Ajker Patrika

কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা

রহমান মৃধা
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা

জন্মের পর বেড়ে ওঠাটা সঠিকভাবে না হয়, পরে কি তা ঠিক করা সম্ভব? এর উত্তর পেতে জানতে হবে সঠিকভাবে গড়ে না ওঠা বলতে কী বোঝায়? 

কেউ দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠে; তার গড়ে ওঠার মধ্যে থাকে দারিদ্র্যের কারণে সৃষ্ট নানা বাস্তবতার ছাপ। কেউ-বা বাবা-মা ছাড়া গড়ে ওঠে, কেউ অসৎ বা দুর্নীতির মধ্যে গড় ওঠে, আবার অনেকে সুন্দর পরিবেশে গড়ে ওঠে। হতে পারে কারও জীবনে সুশিক্ষার অভাব আছে। আবার সবকিছুর মিশ্রণেও গড়ে ওঠে কেউ কেউ। মোটাদাগে জীবনের শুরুতে কম-বেশি সবকিছুতেই ভালো-মন্দের মিশ্রণ থাকে। জীবন ফুলশয্যা নয়। তাই এই সঠিকভাবে গড়ে ওঠার কোনো সুনির্দিষ্ট ধরন নির্ধারণ খুবই কঠিন। তবে একটি উদাহরণ নিয়ে কথাটি এগোনো যেতে পারে। 

আজ বাংলাদেশ নয় কথা হবে একজন ইরানি বংশোদ্ভূত সুইডিশ নাগরিককে নিয়ে। ধর্মরাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপতি শাসিত গণতন্ত্রের সংমিশ্রণ ইরানের রাজনীতির একেবারে মূলে রয়েছে। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরের সংবিধান এবং ১৯৮৯ সালে এর সংশোধনীতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্রমের সংজ্ঞা রয়েছে। এতে সরাসরি বলা আছে, ইসলামের শিয়া মতাবলম্বীদের দ্বাদশ ইমাম মাহদির ধারাই হবে ইরানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম। এটি এবং সঙ্গে আরও নানা কারণে ইরান ছেড়ে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার ঝোঁক আছে দেশটির নাগরিকদের মধ্যে। 

যে ইরানির কথা বলা হচ্ছে, তাঁর নাম আরদালান শেখারাবি; জন্ম ১৯৭৮ সালে নর্থ ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। বেড়ে ওঠেন ইরানে। ১৯৮৯ সালে মায়ের সঙ্গে ইরান ছেড়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন সুইডেনে। শরণার্থী হিসেবে অনুমোদন না পাওয়ায় সুইডেনে একরকম পলাতক জীবনই যাপন করতে হয়েছিল তাঁকে। পরে মানবিক কারণে সুইডিশ অভিবাসন বিভাগ তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন দেয়। 

শিক্ষাজীবনের শুরুতেই ছাত্ররাজনীতিতে আরদালান জড়িয়ে পড়েন। শেষে সুইডিশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও হন। সে সময় তিনি নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যেমন, সংগঠনের যে টাকা ব্যয় হওয়ার কথা ইন্টিগ্রেশন প্রজেক্টে, সে টাকা নিজের নির্বাচনী প্রচারে ব্যয় করেন। এমনকি ভোট চুরি করে সে নির্বাচনে জয়ী হতে চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সে জালিয়াতি ধরা পড়ে যায়। এর জেরে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ থেকে ২০০৫ সালে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। পরে আবার একই পদে তিনি ফিরে আসেন ২০১৩ সালে। 

শুধু তাই নয়, ২০১৪ সালে সুইডিশ সিভিল মিনিস্টার পদে নিযুক্ত হন আরদালান। তাঁর ক্ষমতাকালে বহু শরণার্থীকে বাধ্য হয়ে সুইডেন ছাড়তে হয়েছে। বর্তমান তিনি সুইডেনের সোশ্যাল ইনস্যুরেন্স মিনিস্টার। ব্যক্তিজীবনে তিনি একজন আইনজীবী, বিবাহিত এবং তিন সন্তানের বাবা। তাঁর স্ত্রী একজন পুলিশ কর্মকর্তা। 

সামাজিক বিমামন্ত্রী হিসেবে আরদালান শেখারাবির নতুন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, যারা সারা জীবন কাজ করে কর দিয়েছেন, তাঁরা যেন যারা কর্মহীন ছিল এবং কর দেয়নি, তাঁদের চেয়ে বেশি পেনশন পান, সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া। বলা প্রয়োজন, রাষ্ট্রীয় এই সেবা সাধারণত অভিবাসীরাই বেশি নেন। 

আরদালান তাঁর নতুন চ্যালেঞ্জে হয়তো জয়ী হবেন, হয়তো হবেন না। আবার হয়তো কিছুটা এগোবেন, কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন। পুরোটাই নির্ভর করছে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে তাঁর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কার্যকারিতার ওপর। তবে আমার আলোচনার বিষয় সেটি নয়। আমার মনোযোগ সুইডিশ সিভিল মিনিস্টার হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালনকালে বহু শরণার্থীর সুইডেন ছাড়তে বাধ্য হওয়ার বিষয়টিতে। কারণ, আরদালান নিজেই এক সময় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন সুইডেনে। চাওয়ামাত্র পাননি। অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাঁকে। এমনকি শরণার্থী হিসেবে সুইডেনে তাঁর অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ হয়েছিল। শেষে মানবিক কারণে তিনি সে দেশে থাকার অনুমতি পান । অথচ নীতিনির্ধারণী দায়িত্বে আসার পর তিনিই শত শত বাবা-মা, পরিবার হারা মানুষকে সুইডেন থেকে বের করে দেন। তাঁর গল্প আসলে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা একজন মানুষেরই গল্প। 

যে বিষয়টি আমাকে বেশি অবাক করেছে, সেটা হলো সুইডিশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি আরদালানকেই বেছে নিয়েছে কাজটি করতে। আরদালান শেখারাবি নিজে শরণার্থী হয়ে অন্য শরণার্থীদের সুইডেন থেকে বের করতে দ্বিধা করেননি। 

কয়েক দিন আগে সুইডিশ টেলিভিশনের পর্দায় সরাসরি দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরদালানকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তুমি নিজে জানো কী কঠিন অনিশ্চয়তার মধ্যে তোমার জীবন কেটেছিল, যখন তোমার সুইডেনে থাকার কোনো বৈধতা ছিল না। সেই তুমি কীভাবে পারলে সেই একই কাজ করতে?’ আরদালান শেখারাবি উত্তর ছিল, তিনি যা করেছেন, তা সুইডেনের মঙ্গলের জন্যই করেছেন। 

তাঁর সাক্ষাৎকার দেখে আমার মনে হলো পৃথিবীতে এমন মানুষের অভাব নেই, যারা ভুলে যায় পরোপকারের কথা, ভুলে যায় অতীত। তাই তো পৃথিবীর অবস্থা এমন! একই সঙ্গে ভাবনায় ঢুকেছে রাজনীতি সত্যিই বড় নিষ্ঠুর এক দুনিয়া, যেখানে নেই কোনো নৈতিকতা; আছে শুধু স্বার্থপরতা। আর একবার সে দুনিয়ায় ঘাঁটি গাড়লে লোকেরা নিজের স্বার্থে সবকিছু করতে পারে। সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি আরদালানকে দিয়ে যে কাজগুলো করাচ্ছে, তাতে মনে হলো—তারা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলছে। 

জীবনে অনেক কিছু ফিরে পাওয়া সম্ভব। যেমন অর্থ গেলে অর্থ পাওয়া যায়, স্বাস্থ্য গেলে স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়া যায়, চরিত্র গেলে বা দুর্নীতিগ্রস্ত হলেও পরিবর্তন সম্ভব। কিন্তু যদি কেউ স্বার্থপর হয়, তবে সম্ভবত আর ফিরে আসার পথ থাকে না। তারা কখনো ফেরে না। 

এ লেখায় আরদালান শেখারাবির ব্যক্তিক জীবন না টানলেও হয়তো হতো। কিন্তু ওই যে শুরুতেই বলেছি, জীবনের শুরুতে গড়ে ওঠার পর্যায়টাই ঠিক করে দেয় মানুষের গতিপথ কোনদিকে হবে। আরদালানের বর্তমান কাজের ফিরিস্তি দিয়ে শুধু নিন্দা করলে তাই আর চুকেবুকে যায় না। ঠিকঠাক বুঝতে হলে তাঁর অতীতটা জানা জরুরি। আমি মূলত তাঁর চরিত্র, তাঁর মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন, চ্যালেঞ্জ এবং এসব মিলে তাঁর মানসিক গড়নটির দিকে নজর দিতে চাই। একজনকে স্বার্থপর বা এমন কিছু তো সহজেই বলে দেওয়া যায়। কিন্তু কেন এবং কীভাবে একজন মানুষ এমন হয়—সেদিকেও তো নজর দেওয়া দরকার। 

পাঠকেরা মনে করতেই পারেন ধর্ম ও রাজনীতির নামে সৃষ্ট সামাজিক প্রতিষ্ঠান, এগুলোর ভেতরে থাকা নানা বিশৃঙ্খলা এবং ক্ষমতার লোভে নেতাদের দ্বারা সৃষ্ট নিষ্ঠুর কাঠামো ও অবিচারের সংস্কৃতিরই প্রতিফলন আরদালান শেখারাবি। এটা কিছুটা সত্য। আরদালান শেখারাবিকে অনেকটা সময় অনিশ্চয়তার মধ্যে পাড়ি দিতে হয়েছে। তাঁকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে একটু থাকার নিশ্চয়তার জন্য। এই পরিস্থিতি যেকোনো মানুষকেই ভেতর থেকে কঠোর করে তোলে। তাঁর কাছে আর কাউকেই যদি আপন মনে না হয়, তবে তা তাঁর দোষ বলা যায় না। আর এমনই এক মানসিক অবস্থায় থাকা এক লোককেই সুইডিশ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সরকার ব্যবহার করেছে শরণার্থীদের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। কারণ, তারা জানে আরদালান চাইবেন সুইডিশ রাষ্ট্রের কাছে নিজেকে সঠিক মানুষ হিসেবে প্রমাণ করতে। তাঁর যদি ব্যক্তিগত খুঁত থাকে, তবে এই প্রমাণের চেষ্টা আরও বেশি থাকবে। দুর্নীতির অভিযোগে নিজের সংগঠন থেকে বহিষ্কার হওয়ার আরদালানের সেই খুঁত ছিল। ফলে তাঁকে অনেক বেশি নিজেকে প্রমাণ করতে হচ্ছে। আর এটিই সুইডিশ রাষ্ট্রকাঠামোকে এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, আরদালান শরণার্থী-অভিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতি অনেক বেশি নিষ্ঠুর হবেন। তিনি তা হয়েছেনও। নিজের ভিতটিকে টিকিয়ে রাখতে ও আরও মজবুত করতে তিনি স্বার্থপরের মতো আচরণ করছেন। নিষ্ঠুর হচ্ছেন। এমন স্বার্থপর মানুষের নিষ্ঠুরতার গল্প গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে আছে। 

লেখক: সুইডেনপ্রবাসী, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

দক্ষিণ ভারতের কোচি শহরের সরু, নুড়ি-পাথর বিছানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চোখে পড়ে ছোট্ট একটি ফলক। তাতে লেখা, ‘সারা কোহেনের বাড়ি।’ জনাকীর্ণ এই রাস্তাটির নাম জু টাউন। কয়েক দশক আগেও এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বসবাস করত ইহুদি পরিবার। প্রাচীন সামগ্রী, পারস্যের কার্পেট আর মসলার দোকানে ঠাসা এই এলাকাই একসময় পরিচিত ছিল কোচির ইহুদি পাড়া হিসেবে।

এই রাস্তাতেই রয়েছে থাহা ইব্রাহিমের দোকান। কোচির শেষ ইহুদি নকশার দোকান। এক তপ্ত দুপুরে কয়েকজন মার্কিন পর্যটক দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, ৫৫ বছর বয়সী থাহা মনোযোগ দিয়ে একটি কিপ্পা (ইহুদি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী ছোট, বৃত্তাকার টুপি যা তারা ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে এবং নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে পরে থাকে) সেলাই করছেন। দোকানের দেয়ালে ঝোলানো একটি ছবির সামনে পর্যটকেরা ভিড় জমালেন। ছবিটি ২০১৩ সালের। তৎকালীন ব্রিটিশ যুবরাজ (বর্তমানে রাজা) চার্লস জু টাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন।

ছবির দিকে আঙুল তুলে থাহা বললেন, ‘ওই ইনিই সারা আন্টি।’ এরপর যোগ করলেন, ‘এটা ছিল সারা কোহেনের বাড়ি ও তাঁর সেলাইয়ের দোকান।’

আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি দায়িত্ব নেন তিনি।

থাহা বলেন, ‘আমি ছিলাম তাঁর ছেলের মতো। নিজের মায়ের চেয়েও বেশি সময় তাঁর দেখাশোনা করেছি। আমি তাঁর জন্য কোশার (ইহুদিদের এক ধরনের খাবার) আর মাছ কিনে আনতাম। সময় কাটাতাম আর দোকান বন্ধ করার পরই কেবল ফিরতাম।’

এক ইহুদি নারী আর ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির এক মুসলমান পুরুষের এই বন্ধুত্ব প্রায় চার দশক ধরে টিকে ছিল। মৃত্যুর আগে সারা তাঁর দোকানটি থাহার নামে উইল করে যান। থাহা প্রতিজ্ঞা করেন, জু টাউনে তিনি সারার স্মৃতি আর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখবেন। যেখানে আঠারো শতকে প্রায় আড়াই হাজার ইহুদি বাস করতেন, সেখানে এখন কেবল একজন অবশিষ্ট। থাহা বলেন, ‘এক দিক থেকে, এখানকার ইহুদি সম্প্রদায় যাতে বিস্মৃত না হয়, আমিও সেই চেষ্টাই করছি।’

কেরালায় ইহুদিদের আগমনের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত রাজা সোলোমনের সময়ের, প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার। প্রথমে তাঁরা মালাবার উপকূলে ক্রাঙ্গানোরে, বর্তমান কোডুঙ্গাল্লুরের কাছে প্রাচীন বন্দরের আশপাশে বণিক হিসেবে বসতি গড়েন। পরে তাঁরা কোচিতে চলে আসেন। এই প্রাচীন বসতির কারণে তাঁরা পরিচিত হন মালাবারি ইহুদি নামে।

এর বহু পরে, ১৫৯২ সালে, স্প্যানিশ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা সেফার্ডিক ইহুদিরা কেরালায় পৌঁছান। পর্তুগাল, তুরস্ক আর বাগদাদ হয়ে তাঁরা কোচিতে বসতি গড়ে তোলেন এবং পরিচিত হন পারাদেসি বা বিদেশি ইহুদি নামে। মালাবারি ও পারাদেসি—এই দুই ধারার মানুষ মিলেই পরিচিত হন কোচিন ইহুদি নামে।

ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে
ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে

পর্তুগিজ, আরব, ব্রিটিশ আর ওলন্দাজদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যকেন্দ্র কোচিতে তাঁরা রাজাদের সুরক্ষায় নিরাপদে বসবাস করতেন। বিশ শতকের গোড়ায় সারা কোহেনের জন্ম। তখন জু টাউন ছিল প্রাণবন্ত। সারা আর তাঁর স্বামী জ্যাকব—যাঁর জন্মও এখানেই—১৯৪৪ সালে বিয়ে করেন।

আশির দশকের গোড়ায় আচমকাই থাহার সঙ্গে কোহেন দম্পতির পরিচয় হয়। তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেওয়া থাহা তখন পর্যটকদের কাছে পোস্টকার্ড বিক্রি করে জীবিকা চালাতেন। জু টাউনে আসা পর্যটকেরা নিয়মিতই যেতেন পারাদেসি সিনাগগে, যা ১৫৬৮ সালে কোচিনের রাজার দেওয়া জমিতে নির্মিত।

থাহা বলেন, ‘তখন প্রচুর পর্যটক আসত আর আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পোস্টকার্ড বেচতাম।’ এক রোববার, যে গুদামঘরে থাহা পোস্টকার্ড রাখতেন, তার মালিক না আসায় জ্যাকব তাঁকে তাঁদের বাড়িতে জায়গা দেন। সারা এতে খুশি ছিলেন না। থাহার মনে আছে, প্রায় তিন বছর তিনি তাঁর সঙ্গে তেমন কথা বলেননি।

ইব্রাহিম থাহা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি তাঁর স্বামীর ছোটখাটো কাজ করে দিতাম। অথবা যখন তাঁদের জানালার বাইরে থেকে টিভিতে ক্রিকেট দেখতাম, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলতেন।’ একদিন সারা তাঁকে সিনাগগের জন্য একটি কুশন কভার সেলাই করতে সাহায্য করতে বলেন। তখনই বোঝা যায়, থাহার মধ্যে সেলাই ও নকশার সহজাত দক্ষতা আছে। সম্ভবত দরজি বাবাকে ছোটবেলা থেকে সাহায্য করার ফলেই। তিনি বলেন, ‘আমি যে নকশা আঁকতে আর সেলাই করতে পারি, তা জানতামই না।’

উনিশ বছর বয়সে থাহা সারাকে সাহায্য করেন তাঁদের বৈঠকখানা থেকে ‘সারার হস্ত-সেলাই’ নামে একটি দোকান খুলতে। দোকানটি আজও সেই নামেই পরিচিত। সেখানে বিক্রি হতো কিপ্পাহ, চাল্লাহ কভার আর মেনোরাহ। তিনি বলেন, ‘তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন।’

এই বন্ধুত্ব নিয়ে থাহা বেশ দার্শনিক। তিনি বলেন, ‘জু টাউনে ইহুদি আর মুসলমানেরা একে অপরের সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা একে অপরের প্রতি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সারা আন্টি আর জ্যাকব আংকেল কখনোই আমাকে বহিরাগত মনে করতে দেননি, যদিও আমাদের পটভূমি আলাদা ছিল।’

সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

থাহার বাবা-মা এই সম্পর্কে আপত্তি করেননি। তাঁরা দেখেছিলেন, কোহেন পরিবার তাঁদের ছেলেকে জীবনের একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সময়েই কোচির ইহুদি জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। চল্লিশের দশকে যেখানে ছিল প্রায় ২৫০ জন, নব্বইয়ের দশকে তা নেমে আসে ২০ জনে। এখন মাত্র একজন আছেন—৬৭ বছর বয়সী কিথ হ্যালেগুয়া।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক পরিবার সেখানে চলে যায়। কেরালার ইহুদিদের ওপর ডক্টরেট থিসিস করা আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘কোচিন ইহুদিরা হয়তো স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ধারণায় ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। তবে উন্নত জীবনের আকর্ষণের মতো অর্থনৈতিক কারণও ছিল। তাঁরা এটাও অনুভব করেছিলেন যে কেরালায় উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব ছিল।’

ধর্মীয় নিপীড়ন কখনোই তাঁদের কোচি ছাড়ার কারণ ছিল না। শহরটি শত শত বছর ধরে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। কিছু বয়স্ক ইহুদি থেকে গিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে নিঃসন্তান কোহেন দম্পতিও ছিলেন। ১৯৯৯ সালে জ্যাকব মারা যাওয়ার আগে থাহাকে সারার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান। তখন থাহা বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক।

থাহা বলেন, ‘আমি জ্যাকব আংকেলকে বলেছিলাম, সারা আন্টি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তবে আমি তাঁর দেখাশোনা করব। আমি তাঁকে সুযোগ দিতে বলেছিলাম, কারণ ইসলামে মৃতপ্রায় ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। না করলে পাপ হয়।’

সারার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে থাহা তাঁর পরিবারকে জু টাউনের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। সারা মারা গেলে তিনি তাঁর কফিনের জন্য স্টার অব ডেভিড (ইসরায়েলি পতাকায় অঙ্কিত তারকা) আঁকা একটি কফিন কভার তৈরি করান। আজও তিনি নিয়মিত ইহুদি কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে যান। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক কোচি ঘুরতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেক ইহুদিও থাকেন। আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইহুদিরা জু টাউনে আসেন এক ধরনের আপন অনুভব করার জন্য।’

তিনি বলেন, এখানকার ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মধ্যেও নিজেদের পরিচয় বজায় রেখেছিলেন। একই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ভাষা মালয়ালমই ছিল তাঁদের দৈনন্দিন ভাষা। থাহা যেভাবে সারা কোহেনের ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান কীভাবে এক ইহুদি নারীর যত্ন নিয়েছেন, তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি এখনো সারা-র ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো বজায় রেখেছেন।’

থাহা দোকানটিকে ঠিক সেভাবেই রেখেছেন, যেমনটি সারা চালাতেন। ইহুদিদের সাব্বাথ উপলক্ষে তিনি শনিবার দোকান বন্ধ রাখেন। ইব্রাহিম থাহা আরও বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মুসলমান, কিন্তু সারা আন্টির জন্য এটা খুব জরুরি ছিল বলে আমি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রদীপ জ্বালাই। কারণ, এই ক্ষণ সাব্বাথের শুরু হওয়াকে চিহ্নিত করে। এই বিষয়টি আমার কাছে এটা ধর্ম সংক্রান্ত নয়, পুরোটাই মানবিক।’

বিবিসি থেকে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত