Ajker Patrika

যৌথখামারে

জাহীদ রেজা নূর
যৌথখামারে

প্রিপারেটরির পড়াশোনা শেষ করার পর দু মাস থাকে ছুটি। এ সময় কী করা যায়? বড় ভাইয়েরা পরামর্শ দিলেন—যৌথখামারে কাজ করতে, অথবা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে। অর্থাৎ, কৃষক বা শ্রমিক হওয়ার এটাই সময়। এক মাস কাজ করলে কিছু টাকা-পয়সার সংস্থান হতে পারে। তখন রাশিয়ায় জেনিত নামে একটি অসাধারণ ভালো ক্যামেরা কেনা যেত। ১২০ রুবল দাম। সে সময় একেকজন শিক্ষার্থী ৯০ রুবল স্টাইপেন্ড পেতেন। তার মানে এক মাসের স্টাইপেন্ডের চেয়েও বেশি দাম ক্যামেরাটার। কিন্তু কাজ করার পর যে টাকা পাওয়া যাবে, তা দিয়ে তো কেনা যাবে একটা ক্যামেরা! এ চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল। হোক না রাশিয়ান ক্যামেরা, ক্যানন বা নাইকনের মতো ক্যারিশমা নেই তার। কিন্তু তার লেন্স? তার ছবির স্পষ্টতা? যেকোনো ক্যামেরাকেই তো জেনিত হারিয়ে দেবে। আমরা নিজেদের সান্ত্বনা দিতাম এভাবে: সোভিয়েত ইউনিয়নে তো সাদা-কালো ছবি তুলতে হবে। রঙিন ফিল্ম নেই বললেই চলে। যদিও কখনো রঙিন ফিল্ম (আগফা) কেনার সুযোগ হতো, তবুও সে ফিল্মে যে ছবি উঠত, তা ছিল ঘোলাটে। সোভিয়েত নাগরিকেরা পত্রিকা, জার্নালের পাতা ছাড়া ভালো ছবি দেখার সুযোগ পেত না। এগুলো এখন অলীক কথাবার্তা বলে মনে হতে পারে। 

যাই হোক, আমাদের নির্মাণ শ্রমিক হওয়ার সুযোগ ঘটল না। সাইবেরিয়ার নির্মাণ শ্রমিক হয়ে গেলে অনেক টাকা উপার্জন করা যায় বলে শুনেছিলাম। কিন্তু আমাদের নাম তালিকাভুক্ত হলো যৌথখামারের জন্য। ক্রাসনাদারের অদূরে দিনস্কি রাইয়নে যাব আমরা। যে কালখোজ বা যৌথ খামারে কাজ করব, তার নাম ‘জাভেতি লেনিনা’ (লেনিনের অঙ্গীকার)। 

শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে আমাদের যাত্রা শুরু হলো সকালের দিকেই। বেশি সময় লাগল না। সম্ভবত এক ঘণ্টারও কম সময়ে আমরা পৌঁছেছিলাম সেই কালখোজে। ঢুকতেই একটা বড় হলঘর। সেখানেই ডাইনিং টেবিল। যারা এই শিবিরে থাকবে, তাদের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন এখানেই। একটু হেঁটে ভিতরের দিকে ঢুকলে লম্বা দুই সারিতে কয়েকটি ঘর। সে ঘরগুলোতেই আমাদের ঠাঁই হলো। আমরা যে ঘরে ছিলাম, সেখানে আমি আর রিপন। বাকি আটজন ছিল ইথিওপিয়ার ছেলে। মেয়েরা ছিল বিপরীত দিকের ঘরগুলোয়। 

এখানে বলে রাখা ভালো, যারাই যৌথখামারে কিংবা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যেত, তারা বিদেশে যেত না টাকা কামাতে। হয় তাদের সুযোগ ছিল না, নতুবা পার্টির নির্দেশ মেনে এই কাজ করত। প্রথম দিন আমাদের কোনো কাজ করতে হয়নি। যিনি আমাদের তত্ত্বাবধান করছিলেন, তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কী কী কাজ করতে হবে। প্রথম দিন আমাদের যেতে হবে আপেল বাগানে। সেখানে ঝুড়ি ভরে আপেল কুড়িয়ে গাড়িতে এনে ফেলতে হবে। যত খুশি আপেল খাওয়া যাবে। কিন্তু শিবিরে বয়ে আনা যাবে না। দ্বিতীয় দিন নিয়ে যাওয়া হবে আলুর খেতে। দুপুর পর্যন্ত আলু তুলে গাড়ি ভরতে হবে। ছোট-বড় সব আলু একসঙ্গে তুলতে হবে। আলাদা করার দরকার নেই। তৃতীয় দিন নিড়ানি। আগাছা হয়েছে খেতে, সেই খেত পরিষ্কার করতে হবে। চতুর্থ দিন থেকে কী করতে হয়েছিল, তা ধারাবাহিকভাবে মনে নেই। তবে লাই কুড়াতে হয়েছিল একদিন, সেটা মনে আছে। 

প্রতিদিন বিকেলে টেবিল টেনিস খেলার সুযোগ ছিল। দুটো টেবিল ছিল। ভলিবল খেলা যেত। সন্ধ্যায় কখনো কখনো আয়োজন করা হতো দিস্কোতেকা (ডিসকোটেকা)। সেখানে নাচ হতো। সে সময় মডার্ন টকিং মাতিয়ে দিয়েছিল সোভিয়েত তরুণের মন। `ইউ আর মাই হার্ট, ইউ আর মাই সোউল’, ‘শেরি শেরি লেডি’, গান দুটোর কথাই বেশি মনে পড়ে। যেকোনো নাচের অনুষ্ঠানে এই গান দুটোর উপস্থিতি ছিল অবধারিত। 

লারা নামে একটি মেয়ে ছিল মাদাগাস্কারের। ও আমাকে খুব পছন্দ করত। না, প্রেমিক হিসেবে আমাকে দেখত না ও। সহজেই মিশতে পারত। কথা বলতে ভালোবাসত। ওর মধ্যে একটা ‘মা মা’ বা ‘বড়বোন বড়বোন’ ভাব ছিল। ওর সঙ্গে কথা বললে বোঝা যেত, ওদের জীবন গড়ে উঠেছে ইউরোপ, এশিয়া, আর আফ্রিকার মিলিত সংস্কৃতিতে। 

যেহেতু শ্রমিক বা কৃষক হিসেবে কাজ করছি, তাই আমাদের খাওয়াটা ছিল দেখার মতো। বাহুল্য ছিল না, কিন্তু পুষ্টির শতভাগ জোগান থাকত খাবারে। বোর্শ; অর্থাৎ, গরুর মাংস আর বাঁধা কপি দিয়ে তৈরি সুপ ছিল শুরুতে। এর পর বড় আকারের একটি বিফ স্টেক। একটু সাদা ভাত অথবা স্ম্যাশ্ড পটেটো, তাতে মাখনের প্রলেপ। প্রচুর সালাদ থাকত। স্মিতানা নামে ঘন দই থাকত। থাকত কমপোত নামে ফল জাল দিয়ে তৈরি পানীয়। আর কী কী থাকত, তা খেয়াল নেই। 

গরুর মাংস আমার সব সময়ের প্রিয় খাবার। তাই খাওয়াটা ভালো লাগত। কখনো বিফ স্টেকের পরিবর্তে থাকত গুলইয়াশ। এটাও ঘন ঝোলে গরুর মাংস। ভাত বা আলুভর্তা দিয়ে তা খেতে খুব ভালো লাগত। 

যে পানীয়টির কথা বলা হয়নি, সেটা হলো ক্ভাস। উচ্চারণ (kvas)। কাজ শেষে ক্যাম্প বা শিবিরে ফেরার পর বিশাল এক ড্রামে থাকত এই পানীয়। আহা! ঠান্ডা সেই পানীয় জুড়িয়ে দিত মন। 

এটাই ছিল আমাদের প্রথম রুশ গ্রাম দেখা। ‘আমুদে পরিবার’ নামে একটা রুশ বই পড়েছিলাম ছেলেবেলায়। সেখানে রুশ গ্রামের বর্ণনা ছিল। এখানে এসে সেই বইটির কথা স্মরণে এল। প্রথম দিন বিকেলে আমি আর রিপন হাঁটতে হাঁটতে গ্রামের বুকের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলাম। থেমেছিলাম কেবল নদীর ধারে একটা সেতুর কাছে এসে। সেখানে খড়ের ওপর বসেছিলাম। রিপন বেশ ভালো গান গায়। কয়েকটি রবীন্দ্র সংগীত গেয়েছিল ও। আমি আবৃত্তি করেছিলাম কয়েকটি কবিতা। ধীরে ধীরে সূর্য ডুবে যাচ্ছিল। তার রক্তিম আভা যখন পুরো পরিবেশকে রহস্যময় করে তুলেছিল, তখনই আমরা ফিরে এসেছিলাম আমাদের ক্যাম্পে। 

গ্রামের মানুষদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে ওরা কথা বলার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে থাকত। বোঝা যেত, স্কুলে ভূগোল পড়ানো হলেও পৃথিবীর ভৌগোলিক পরিবেশ সম্পর্কে ওদের কোনো ধারণাই নেই। কেউ কেউ অবশ্য বুঝতেন, কিংবা না বুঝে মাথা নাড়তেন। 

যেমন, একজন আমাদের দেখে বললেন, ‘তোমরা কি কিউবা থেকে এসেছ?’ 
আমরা বললাম, ‘না। আমরা এসেছি বাংলাদেশ থেকে।’ 
‘তার মানে আফ্রিকা?’ 
‘না। এটা বাংলাদেশ। এশিয়ার দেশ। ভারতের পাশে।’ 
‘ও, ভারত? রাজ কাপুরের ভারত? মিৎখুনের (মিঠুন) ভারত।’ 

বোঝা গেল, ওদের সিনেমা হলগুলোতে রাজকাপুর, আর মিঠুন খুব জনপ্রিয়। মিঠুনের ‘ডিসকো ড্যান্সার’ ছবিটি খুব দেখত সোভিয়েত জনগণ। 

সেদিন যখন আওয়াজ বাড়িয়ে সংগীতের ব্যবস্থা করা হলো, তখন লারা আমার কাছে এসে বলল, ‘রেজা, দাভাই তানসুয়েম’ (রেজা, চলো নাচি)।’ 

আমি বললাম, ‘ই্য়া নি উমেয়ু তানৎসিভাত। (আমি নাচতে পারি না)।’ 
‘ইশতো তি গাভারিশ। দাভাই তানৎসিভাত। (কী বলছিস, আয় নাচি) ’
‘ইয়া নি বুদু তানৎসিভাত। (আমি নাচব না)।’ 
‘নু রেজা, তিন ইশিও মালাদোই। (কিন্তু রেজা, তুমি এখনো তরুণ)।’ 

লারা যতই আমাকে নাচার জন্য উদ্বুদ্ধ করে থাকুক না কেন, আমি নাচিনি। এখন ভাবি, কী হতো একটু নাচলে? কেন এতটা একরোখা ছিলাম আমি? বলা হয়ে থাকে, ফ্রান্সে গেলে ফরাসি হতে হয়। অথচ আমি যেন পণ করেছিলাম, যেখানেই যাই না কেন, বাঙালি থাকব। এখন বুঝতে পারি, আমার ভাবনা অনেক বেশি জড় ভাবনা ছিল। বাঙালি হতে গিয়ে মানুষ হওয়ার চর্চা কি একটু ধাক্কা খেয়ে যায়নি? এগুলো অবশ্য এখনকার উপলব্ধি। তখন তো নিজের অবস্থান নিয়ে সুখীই ছিলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লেখা ছেড়ে দেওয়া বিষয়ে

সম্পাদকীয়
লেখা ছেড়ে দেওয়া বিষয়ে

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!

...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?

...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।

আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...

সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ন্যাশনাল জুট মিলস বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
ন্যাশনাল জুট মিলস বধ্যভূমি

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।

ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বধ্যভূমি ৭১

সম্পাদকীয়
বধ্যভূমি ৭১

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।

ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রহনপুর গণকবর

সম্পাদকীয়
রহনপুর গণকবর

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।

ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত