মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে করা ছয় দফা চুক্তি। এখনো বুকে চাপা তীব্র কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছে নিহতদের পরিবার। সরেজমিনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি জানা গেছে।
২০০৬ সালের আজকের দিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা উত্তোলন না করার দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল। সেদিন কর্মসূচির ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) নির্যাতন চালিয়েছিল।
সেই আন্দোলনে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ুয়া তরিকুল (২০), স্কুলছাত্র আমিন (১৫) ও সালেকিনের (১৭) মরদেহ। সেই সঙ্গে আহত হন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সুজাপুরের বাবলু রায়ের মতো অনেকেই এখনো পঙ্গুত্বের অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সাহাবাজপুরের প্রদীপ সরকার দীর্ঘদিন যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার পর মারাও গেছেন।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের বারকোনা গ্রামে নিহত আমিনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় তার বাবা আ. হামিদ ও মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সে সময় তাঁদের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বেলা ৩টার দিকে ফুলবাড়ী শহরে যায় তাদের ছেলে, এরপর ফেরে লাশ হয়ে।
মা রেহেনা বেগম অশ্রুসজল হয়ে বলেন, ‘এভাবে যেন আর কোনো বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। বাপ-দাদার ভিটেমাটিসহ ফুলবাড়ী রক্ষায় এলাকাবাসীর সুখের জন্য আমার ছেলের প্রাণ গেছে। এমন কয়লাখনি আর চাই না। তবে দুঃখ একটাই, এখন আর কেউ তেমন খবর নেয় না। আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যেই আমিন ছিল বড়। বর্তমানে এক ছেলে বিএ পরীক্ষা দিয়েছে, তারা একটা কর্মসংস্থানের জন্য কেউ আর পাশে এসে দাঁড়ায় না।’
আমিনের বাবা বলেন, ‘আবার কয়লাখনি করার ষড়যন্ত্র হলে আন্দোলন করব।’
এদিকে পৌর শহরের চাঁদাপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিহত তরিকুলের বাবা সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. মোকলেছুর রহমানের সঙ্গে। ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীর সামনে কোনো কথা বলতে অসম্মতি জানান। পরে এককভাবে দূরে এসে কথা বলেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম।
ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন? সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার সন্তান মারা গেছে, আমি বুঝি কী কষ্ট আমাদের। সেদিন আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকেই আমি দায়ী করব না। হয়তো আল্লাহ তায়ালা তাঁর এইভাবেই মৃত্যু রেখেছিল। তবে কষ্ট একটাই, আন্দোলনকারীরা কোনো দিন একটা খোঁজও নেয়নি।’
অন্যদিকে আরেক নিহত ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার উত্তর সাহাবাজপুরের ঝোড়ারপাড় গ্রামের সালেকিন। কথা হয় তার বাবা হাসান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সালেকিন সেই সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আমি ইটভাটায় কাজ করতাম। সেদিন আমার ভাই জোবেদ আলীর সঙ্গে সে ফুলবাড়ীতে যায় আন্দোলন দেখতে। সন্ধ্যার দিকে লোক মারফত খবর পাই আমার ছেলে আর নেই।’
নিহত সালেকিনের চাচা জোবেদ আলী বলেন, ‘সালেকিনের জেদে সেদিন বেলা ৩টায় তাকে নিয়ে ফুলবাড়ী যাই। এ সময় ফুলবাড়ী রেলগেট এলাকায় দলে দলে লোক মিছিলে অংশ নিচ্ছিল। এরই একপর্যায়ে আমাদের এক ভাতিজি জামাইয়ের সাথে সালেকিন চলে যায় মিছিলে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আমার কাছ থেকে। এরপর সন্ধ্যায় খবর পাই, সেই আন্দোলনে তিনজন মারা গেছে। এর বেশ কিছুক্ষণ পর খবর পাই মৃত তিনজনের মধ্যে আমাদের সালেকিনও রয়েছে।’
সালেকিনের বাবা হাসান আলী বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মনে পড়ত ছেলেকে। এখনো যখনই মনে পড়ে, তখনই মনে হয় অভিশপ্ত ফুলবাড়ী কয়লাখনির জন্যই আমরা হারিয়েছি আমাদের বুকের মানিককে। এই কয়লাখনি আমরা চাই না।’
১৬ বছর আগের সেই সময়ের বিষয়ে জানতে কথা হয় তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বাস্তবায়নে এশিয়া এনার্জি নামক একটি বহুজাতিক কোম্পানির ফুলবাড়ীর অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় এই এলাকার আপামর জনগণ। ওই দিন তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের মিছিলে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সুজাপুর চাঁদপাড়া গ্রামের মকলেছুর রহমানের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২০), বারকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আমিন (১৫) ও উত্তর সাহাবাজপুর গ্রামের সালেকিন (১৭)। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র, রতনপুর গ্রামের শ্রীমান বাস্কে, সুজাপুর গ্রামের বাবলু রায় চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। সেই সঙ্গে আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ।
ওই সময় ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জনতার আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল ছিল ফুলবাড়ী খনি এলাকা। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ফুলবাড়ীর ওপর দিয়ে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ২৮ আগস্ট এশিয়া এনার্জির সুবিধাভোগী (দালাল) হিসেবে চিহ্নিত কয়েক ব্যক্তির বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ।
বাস্তবিক অর্থে গণ-আন্দোলনের ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরে পদার্পণ করলেও আংশিক বাস্তবায়নের পর থেমে গেছে ছয় দফা চুক্তি। এই ছয় দফা চুক্তির মধ্যে রয়েছে—এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিষ্কার, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি না করা, পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা, গুলিবর্ষণসহ হতাহতের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন, শহীদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তি প্রদান, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন করে মামলা না করা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ছয় দফা চুক্তির আংশিক বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।
সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল আরও বলেন, ছয় দফা চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে এখনো ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। ২৬ আগস্ট দিনটিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, গণজমায়েত, আমিন-সালেকিন-তরিকুলের জন্য নির্মিত ‘আসাত’ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে প্রতিবাদ সভা এবং সুবিধাজনক সময়ে মসজিদ, মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে করা ছয় দফা চুক্তি। এখনো বুকে চাপা তীব্র কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছে নিহতদের পরিবার। সরেজমিনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি জানা গেছে।
২০০৬ সালের আজকের দিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা উত্তোলন না করার দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল। সেদিন কর্মসূচির ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) নির্যাতন চালিয়েছিল।
সেই আন্দোলনে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ুয়া তরিকুল (২০), স্কুলছাত্র আমিন (১৫) ও সালেকিনের (১৭) মরদেহ। সেই সঙ্গে আহত হন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সুজাপুরের বাবলু রায়ের মতো অনেকেই এখনো পঙ্গুত্বের অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সাহাবাজপুরের প্রদীপ সরকার দীর্ঘদিন যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার পর মারাও গেছেন।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের বারকোনা গ্রামে নিহত আমিনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় তার বাবা আ. হামিদ ও মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সে সময় তাঁদের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বেলা ৩টার দিকে ফুলবাড়ী শহরে যায় তাদের ছেলে, এরপর ফেরে লাশ হয়ে।
মা রেহেনা বেগম অশ্রুসজল হয়ে বলেন, ‘এভাবে যেন আর কোনো বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। বাপ-দাদার ভিটেমাটিসহ ফুলবাড়ী রক্ষায় এলাকাবাসীর সুখের জন্য আমার ছেলের প্রাণ গেছে। এমন কয়লাখনি আর চাই না। তবে দুঃখ একটাই, এখন আর কেউ তেমন খবর নেয় না। আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যেই আমিন ছিল বড়। বর্তমানে এক ছেলে বিএ পরীক্ষা দিয়েছে, তারা একটা কর্মসংস্থানের জন্য কেউ আর পাশে এসে দাঁড়ায় না।’
আমিনের বাবা বলেন, ‘আবার কয়লাখনি করার ষড়যন্ত্র হলে আন্দোলন করব।’
এদিকে পৌর শহরের চাঁদাপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিহত তরিকুলের বাবা সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. মোকলেছুর রহমানের সঙ্গে। ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীর সামনে কোনো কথা বলতে অসম্মতি জানান। পরে এককভাবে দূরে এসে কথা বলেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম।
ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন? সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার সন্তান মারা গেছে, আমি বুঝি কী কষ্ট আমাদের। সেদিন আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকেই আমি দায়ী করব না। হয়তো আল্লাহ তায়ালা তাঁর এইভাবেই মৃত্যু রেখেছিল। তবে কষ্ট একটাই, আন্দোলনকারীরা কোনো দিন একটা খোঁজও নেয়নি।’
অন্যদিকে আরেক নিহত ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার উত্তর সাহাবাজপুরের ঝোড়ারপাড় গ্রামের সালেকিন। কথা হয় তার বাবা হাসান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সালেকিন সেই সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আমি ইটভাটায় কাজ করতাম। সেদিন আমার ভাই জোবেদ আলীর সঙ্গে সে ফুলবাড়ীতে যায় আন্দোলন দেখতে। সন্ধ্যার দিকে লোক মারফত খবর পাই আমার ছেলে আর নেই।’
নিহত সালেকিনের চাচা জোবেদ আলী বলেন, ‘সালেকিনের জেদে সেদিন বেলা ৩টায় তাকে নিয়ে ফুলবাড়ী যাই। এ সময় ফুলবাড়ী রেলগেট এলাকায় দলে দলে লোক মিছিলে অংশ নিচ্ছিল। এরই একপর্যায়ে আমাদের এক ভাতিজি জামাইয়ের সাথে সালেকিন চলে যায় মিছিলে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আমার কাছ থেকে। এরপর সন্ধ্যায় খবর পাই, সেই আন্দোলনে তিনজন মারা গেছে। এর বেশ কিছুক্ষণ পর খবর পাই মৃত তিনজনের মধ্যে আমাদের সালেকিনও রয়েছে।’
সালেকিনের বাবা হাসান আলী বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মনে পড়ত ছেলেকে। এখনো যখনই মনে পড়ে, তখনই মনে হয় অভিশপ্ত ফুলবাড়ী কয়লাখনির জন্যই আমরা হারিয়েছি আমাদের বুকের মানিককে। এই কয়লাখনি আমরা চাই না।’
১৬ বছর আগের সেই সময়ের বিষয়ে জানতে কথা হয় তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বাস্তবায়নে এশিয়া এনার্জি নামক একটি বহুজাতিক কোম্পানির ফুলবাড়ীর অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় এই এলাকার আপামর জনগণ। ওই দিন তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের মিছিলে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সুজাপুর চাঁদপাড়া গ্রামের মকলেছুর রহমানের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২০), বারকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আমিন (১৫) ও উত্তর সাহাবাজপুর গ্রামের সালেকিন (১৭)। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র, রতনপুর গ্রামের শ্রীমান বাস্কে, সুজাপুর গ্রামের বাবলু রায় চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। সেই সঙ্গে আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ।
ওই সময় ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জনতার আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল ছিল ফুলবাড়ী খনি এলাকা। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ফুলবাড়ীর ওপর দিয়ে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ২৮ আগস্ট এশিয়া এনার্জির সুবিধাভোগী (দালাল) হিসেবে চিহ্নিত কয়েক ব্যক্তির বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ।
বাস্তবিক অর্থে গণ-আন্দোলনের ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরে পদার্পণ করলেও আংশিক বাস্তবায়নের পর থেমে গেছে ছয় দফা চুক্তি। এই ছয় দফা চুক্তির মধ্যে রয়েছে—এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিষ্কার, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি না করা, পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা, গুলিবর্ষণসহ হতাহতের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন, শহীদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তি প্রদান, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন করে মামলা না করা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ছয় দফা চুক্তির আংশিক বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।
সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল আরও বলেন, ছয় দফা চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে এখনো ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। ২৬ আগস্ট দিনটিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, গণজমায়েত, আমিন-সালেকিন-তরিকুলের জন্য নির্মিত ‘আসাত’ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে প্রতিবাদ সভা এবং সুবিধাজনক সময়ে মসজিদ, মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে করা ছয় দফা চুক্তি। এখনো বুকে চাপা তীব্র কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছে নিহতদের পরিবার। সরেজমিনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি জানা গেছে।
২০০৬ সালের আজকের দিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা উত্তোলন না করার দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল। সেদিন কর্মসূচির ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) নির্যাতন চালিয়েছিল।
সেই আন্দোলনে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ুয়া তরিকুল (২০), স্কুলছাত্র আমিন (১৫) ও সালেকিনের (১৭) মরদেহ। সেই সঙ্গে আহত হন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সুজাপুরের বাবলু রায়ের মতো অনেকেই এখনো পঙ্গুত্বের অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সাহাবাজপুরের প্রদীপ সরকার দীর্ঘদিন যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার পর মারাও গেছেন।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের বারকোনা গ্রামে নিহত আমিনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় তার বাবা আ. হামিদ ও মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সে সময় তাঁদের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বেলা ৩টার দিকে ফুলবাড়ী শহরে যায় তাদের ছেলে, এরপর ফেরে লাশ হয়ে।
মা রেহেনা বেগম অশ্রুসজল হয়ে বলেন, ‘এভাবে যেন আর কোনো বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। বাপ-দাদার ভিটেমাটিসহ ফুলবাড়ী রক্ষায় এলাকাবাসীর সুখের জন্য আমার ছেলের প্রাণ গেছে। এমন কয়লাখনি আর চাই না। তবে দুঃখ একটাই, এখন আর কেউ তেমন খবর নেয় না। আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যেই আমিন ছিল বড়। বর্তমানে এক ছেলে বিএ পরীক্ষা দিয়েছে, তারা একটা কর্মসংস্থানের জন্য কেউ আর পাশে এসে দাঁড়ায় না।’
আমিনের বাবা বলেন, ‘আবার কয়লাখনি করার ষড়যন্ত্র হলে আন্দোলন করব।’
এদিকে পৌর শহরের চাঁদাপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিহত তরিকুলের বাবা সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. মোকলেছুর রহমানের সঙ্গে। ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীর সামনে কোনো কথা বলতে অসম্মতি জানান। পরে এককভাবে দূরে এসে কথা বলেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম।
ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন? সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার সন্তান মারা গেছে, আমি বুঝি কী কষ্ট আমাদের। সেদিন আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকেই আমি দায়ী করব না। হয়তো আল্লাহ তায়ালা তাঁর এইভাবেই মৃত্যু রেখেছিল। তবে কষ্ট একটাই, আন্দোলনকারীরা কোনো দিন একটা খোঁজও নেয়নি।’
অন্যদিকে আরেক নিহত ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার উত্তর সাহাবাজপুরের ঝোড়ারপাড় গ্রামের সালেকিন। কথা হয় তার বাবা হাসান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সালেকিন সেই সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আমি ইটভাটায় কাজ করতাম। সেদিন আমার ভাই জোবেদ আলীর সঙ্গে সে ফুলবাড়ীতে যায় আন্দোলন দেখতে। সন্ধ্যার দিকে লোক মারফত খবর পাই আমার ছেলে আর নেই।’
নিহত সালেকিনের চাচা জোবেদ আলী বলেন, ‘সালেকিনের জেদে সেদিন বেলা ৩টায় তাকে নিয়ে ফুলবাড়ী যাই। এ সময় ফুলবাড়ী রেলগেট এলাকায় দলে দলে লোক মিছিলে অংশ নিচ্ছিল। এরই একপর্যায়ে আমাদের এক ভাতিজি জামাইয়ের সাথে সালেকিন চলে যায় মিছিলে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আমার কাছ থেকে। এরপর সন্ধ্যায় খবর পাই, সেই আন্দোলনে তিনজন মারা গেছে। এর বেশ কিছুক্ষণ পর খবর পাই মৃত তিনজনের মধ্যে আমাদের সালেকিনও রয়েছে।’
সালেকিনের বাবা হাসান আলী বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মনে পড়ত ছেলেকে। এখনো যখনই মনে পড়ে, তখনই মনে হয় অভিশপ্ত ফুলবাড়ী কয়লাখনির জন্যই আমরা হারিয়েছি আমাদের বুকের মানিককে। এই কয়লাখনি আমরা চাই না।’
১৬ বছর আগের সেই সময়ের বিষয়ে জানতে কথা হয় তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বাস্তবায়নে এশিয়া এনার্জি নামক একটি বহুজাতিক কোম্পানির ফুলবাড়ীর অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় এই এলাকার আপামর জনগণ। ওই দিন তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের মিছিলে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সুজাপুর চাঁদপাড়া গ্রামের মকলেছুর রহমানের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২০), বারকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আমিন (১৫) ও উত্তর সাহাবাজপুর গ্রামের সালেকিন (১৭)। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র, রতনপুর গ্রামের শ্রীমান বাস্কে, সুজাপুর গ্রামের বাবলু রায় চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। সেই সঙ্গে আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ।
ওই সময় ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জনতার আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল ছিল ফুলবাড়ী খনি এলাকা। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ফুলবাড়ীর ওপর দিয়ে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ২৮ আগস্ট এশিয়া এনার্জির সুবিধাভোগী (দালাল) হিসেবে চিহ্নিত কয়েক ব্যক্তির বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ।
বাস্তবিক অর্থে গণ-আন্দোলনের ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরে পদার্পণ করলেও আংশিক বাস্তবায়নের পর থেমে গেছে ছয় দফা চুক্তি। এই ছয় দফা চুক্তির মধ্যে রয়েছে—এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিষ্কার, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি না করা, পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা, গুলিবর্ষণসহ হতাহতের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন, শহীদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তি প্রদান, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন করে মামলা না করা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ছয় দফা চুক্তির আংশিক বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।
সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল আরও বলেন, ছয় দফা চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে এখনো ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। ২৬ আগস্ট দিনটিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, গণজমায়েত, আমিন-সালেকিন-তরিকুলের জন্য নির্মিত ‘আসাত’ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে প্রতিবাদ সভা এবং সুবিধাজনক সময়ে মসজিদ, মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়নি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে করা ছয় দফা চুক্তি। এখনো বুকে চাপা তীব্র কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছে নিহতদের পরিবার। সরেজমিনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি জানা গেছে।
২০০৬ সালের আজকের দিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা উত্তোলন না করার দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল। সেদিন কর্মসূচির ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) নির্যাতন চালিয়েছিল।
সেই আন্দোলনে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ুয়া তরিকুল (২০), স্কুলছাত্র আমিন (১৫) ও সালেকিনের (১৭) মরদেহ। সেই সঙ্গে আহত হন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সুজাপুরের বাবলু রায়ের মতো অনেকেই এখনো পঙ্গুত্বের অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সাহাবাজপুরের প্রদীপ সরকার দীর্ঘদিন যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার পর মারাও গেছেন।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের বারকোনা গ্রামে নিহত আমিনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় তার বাবা আ. হামিদ ও মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সে সময় তাঁদের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। বেলা ৩টার দিকে ফুলবাড়ী শহরে যায় তাদের ছেলে, এরপর ফেরে লাশ হয়ে।
মা রেহেনা বেগম অশ্রুসজল হয়ে বলেন, ‘এভাবে যেন আর কোনো বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। বাপ-দাদার ভিটেমাটিসহ ফুলবাড়ী রক্ষায় এলাকাবাসীর সুখের জন্য আমার ছেলের প্রাণ গেছে। এমন কয়লাখনি আর চাই না। তবে দুঃখ একটাই, এখন আর কেউ তেমন খবর নেয় না। আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যেই আমিন ছিল বড়। বর্তমানে এক ছেলে বিএ পরীক্ষা দিয়েছে, তারা একটা কর্মসংস্থানের জন্য কেউ আর পাশে এসে দাঁড়ায় না।’
আমিনের বাবা বলেন, ‘আবার কয়লাখনি করার ষড়যন্ত্র হলে আন্দোলন করব।’
এদিকে পৌর শহরের চাঁদাপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিহত তরিকুলের বাবা সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. মোকলেছুর রহমানের সঙ্গে। ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীর সামনে কোনো কথা বলতে অসম্মতি জানান। পরে এককভাবে দূরে এসে কথা বলেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম।
ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন? সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার সন্তান মারা গেছে, আমি বুঝি কী কষ্ট আমাদের। সেদিন আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকেই আমি দায়ী করব না। হয়তো আল্লাহ তায়ালা তাঁর এইভাবেই মৃত্যু রেখেছিল। তবে কষ্ট একটাই, আন্দোলনকারীরা কোনো দিন একটা খোঁজও নেয়নি।’
অন্যদিকে আরেক নিহত ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার উত্তর সাহাবাজপুরের ঝোড়ারপাড় গ্রামের সালেকিন। কথা হয় তার বাবা হাসান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সালেকিন সেই সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আমি ইটভাটায় কাজ করতাম। সেদিন আমার ভাই জোবেদ আলীর সঙ্গে সে ফুলবাড়ীতে যায় আন্দোলন দেখতে। সন্ধ্যার দিকে লোক মারফত খবর পাই আমার ছেলে আর নেই।’
নিহত সালেকিনের চাচা জোবেদ আলী বলেন, ‘সালেকিনের জেদে সেদিন বেলা ৩টায় তাকে নিয়ে ফুলবাড়ী যাই। এ সময় ফুলবাড়ী রেলগেট এলাকায় দলে দলে লোক মিছিলে অংশ নিচ্ছিল। এরই একপর্যায়ে আমাদের এক ভাতিজি জামাইয়ের সাথে সালেকিন চলে যায় মিছিলে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আমার কাছ থেকে। এরপর সন্ধ্যায় খবর পাই, সেই আন্দোলনে তিনজন মারা গেছে। এর বেশ কিছুক্ষণ পর খবর পাই মৃত তিনজনের মধ্যে আমাদের সালেকিনও রয়েছে।’
সালেকিনের বাবা হাসান আলী বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মনে পড়ত ছেলেকে। এখনো যখনই মনে পড়ে, তখনই মনে হয় অভিশপ্ত ফুলবাড়ী কয়লাখনির জন্যই আমরা হারিয়েছি আমাদের বুকের মানিককে। এই কয়লাখনি আমরা চাই না।’
১৬ বছর আগের সেই সময়ের বিষয়ে জানতে কথা হয় তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বাস্তবায়নে এশিয়া এনার্জি নামক একটি বহুজাতিক কোম্পানির ফুলবাড়ীর অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় এই এলাকার আপামর জনগণ। ওই দিন তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের মিছিলে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সুজাপুর চাঁদপাড়া গ্রামের মকলেছুর রহমানের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২০), বারকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আমিন (১৫) ও উত্তর সাহাবাজপুর গ্রামের সালেকিন (১৭)। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র, রতনপুর গ্রামের শ্রীমান বাস্কে, সুজাপুর গ্রামের বাবলু রায় চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। সেই সঙ্গে আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ।
ওই সময় ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জনতার আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল ছিল ফুলবাড়ী খনি এলাকা। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ফুলবাড়ীর ওপর দিয়ে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ২৮ আগস্ট এশিয়া এনার্জির সুবিধাভোগী (দালাল) হিসেবে চিহ্নিত কয়েক ব্যক্তির বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ।
বাস্তবিক অর্থে গণ-আন্দোলনের ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরে পদার্পণ করলেও আংশিক বাস্তবায়নের পর থেমে গেছে ছয় দফা চুক্তি। এই ছয় দফা চুক্তির মধ্যে রয়েছে—এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিষ্কার, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি না করা, পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা, গুলিবর্ষণসহ হতাহতের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন, শহীদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তি প্রদান, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন করে মামলা না করা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ছয় দফা চুক্তির আংশিক বাস্তবায়ন করেছে মাত্র।
সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল আরও বলেন, ছয় দফা চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে এখনো ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। ২৬ আগস্ট দিনটিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, গণজমায়েত, আমিন-সালেকিন-তরিকুলের জন্য নির্মিত ‘আসাত’ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে প্রতিবাদ সভা এবং সুবিধাজনক সময়ে মসজিদ, মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
৬ মিনিট আগে
রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
২৩ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
৩২ মিনিট আগে
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেমিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত দীপন উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ৮টার দিকে দীপন একটি গোডাউন থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ভ্যানে করে কমলদহ এলাকা থেকে বড় দারোগার হাটের দিকে যাচ্ছিলেন। কমলদহ এলাকায় মহাসড়কে চট্টগ্রামমুখী একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাঁর রিকশাভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খান এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত এক পথচারীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
এ বিষয়ে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জাকির রাব্বানি বলেন, কমলদহ এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত ভ্যান ও মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত দীপন উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ৮টার দিকে দীপন একটি গোডাউন থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ভ্যানে করে কমলদহ এলাকা থেকে বড় দারোগার হাটের দিকে যাচ্ছিলেন। কমলদহ এলাকায় মহাসড়কে চট্টগ্রামমুখী একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাঁর রিকশাভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খান এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত এক পথচারীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
এ বিষয়ে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জাকির রাব্বানি বলেন, কমলদহ এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত ভ্যান ও মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম। ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন। সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল...
২৬ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
২৩ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
৩২ মিনিট আগে
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেঢামেক প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
আহত অবস্থায় সোহান ও তাঁর মা তহুরুন্নেছাকে (৩৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। মা তহুরুন্নেছা জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। আর আহত নানি আবেজান বেগম (৬৫) ও বড় ভাই মাহমুদুল হাসান রোহানকে (১৩) পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে নিহত সোহানের খালা রুনা বেগম জানান, তাঁদের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার পুলঘাট গ্রামে। দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁরা। সোহানের বাবা রওনক হাসান আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। সোহান ও রোহান এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়ে। তাদের মা অন্যের বাসায় কাজ করে।
রুনা বেগম আরও জানান, গত সোমবার তাঁর মা, বোন ও বোনের দুই ছেলে তুরাগের নয়ানগর এলাকায় তাঁর বাসায় বেড়াতে আসে। শনিবার সকালে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। উত্তরা বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাদের প্রথমে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে শিশু সোহান ও তার মাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশুটির মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি উত্তরা পূর্ব থানায় অবগত করা হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
আহত অবস্থায় সোহান ও তাঁর মা তহুরুন্নেছাকে (৩৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। মা তহুরুন্নেছা জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। আর আহত নানি আবেজান বেগম (৬৫) ও বড় ভাই মাহমুদুল হাসান রোহানকে (১৩) পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে নিহত সোহানের খালা রুনা বেগম জানান, তাঁদের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার পুলঘাট গ্রামে। দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁরা। সোহানের বাবা রওনক হাসান আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। সোহান ও রোহান এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়ে। তাদের মা অন্যের বাসায় কাজ করে।
রুনা বেগম আরও জানান, গত সোমবার তাঁর মা, বোন ও বোনের দুই ছেলে তুরাগের নয়ানগর এলাকায় তাঁর বাসায় বেড়াতে আসে। শনিবার সকালে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। উত্তরা বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাদের প্রথমে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে শিশু সোহান ও তার মাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশুটির মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি উত্তরা পূর্ব থানায় অবগত করা হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম। ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন। সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল...
২৬ আগস্ট ২০২২
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
৬ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
৩২ মিনিট আগে
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেসিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
কনকচাঁপা জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য।
ফেসবুক পোস্টে কনকচাঁপা লেখেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না। ওসমান হাদি বারবার বলেছেন, “আমি আমার শত্রুর সাথেও ইনসাফ করতে চাই।” তা ছাড়া তিনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভালো সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে আহ্বান জানাতেন। শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ যারা করেছে, তারা কখনো শান্তিপূর্ণ দেশপ্রেমিক হতে পারে না।’
ফেসবুক পোস্টে ময়মনসিংহে সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবককে হত্যার বিষয়েও কথা বলেছেন কনকচাঁপা। তিনি লেখেন, ‘ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু দাস নামের একজন সনাতন ভাইকে একটা গোষ্ঠী ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। যদি তিনি সত্যিই এমন কিছু করে থাকেন, তবে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার ন্যায়বিচার হওয়া উচিত ছিল। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কখনো ধার্মিক মানুষের কাজ হতে পারে না। দেশের সর্বস্তরের সকল ধর্ম, মত ও আদর্শের মানুষের প্রতি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে বিনীত অনুরোধ করছি। কোনো ষড়যন্ত্রকারীর উসকানি, গুজব ও ইন্ধনে দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি করবেন না।’

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
কনকচাঁপা জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য।
ফেসবুক পোস্টে কনকচাঁপা লেখেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না। ওসমান হাদি বারবার বলেছেন, “আমি আমার শত্রুর সাথেও ইনসাফ করতে চাই।” তা ছাড়া তিনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভালো সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে আহ্বান জানাতেন। শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ যারা করেছে, তারা কখনো শান্তিপূর্ণ দেশপ্রেমিক হতে পারে না।’
ফেসবুক পোস্টে ময়মনসিংহে সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবককে হত্যার বিষয়েও কথা বলেছেন কনকচাঁপা। তিনি লেখেন, ‘ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু দাস নামের একজন সনাতন ভাইকে একটা গোষ্ঠী ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। যদি তিনি সত্যিই এমন কিছু করে থাকেন, তবে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার ন্যায়বিচার হওয়া উচিত ছিল। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কখনো ধার্মিক মানুষের কাজ হতে পারে না। দেশের সর্বস্তরের সকল ধর্ম, মত ও আদর্শের মানুষের প্রতি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে বিনীত অনুরোধ করছি। কোনো ষড়যন্ত্রকারীর উসকানি, গুজব ও ইন্ধনে দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি করবেন না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম। ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন। সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল...
২৬ আগস্ট ২০২২
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
৬ মিনিট আগে
রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
২৩ মিনিট আগে
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেচকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তানিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা গ্রামের মনোহর আলমের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বড় ভেওলার ঈদমনি এলাকায় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন অটোরিকশায় থাকা শিশু তানিয়া ও তার মা-বাবাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, অটোরিকশা দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মরদেহ তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ওই শিশুর পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তানিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা গ্রামের মনোহর আলমের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বড় ভেওলার ঈদমনি এলাকায় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন অটোরিকশায় থাকা শিশু তানিয়া ও তার মা-বাবাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, অটোরিকশা দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মরদেহ তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ওই শিশুর পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবু সালেহ মো. তরিকুল ইসলাম। ক্ষোভের স্বরে তরিকুলের বাবা বলেন, ‘যাদের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু, তারা কোথায় ছিল সেই দিন। সেই দিন এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজন আমার ছেলের খবর দিয়েছিল এবং তার লাশ এনেছিল। তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল...
২৬ আগস্ট ২০২২
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় দীপন চন্দ্র নাথ (৪২) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরসরাই উপজেলার কমলদহ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও এক পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
৬ মিনিট আগে
রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।
২৩ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
৩২ মিনিট আগে