মাকে চোখে চোখে রেখেছে। সেই সমাজ একজন সন্তানসম্ভবা নারীকে চাকরি দেওয়ার আগে এক শবার ভেবেছে। আবার, উচ্চশিক্ষারত কিংবা কর্মজীবী মাকে ঘরে ফিরে ‘ভালো মা’ হওয়ার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে প্রতিদিন। উচ্চশিক্ষায় কিংবা কর্মক্ষেত্রে নারীর ঝরে পড়া এবং পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে নেওয়া তাই একই সূত্রে গাঁথা।
পরিশেষে, নারীর অগ্রযাত্রায় আধুনিক রাষ্ট্র যতটা সচেষ্ট, সমাজ ততটা হতে পারেনি এখনো। কিন্তু একটি সুন্দর জাতি গঠনের নিয়ামক হলো রাষ্ট্র ও সমাজের সমান্তরাল অভিযাত্রা। বারবার তাই রাষ্ট্রকেও হোঁচট খেতে দেখা যায়। সরকারের ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের তাই বুঝতে হবে সমাজ পরিবর্তন করে নারীর পথচলাকে সুগম করতে করণীয় কী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন মনোজাগতিক পরিবর্তন। আর সেই প্রক্রিয়াটি হাতে নেওয়ার সময় এখনই।
ড. বনানী বিশ্বাস
সহযোগী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্গিক পরিচয়। নারীর পূর্ণবিকাশে তাই রাষ্ট্র এবং সমাজের ভূমিকা নিরীক্ষাসাপেক্ষ বিষয়।
এ কথা অনস্বীকার্য যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা ঈর্ষণীয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন ২০২০-এ উঠে এসেছে লিঙ্গবৈষম্য নিরসনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দূরদর্শী দার্শনিক তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সুগম করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বত্র নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে রাষ্ট্রের বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতাও সংযোজন করা হয়। শিক্ষায় নারীর শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষা প্রদান ও অধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানামুখী কর্মপরিকল্পনায় প্রতীয়মান হয় যে নারী-পুরুষের সমতা বর্তমান রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। নারীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসন, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, পারিবারিক আইন এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মতো উদ্যোগসমূহ সমাজকে নারী অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারীশিক্ষার হার পুরুষের সমান, যা ১৯৭১ সালে ছিল ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র এত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ কেন হতাশাব্যঞ্জক? কেন সমাজে নারীর প্রতি এত ঘৃণা ও সহিংসতা? তবে কি নারী প্রসঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের অবস্থান বিপরীতমুখী?
একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে নারী প্রশ্নে আমাদের সমাজ মূলত দ্বিধাবিভক্ত। নারীর বিষয়ে সমাজ কখনো আদর্শিকভাবে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। অজ্ঞতা, উদারপন্থী দার্শনিক চিন্তাভাবনার অনুপস্থিতি এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যাসহ সঠিক ধর্মজ্ঞানের অপ্রতুলতার সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতির মিশেলে তৈরি হয়েছে সমাজের ভেতর আরেক সমাজ, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। এই শক্তি মানুষের মনোজগতে এতটাই ক্রিয়াশীল যে রাষ্ট্র যেন অসহায়। সে বিবেচনায় নারী প্রশ্নে আদর্শিক দ্বন্দ্বের এক প্রান্তে রয়েছে রাষ্ট্র ও সুস্থ সমাজ ও অন্য প্রান্তে রয়েছে একটি অপশক্তি, যা ধর্মীয় অজ্ঞতা ও অপব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নারীর। আর নারীর বড় পরাজয় ঘটেছে তখনই, যখন সে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে নিজেই নিজের অবদমনের অংশ হয়ে পড়েছে। অচেতন মনটিই যেন তার চেতনাজুড়ে। নিজেকে আবিষ্কার করা কিংবা ‘নিজ’ হয়ে ওঠার বিষয়টি কখনো অনুভূত হয়নি তার। নিজ সত্তার বাইরে সমাজে তার বাস। অস্তিত্বহীনতাই তার অস্তিত্ব!
লৈঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গির স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াটি সমাজজাত। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সকাল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জীবিকার উৎস নিশ্চিতকরণ, বিবাহ ও সন্তান জন্মদানের মতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ থাকে সবার। তবে এই সময়ে যেখানে একজন পুরুষ উচ্চশিক্ষার পাট চুকিয়ে চাকরির তুমুল প্রতিযোগিতমূলক বাজারে লড়াই করে, সেখানে একজন নারী সংগ্রাম করে নতুন পরিবারে মানিয়ে নিয়ে ৩০ বছরের মধ্যে নিদেনপক্ষে দুটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে। কোনো কারণে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হলে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতিরেকে নারীর বয়সকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয় প্রথমে। স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত একটি মেয়ের বাবা-মায়ের প্রধান লক্ষ্য থাকে মেয়েটিকে পাত্রস্থ করা। এক অদৃশ্য ভয়ে তাঁরা সর্বদা থাকেন আতঙ্কিত। প্রতিদিন সুস্থ শরীরে মেয়ে ঘরে ফিরলে তাঁরা যেন একটি দিন বেঁচে যান। উচ্চশিক্ষা শেষ হতে না–হতে কেবল অধিকাংশ মেয়ের বিয়েই হয় না, এই বিয়ে বিষয়টি এতটাই অমোঘ যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়ের বিয়ে হতে দেখা যায় পরীক্ষার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কল্যাণে দেখেছি প্রায় প্রতিটি সমাপনী পরীক্ষার আগে একঝাঁক বন্ধুবৎসল মুখ দরজায় কড়া নাড়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার দাবি নিয়ে, যাতে তাদের বন্ধুর সন্তান জন্মদান নির্বিঘ্ন হয়। আর যেখানে সেই দাবি জানানোর সুযোগ নেই? ধরা যাক আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জীবন বড় হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মেয়ে শিক্ষার্থীর রয়েছে একাধিক সন্তান। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার মতো একাগ্র ও শ্রমনিষ্ঠ বিষয়টি তাদের সে স্বাভাবিক জীবনে এতটুকু ছন্দপাত ঘটাতে পারেনি। যখন পরিণত গর্ভাবস্থা আলগা কাপড়ে ঢেকে একজন শিক্ষার্থী অটোরিকশা করে কিংবা দৌড়ঝাঁপ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা বাস ধরে, রুদ্ধশ্বাসে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে শীতকালেও গলদঘর্ম হয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে আরজি জানায়, তখন আমার ভেতরে যেন কী হয়। সেটি রাগ, ক্ষোভ নাকি দুঃখ–এখনো সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। হয়তো সবকিছুর সংমিশ্রণ, যা এক হয়ে চোখ ভিজিয়ে দেয়। প্রশ্নের উত্তর ফেলে বলি, ‘তুমি বসো। পানি খাবে?’ যাঁরা ভাবতে পারছেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়, তাঁরা সমাজের সেই স্বাভাবিক মানুষ। আমার কাছে এটি চরম অমানবিকতার নিদর্শন। মেয়েটির চেহারার দিকে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। কখনো কখনো ব্যথিতচিত্তে সাহস করে বলেছি, ‘থিসিস করার সময়টা অপেক্ষা করতে পারতে।’ কয়েকজন স্বামীর বয়স কিংবা দূরবাসের কথা বললেও অধিকাংশের কাছ থেকে পেয়েছি এক ভয়ানক বার্তা। বিয়ের পরে মা হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য কোনো ভাবনা কস্মিনকালেও তাদের মনের কোণে আবির্ভূত হয়নি। যখন অন্য বন্ধুরা রাত জেগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তার কাছে তখন ২৪ ঘণ্টাই দিন! কখনো কখনো পত্রপত্রিকায় সগর্বে বলতে শোনা যায় ভোররাতে সন্তান জন্ম দিয়ে সকালে পরীক্ষা দেওয়া মেয়েটি এখন বিসিএস ক্যাডার। মেয়েটির সফলতায় গর্ববোধ করেছেন বলে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু একবারও ভেবেছেন তাঁর সংগ্রামের কথা? সমাজের এই মনোভাব মিশেল ফুঁকোর উল্লেখিত সেই পশ্চিমা ডিসকোর্সের কথাই মনে করিয়ে দেয় যে ‘কালোরা’ প্রসব করে ঘোড়ার মতো সোজা কোনো গোঙানি ছাড়া। ব্যথা বোঝার কেউ না থাকলে কি ব্যথা হয়? তা ছাড়া সন্তান জন্মদানের আনন্দ তো সব ব্যথাই ভুলিয়ে দেয়। শরীর আর মনের দ্বন্দ্ব বাধিয়ে লাভ কী! মেয়ের শরীর তো কখনোই তার নিজের নয়। তবে কি হয় উচ্চশিক্ষা নাহয় সন্তান জন্মদান? জীবনের এই অতিগুরুত্বপূর্ণ কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন একটু সহানুভূতি আর চিন্তাপ্রসূত সঠিক একটি পরিকল্পনা। নিজের প্রয়োজন কিংবা ভালো লাগা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সমাজে নয়; ব্যক্তির কাছে থাকা প্রয়োজন। আর এর থেকেও বেশি প্রয়োজন নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারার মতো জেন্ডার-নিরপেক্ষ সামাজিকীকরণ। জেন্ডার-নিরপেক্ষতা বলতে কেবল নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার সমানাধিকারকে বোঝায় না, বরং লিঙ্গনির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণকে বোঝায়। যে সমাজ নারীর মা হওয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, সেই সমাজই একজন কর্মজীবী মাকে চোখে চোখে রেখেছে। সেই সমাজ একজন সন্তানসম্ভবা নারীকে চাকরি দেওয়ার আগে এক শবার ভেবেছে। আবার, উচ্চশিক্ষারত কিংবা কর্মজীবী মাকে ঘরে ফিরে ‘ভালো মা’ হওয়ার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে প্রতিদিন। উচ্চশিক্ষায় কিংবা কর্মক্ষেত্রে নারীর ঝরে পড়া এবং পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে নেওয়া তাই একই সূত্রে গাঁথা।
পরিশেষে, নারীর অগ্রযাত্রায় আধুনিক রাষ্ট্র যতটা সচেষ্ট, সমাজ ততটা হতে পারেনি এখনো। কিন্তু একটি সুন্দর জাতি গঠনের নিয়ামক হলো রাষ্ট্র ও সমাজের সমান্তরাল অভিযাত্রা। বারবার তাই রাষ্ট্রকেও হোঁচট খেতে দেখা যায়। সরকারের ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের তাই বুঝতে হবে সমাজ পরিবর্তন করে নারীর পথচলাকে সুগম করতে করণীয় কী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন মনোজাগতিক পরিবর্তন। আর সেই প্রক্রিয়াটি হাতে নেওয়ার সময় এখনই।
ড. বনানী বিশ্বাস
সহযোগী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
ড. বনানী বিশ্বাস

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্গিক পরিচয়। নারীর পূর্ণবিকাশে তাই রাষ্ট্র এবং সমাজের ভূমিকা নিরীক্ষাসাপেক্ষ বিষয়।
এ কথা অনস্বীকার্য যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা ঈর্ষণীয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন ২০২০-এ উঠে এসেছে লিঙ্গবৈষম্য নিরসনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দূরদর্শী দার্শনিক তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সুগম করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বত্র নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে রাষ্ট্রের বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতাও সংযোজন করা হয়। শিক্ষায় নারীর শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষা প্রদান ও অধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানামুখী কর্মপরিকল্পনায় প্রতীয়মান হয় যে নারী-পুরুষের সমতা বর্তমান রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। নারীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসন, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, পারিবারিক আইন এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মতো উদ্যোগসমূহ সমাজকে নারী অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারীশিক্ষার হার পুরুষের সমান, যা ১৯৭১ সালে ছিল ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র এত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ কেন হতাশাব্যঞ্জক? কেন সমাজে নারীর প্রতি এত ঘৃণা ও সহিংসতা? তবে কি নারী প্রসঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের অবস্থান বিপরীতমুখী?
একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে নারী প্রশ্নে আমাদের সমাজ মূলত দ্বিধাবিভক্ত। নারীর বিষয়ে সমাজ কখনো আদর্শিকভাবে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। অজ্ঞতা, উদারপন্থী দার্শনিক চিন্তাভাবনার অনুপস্থিতি এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যাসহ সঠিক ধর্মজ্ঞানের অপ্রতুলতার সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতির মিশেলে তৈরি হয়েছে সমাজের ভেতর আরেক সমাজ, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। এই শক্তি মানুষের মনোজগতে এতটাই ক্রিয়াশীল যে রাষ্ট্র যেন অসহায়। সে বিবেচনায় নারী প্রশ্নে আদর্শিক দ্বন্দ্বের এক প্রান্তে রয়েছে রাষ্ট্র ও সুস্থ সমাজ ও অন্য প্রান্তে রয়েছে একটি অপশক্তি, যা ধর্মীয় অজ্ঞতা ও অপব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নারীর। আর নারীর বড় পরাজয় ঘটেছে তখনই, যখন সে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে নিজেই নিজের অবদমনের অংশ হয়ে পড়েছে। অচেতন মনটিই যেন তার চেতনাজুড়ে। নিজেকে আবিষ্কার করা কিংবা ‘নিজ’ হয়ে ওঠার বিষয়টি কখনো অনুভূত হয়নি তার। নিজ সত্তার বাইরে সমাজে তার বাস। অস্তিত্বহীনতাই তার অস্তিত্ব!
লৈঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গির স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াটি সমাজজাত। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সকাল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জীবিকার উৎস নিশ্চিতকরণ, বিবাহ ও সন্তান জন্মদানের মতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ থাকে সবার। তবে এই সময়ে যেখানে একজন পুরুষ উচ্চশিক্ষার পাট চুকিয়ে চাকরির তুমুল প্রতিযোগিতমূলক বাজারে লড়াই করে, সেখানে একজন নারী সংগ্রাম করে নতুন পরিবারে মানিয়ে নিয়ে ৩০ বছরের মধ্যে নিদেনপক্ষে দুটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে। কোনো কারণে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হলে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতিরেকে নারীর বয়সকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয় প্রথমে। স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত একটি মেয়ের বাবা-মায়ের প্রধান লক্ষ্য থাকে মেয়েটিকে পাত্রস্থ করা। এক অদৃশ্য ভয়ে তাঁরা সর্বদা থাকেন আতঙ্কিত। প্রতিদিন সুস্থ শরীরে মেয়ে ঘরে ফিরলে তাঁরা যেন একটি দিন বেঁচে যান। উচ্চশিক্ষা শেষ হতে না–হতে কেবল অধিকাংশ মেয়ের বিয়েই হয় না, এই বিয়ে বিষয়টি এতটাই অমোঘ যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়ের বিয়ে হতে দেখা যায় পরীক্ষার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কল্যাণে দেখেছি প্রায় প্রতিটি সমাপনী পরীক্ষার আগে একঝাঁক বন্ধুবৎসল মুখ দরজায় কড়া নাড়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার দাবি নিয়ে, যাতে তাদের বন্ধুর সন্তান জন্মদান নির্বিঘ্ন হয়। আর যেখানে সেই দাবি জানানোর সুযোগ নেই? ধরা যাক আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জীবন বড় হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মেয়ে শিক্ষার্থীর রয়েছে একাধিক সন্তান। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার মতো একাগ্র ও শ্রমনিষ্ঠ বিষয়টি তাদের সে স্বাভাবিক জীবনে এতটুকু ছন্দপাত ঘটাতে পারেনি। যখন পরিণত গর্ভাবস্থা আলগা কাপড়ে ঢেকে একজন শিক্ষার্থী অটোরিকশা করে কিংবা দৌড়ঝাঁপ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা বাস ধরে, রুদ্ধশ্বাসে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে শীতকালেও গলদঘর্ম হয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে আরজি জানায়, তখন আমার ভেতরে যেন কী হয়। সেটি রাগ, ক্ষোভ নাকি দুঃখ–এখনো সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। হয়তো সবকিছুর সংমিশ্রণ, যা এক হয়ে চোখ ভিজিয়ে দেয়। প্রশ্নের উত্তর ফেলে বলি, ‘তুমি বসো। পানি খাবে?’ যাঁরা ভাবতে পারছেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়, তাঁরা সমাজের সেই স্বাভাবিক মানুষ। আমার কাছে এটি চরম অমানবিকতার নিদর্শন। মেয়েটির চেহারার দিকে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। কখনো কখনো ব্যথিতচিত্তে সাহস করে বলেছি, ‘থিসিস করার সময়টা অপেক্ষা করতে পারতে।’ কয়েকজন স্বামীর বয়স কিংবা দূরবাসের কথা বললেও অধিকাংশের কাছ থেকে পেয়েছি এক ভয়ানক বার্তা। বিয়ের পরে মা হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য কোনো ভাবনা কস্মিনকালেও তাদের মনের কোণে আবির্ভূত হয়নি। যখন অন্য বন্ধুরা রাত জেগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তার কাছে তখন ২৪ ঘণ্টাই দিন! কখনো কখনো পত্রপত্রিকায় সগর্বে বলতে শোনা যায় ভোররাতে সন্তান জন্ম দিয়ে সকালে পরীক্ষা দেওয়া মেয়েটি এখন বিসিএস ক্যাডার। মেয়েটির সফলতায় গর্ববোধ করেছেন বলে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু একবারও ভেবেছেন তাঁর সংগ্রামের কথা? সমাজের এই মনোভাব মিশেল ফুঁকোর উল্লেখিত সেই পশ্চিমা ডিসকোর্সের কথাই মনে করিয়ে দেয় যে ‘কালোরা’ প্রসব করে ঘোড়ার মতো সোজা কোনো গোঙানি ছাড়া। ব্যথা বোঝার কেউ না থাকলে কি ব্যথা হয়? তা ছাড়া সন্তান জন্মদানের আনন্দ তো সব ব্যথাই ভুলিয়ে দেয়। শরীর আর মনের দ্বন্দ্ব বাধিয়ে লাভ কী! মেয়ের শরীর তো কখনোই তার নিজের নয়। তবে কি হয় উচ্চশিক্ষা নাহয় সন্তান জন্মদান? জীবনের এই অতিগুরুত্বপূর্ণ কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন একটু সহানুভূতি আর চিন্তাপ্রসূত সঠিক একটি পরিকল্পনা। নিজের প্রয়োজন কিংবা ভালো লাগা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সমাজে নয়; ব্যক্তির কাছে থাকা প্রয়োজন। আর এর থেকেও বেশি প্রয়োজন নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারার মতো জেন্ডার-নিরপেক্ষ সামাজিকীকরণ। জেন্ডার-নিরপেক্ষতা বলতে কেবল নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার সমানাধিকারকে বোঝায় না, বরং লিঙ্গনির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণকে বোঝায়। যে সমাজ নারীর মা হওয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, সেই সমাজই একজন কর্মজীবী মাকে চোখে চোখে রেখেছে। সেই সমাজ একজন সন্তানসম্ভবা নারীকে চাকরি দেওয়ার আগে এক শবার ভেবেছে। আবার, উচ্চশিক্ষারত কিংবা কর্মজীবী মাকে ঘরে ফিরে ‘ভালো মা’ হওয়ার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে প্রতিদিন। উচ্চশিক্ষায় কিংবা কর্মক্ষেত্রে নারীর ঝরে পড়া এবং পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে নেওয়া তাই একই সূত্রে গাঁথা।
পরিশেষে, নারীর অগ্রযাত্রায় আধুনিক রাষ্ট্র যতটা সচেষ্ট, সমাজ ততটা হতে পারেনি এখনো। কিন্তু একটি সুন্দর জাতি গঠনের নিয়ামক হলো রাষ্ট্র ও সমাজের সমান্তরাল অভিযাত্রা। বারবার তাই রাষ্ট্রকেও হোঁচট খেতে দেখা যায়। সরকারের ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের তাই বুঝতে হবে সমাজ পরিবর্তন করে নারীর পথচলাকে সুগম করতে করণীয় কী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন মনোজাগতিক পরিবর্তন। আর সেই প্রক্রিয়াটি হাতে নেওয়ার সময় এখনই।
ড. বনানী বিশ্বাস
সহযোগী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্গিক পরিচয়। নারীর পূর্ণবিকাশে তাই রাষ্ট্র এবং সমাজের ভূমিকা নিরীক্ষাসাপেক্ষ বিষয়।
এ কথা অনস্বীকার্য যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা ঈর্ষণীয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক লিঙ্গবৈষম্য প্রতিবেদন ২০২০-এ উঠে এসেছে লিঙ্গবৈষম্য নিরসনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দূরদর্শী দার্শনিক তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সুগম করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বত্র নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে রাষ্ট্রের বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতাও সংযোজন করা হয়। শিক্ষায় নারীর শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষা প্রদান ও অধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানামুখী কর্মপরিকল্পনায় প্রতীয়মান হয় যে নারী-পুরুষের সমতা বর্তমান রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। নারীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসন, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, পারিবারিক আইন এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মতো উদ্যোগসমূহ সমাজকে নারী অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারীশিক্ষার হার পুরুষের সমান, যা ১৯৭১ সালে ছিল ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র এত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ কেন হতাশাব্যঞ্জক? কেন সমাজে নারীর প্রতি এত ঘৃণা ও সহিংসতা? তবে কি নারী প্রসঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের অবস্থান বিপরীতমুখী?
একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে নারী প্রশ্নে আমাদের সমাজ মূলত দ্বিধাবিভক্ত। নারীর বিষয়ে সমাজ কখনো আদর্শিকভাবে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। অজ্ঞতা, উদারপন্থী দার্শনিক চিন্তাভাবনার অনুপস্থিতি এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যাসহ সঠিক ধর্মজ্ঞানের অপ্রতুলতার সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতির মিশেলে তৈরি হয়েছে সমাজের ভেতর আরেক সমাজ, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। এই শক্তি মানুষের মনোজগতে এতটাই ক্রিয়াশীল যে রাষ্ট্র যেন অসহায়। সে বিবেচনায় নারী প্রশ্নে আদর্শিক দ্বন্দ্বের এক প্রান্তে রয়েছে রাষ্ট্র ও সুস্থ সমাজ ও অন্য প্রান্তে রয়েছে একটি অপশক্তি, যা ধর্মীয় অজ্ঞতা ও অপব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নারীর। আর নারীর বড় পরাজয় ঘটেছে তখনই, যখন সে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে নিজেই নিজের অবদমনের অংশ হয়ে পড়েছে। অচেতন মনটিই যেন তার চেতনাজুড়ে। নিজেকে আবিষ্কার করা কিংবা ‘নিজ’ হয়ে ওঠার বিষয়টি কখনো অনুভূত হয়নি তার। নিজ সত্তার বাইরে সমাজে তার বাস। অস্তিত্বহীনতাই তার অস্তিত্ব!
লৈঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গির স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াটি সমাজজাত। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সকাল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জীবিকার উৎস নিশ্চিতকরণ, বিবাহ ও সন্তান জন্মদানের মতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ থাকে সবার। তবে এই সময়ে যেখানে একজন পুরুষ উচ্চশিক্ষার পাট চুকিয়ে চাকরির তুমুল প্রতিযোগিতমূলক বাজারে লড়াই করে, সেখানে একজন নারী সংগ্রাম করে নতুন পরিবারে মানিয়ে নিয়ে ৩০ বছরের মধ্যে নিদেনপক্ষে দুটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে। কোনো কারণে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হলে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতিরেকে নারীর বয়সকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয় প্রথমে। স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত একটি মেয়ের বাবা-মায়ের প্রধান লক্ষ্য থাকে মেয়েটিকে পাত্রস্থ করা। এক অদৃশ্য ভয়ে তাঁরা সর্বদা থাকেন আতঙ্কিত। প্রতিদিন সুস্থ শরীরে মেয়ে ঘরে ফিরলে তাঁরা যেন একটি দিন বেঁচে যান। উচ্চশিক্ষা শেষ হতে না–হতে কেবল অধিকাংশ মেয়ের বিয়েই হয় না, এই বিয়ে বিষয়টি এতটাই অমোঘ যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়ের বিয়ে হতে দেখা যায় পরীক্ষার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কল্যাণে দেখেছি প্রায় প্রতিটি সমাপনী পরীক্ষার আগে একঝাঁক বন্ধুবৎসল মুখ দরজায় কড়া নাড়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার দাবি নিয়ে, যাতে তাদের বন্ধুর সন্তান জন্মদান নির্বিঘ্ন হয়। আর যেখানে সেই দাবি জানানোর সুযোগ নেই? ধরা যাক আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জীবন বড় হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মেয়ে শিক্ষার্থীর রয়েছে একাধিক সন্তান। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার মতো একাগ্র ও শ্রমনিষ্ঠ বিষয়টি তাদের সে স্বাভাবিক জীবনে এতটুকু ছন্দপাত ঘটাতে পারেনি। যখন পরিণত গর্ভাবস্থা আলগা কাপড়ে ঢেকে একজন শিক্ষার্থী অটোরিকশা করে কিংবা দৌড়ঝাঁপ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা বাস ধরে, রুদ্ধশ্বাসে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে শীতকালেও গলদঘর্ম হয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে আরজি জানায়, তখন আমার ভেতরে যেন কী হয়। সেটি রাগ, ক্ষোভ নাকি দুঃখ–এখনো সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। হয়তো সবকিছুর সংমিশ্রণ, যা এক হয়ে চোখ ভিজিয়ে দেয়। প্রশ্নের উত্তর ফেলে বলি, ‘তুমি বসো। পানি খাবে?’ যাঁরা ভাবতে পারছেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়, তাঁরা সমাজের সেই স্বাভাবিক মানুষ। আমার কাছে এটি চরম অমানবিকতার নিদর্শন। মেয়েটির চেহারার দিকে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। কখনো কখনো ব্যথিতচিত্তে সাহস করে বলেছি, ‘থিসিস করার সময়টা অপেক্ষা করতে পারতে।’ কয়েকজন স্বামীর বয়স কিংবা দূরবাসের কথা বললেও অধিকাংশের কাছ থেকে পেয়েছি এক ভয়ানক বার্তা। বিয়ের পরে মা হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য কোনো ভাবনা কস্মিনকালেও তাদের মনের কোণে আবির্ভূত হয়নি। যখন অন্য বন্ধুরা রাত জেগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তার কাছে তখন ২৪ ঘণ্টাই দিন! কখনো কখনো পত্রপত্রিকায় সগর্বে বলতে শোনা যায় ভোররাতে সন্তান জন্ম দিয়ে সকালে পরীক্ষা দেওয়া মেয়েটি এখন বিসিএস ক্যাডার। মেয়েটির সফলতায় গর্ববোধ করেছেন বলে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু একবারও ভেবেছেন তাঁর সংগ্রামের কথা? সমাজের এই মনোভাব মিশেল ফুঁকোর উল্লেখিত সেই পশ্চিমা ডিসকোর্সের কথাই মনে করিয়ে দেয় যে ‘কালোরা’ প্রসব করে ঘোড়ার মতো সোজা কোনো গোঙানি ছাড়া। ব্যথা বোঝার কেউ না থাকলে কি ব্যথা হয়? তা ছাড়া সন্তান জন্মদানের আনন্দ তো সব ব্যথাই ভুলিয়ে দেয়। শরীর আর মনের দ্বন্দ্ব বাধিয়ে লাভ কী! মেয়ের শরীর তো কখনোই তার নিজের নয়। তবে কি হয় উচ্চশিক্ষা নাহয় সন্তান জন্মদান? জীবনের এই অতিগুরুত্বপূর্ণ কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন একটু সহানুভূতি আর চিন্তাপ্রসূত সঠিক একটি পরিকল্পনা। নিজের প্রয়োজন কিংবা ভালো লাগা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সমাজে নয়; ব্যক্তির কাছে থাকা প্রয়োজন। আর এর থেকেও বেশি প্রয়োজন নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারার মতো জেন্ডার-নিরপেক্ষ সামাজিকীকরণ। জেন্ডার-নিরপেক্ষতা বলতে কেবল নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার সমানাধিকারকে বোঝায় না, বরং লিঙ্গনির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণকে বোঝায়। যে সমাজ নারীর মা হওয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, সেই সমাজই একজন কর্মজীবী মাকে চোখে চোখে রেখেছে। সেই সমাজ একজন সন্তানসম্ভবা নারীকে চাকরি দেওয়ার আগে এক শবার ভেবেছে। আবার, উচ্চশিক্ষারত কিংবা কর্মজীবী মাকে ঘরে ফিরে ‘ভালো মা’ হওয়ার পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে প্রতিদিন। উচ্চশিক্ষায় কিংবা কর্মক্ষেত্রে নারীর ঝরে পড়া এবং পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে নেওয়া তাই একই সূত্রে গাঁথা।
পরিশেষে, নারীর অগ্রযাত্রায় আধুনিক রাষ্ট্র যতটা সচেষ্ট, সমাজ ততটা হতে পারেনি এখনো। কিন্তু একটি সুন্দর জাতি গঠনের নিয়ামক হলো রাষ্ট্র ও সমাজের সমান্তরাল অভিযাত্রা। বারবার তাই রাষ্ট্রকেও হোঁচট খেতে দেখা যায়। সরকারের ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের তাই বুঝতে হবে সমাজ পরিবর্তন করে নারীর পথচলাকে সুগম করতে করণীয় কী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন মনোজাগতিক পরিবর্তন। আর সেই প্রক্রিয়াটি হাতে নেওয়ার সময় এখনই।
ড. বনানী বিশ্বাস
সহযোগী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্
৩০ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

আমাদের আলোচনা কিংবা চিন্তাবলয়ে ‘জেন্ডার সমতা’, ‘উচ্চশিক্ষায় নারী’ কিংবা ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়গুলোর উপস্থিতি জানান দেয় আমাদের সমাজব্যবস্থা জেন্ডার-নিরপেক্ষ নয়। প্রকৃতি প্রদত্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সুষম বণ্টন হলেও মনুষ্যসমাজ তৈরি করেছে লিঙ্গভিত্তিক রীতিনীতি ও মতাদর্শ, যা বিমূর্ত ঈশ্বরকেও দিয়েছে লৈঙ্
৩০ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫