Ajker Patrika

তপ্ত প্রিজন ভ্যানে ঘামে ভেজা কষ্ট

রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ৩১ মে ২০২৪, ১১: ৩৬
তপ্ত প্রিজন ভ্যানে ঘামে ভেজা কষ্ট

প্রিজন ভ্যান থেকে একজন একজন করে নামছেন। শরীর ও পোশাক ঘেমে জবজবে। কষ্টের ছাপ স্পষ্ট সবার চোখমুখে। নেমেই যেন পরশ চাইছিলেন বাতাসের। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁদের একটি ফটকের ভেতরে ঢোকানো হলো।

এই দৃশ্য পুরান ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণের একটি হাজতখানার বাইরের। রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও কারাগার থেকে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হচ্ছিল। কোনোটি এসেছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে, কোনোটি কেরানীগঞ্জের কারাগার থেকে। কোনোটি এসেছে ধামরাই, সাভার থেকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) থানাগুলো থেকেও এসেছে প্রিজন ভ্যান। কোনোটিতে ২০ জন, কোনোটিতে আনা হয় ৩৬ জনকে। তাঁদের অনেকের শরীরই ঘর্মাক্ত।

ধাতবের (ইস্পাত) তৈরি ১০ ফুট উঁচু প্রিজন ভ্যানে কোনো ফ্যান নেই। ওপরের দিকে এক ফুট প্রস্থের লম্বালম্বি লোহার জাল রয়েছে। ভ্যানের ভেতরে আলো-বাতাস চলাচলের এটাই একমাত্র পথ। তবে ওই পথ অনেকটা রুদ্ধ হয়ে যায় ভারসাম্য রক্ষার জন্য জাল ধরে আসামিদের দাঁড়ানোর কারণে। ওই জালের ফাঁক দিয়ে তাঁরা বাইরের মুক্ত পৃথিবীও দেখেন। ফলে ভ্যানে গরম থাকে বাইরের চেয়ে বেশি। গরমে পানির পিপাসা পেলেও মেটানোর ব্যবস্থা নেই। পুরোনো ভ্যানগুলোতে বসার স্থানও নেই।

জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের কারা উপমহাপরিদর্শক মনির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই প্রিজন ভ্যানগুলো করা হয়।

সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। নতুন প্রিজন ভ্যানগুলোতে আরও ভালো ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা চলছে।

ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণে ১৯ মে সকালে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক প্রিজন ভ্যান আসামি নিয়ে এসেছে। তাঁরা ভ্যানের জাল ধরে দাঁড়িয়ে বাতাস নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসা প্রিজন ভ্যান থেকে সাব্বির নামের একজন বলেন, এই ভ্যানে ৩০-৪০ জন আছেন। গরমে ঘেমে গোসল হয়ে গেছে। তাঁকে আনা হয়েছে ছিনতাই মামলায় হাজিরার জন্য। 
জিহাদ নামের আরেকজন বলেন, ভেতরে অনেক গরম। পানির পিপাসা পায়। পানি ও খাবার দেয় নামানোর পর।

গাড়ি ছিনতাই মামলার সন্দেহভাজন আলী হোসেন বললেন, প্রচণ্ড গরমে গাদাগাদি করে ৪০-৪২ জনকে আনা হয়েছে।

২০ মে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে একটি প্রিজন ভ্যান আসে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে। নামানোর সময় দেখা যায়, একজন হাতে থাকা শার্ট পরছেন। পুরো শরীর ঘেমে গেছে। অনেকের গায়ে ঢিলেঢালা পোশাক। এর ঠিক আগেই কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসা একটি প্রিজন ভ্যান থেকে নেমেছেন ৩৬ জন। সবার শরীর ছিল ঘর্মাক্ত। 
কারাগার থেকে আসা প্রিজন ভ্যানের দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, ভ্যানে গরম একটু বেশি লাগে। তবে এ নিয়ে আসামিরা কিছু বলেন না।

ঢাকার নিম্ন আদালতের চারটি হাজতখানার সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর কারাগারসহ ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানা থেকে প্রিজন ভ্যান, ডিবি পুলিশ ও র‍্যাবের গাড়িতে দিনে গড়ে ৭০০ আসামিকে আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়। এর মধ্যে কারাগারগুলো থেকে প্রায় ২০টি প্রিজন ভ্যানে গড়ে ৪০০ জনকে আনা-নেওয়া করা হয়। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দিনে সাত-আটটি প্রিজন ভ্যানে ২৫০-৩০০ জন, কাশিমপুরের তিনটি কারাগার থেকে সাতটি প্রিজন ভ্যানে দিনে গড়ে ১২০ জনকে আনা-নেওয়া করা হয়। এর মধ্যে একটি ভ্যানে থাকেন গড়ে ১০-১২ জন নারী আসামি।

পুরোনো প্রিজন ভ্যানে বসার ব্যবস্থা না থাকলেও নতুন ভ্যানগুলোতে বসার জন্য দুই পাশে লোহার বেঞ্চের মতো রয়েছে।

প্রচণ্ড গরমে যাতায়াতে আসামিদের ঘর্মাক্ত অবস্থার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, এই কারাগার থেকে সকাল ৬টার দিকেই আসামি পাঠানো হয়। তখন তেমন গরম থাকে না। ফেরার সময় গরম পড়ে। তবে এ নিয়ে কেউ তেমন অভিযোগ করেন না।

জানা গেছে, দেশে মানবদেহের জন্য সহনশীল তাপমাত্রা প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাইরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলেও প্রিজন ভ্যানের ভেতর তা আরও বেশি অনুভূত হয়। চলতি বছর ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও উঠেছিল, যা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। সেদিনও আসামিদের একইভাবে আনা-নেওয়া করা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক কুমার মজুমদার বলেন, গাড়ির ধাতব বডি থাকলে তাপমাত্রা বেশ বেড়ে যায়। এক জায়গায় বেশি মানুষ থাকলে তাপমাত্রার সঙ্গে আর্দ্রতাও বাড়ে। ভালো ভেন্টিলেশন ও ফ্যান না থাকলে তা অসহ্যকর হয়। তবে আসামি পরিবহনে নিরাপত্তার বিষয়টিও রয়েছে। গরমে একটু বেশি বাতাস চলাচল ও বাতাসের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি এক ভ্যানে কমসংখ্যক আসামি বহন করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, অপরাধী বা অভিযুক্ত যে-ই হোক, তাঁদের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা দিতে হয়। একজন অপরাধীরও মানবাধিকার রয়েছে। তাই তাঁর মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে নজর রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তিনি বলেন, ‘গরমের সময় আসামিদের প্রিজন ভ্যানে বহনের জন্য ন্যূনতম সুবিধা থাকা প্রয়োজন। তবে আমাদের সক্ষমতা নিতান্তই কম, অবশ্য আমরা তা নিয়ে চিন্তাও করি না। রাষ্ট্রকে আরও সচেতন হতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত