Ajker Patrika

জোয়ারের পানির নিচে ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান

শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
জোয়ারের পানির নিচে ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান

গোপালগঞ্জ জেলায় উৎপাদিত ধানের একটি বড় অংশ আসে চান্দার বিল থেকে। এই চান্দার বিলটি গোপালগঞ্জ জেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। ইউনিয়নগুলো হলো মুকসুদপুর উপজেলার উজানী, ননীক্ষীর, জলিরপাড়, কাশালিয়া, সদর উপজেলার সাতপাড় ও কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া। 

এর মধ্যে চান্দার বিলের বেশি অংশ পড়েছে উজানী ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে বড় বিল নামে আরও একটি বিল রয়েছে। এটিও এক সময় চান্দার বিলের অংশ ছিল। এই সকল বিল বেষ্টিত এলাকার ৯৫ ভাগ মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস ধান উৎপাদন। প্রায় ১৫ হাজার পরিবার এসব বিলে এক ফসলি বোরো ধান উৎপাদন করে সারা বছর তাদের সংসার চালায়। 

এ চান্দার বিল ও বড় বিলের সঙ্গে সরাসরি এমবিআর ক্যানেলের সংযোগ রয়েছে। বিগত কয়েক বছর এমবিআর ক্যানেল থেকে জোয়ারের পানিতে এই এলাকার বিলের কৃষি জমি তলিয়ে যায়। প্রতিবছর জোয়ারের পানি প্রবেশের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তবে এ বছর জোয়ারের পানি মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছে এলাকার মানুষ। 

জোয়ারের পানি মাত্রাতিরিক্তভাবে প্রবেশের ফলে তলিয়ে গেছে ওই সব এলাকার প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান। পানি বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খেতের কাচা ও আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছে অসহায় কৃষকেরা। তবে ধান কাটতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। একদিকে জোয়ারের পানিতে জমির ধান নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরের সংকট। প্রতি বছর ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বাগেরহাটসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে শ্রমিক ধান কাটতে আসলেও এ বছর তাদের দেখা মিলছে না। যে শ্রমিক এসেছে তাদের দ্বিগুণেরও বেশি মজুরি দিতে এমন অবস্থায় দিশেহারা কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। 

উজানী ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক শুক্রাচার্য বিশ্বাস বলেন, ‘এখানে জোয়ারের পানির ঢোকার কারণে আমার ২০ বিঘা জমির ধান শেষ হয়ে গেছে। জমি এখনো জলের তলেই রইছে। কোন কিষেন (ধান কাটা শ্রমিক) আমার জমির ধান কাটতিছেনা। একটা কিষেনরে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান দিতে হচ্ছে আর খাওন দিতে হচ্ছে তাতেও কিষেন পাওয়া যাইচ্ছেনা। এখন আমরা দিশেহারা। হাটতিছি কিন্তু হাঁটার বল নাই গায় (শরীরে)। জোয়ারের চাপে ধান পড়ে গেছে ও নষ্ট হয়ে গেছে। এহন সর্বশান্ত হয়ে গেছি আমি।’ 

অপর এক কৃষক আরিফ উকিল জানান, চান্দার বিল ও বড়বিলে আমার ১০ বিঘে জমি। প্রতিবছর জোয়ারের পানি এসে এইরকম তলায় যায়। ধান কেটে বাড়ি নিতে পারি না। আধাআধি থাইকে যায়। কিষেন পাচ্ছি না, কিষেনের দাম অতিরিক্ত। পানির ভেতর দিয়ে বোঝাও মাথায় উঠোনো যায় না। ধান বিক্রি করতি গেলি মন সাড়ে ৬শ,৭শ টাকার ওপর দেয় না। এতে খুবই দুরবস্থার মধ্যে আছি।

উজানী ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ২৫ বিঘে জমির ধান পানির নিচে পড়েছে। পানির নিচে পড়ে ধানে গ্যাজ (শিকড়) হয়ে গেছে। কাইটে বোঝা বইয়ে বাড়িতে নেওয়ার কায়দা (উপায়) নাই নৌকায় ও আসেনা। এখন পলিথিনে কইরে পানির ভেতর দিয়ে টাইনে ৩ কিলোমিটার দুরে আনতে হচ্ছে। কিষেন দিয়ে কাটাইতি যে খরচ আর ধান কাইটে যা নেই তাতে সে খরচের টাকা হচ্ছে না। আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়ছি। আমাদের এলাকায় একটাই ফসল সেটা হলো এই বোরো ধান। আর এই ধানের ওপর চান্দারবিল ঘোষিত এলাকার সবাই নির্ভরশীল। এখন সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে। সরকার যেন আমাদের দিকে একটু খেয়াল করে।’ 

উজানী ইউনিয়নের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি ৪ বিঘা ধান চাষ করেছি। আমাদের এই চান্দার বিলে একমাত্র বোরো ধানই ফসল আর কোনো ফসল হয় না। জোয়ারের পানি ঢোকার কারণে ধানের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। বেশির ভাগ ধানের ওপর দিয়ে গ্যাজ হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি না ঢুকলে আমাদের এ রকম ক্ষতি হতো না। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ যাতে বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট গেট করে দিয়ে জোয়ারের পানি আশা যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করে দেয়। এ বছর এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’

পানি বেড়ে যাওয়ায় খেতের কাচা ও আধা পাকা ধান কাটছেন কৃষকেরাফরিদপুরের সালতা থেকে ধান কাটতে আশা শ্রমিক মো.আজিজুল শেখ জানান, এই অঞ্চলের ধান পানিতে তলায় গেছে। ধান কাটতে আমাদের সমস্যা হয়। শুকনা জমি হলে এক বিঘা জমির ধান ৫ জনে কাটতে পারি। কিন্তু পানির নিচে থাকায় ৫ জনে ১০ কাঠার বেশি ধান কাটা সম্ভব হয় না। এতে জমির মালিক ও বাঁচানো আমরাও বাঁচিনা। 

উজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ শ্যামল কান্তি বোস জানান, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু জোয়ারের পানি কৃষকদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। বিলের মধ্য দিয়ে ১৫টি খাল রয়েছে। এ খাল দিয়েই মূলত জোয়ারের পানি বিলে প্রবেশ করে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খাল খনন ও তার মুখে স্লুইসগেট গেট করতে পারলে জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। এ ছাড়া বোশের খাল নামে যে খালটি রয়েছে তার পশ্চিম পাড় দিয়ে বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এখন খালটির পূর্ব পাড় দিয়ে বেড়ি বাঁধ করতে পারলে বিলের পশ্চিম প্রান্তের জমি জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পাবে।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় জানান, চান্দার বিলের ওই সব এলাকার জমি নিচু, একবার পানি উঠে গেলে সহজে নামে না। হারভেস্টার মেশিনও সেখানে চলে না। জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শ্রমিক সংকট সমাধানের জন্যও চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত