Ajker Patrika

নেতাদের আশীর্বাদে অস্ত্র ব্যবসায় ছাত্রলীগ নেতা

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ২৬
নেতাদের আশীর্বাদে অস্ত্র ব্যবসায় ছাত্রলীগ নেতা

‘আমার জীবনে আমি তাকে সাপোর্ট বা শেল্টার কোনোটাই দিইনি। এসব কাজের জন্য সব সময় আমি তাকে গালিগালাজ করতাম।’ এই গালিগালাজ যাঁকে করা হতো, তিনি যশোরের শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল হোসেন। যিনি গালিগালাজ করতেন, তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শার্শার বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

অভিযোগ আছে, আশরাফুলসহ স্থানীয় আরও কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায়ই অস্ত্র ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন ছাত্রলীগ নেতা আকুল। সেই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে ওই কথাগুলো বলেন আশরাফুল।

অস্ত্র বিক্রি করতে ঢাকায় এসে গত বুধবার অনেক অস্ত্রসহ পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছেন আকুল। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁর পাঁচ সহযোগীকেও। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর গত শনিবার আকুলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ঘটনা তদন্তের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক পদ ব্যবহার করে আকুল অস্ত্র ও গুলির ব্যবসা ছাড়াও মাদক, সোনা চোরাচালানে জড়িত। দেশে অবৈধ পথে যত গুলি আসে, তার একটি বড় অংশ এই ছাত্রনেতার নেটওয়ার্কেই আসত। এ কাজে বাংলাদেশ-ভারতে ২৪ সদস্যের এক বাহিনীও গড়ে তুলেছেন তিনি। এসব কাজে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বড় নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন এই ছাত্রলীগ নেতা।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর-১ আসনে (শার্শা) আওয়ামী লীগের রাজনীতি বেশ কয়েক বছর ধরে দুভাবে বিভক্ত। একাংশের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন। অন্য অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম। বিভক্তির কারণে শার্শা উপজেলা থেকে শুরু করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি রয়েছে। দুই পক্ষই নিজেদের পছন্দমতো এ কমিটি দিয়েছে। ২০১২ সালে আশরাফুল আলমের দেওয়া কমিটিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন আকুল। রাজনীতির বাইরেও আকুলের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন এই নেতা।

২০১৯ সালের ১৫ জুন বেনাপোলে আকুলের বাড়ি থেকে ১২টি ম্যাগাজিন, ৩টি গুলি, ১টি বোমা, ৬টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও ফেনসিডিল উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেনাপোল বন্দর থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত অভিযোগপত্র থেকে আকুলের নাম বাদ পড়ে। গুঞ্জন আছে, তাঁর পক্ষে তদবির করেছিলেন আশরাফুল আলম।

এসব অভিযোগের বিষয়েই গত রোববার আশরাফুল আলমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে আকুলকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব কাজের জন্য আমি সব সময় গালিগালাজ করতাম। তবে একটা ছেলের পদ-পজিশন থাকলে, সে কোনো না কোনো জায়গায় ওঠাবসা করে। সেভাবেই আমার সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল।’

যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলের বিরুদ্ধেও আকুলের অন্যায় কাজে প্রশ্রয় ও সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলার বড় নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় আকুল এখনো রাজনীতি করে যাচ্ছেন। তাঁকে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। তিনিই আকুলকে সব বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।’

জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘আকুল একসময় আমার সঙ্গে রাজনীতি করত। আমি তখন তাকে দেখাশোনা করতাম। কিন্তু এখন সে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের এক বড় নেতার রাজনীতি করে। তাঁকেই নিতে হবে আকুলের অবৈধ কাজের দায়।’

পুলিশ সূত্র বলছে, রাজধানী ঢাকা, সীমান্তবর্তী যশোর, সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সক্রিয় রয়েছেন আকুলের অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য। ২০১৪ সাল থেকে তিনি অস্ত্র ব্যবসা করেন। গত ছয় বছরে ২০০টির বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছেন তিনি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আকুল স্থানীয় ১০-১২ জন নেতার নাম জানিয়েছেন। তাঁরা আকুলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনেন। এঁদের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে মশিউর রহমান জানান, ভারতপ্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের তিন মহাজনের কাছ থেকে অস্ত্র কেনেন আকুল। মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে মেটান পাওনা। তারপর মহাজনের লোকজন সীমান্ত এলাকার আবাদি জমিতে পুঁতে রাখে অস্ত্র। হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেয়ে মাটি খুঁড়ে অস্ত্র বের করে আকুলের লোকজন। নজরদারি এড়াতে পানির জারের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয় অস্ত্র। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা: আদালতে ঘটনার যে বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী সেই রিকশাচালক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন অটোরিকশাচালক মো. কামাল হোসেন। ঘটনার দিন তাঁর রিকশায় করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে গুলি করা হয় হাদিকে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলমের কাছে আজ বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দেন তিনি।

রিকশাচালক কামাল হোসেনকে আজ আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাঁর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন তিনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কামাল হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের দিন কামাল হোসেনের অটোরিকশায় করে মতিঝিলের খলিল হোটেল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উদ্দেশে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। কামাল হোসেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর বক্তব্য আদালতে দিতে ইচ্ছুক। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাক্ষীর জবানবন্দি ১৬৪ ধারামতে লিপিবদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কামাল হোসেন জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার দিন দুজন যাত্রী নিয়ে তিনি মতিঝিলের খলিল হোটেল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার সময় পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে পৌঁছানোর পর তাঁর রিকশার পাশ দিয়ে একটি মোটরসাইকেল যায়। দুজন যাত্রী ছিল তাতে। একেবারে পাশ থেকে তাঁর এক যাত্রীকে গুলি করলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন ধরাধরি করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, গুলি লাগা যাত্রীর নাম ওসমান হাদি।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে একটি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে মাথায় গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তিন দিন পর ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।

ফয়সাল করিম মাসুদকে আসামি করে ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। হাদি মারা যাওয়ার পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫ জন নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকিং ও সুখচর ইউনিয়ন-সংলগ্ন মেঘনা নদীর জাগলারচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহত মোবারক হোসেন সিহাবের চাচা ও নিখোঁজ সামছু গ্রুপের সামছুর ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার বাদী আবুল বাশার জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তাঁর ভাতিজা মোবারক হোসেন সিহাবের লাশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন করতে সময় লাগায় মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

নিহত সিহাবের মা ও সামছু বাহিনীর প্রধান মো. সামছুদ্দিন ওরফে সামছুর স্ত্রী মাহফুজা বেগম অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু লোক তাঁর স্বামীকে চরে জমি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যান। পরে আর তাঁকে ফেরত দেননি। খবর পেয়ে পরদিন ছেলে সিহাব তাঁর বাবাকে ফিরিয়ে আনতে জাগলারচরে যান। কিন্তু তিনি আর জীবিত ফিরে আসেননি।

সামছুর বড় ছেলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি সেখানে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এখনো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। প্রশাসন আমার বাবার লাশ উদ্ধারে অথবা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, নিখোঁজ সামছুর ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গৌরনদীতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও যুবলীগের ২ নেতা গ্রেপ্তার

গৌরনদী প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশালের গৌরনদীতে ডেভিল হান্ট ফেজ ২ অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার ভীমেরপাড় এবং বার্থী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল বিশ্বাস এবং বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও যুবলীগ নেতা খোকন খান।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কোটি টাকা মূল্যের নকল স্ট্যাম্প জব্দ, আটক ২

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
কোটি টাকা মূল্যের নকল স্ট্যাম্প জব্দ। ছবি: সংগৃহীত
কোটি টাকা মূল্যের নকল স্ট্যাম্প জব্দ। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি নকল স্ট্যাম্প তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কারখানাটিতে কর্মরত দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশ। 

আটককৃতরা হলেন ফরিদপুর জেলার আলম খানের ছেলে মিন্টু খান (৩৮) এবং একই জেলার কামাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ মুন্না ইসলাম (২১)।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৌচাক বাসস্ট্যান্ডের পেছনে ভান্ডারি হোটেলসংলগ্ন সবুজ ওরফে মোতাহার নামে এক ব্যক্তি একটি কারখানা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নকল ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প বানিয়ে আসছিলেন। যা তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করতেন।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ প্রতারণার খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশ কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করে স্ট্যাম্প তৈরির দুটি মেশিন ও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প উদ্ধার করে। কারখানাটির ভবনমালিকের নাম মৃত এমাদ হাজি বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বারিক বলেন, ‘গোপন সংবাদের মাধ্যমে আমরা কারখানার খবর পেয়ে অভিযান চালাই। এখানে সরকারের রাজস্ব খাতের রেভিনিউ ও স্ট্যাম্প নকল করে দুটি মেশিন দ্বারা তৈরি করা হচ্ছিল। আমরা কারখানাটিতে এসে নকল স্ট্যাম্প তৈরির দুটি মেশিন, ১০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মূল্যের পর্যন্ত রেভিনিউ সিল এবং ১০০ টাকা মূল্যের কোটি টাকার স্ট্যাম্প পেয়েছি।’

কারখানাটিতে নকল স্ট্যাম্প তৈরির কাজে নিয়োজিত দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ কাজের সঙ্গে আর কারা জড়িত—তা বের করা হবে। জব্দকৃত স্ট্যাম্পের গণনা শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত