Ajker Patrika

মাকে হত্যার পর বসতঘরে পুঁতে রাখার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
দণ্ডপ্রাপ্ত জামিল মিয়া ওরফে ভেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
দণ্ডপ্রাপ্ত জামিল মিয়া ওরফে ভেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সীট নাজিরদহ গ্রামে মাকে হত্যার পর বসতঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার দায়ে ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত জামিল মিয়া ওরফে ভেলন (২৫)।

দণ্ডপ্রাপ্ত জামিল মিয়া কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের সীট নাজিরদহ (ময়নুদ্দিনটারী) গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ওরফে লাল মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, জামিলের স্ত্রী কাকলী বেগমের সঙ্গে তাঁর মা জামিলা বেগমের পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এতে জামিলের স্ত্রী কাকলী রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যান। এ ঘটনায় মাকে দোষারোপ করতে থাকেন জামিল এবং তাঁকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।

ঘটনার দিন ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট রাতে খাবার শেষে জামিল ও তাঁর মা একই ঘরে আলাদা বিছানায় শুয়ে পড়েন। একপর্যায়ে জামিলা ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশচাপা দিয়ে মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জামিল। পরে হত্যার বিষয়টি গোপন রাখতে বসতঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ পুঁতে রাখেন।

এদিকে কয়েক দিন ধরে বাড়িতে জামিলাকে দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীরা তাঁর খোঁজ নিতে থাকেন। কয়েক দিন পর জামিলের মামাতো বোন রোজিনা ওই বাড়িতে এসে প্রতিবেশীদের নিয়ে ঘরে ঢোকেন এবং দুর্গন্ধ ও মাটি খোঁড়া দেখতে পান। পরে তাঁরা জামিলকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বসতঘরের মেঝে খুঁড়ে মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করে এবং জামিলকে আটক করে।

এ ঘটনায় নিহত জামিলার ভাই ছামসুল হক বাদী হয়ে জামিলকে আসামি করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আফতাব উদ্দিন এবং আসামিপক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী ছিলেন মো. শামীম আল মামুন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, একজন ছেলের হাতে মায়ের মৃত্যু মানবিকতার চূড়ান্ত অবক্ষয়। আদালত আজ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, অপরাধ করলে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...