Ajker Patrika

‘আপনার আব্বা অনেক জ্বালায়!’

আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৯: ১৭
‘আপনার আব্বা অনেক জ্বালায়!’

রাত তখন ১১টা। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও আব্বুর ঘরে গেলাম ওষুধগুলো দিতে। জানুয়ারির শীতের রাত। অর্ধেকটা লেপ গায়ে তুলে আব্বু খাটের ওপর বসে আছেন। এক হাতে ওষুধ, অন্য হাতে পানির বোতল এগিয়ে দিলাম, ‘আব্বু খাও’। ‘হুম’ বলে এক হাতে ওষুধ আর অন্য হাতে পানির বোতল নিয়ে একমুহূর্ত সময় না নিয়েই উল্টো দিকে শুয়ে পড়লেন আব্বু। তাঁর পুরো শরীর থরথর করে কেঁপে উঠল। বোতল গড়িয়ে জল পড়ল মেঝেতে। আমি চিৎকার করেছিলাম কি না, মনে নেই। দুহাতে তাঁকে জড়িয়ে ধরে ‘কী হয়েছে’, ‘কী হয়েছে’ করছিলাম। অদৃশ্য কিছু বুকে ভর করেছে—এমন অভিব্যক্তি আব্বুর চোখমুখে। এই দৃশ্য পরিবারের আর কেউ দেখেনি। চিৎকার করে বোনকে ডাকলাম। বোন ভাইদের ডাকল। খাওয়া ফেলে হাত না ধুয়েই তারা হাজির। আব্বু ততক্ষণে একটু স্বাভাবিক, তবে এলোপাতাড়ি বুকে হাত দিচ্ছেন। এরপর…

খণ্ড খণ্ড জমাট রক্ত বের হলো আব্বুর মুখ দিয়ে। সামলানো যাচ্ছে না। বালতিভর্তি ঘন রক্ত তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমার বাবার কলিজাটাই বুঝি খণ্ড খণ্ড হয়ে বেরিয়ে আসছে! তিনি মূর্ছা যেতে যেতেও যাচ্ছেন না। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলো। এল। অ্যাম্বুলেন্সে করে এলেন মাত্র দুজন। একজন ড্রাইভার, অন্যজন সাহায্যকারী। ওই একজন সাহায্যকারী একটা হুইলচেয়ার নিয়ে ওপরে এলেন। আব্বুর শরীর ততক্ষণে ছেড়ে দিয়েছে। আমি জানি, ঠিক ওই মুহূর্তে আমি ছাড়াও বাড়ির সবাই টের পেয়েছিলেন, এই মানুষটাকে বুঝি আমরা হারাতে বসেছি…।

এক.
অ্যাম্বুলেন্সে মাত্র একজন সাহায্যকারী এসেছেন রোগীকে নিতে, ভাবা যায়? আব্বুকে দুই ভাই আর আমি মিলে হুইলচেয়ারে বসালাম। বাড়িতে লিফট নেই। আব্বুসহ এই হুইলচেয়ার নামাতে হবে সিঁড়ি দিয়ে উল্টো করে। আমি চিৎকার করছি, ‘না না, আব্বু পড়ে যাবে!’ ভাইয়েরা বললেন, ‘কিচ্ছু হবে না পারব।’ দুই ভাই মিলে নামাতে লাগলেন। বড় ভাই সাহায্যকারীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই, ড্রাইভার সাহেব কি একটু আসতে পারবেন? একটু ধরলে ভালো হয়।’ উনি গিয়ে ড্রাইভারকে জানালে ড্রাইভার অসম্মতি জানান ওপরে আসতে। অগত্যা নিজেদেরই নামাতে হলো। রাত ১২টায় দানবের মতো হুইসেল দিয়ে গড়াতে লাগল অ্যাম্বুলেন্সের চাকা। সে সময় পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী মানুষ মনে হচ্ছিল নিজেকে।

দুই.
অ্যাম্বুলেন্স থামল বারডেমে। আব্বু ততক্ষণে ‘একটু পানি খাব, একটু পানি খাব’ বলছেন। কিন্তু পারিবারিক বন্ধু ডাক্তার কিছুক্ষণ আগেই বলেছেন, পানি দেওয়া যাবে না, ব্লিডিং বাড়বে। দায়িত্বরত ডাক্তার ব্লাড প্রেশার মাপ‌লেন ও ইসিজি করলেন। আব্বুকে বললেন, ‘বাবা পানি দিচ্ছি, আগে টেস্টটা করে নিই।’ ডাক্তার অস্থির হয়ে বললেন, ‘এখনই আইসিইউ লাগবে।’ উনি পায়চারি করতে করতে সহকারীকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি স্যালাইন দাও।’ ‘আমাদের আইসিইউ খালি নেই।… নয়তো এখনই কলাপস করবে।’ আমরা ছুটলাম হলি ফ্যামিলির উদ্দেশে।

তিন.
শীতের রাত। ট্রলিতে আব্বুর শরীর নেতিয়ে পড়ে আছে। আইভরি রঙের একটা চাদর নিয়ে এসেছিলাম বাসা থেকে। সেটা গায়ে তুলে দিলাম। দুই ভাই রিসেপশনে কথা বলছে। দায়িত্বরত অ্যাটেনডেন্ট বলছেন, ‘আইসিইউ বেড খালি আছে। পার বেড ২৫ হাজার। ভর্তি করবেন?’ বাঁকা হাসি তাঁর ঠোঁটে। আমি আব্বুর দিকে তাকালাম। আব্বু একদিকে তাকিয়ে আছেন। ‘পানি দাও’ আবার বললেন। আব্বুর ডিমেনশিয়া ছিল। তিনি হিসাব রাখেননি এ যাবৎ কয়বার বলেছেন এক কথা…। পেমেন্ট করার পর ভদ্রলোক বলে দিলেন আইসিইউ বেডের হদিস। দুজন আয়া চোখমুখে বিরক্তি নিয়ে আব্বুর গায়ে হাসপাতালের সাদা চাদর ছড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘এই শীতের মধ্যে কম্বল আনে নাই এরা!’

চার. 
আব্বু আইসিইউর অজানা ঘরে আড়াল হয়ে গেলেন। বাইরের বেঞ্চে আমরা বসে। রাত সোয়া ৩টা তখন। আমরা তিন ভাইবোন আর পারিবারিক বন্ধু ডাক্তার সেখানে। বড় ভাই রয়ে গেলেন। বাকি দুই ভাইবোন চলে এলাম। বাড়ি ফিরে মনে হলো, ঘরে আলো কেমন কমে গেছে। সে কী দীর্ঘ রাত। আম্মু তখন এক মাসের রোগী। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়েছে আবার। অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে গেছেন। তাঁর গা ঘেঁষে শুয়েছি। আম্মুর চুলে ভাটিকা হেয়ার অয়েলের ঘ্রাণ। অতীত ব্যাপারটা অদ্ভুত—চাইলে চোখের সামনে ধরা দেয়। কিন্তু ভবিষ্যৎটা দেখা যায় না।

ক্লাস ফাইভে যখন উঠলাম, তখন চট্টগ্রাম থেকে একবার আমার বড় বোন এল। আব্বু-আম্মুর জন্য নিয়ে এল ভাটিকা হেয়ার অয়েল। কী সুন্দর ঘ্রাণ তেলের, আবার মাথা ঠান্ডাও হয়ে যায়! আব্বুর রাতে ঘুম হতো না ভালো। ঘুমানোর আগে মাথার চাঁদিতে দেওয়ার জন্যই এনেছিল আমার বোন। এতে মাথা ঠান্ডা হবে আর আব্বু ঘুমাতেও পারবেন। কিন্তু ওই তেল আমার দেওয়া নিষেধ ছিল। কারণ ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তবে মাঝেমধ্যে পড়ার সময় মাথা ঘোরাচ্ছে এই বাহানায় ওই তেল দেওয়ার সুযোগ পেতাম।

ভাটিকার ঘ্রাণটাই আমাকে টানত মূলত। সে সময় আম্মু চুলে তেল দেওয়ার কথা বললেই বলতাম, যদি ভাটিকা দিতে দাও তাহলে তেল দেব, নয়তো না। আম্মু তখন অকারণ বকবক করতেন। কিন্তু তাঁর মনে হতো তিনি যৌক্তিক কথা বলছেন। আব্বু আম্মুকে বলতেন, দাও না। কী হবে দিলে? তখন আব্বু বসতেন খাটের ওপরে আর আমি রান্নাঘর থেকে মোড়া এনে খাটের কাছে আব্বুর সামনে বসতাম। আব্বু পেছন থেকেই আমার মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি করে চুলকে দুই ভাগ করতেন। তারপর এক এক পাশ করে তেল লাগাতেন। বলতেন, তেল হচ্ছে চুলের খাবার। তুমি না খেলে যেমন পুষ্টি পাবে না, তেমনি চুলও তেল না পেলে পুষ্টি না পেয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।

মাঝেমধ্যে তেল দিতে দিতে একটা হিন্দি গানও গাইতেন আব্বু। তখন জানতাম না গানটা আসলে কার বা কোন সিনেমার। গানটা হচ্ছে, ‘চান্দনি জেইসা রাঙ হ্যায় তেরা, সোনে জেইসে বাল/ এক তুহি ধানবান হ্যায় গোরি, বাকি সাব কাঙাল।’
এই রাত কখন শেষ হবে…।

পাঁচ.
পরদিন হাসপাতালে গিয়ে নানা বিধিনিষেধের মধ্যে একবার আব্বুর সঙ্গে দেখা করতে পারলাম। তাঁর বুক অবধি তুলে দেওয়া সবুজ কম্বল। এক হাতে স্যালাইন, আরেক হাতে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। বাইরে ডোনারদের লাইন। আব্বুর দুই হাত বেডের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আমাকে বললেন, ‘বাবা খুলে দাও। আমি এক কাত হয়ে ঘুমাব।’ আমি সিস্টারকে প্রশ্ন করলাম, ‘আব্বুর হাত-পা বেঁধে রেখেছেন কেন?’ বললেন, ‘আপনার আব্বা অনেক নড়াচড়া করে। খালি বলেন খুলে দাও। এত নড়াচড়া করলে ব্লাড স্যালাইন সব বেরিয়ে একাকার হবে। ওনাকে বারবার বলছি, তা-ও একই কথা বলেন!’ আমি জানালাম, ‘আমার বাবার ডিমেনশিয়া আছে। তিনি জানেন না ঠিক কতবার কী কথা বলছেন।’ তাঁদের তাড়াহুড়োয় আব্বুর কপালে একটু চুমু খেয়েই বেরিয়ে গেলাম। আব্বু কী বললেন শুনলাম না। এটাই শেষ চুমু।

ছয়.
করিডরে বসে আছি। আইসিইউ থেকে একজন নার্স বেরিয়ে এলেন। আমার ভাই তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাবার কী অবস্থা?’ নার্স এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে বললেন, ‘আপনার আব্বা অনেক জ্বালায়!’ ভাই জিজ্ঞাসু চোখে তাঁর দিকে তাকালেন। তিনি আবারও বললেন, ‘এক কথা বারবার বলেন।’ আমি তাকিয়ে রইলাম। রোগ সম্পর্কে বুঝতে পেরেও একজন কীভাবে এভাবে বলে? এ ঘটনার পর আব্বুকে প্যাথেড্রিন দেওয়া হয়। চোখ খোলা অবস্থায় আর দেখিনি।

সাত. 
পরদিন সকালে আব্বুর নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। তাঁর মাথার তালুতে বারবার স্পর্শ করছিলাম। আব্বু কি সত্যিই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন? মনে হচ্ছিল, পুরো পৃথিবীতে আব্বুর মৃতদেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি একা। কী অদ্ভুত, না? বাবা ছাড়া বেঁচে থাকা যায়? অথচ ওরা কী অবলীলায় বলে দিল, ‘আপনার আব্বা অনেক জ্বালায়!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

দক্ষিণ ভারতের কোচি শহরের সরু, নুড়ি-পাথর বিছানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চোখে পড়ে ছোট্ট একটি ফলক। তাতে লেখা, ‘সারা কোহেনের বাড়ি।’ জনাকীর্ণ এই রাস্তাটির নাম জু টাউন। কয়েক দশক আগেও এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বসবাস করত ইহুদি পরিবার। প্রাচীন সামগ্রী, পারস্যের কার্পেট আর মসলার দোকানে ঠাসা এই এলাকাই একসময় পরিচিত ছিল কোচির ইহুদি পাড়া হিসেবে।

এই রাস্তাতেই রয়েছে থাহা ইব্রাহিমের দোকান। কোচির শেষ ইহুদি নকশার দোকান। এক তপ্ত দুপুরে কয়েকজন মার্কিন পর্যটক দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, ৫৫ বছর বয়সী থাহা মনোযোগ দিয়ে একটি কিপ্পা (ইহুদি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী ছোট, বৃত্তাকার টুপি যা তারা ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে এবং নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে পরে থাকে) সেলাই করছেন। দোকানের দেয়ালে ঝোলানো একটি ছবির সামনে পর্যটকেরা ভিড় জমালেন। ছবিটি ২০১৩ সালের। তৎকালীন ব্রিটিশ যুবরাজ (বর্তমানে রাজা) চার্লস জু টাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন।

ছবির দিকে আঙুল তুলে থাহা বললেন, ‘ওই ইনিই সারা আন্টি।’ এরপর যোগ করলেন, ‘এটা ছিল সারা কোহেনের বাড়ি ও তাঁর সেলাইয়ের দোকান।’

আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি দায়িত্ব নেন তিনি।

থাহা বলেন, ‘আমি ছিলাম তাঁর ছেলের মতো। নিজের মায়ের চেয়েও বেশি সময় তাঁর দেখাশোনা করেছি। আমি তাঁর জন্য কোশার (ইহুদিদের এক ধরনের খাবার) আর মাছ কিনে আনতাম। সময় কাটাতাম আর দোকান বন্ধ করার পরই কেবল ফিরতাম।’

এক ইহুদি নারী আর ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির এক মুসলমান পুরুষের এই বন্ধুত্ব প্রায় চার দশক ধরে টিকে ছিল। মৃত্যুর আগে সারা তাঁর দোকানটি থাহার নামে উইল করে যান। থাহা প্রতিজ্ঞা করেন, জু টাউনে তিনি সারার স্মৃতি আর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখবেন। যেখানে আঠারো শতকে প্রায় আড়াই হাজার ইহুদি বাস করতেন, সেখানে এখন কেবল একজন অবশিষ্ট। থাহা বলেন, ‘এক দিক থেকে, এখানকার ইহুদি সম্প্রদায় যাতে বিস্মৃত না হয়, আমিও সেই চেষ্টাই করছি।’

কেরালায় ইহুদিদের আগমনের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত রাজা সোলোমনের সময়ের, প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার। প্রথমে তাঁরা মালাবার উপকূলে ক্রাঙ্গানোরে, বর্তমান কোডুঙ্গাল্লুরের কাছে প্রাচীন বন্দরের আশপাশে বণিক হিসেবে বসতি গড়েন। পরে তাঁরা কোচিতে চলে আসেন। এই প্রাচীন বসতির কারণে তাঁরা পরিচিত হন মালাবারি ইহুদি নামে।

এর বহু পরে, ১৫৯২ সালে, স্প্যানিশ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা সেফার্ডিক ইহুদিরা কেরালায় পৌঁছান। পর্তুগাল, তুরস্ক আর বাগদাদ হয়ে তাঁরা কোচিতে বসতি গড়ে তোলেন এবং পরিচিত হন পারাদেসি বা বিদেশি ইহুদি নামে। মালাবারি ও পারাদেসি—এই দুই ধারার মানুষ মিলেই পরিচিত হন কোচিন ইহুদি নামে।

ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে
ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে

পর্তুগিজ, আরব, ব্রিটিশ আর ওলন্দাজদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যকেন্দ্র কোচিতে তাঁরা রাজাদের সুরক্ষায় নিরাপদে বসবাস করতেন। বিশ শতকের গোড়ায় সারা কোহেনের জন্ম। তখন জু টাউন ছিল প্রাণবন্ত। সারা আর তাঁর স্বামী জ্যাকব—যাঁর জন্মও এখানেই—১৯৪৪ সালে বিয়ে করেন।

আশির দশকের গোড়ায় আচমকাই থাহার সঙ্গে কোহেন দম্পতির পরিচয় হয়। তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেওয়া থাহা তখন পর্যটকদের কাছে পোস্টকার্ড বিক্রি করে জীবিকা চালাতেন। জু টাউনে আসা পর্যটকেরা নিয়মিতই যেতেন পারাদেসি সিনাগগে, যা ১৫৬৮ সালে কোচিনের রাজার দেওয়া জমিতে নির্মিত।

থাহা বলেন, ‘তখন প্রচুর পর্যটক আসত আর আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পোস্টকার্ড বেচতাম।’ এক রোববার, যে গুদামঘরে থাহা পোস্টকার্ড রাখতেন, তার মালিক না আসায় জ্যাকব তাঁকে তাঁদের বাড়িতে জায়গা দেন। সারা এতে খুশি ছিলেন না। থাহার মনে আছে, প্রায় তিন বছর তিনি তাঁর সঙ্গে তেমন কথা বলেননি।

ইব্রাহিম থাহা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি তাঁর স্বামীর ছোটখাটো কাজ করে দিতাম। অথবা যখন তাঁদের জানালার বাইরে থেকে টিভিতে ক্রিকেট দেখতাম, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলতেন।’ একদিন সারা তাঁকে সিনাগগের জন্য একটি কুশন কভার সেলাই করতে সাহায্য করতে বলেন। তখনই বোঝা যায়, থাহার মধ্যে সেলাই ও নকশার সহজাত দক্ষতা আছে। সম্ভবত দরজি বাবাকে ছোটবেলা থেকে সাহায্য করার ফলেই। তিনি বলেন, ‘আমি যে নকশা আঁকতে আর সেলাই করতে পারি, তা জানতামই না।’

উনিশ বছর বয়সে থাহা সারাকে সাহায্য করেন তাঁদের বৈঠকখানা থেকে ‘সারার হস্ত-সেলাই’ নামে একটি দোকান খুলতে। দোকানটি আজও সেই নামেই পরিচিত। সেখানে বিক্রি হতো কিপ্পাহ, চাল্লাহ কভার আর মেনোরাহ। তিনি বলেন, ‘তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন।’

এই বন্ধুত্ব নিয়ে থাহা বেশ দার্শনিক। তিনি বলেন, ‘জু টাউনে ইহুদি আর মুসলমানেরা একে অপরের সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা একে অপরের প্রতি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সারা আন্টি আর জ্যাকব আংকেল কখনোই আমাকে বহিরাগত মনে করতে দেননি, যদিও আমাদের পটভূমি আলাদা ছিল।’

সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

থাহার বাবা-মা এই সম্পর্কে আপত্তি করেননি। তাঁরা দেখেছিলেন, কোহেন পরিবার তাঁদের ছেলেকে জীবনের একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সময়েই কোচির ইহুদি জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। চল্লিশের দশকে যেখানে ছিল প্রায় ২৫০ জন, নব্বইয়ের দশকে তা নেমে আসে ২০ জনে। এখন মাত্র একজন আছেন—৬৭ বছর বয়সী কিথ হ্যালেগুয়া।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক পরিবার সেখানে চলে যায়। কেরালার ইহুদিদের ওপর ডক্টরেট থিসিস করা আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘কোচিন ইহুদিরা হয়তো স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ধারণায় ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। তবে উন্নত জীবনের আকর্ষণের মতো অর্থনৈতিক কারণও ছিল। তাঁরা এটাও অনুভব করেছিলেন যে কেরালায় উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব ছিল।’

ধর্মীয় নিপীড়ন কখনোই তাঁদের কোচি ছাড়ার কারণ ছিল না। শহরটি শত শত বছর ধরে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। কিছু বয়স্ক ইহুদি থেকে গিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে নিঃসন্তান কোহেন দম্পতিও ছিলেন। ১৯৯৯ সালে জ্যাকব মারা যাওয়ার আগে থাহাকে সারার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান। তখন থাহা বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক।

থাহা বলেন, ‘আমি জ্যাকব আংকেলকে বলেছিলাম, সারা আন্টি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তবে আমি তাঁর দেখাশোনা করব। আমি তাঁকে সুযোগ দিতে বলেছিলাম, কারণ ইসলামে মৃতপ্রায় ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। না করলে পাপ হয়।’

সারার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে থাহা তাঁর পরিবারকে জু টাউনের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। সারা মারা গেলে তিনি তাঁর কফিনের জন্য স্টার অব ডেভিড (ইসরায়েলি পতাকায় অঙ্কিত তারকা) আঁকা একটি কফিন কভার তৈরি করান। আজও তিনি নিয়মিত ইহুদি কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে যান। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক কোচি ঘুরতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেক ইহুদিও থাকেন। আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইহুদিরা জু টাউনে আসেন এক ধরনের আপন অনুভব করার জন্য।’

তিনি বলেন, এখানকার ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মধ্যেও নিজেদের পরিচয় বজায় রেখেছিলেন। একই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ভাষা মালয়ালমই ছিল তাঁদের দৈনন্দিন ভাষা। থাহা যেভাবে সারা কোহেনের ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান কীভাবে এক ইহুদি নারীর যত্ন নিয়েছেন, তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি এখনো সারা-র ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো বজায় রেখেছেন।’

থাহা দোকানটিকে ঠিক সেভাবেই রেখেছেন, যেমনটি সারা চালাতেন। ইহুদিদের সাব্বাথ উপলক্ষে তিনি শনিবার দোকান বন্ধ রাখেন। ইব্রাহিম থাহা আরও বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মুসলমান, কিন্তু সারা আন্টির জন্য এটা খুব জরুরি ছিল বলে আমি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রদীপ জ্বালাই। কারণ, এই ক্ষণ সাব্বাথের শুরু হওয়াকে চিহ্নিত করে। এই বিষয়টি আমার কাছে এটা ধর্ম সংক্রান্ত নয়, পুরোটাই মানবিক।’

বিবিসি থেকে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত