Ajker Patrika

প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় নার্সিং কলেজের পরীক্ষা স্থগিত, তিন শিক্ষক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৫৯
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় নার্সিং কলেজের পরীক্ষা স্থগিত, তিন শিক্ষক বরখাস্ত

রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সব নার্সিং কলেজের বিএসসি কোর্সের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এ জন্য রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত কলেজগুলোর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বগুড়া নার্সিং কলেজের তিনজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে এর প্রমাণ পেয়ে তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বগুড়া নার্সিং কলেজের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকেরা হলেন আবদুল বারী সরকার, মোস্তানুর সুলতানা ও গুলনাহার খাতুন। রামেবিতে প্রশ্নপত্র তৈরির সময় তাঁরা ছিলেন। গত ১৭ জানুয়ারি প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। এরপর ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি রামেবির নিজস্ব পরিবহনে এই অঞ্চলের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ভল্টে ভল্টে প্রশ্ন পাঠানো হয়। 

আজ রোববার থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। এর আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

রামেবি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর খুলনা বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং কলেজ রামেবির অধিভুক্ত হিসেবে পরিচালিত হয়। মোট নার্সিং কলেজের সংখ্যা ৪০। এগুলোর মধ্যে ২১টি কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং, বিএসসি ইন পাবলিক হেলথ নার্সিং (পোস্টবেসিক) এবং বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি (পোস্টবেসিক) পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

এসব কোর্সে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। প্রথম বর্ষে বিষয় রয়েছে ৮টি, আর দ্বিতীয় বর্ষে ৮ থেকে ১০টি। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। সবার পরীক্ষাই স্থগিত করা হয়েছে। তিন বিভাগের ১৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণের কথা ছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে পরীক্ষা স্থগিতের খবর জানাজানি হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে তোলপাড় শুরু হয়।

প্রশ্নপত্রের সার্বিক দায়দায়িত্ব রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের। এ দপ্তরের গাফিলতির কারণে এর আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব নিয়ে কখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

এবার বিষয়টি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আনোয়ার হাবিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। আজ রোববার বিষয়টি জানাজানি হলে রামেবির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই অসন্তোষ দেখা দেয়।

রামেবি সূত্র জানিয়েছে, রামেবিতে এসে প্রশ্ন করেন বিভিন্ন নার্সিং কলেজের শিক্ষকেরাই। এবারও বগুড়া নার্সিং কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ফোনালাপের অডিও রেকর্ডও পেয়েছে। তাই তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ আরশে আরা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের আরও কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র করার সময় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে যে তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। সে জন্য গত বৃহস্পতিবার তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠন করা তদন্ত কমিটির চিঠিতে বিষয়টি আমি জেনেছি।’

 এ বিষয়ে কথা বলতে রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ার হাবিবকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক এ. জেড. এম মোস্তাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে মন্ত্রণালয় থেকেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রামেবির প্রতিনিধিও রাখা হয়েছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। পরীক্ষা পরে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত