Ajker Patrika

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ যশোরবাসী

প্রতিনিধি
মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ যশোরবাসী

যশোর সদর (যশোর): মশার ভয়ানক যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে যশোরবাসী। ক্ষুদ্র এ পতঙ্গের আক্রমণে অফিস, আদালত, বাসা–বাড়ি, পথ-ঘাট কোথাও মিলছে না স্বস্তি। অথচ এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। একাধিক দফায় তারা বিভিন্ন মহলে মশা নিধনের কথা বললেও বাস্তবে তা হয়নি।

যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরমান হোসেন পেশায় একজন চা দোকানি। দিনের বেলাতেও দোকানে তিনি মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখেন। মাত্র ২০ বর্গফুটের দোকানটিতে সন্ধ্যার পর অন্তত দুটি কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয় তাঁকে। আরমান জানান, গত এক মাসে তাঁর বিক্রি অনেক কমেছে। কয়েল না জ্বালালে ক্রেতারা দোকানে বসতে পারেন না। আবার কয়েল জ্বালালে অতিরিক্ত ধোঁয়া হয়। এরও বিরূপ প্রভাব পড়ে বেচাকেনায়।

একই এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া খাতুন বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় প্রায় সারা দিনই বাসায় থাকতে হয় তাঁকে। তবে একটুও স্বস্তিতে বাসায় থাকা যাচ্ছে না গত কয়েক মাস ধরে। তিনি বলেন, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টাই মশারি টানিয়ে রাখতে হয়। বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে মশারির মধ্যে বসে পড়াশোনা করতে হয়। বাইরে বের হলেই মশার আক্রমণে পর্যুদস্ত হতে হয়। যে কারণে মশারির সঙ্গে কয়েল অথবা মশার স্প্রে এখন নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে তাঁদের পরিবারের।

মশার হাত থেকে নিস্তার মিলছে না অফিস আদালতেও। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা পদে কর্মরত টেনিসন রায় শুভ। তিনি জানান, সকালে অফিস খোলার সঙ্গে সঙ্গে মশার স্প্রে করা নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস চলে। এ সময়ের মধ্যে অন্তত ছয়–সাতবার স্প্রে করার পরও কোনো ফল মেলেনি। সর্বশেষ অফিসের জানালাগুলোতে নেট টানিয়ে দিয়েও মিলছে না পূর্ণ সফলতা।

মশার ভয়াবহতার এ চিত্র পুরো যশোরজুড়েই। স্থানীয়রা জানান, গত বছরেও মশার প্রকোপ ছিল বেশ। সেবার ন্যূনতম কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল পৌর কর্তৃপক্ষ। চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ না ছিটানো এবং শহরকে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন না রাখার কারণে মশার বংশবিস্তার রোধ করা সম্ভব হয়নি সেবার। যার কুফল এবারের শীতেই ভোগ করতে হয়েছে যশোরবাসীকে। অতীতে শীতকালে যেখানে কখনোই মশার উপদ্রব ছিল না, এবার সে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যশোরবাসীকে।

মশার উৎপাতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে শরিফ হোসেনের। ক্ষোভ নিয়ে বললেন, ‘সারা দিন অফিসে কাজ করার পর বাসায় ফিরে নামতে হয় মশা মারার যুদ্ধে। যেখানে একাধিক পন্থা অবলম্বন করেও ছোট এ পতঙ্গের কাছে হার মানতে হয়।’

এদিকে করোনার পরিস্থিতির মধ্যে মশার এ ভয়াবহতা মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক আরও প্রকট করেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে যশোরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাতজন। গত বছর করোনার ভয়াবহতায় এর প্রকোপ দৃশ্যমান না হলেও, এখনো আতঙ্কিত মানুষ।

মশা নির্মূলে প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ না থাকায় মশাবাহিত রোগের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে অন্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও। মূলত মশা মারতে ঘরে ঘরে ব্যবহৃত কয়েল বা স্প্রের কারণেই স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে যশোর সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ওবায়দুল কাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মশা নিরোধের জন্য আমাদের দেশে যেসব কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার করা হয়, তা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর প্রভাবে শ্বাসনালিতে প্রদাহ, ফুসফুসে প্রদাহ বা ক্যানসার, লিভার-কিডনি বিকল হওয়া, ত্বকের প্রদাহ, চর্মরোগ এমনকি গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। এ ছাড়া মশা থেকে চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস, এনকেফেলাইটিস, পীতজ, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগও ছড়ায়, যা প্রাণঘাতী। সুতরাং মশা নিধন অত্যন্ত জরুরি।’

সার্বিক বিষয়ে যশোর পৌরসভার সচিব মো. আজমল হোসেন জানান, ‘সাধারণত এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত মশার উপদ্রব তুলনামূলক বেশি থাকে। এবার বেশ আগেভাগেই এর প্রকোপ বেড়েছে। গতবারও বেশ আগেভাগেই মশার প্রকোপ বেড়েছিল। সেবার পৌর কর্তৃপক্ষ ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিধন কার্যক্রম হাতে নিয়েছিল। তখন প্রকোপ কিছুটা কমে আসে। এবার বিষয়টি আমরা খেয়াল করছি। গতবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারও আমরা সমস্যার সমাধান করব।’ তবে কবে নাগাদ এ কার্যক্রম চালু হবে, সে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালরের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।

নিহত ছাত্রীর নাম লামিসা নওরিন পুষ্পিতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বিকেলে আশপাশের রুমের ছাত্রীরা তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে রামেক হাসপাতালে পাঠালে কিছু সময় পর তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি বাইরে আছি। একটি আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। মতিহার থানার ওসি আমাকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমরা তাঁর পরিবারকে জানিয়েছি। তাঁর অভিভাবক আসার পর আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেলহাজতে অসুস্থ আ.লীগ নেতার শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শফিকুল আলম বাবুল খান । ছবি: সংগৃহীত
শফিকুল আলম বাবুল খান । ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী কারাগারে থাকা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বাবুল খান (৫৫)। তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে তিনি মারা যান। ওই দিনই সন্ধ্যার পর তিনি পটুয়াখালী কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

শফিকুল আলম বাবুল খান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে বাবুল খানকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় থানা-পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি পটুয়াখালী জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে কারা কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাঁকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, অসুস্থতার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলছে।

নিহত শফিকুল আলমের ছোট ভাই মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বসির খান বলেন, মরহুমের প্রথম জানাজা আজ বাদ মাগরিব কলাপাড়া সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিজ বাড়ির পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা, আটক ১

মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর সদরের কুনিয়ারহাট এলাকায় ঘরে ঢুকে জাহিদ শেখ (৪০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আজ বুধবার উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহিদ একই এলাকার জবেদ শেখের ছেলে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিকমিস্ত্রি। অপর দিকে আটক সজিব শেখ আব্দুল্লাহ রাজৈর উপজেলার বাজিতপুরের মাচ্চর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে নিজ ঘরে কাজ করছিলেন জাহিদ শেখ। এ সময় হঠাৎ সজিব শেখ নামের এক যুবক তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জাহিদকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেন।

এ সময় পরিবারের লোকজন টের পেয়ে চিৎকার করলে স্থানীয় বাসিন্দারা সজিবকে ধাওয়া করে আটক করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ নিহত জাহিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ ও পরিবারের লোকজন।

মীর জামাল সরদার নামের নিহত জাহিদের এক স্বজন বলেন, ‘কী কারণে জাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

নিহত জাহিদের মামা মোয়াজ্জেম মাতুব্বর বলেন, ‘ঘরে কাজ করা অবস্থায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে আমার ভাগনেকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও জড়িতের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফারিহা রফিক ভাবনা বলেন, ইলেকট্রিকমিস্ত্রিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক সজিব শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার কারণ ও ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুড়িগ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠনের দেশবিরোধী পোস্টার, ৫ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী আটক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠনের পোস্টার লাগানোর অভিযোগে পাঁচজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুড়িগ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠনের পোস্টার লাগানোর অভিযোগে পাঁচজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের দেশবিরোধী পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগে পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ বুধবার শহরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে রংপুরগামী একটি মিনিবাসে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

এর আগে শহরের কলেজ মোড় ও জেলা পরিষদ ভবনের ফটকে ‘খোলাচিঠি’ শিরোনামে নিষিদ্ধ সংগঠনের পোস্টার লাগানোর পর তাৎক্ষণিক অভিযানে নামে পুলিশ।

কুড়িগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আটক শিক্ষার্থীরা হলেন রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী জাবের আল রাফিয়ান (৩০), ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাকিবুল হাসান (২৪) ও শামীম হোসেন (২৫), ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ফাহমিদ হাসান (৩৪) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) মাহমুদুর রহমান (২৫)।

ডিবি সূত্র জানায়, আজ দুপুরে শহরের কলেজ মোড়সহ একাধিক জায়গায় ‘খোলাচিঠি’ শিরোনামে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পোস্টার সাঁটানো হয়। এই সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামেন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

পরে খলিলগঞ্জ বাজারসংলগ্ন স্থান থেকে রংপুরগামী একটি মিনিবাসের গতিরোধ করে বাসে থাকা সন্দেহভাজন পাঁচ তরুণকে আটক করা হয়। এর পরপরই পুলিশ সদস্যদের সাঁটানো পোস্টার তুলে ফেলতে দেখা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, পোস্টার লাগানোর স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই তরুণদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁরা ঢাকা থেকে এসে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রচারণার কাজ করছিলেন।

আটক তরুণদের বাড়ি যশোর, ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, নাটোর ও মাদারীপুর জেলায়। তাঁরা রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি বলেন, ‘নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহরীরের পোস্টার লাগানোর অভিযোগে পাঁচ তরুণকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা পোস্টার লাগানোর দায় স্বীকার করেছেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত তরুণদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত