Ajker Patrika

গাজীপুরে ৩০০ ফুট রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত, কখন ঠিক হবে অনিশ্চিত

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫: ১৫
গাজীপুরে ৩০০ ফুট রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত, কখন ঠিক হবে অনিশ্চিত

গাজীপুরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, রেললাইনের ২০ ফুট কেটে ফেলার কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়। তাতে ৩০০ ফুটের অধিক রেললাইন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেললাইনের স্লিপার ও লোহার পাত দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। 

লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধারসহ লাইন সংস্কারের কাজ শুরু হলেও সেটি কখন শেষ হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. কামরুল আহসান। 

এ ঘটনা তদন্তে পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে বিকল্প পথে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে নিহতের পরিবারকে রেলওয়ের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এসব কথা জানান রেলওয়ে মহাপরিচালক কামরুল হাসান। তিনি বলেন, বিকল্প পথে ভৈরব হয়ে অন্যান্য রেল সড়কের সব ট্রেন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। রেললাইন সংস্কার করতে ঠিক কত সময় লাগবে, তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি নাশকতার ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্তে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি এবং রেলওয়ে অনুসন্ধান বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী সৌমিক শাওন কবিরের নেতৃত্বে সাত সদস্য এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটিসহ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

ডিজি মো. কামরুল আহসান বলেন, দুর্ঘটনায় ট্রেনের ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের নিচু জমিতে পড়ে যায়। এতে ট্রেনের লোকোমাস্টার এমদাদুল হক ও সহকারী লোকোমাস্টার সজীব মিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক মুরগি ব্যবসায়ী আসলাম হোসেন নিহত হয়েছেন। এতে সাত ট্রেনযাত্রী আহত হয়েছেন। 

উল্লেখ্য, আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া গ্রামের ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৬ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রায় ছয় বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন তিন ব্যাচের প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে অতিথি ও গ্র্যাজুয়েটদের আসন গ্রহণ, শোভাযাত্রা, স্বাগত বক্তব্য, ডিগ্রি উপস্থাপন ও গ্রহণ, শুভেচ্ছা ও সমাবর্তন বক্তব্য শেষে সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়। পরে বেলা আড়াইটায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়।

‎শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারের সভাপতিত্বে সমাবর্তনে প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও সমাবর্তন বক্তা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ন্যায় ও নৈতিকতার পক্ষে দাঁড়াতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আপনারা যে অধ্যবসায় ও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, সেটিই আপনাদের অন্যতম বড় অর্জন।’ ‎

উপাচার্য বলেন, ‘‎আজকের প্রযুক্তিনির্ভর ও পরিবর্তনশীল বিশ্বে টিকে থাকতে হলে জ্ঞানকে মানবতার সেবায় নিয়োজিত করতে হবে, ন্যায়ের পক্ষে রাখতে হবে কণ্ঠস্বর এবং সততাকে রাখতে হবে জীবনের মূলনীতি হিসেবে। আপনারা এমন এক জাতির প্রতিনিধিত্ব করছেন, যার সম্ভাবনা অপরিসীম। এই দেশ আপনাদের সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও ন্যায়পরায়ণ মানসিকতার দিকে তাকিয়ে আছে।’

সভাপতি অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, আজকের দিনটি শুধু শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত অর্জনের নয়, বরং এই ঐতিহাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান ও অবস্থানের স্বীকৃতি। বিশ্ববিদ্যালয় কেবল পেশাগত দক্ষতা অর্জনের স্থান নয়, এটি নৈতিকতা, বিবেক ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার শিক্ষাকেন্দ্র। এখানে ধারণা ও মূল্যবোধ গড়ে ওঠে, যা সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখে। ‎

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা

চৌধুরী রফিকুল আবরার আরও বলেন, বাংলাদেশে দক্ষ পেশাজীবীর প্রয়োজন থাকলেও শিক্ষা যেন কেবল চাকরির প্রস্তুতিতে সীমাবদ্ধ না থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো জনগণের আমানত, যেখানে অর্জিত জ্ঞান সমাজ ও দেশের কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়াই মূল লক্ষ্য।

শিক্ষার্থীদের নাগরিক দায়িত্ব, সচেতনতা ও সমালোচনামূলক চিন্তা ও সাহসিকতার সঙ্গে জনজীবনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ঐতিহ্য ও আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠান সব সময়ই ন্যায় ও বিবেকের পক্ষে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিয়ে এসেছে।

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘এই সমাবর্তন যেমন একদিক থেকে তোমাদের শিক্ষাযাত্রার সমাপ্তি, অন্যদিকে তোমাদের বৃহৎ দায়িত্ব অর্পণ করে। আজকের এই অর্জন তোমাদের আগামী দিনের দায়িত্ব পালনের সোপান। তোমরা সর্বস্তরে নিজ নিজ দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করবে।’

এস এম এ ফায়েজ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট প্রয়োজন। যারা এ দেশের উন্নয়নে সম্মুখসারিতে থেকে অবদান রাখবে। এটি এমন এক বিনিয়োগ, যা এই বিশ্বাস ধারণ করে যে, জ্ঞান ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধারণ করে না, বরং জনসাধারণের মঙ্গলের জন্যই। তোমরা জনসাধারণের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে, তাদের মঙ্গলে কাজ করবে। ক্রম পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে ওয়ার্ল্ড ক্লাস সিটিজেন থাকার জন্য নিজের মধ্য দিয়েই পরিবর্তনের শুরু করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ বিভিন্ন অনুষদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এবারের সমাবর্তনে ৬০, ৬১ ও ৬২ ব্যাচের ৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর আগে সর্বশেষ একাদশ সমাবর্তন ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গঙ্গাচড়ায় হাত-পা বাঁধা যুবকের মরদেহ উদ্ধার

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে মডেল থানা-পুলিশ।

আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের গিড়িয়ারপাড় এলাকার একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে তামাকখেতে পানি দিতে এসে এক কৃষক ডোবার পাশে ইউড্রেনের ভেতরে একটি জুতা দেখতে পান। পরে তিনি ইউড্রেনের ভেতরে একজন মানুষ পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানান।

স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে গিয়ে দেখেন, ইউড্রেনের ভেতরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ পড়ে আছে। পরে ৯৯৯ নম্বরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত যুবকের নাম রবিউল ইসলাম (৩০)। তিনি রংপুর সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কেরানীর হাট বখতিয়ারপুর এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে। রবিউল একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। পাশাপাশি জীবিকার তাগিদে মিশুক অটো চালাতেন।

রবিউলের বড় ভাই বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অটো বিক্রির উদ্দেশ্যে রবিউল বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আজ সকালে হাজিরহাট থানায় বিষয়টি জানাতে আসলে জানতে পারি, গঙ্গাচড়ার গিড়িয়ারপাড় এলাকায় একজন অজ্ঞাত যুবকের লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করি।’

এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর ছবুর বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী মাসুদের ভোট না করার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ দল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী মাসুদের ভোট না করার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ দল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে দেশব্যাপী নেতাদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা চললেও অবাক করা উল্টো কাণ্ড ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে। আসনটিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও হঠাৎ করে ভোট না করার ঘোষণা দিয়েছেন কিছুদিন আগে বিএনপিতে যোগদান করা ব্যবসায়ী নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদ।

গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাজির হয়ে ভোট না করার ঘোষণা দেন মাসুদ। তাঁর এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিএনপির নেতারা।

মাসুদুজ্জামান মাসুদের ওই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না তিনি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন। আমরা জানার চেষ্টা করছি ঠিক কী কারণে সরে দাঁড়ালেন তিনি।’

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন। আমরা এখন দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকব। দেখব দল কী সিদ্ধান্ত দেয়, দল যেই সিদ্ধান্ত দেবে, তা মেনে নেব। দিন শেষে আমরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করব।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে একই কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, ‘এটা হতাশাজনক। আমরা তাঁর জন্য মাঠ প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনে অবশ্যই তিনি জয়লাভ করবেন ইনশা আল্লাহ। এমন গোছানো মাঠ ছেড়ে মাসুদুজ্জামান কেন বেরিয়ে যাচ্ছেন, আমরা জানি না। তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন এই প্রত্যাশা করি।’

এদিকে মাসুদুজ্জামান মাসুদের মনোনয়নপ্রাপ্তির পরেও নির্বাচন না করার ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। গুঞ্জনের মধ্যে রয়েছে ৫ আসনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন হতে যাচ্ছে, জোটের কাছে আসন হস্তান্তর করা হবে ও হুমকি-ধমকির কারণে নিরাপত্তাঝুঁকি ইত্যাদি।

গত ৩ নভেম্বর প্রথম ধাপে ঘোষণা করা ২৩৭ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই আসনে আরও একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। সদ্য বিএনপিতে যোগদান করা ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে পরিচিত মাসুদুজ্জামানের মনোনয়ন ছিল বেশ অপ্রত্যাশিত। এর কারণ, ৫ আগস্টের আগেই তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে অর্থায়নের অভিযোগ তুলেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ৫ আগস্টের পর বিএনপির কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত হতে শুরু করেন তিনি। ধারাবাহিক প্রচার-প্রচারণা ও কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন।

একই আসনে অন্যান্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদসহ বেশ কয়েকজন। তবে মনোনয়ন ঘোষণার আগেই অধিকাংশ বিএনপির নেতাকে তাঁর পক্ষে নিয়ে আসতে সক্ষম হওয়ায় মনোনয়ন জোটে তাঁর ভাগ্যেই।

মনোনয়ন লাভের পরপরই তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছিলেন মনোনয়নবঞ্চিতরা। মাঠে আন্দোলনে না নামলেও ঘরোয়া বৈঠকে তাঁর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। তাঁকে ওসমান পরিবারের দোসর আখ্যা দেন। যদিও বিরোধী সেই বলয় ভেঙে কয়েকজন যোগ দিয়েছেন মাসুদুজ্জামানের নির্বাচনী ক্যাম্পে। পুরো ৫ আসন যখন মাসুদুজ্জামানের প্রায় নিয়ন্ত্রণে, ঠিক তখনই নির্বাচন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে বিস্ময় তৈরি করেছেন জেলাজুড়ে।

কে এই মাসুদুজ্জামান

মাসুদুজ্জামান মাসুদ শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত। মডেল ডি ক্যাপিটাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। ছিলেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এবং বিকেএমইএর পরিচালক। এ ছাড়া বেসরকারি সিটিজেনস ব্যাংকের পরিচালক তিনি। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফিফার তালিকাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। গত বিশ্বকাপ ফুটবলে তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুলসংখ্যক জার্সি ও লোগো সরবরাহ করা হয়েছিল।

ব্যবসার বাইরে ক্রীড়াজগতেও বিচরণ রয়েছে মাসুদুজ্জামানের। তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান। সম্প্রতি বিসিবি নির্বাচনে তাঁর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ সময়ে সরে দাঁড়ান। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্যও মাসুদ।

যেসব কারণ বললেন মাসুদুজ্জামান

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন মাসুদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনটা করব না, আমি মনোনয়ন ফরম কিনব না। পারিবারিক কারণে এবং নিরাপত্তাসহ একাধিক কারণে এই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি। সব কথা হয়তো এখানে বলা যাবে না। কিন্তু আমি বাধ্য হয়েছি। আমি আমার নেতা-কর্মী ও আমার শহর-বন্দরের বাসিন্দাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এই আসনে যিনিই নির্বাচন করবেন, তাঁর পক্ষে আমার সমর্থন থাকবে।’ এ সময় সংবাদকর্মীরা কারণ জানার জন্য একাধিক প্রশ্ন করলেও তিনি কৌশলী উত্তর দেন।

মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘আমি জানি, আমার এই সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মীরা সবাই কষ্ট পাবে। কিন্তু আমার সিকিউরিটি কনসার্ন হচ্ছে আমার পরিবার। আমার পরিবারের সাথে এই জায়গায় নেগোসিয়েশন করতে পারছি না। তবে বিষয়টা এমন না যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না সেই কারণে সরে যাচ্ছি। এখানে ব্যক্তিগত বিষয় আছে, যা বলতে পারছি না।’

মনোনয়ন পাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। নারায়ণগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এর জন্য মোটা অঙ্কের বাজেট প্রস্তুত করেছে তারা। আমি আমার দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিষয়টি অবগত করেছি।’

তবে মাসুদের সেই সংবাদ সম্মেলনের পরে এমন কোনো মামলা হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিয়ানমারে পাচারকালে সিমেন্টবোঝাই ২ ট্রলারসহ আটক ২৩

কক্সবাজার প্রতিনিধি
সিমেন্টবোঝাই ট্রলারসহ আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
সিমেন্টবোঝাই ট্রলারসহ আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

সাগরপথে মিয়ানমারে অবৈধভাবে পাচারের সময় কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় অভিযান চালিয়ে দুটি সিমেন্টবোঝাই ট্রলারসহ ২৩ জনকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এ সময় দুই ট্রলার থেকে ১ হাজার ৭৫০ বস্তা সিমেন্ট উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নৌবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদে একটি পাচারকারী চক্রের ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচারের খবর পায় নৌবাহিনী। এ সময় বঙ্গোপসাগরে টহলে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ শহীদ মহিবুল্লাহ কুতুবদিয়া বাতিঘর হতে ৪৬ মাইল অদূরে সন্দেহজনক দুটি কাঠের ট্রলার দেখতে পায়। নৌবাহিনীর জাহাজ ট্রলার দুটি তল্লাশির লক্ষ্যে থামার সংকেত দিলে পালানোর চেষ্টা করে।

পরে নৌবাহিনীর জাহাজ মহিবুল্লাহ ধাওয়া করে ‘এফবি আজিজুল হক’ ও ‘এফবি রুনা আক্তার’ নামের দুটি ট্রলার আটক করে। আটক ট্রলারগুলো তল্লাশি করে ১ হাজার ৭৫০ বস্তা বাংলাদেশি ডায়মন্ড সিমেন্ট ও ৩২টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ সময় চোরাকারবারি দলের ২৩ সদস্যকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা নৌবাহিনীকে জানিয়েছেন, অধিক মুনাফা লাভের আশায় সিমেন্টগুলো মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে জব্দ করা মালামাল ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পতেঙ্গা মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত