Ajker Patrika

ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৪

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ৪৮
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৪

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ফরিদপুর কার্যালয়ে ত্রাণের ঢেউটিন ও নগদ অর্থ নিতে এসেছিলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলার কয়েকটি হতদরিদ্র পরিবার। একটি পিকআপে ভোরে রওনা দেন তাঁরা। কিন্তু পথে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মাগুরাগামী বাস ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে নারী-শিশুসহ ১১ জন নিহত, পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন এবং ঢাকায় নেওয়ার পথে একজন নিহত হন। তাঁরা সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। 

আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের শহরতলীর কানাইপুরের দিগনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনজন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অপর একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামানন্দ পালকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

নিহতদের মধ্যে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের সত্তরকান্দা গ্রামের একই পরিবারের চারজন রয়েছেন। তাঁরা হলেন—রাকিবুল ইসলাম মিলন (৩৮), তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম (৩৫) ও দুই শিশু ছেলে রুহান (৮) ও আবু সিনান (৩)। 

নিহত অপর ব্যক্তিরা হলেন—একই গ্রামের মর্জিনা বেগম (৭০) ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরবকাইল গ্রামের তবিবুর খান (৫৫), বেজিডাঙ্গা গ্রামের জাহানারা বেগম (৫৬), সোনিয়া বেগম (৫৮), নুরারী (২), পিকআপচালক কুসুমদি গ্রামের নজরুল ইসলাম (৩৫), হিদাডাঙ্গা গ্রামের শুকুরুন নেছা (৮৫), কহিনুর বেগম (৭০) ও সূর্য বেগম (৫৫)। 

এ ছাড়া ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত রাকিবুল ইসলামের বৃদ্ধা মা হুরি বেগম (৬০) ও মরিয়ম বেগম নামে আরও একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরদিকে মুমূর্ষু অবস্থায় বোয়ালমারী উপজেলায় রুপাপাত গ্রামের ইকবাল শেখ নামের এক ব্যক্তিকে ঢামেকে পাঠানো হলে পথে তিনিও মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছানোয়ার মোল্যা। 

এর মধ্যে রাকিবুল ইসলাম মিলন ঢাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার মাধ্যমে অন্যরা ত্রাণ নেওয়ার জন্য আসেন এবং তিনি ওই পিকআপে পরিবার নিয়ে ঢাকায় রওনা দিয়েছিলেন। 

নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ত্রাণের ঢেউটিন ও নগদ অর্থ নেওয়ার জন্য তাঁরা ফরিদপুরে আসছিলেন। 

এ বিষয়ে জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ বাবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তারা ত্রাণ নিতে আসছিলেন বলে জেনেছি। আমরা প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিয়ে থাকি। যখন যারা আসে তখনই দেওয়া হয়। এ জন্য নির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেওয়া হয় না।’ 

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পিকআপ এবং বাসটি জব্দ করা হয়েছে। 

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় ঢাকায় নেওয়ার পথে আরও একজন মারা গেছে। তবে এখনো তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’ 

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। 

জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। নিহতদের নগদ ২০ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। নিহতদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫ লাখ এবং আহতদের ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ।  ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি, এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে।’

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত শানে তাওহীদ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৭ অক্টোবর ড. ইউনূস সরকার ঘোষিত লালন তিরোধান দিবস বাতিল করতে হবে। দেশে এখন লালনের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এখন তার পূজা করা হয়। বাউলদের ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ না করলে ৬৪ জেলায় একসঙ্গে আন্দোলন ও সমাবেশ করা হবে।’

মানিকগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা সাঈদ নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ সালাহউদ্দিনসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূলদের পাশে জীবননগরের ইউএনও

চুয়াডাঙ্গা (জীবননগর) প্রতিনিধি 
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গায় এবার শীত শুরু হয়েছে আগেভাগেই। কনকনে শীতে কাঁপছে জেলার মানুষ। এই শীতের রাতে জবুথবু হয়ে ঘুমিয়ে থাকেন ছিন্নমূল মানুষ। কেউ চাদর, আবার কেউ গামছা-লুঙ্গি কিংবা ছেঁড়া কাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমান। শীতের তীব্রতা বাড়ায় এসব ছিন্নমূল মানুষের কথা চিন্তা করে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পথে পথে ঘুরে কম্বল বিতরণ করছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমীন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার থেকে জীবননগর পৌর শহরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।

ইউএনও আল আমীন বলেন, ‘ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কম্বল ছিন্নমূল দুস্থ ও অসহায় মানুষ খুঁজে খুঁজে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আমরা যাঁরা আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাঁরা শীত নিবারণের জন্য অনেক কিছুই কিনতে পারি। আমরা যখন বাসাবাড়িতে দামি কম্বল মুড়িয়ে আরামে ঘুমাতে যাই, তখনো অনেক মানুষ কনকনে শীতে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনে শুয়ে-বসে রাত কাটায়। এসব অসহায় মানুষের শীতবস্ত্র দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’

আল আমীন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের উচিত এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমি চাই, সমাজের সকল বিত্তবান মানুষ এই শীতে সবার পাশে যেন দাঁড়ায়।’

রাতে ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সৈয়দ আব্দুল জব্বার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ঘরের দরজা ভেঙে বিছানায় পড়ে থাকা নারীর লাশ উদ্ধার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় ঘরের দরজা ভেঙে বিছানায় পড়ে থাকা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ১১টার দিকে বগুড়া শহরের জামিলনগর এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই নারীর নাম সাবিকুন নাহার (৪৩)। তিনি চট্টগ্রাম পোর্ট এলাকার হোন্দালপাড়া এলাকার গোলাম সবানীর মেয়ে। ৯ মাস আগে জামিলনগর এলাকায় শাজাহানের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাড়িমালিক শাজাহান মিয়া জানান, বিকেলের পর থেকে সাবিকুন নাহার বাড়িতে অবস্থান করলেও ফোন রিসিভ করেননি। রাত ৯টার দিকে বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে বিছানায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

শাজাহান মিয়া জানান, ৯ মাস আগে সাবিকুন নাহার এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে এসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুই হাজার টাকায় দুই কক্ষের বাড়িটি ভাড়া নেন। স্বামী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট এলাকায়। তবে তাঁর নাম জানেন না তিনি। মাঝেমধ্যে জামিলনগর বাসায় ওই নারীর সঙ্গে রাত যাপন করতেন। সপ্তাহখানেক আগে তাঁদের মধ্যে তালাক হয় বলে ওই নারী বাড়িমালিককে জানান।

শনিবার রাত ৯টার পর ওই নারীর স্বামীকে বাড়িমালিক ফোন করে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ দিলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সরেজমিন দেখা যায়, ঘরের দরজা খোলা। বিছানায় ওই নারীর লাশ পড়ে আছে। মাক্স দিয়ে মুখ ঢাকা। বিছানায় দুই প্যাকেট খাবার এবং কিছু ওষুধ ছড়ানো-ছিটানো রয়েছে। ঘরের অন্যান্য মালামাল স্বাভাবিক রয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান বলেন, ওই নারীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিছানায় ডায়াবেটিসের কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ একর জমি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও জেলা প্রশাসনের বিরোধ, বরাদ্দ পেল সিটি করপোরেশন

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ১৮
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে ফিরিঙ্গী বাজার মৌজার ৬ একর জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে সেই জায়গা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে এক বছরের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মামলার নথি ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ইজারার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। মামলা চলা অবস্থায় ইজারা দেওয়ার উদ্যোগকে বেআইনি উল্লেখ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই রুল জারি করা হয়।

এ অবস্থায় ইজারা দেওয়া থেকে পিছু হটে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে রুল জারির দেড় মাসের মাথায় গত ২০ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জায়গাটি বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের কাছে বরাদ্দ চান। ৬ একরের ওই জায়গায় খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের কথা বলেন মেয়র।

বন্দরের বোর্ড সভার ১৯৩৯৯ নম্বর সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একসনা (এক বছর) বরাদ্দ দেওয়া হয় জায়গাটি। ৮ ডিসেম্বর সেটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

জায়গার মাশুল বাবদ ৮৩ লাখ টাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের অনুকূলে জমা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন উপদেষ্টা বা আইন কর্মকর্তার কোনো মতামত গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (স্টেট-২) মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ফিরিঙ্গী বাজার মৌজার ৬ একর জমি খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের জন্য সিটি করপোরেশনের অনুকূলে একসনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি মামলা চলছে।

এই অবস্থায় জায়গা বরাদ্দের বিষেয় জানতে চাইলে মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রে আদালত অবমাননা হয় না।’

জেলা প্রশাসন ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১২ জুলাই সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ওই এলাকা পরিদর্শন করেন এবং নিজেদের মালিকানার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য ছিল জায়গাটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত।

জমি বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভূমি শাখার প্রধান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা পার্ক করার জন্য জায়গাটি বন্দরের কাছ থেকে নিয়েছি। টাকা জমা দিয়েছি। বরাদ্দপত্রটা নেওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর জায়গাটা বুঝে নেব।’

এই জায়গা নিয়ে মামলার বিষয়টি জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বন্দর আমাদের লিজ দিচ্ছে। মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার তথ্যমতে, ১৮৮৫ সালে তৎকালীন সরকার বিরোধপূর্ণ জমিটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। পরে ভুলবশত বিএস রেকর্ড বন্দরের নামে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের যুগ্ম জজ আদালত-১ একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এই বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘মামলা চলা অবস্থায় এই ধরনের লিজ আদালত অবমাননার শামিল। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক থাকা উচিত।’

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে শিশুপার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরোধ মীমাংসায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম বন্দর অধিশাখার উপসচিব মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুন্সী মনিরুজ্জামানকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন মোংলা বন্দরের উপসচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ও উপসচিব টি এ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত