জাহীদ রেজা নূর

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই।কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না। কোন যৌথ খামার থেকে এই আলু আসত, জানি না, কিন্তু যেভাবেই তা রান্না করতাম বা ভাজতাম, তাতে আলুর স্বাদটা হতো মনের মতো। আলুও যে আলাদাভাবে সুস্বাদু হতে পারে, সেটা আগ্রোপ্র্রোমের আলু খেয়েই প্রথম বুঝেছি। এর আগে আলু নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা ছিল না।
আরও একটা কথা, ‘নতুন আলু’ যে স্বাদে-গন্ধে পুরোনো আলুর চেয়ে একেবারেই আলাদা, সেটাও সোভিয়েত জীবন শুরু হওয়ার পর বুঝতে শুরু করেছিলাম।
ক্লাসের পর যখন একা লাগত, তখনই বের হয়ে পড়তাম। কখনো ট্রামে, কখনো ট্রলিবাসে, কখনো বাসে করে চলে যেতাম বহু দূর। সে অভিজ্ঞতার কথাও বলব ধীরে ধীরে। আজ বলব সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যখন দেশগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তার পরের কথা। সোভিয়েত যুগের নিশ্চিন্ত নির্ভরতা তত দিনে হারিয়ে গেছে। রুশ দেশের মানুষেরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে কত ধানে কত চাল। দুর্নীতি বেড়ে গেছে, তৈরি হয়েছে মাফিয়ার দল, বাইরের দেশ থেকে পণ্য আসছে, তা বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। তার বেশির ভাগই কালো বাজার। মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার একদল মানুষ টাকার পাহাড়ে বসে আছে। এ রকম এক অরাজক অবস্থায় আমরা দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন যে ঘটনার কথা বলব, সেটা মনে হয় ১৯৯৪–৯৫ সালের দিকের ঘটনা।
আগ্রোপ্রোম দোকানটায় বিদেশিরা খুব একটা যেত না। রাশান বা প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের লোকেরাই যেত। আমি সেখান থেকে কখনো কখনো বাজার করতাম।
সেই দোকানে মাংস বিক্রি করত তোলিয়া। আমার চেয়ে বয়সে বড়। আনাতোলিকে আদর করে তোলিয়া নামে ডাকা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের রীতি অনুসারে সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে হতো। একের পর এক ক্রেতা নিজেদের পছন্দমতো মাংসের টুকরো বেছে নিতেন।
একদিন তোলিয়া জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নাম কী?’
বললাম।
‘কোন দেশ থেকে এসেছ, কিউবা? ইন্ডিয়া?’
‘না। বাংলাদেশ।’
‘এটা কোথায়?’
‘ইন্ডিয়ার পাশেই।’
‘ইন্ডিয়ায় তো গরু খায় না!’
‘কেউ কেউ খায়। ওই দেশে অনেকগুলো ধর্মের মানুষ থাকে। কেউ গরু খায়, কেউ খায় না। আমরা বাংলাদেশে গরু খাই।’
‘ভালো ভালো!’
আমি আমার মনের মতো মাংস কিনে ফিরে এলাম।
এর পর থেকে ঘটতে থাকল এক অদ্ভুত ঘটনা। আমি যখনই আগ্রোপ্রামে যেতাম, লাইনে দাঁড়াতাম, তোলিয়া আড়চোখে আমাকে দেখত। কিন্তু কোনো কথা বলত না। আমি যখন একটু একটু করে লাইনের এক নম্বরে আসতাম, তখন ও আমাকে দাঁড়াতে বলে একটা মাংসের ট্রে নিয়ে চলে যেত ভিতরে। সেখান থেকে কুড়ালে মাংস কাটার শব্দ শোনা যেত। তারপর এমন মাংস নিয়ে আসত, যাতে হাড়ের চেয়ে মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি।
প্রথম দিকে কেউ সেটা খেয়াল করত না। কিছু হিংসুটে বুড়ি সব দেশেই থাকে। ওরা সবখানেই একটা গন্ডগোল বাধিয়ে দেয়। সে রকমই এক বুড়ির চোখে পড়ল, আমার পালা আসতেই তোলিয়া চলে যায় ভিতরে, সেখান থেকে ভালো ভালো মাংস নিয়ে আসে। তা থেকেই বেছে আমাকে দেয়।
সেই বুড়ি ছিল আমার ঠিক পেছনে। বিড়বিড় করে বলছিল, ‘এইবার কসাই ভিতরে গিয়ে ভালো মাংস নিয়ে আসবে। এই বিদেশি ছেলেটার জন্য আলাদা আয়োজন।’
বুড়ির বিড়বিড়ানি তোলিয়ার কানে গেল। সে বলল, ‘হ্যাঁ, ওর জন্য আমি ট্রে নিয়ে মাংস আনতে যাব।’
‘ওরা তো এ দেশে এসে দেশটা ছারখার করে দিল। আমরা এ দেশের নাগরিকেরাই খেতে পাই না, আর এরা এসে আমাদের খাওয়ায় ভাগ বসাচ্ছে!’
‘ওরা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। ওরা পড়াশোনা করছে। দেশে ফিরে প্রত্যেকেই বিজ্ঞানী হবে।’
‘ওদের বিজ্ঞানী হওয়ার নিকুচি করি। নিজের দেশে গিয়ে বিজ্ঞানী হোক। আমাদের দেশটাকে জ্বালাচ্ছে কেন?’
তোলিয়া বলল, ‘আমি ট্রেতে করে মাংস নিয়ে এলে কি সব মাংস ও নিয়ে যাবে? ওটার ভাগ আপনি পাবেন না?’
এবার কথাটা বুঝতে পারে বুড়ি। আসলে আমার জন্য মাংস কেটে আনলে তার ভাগ্যেও জুটবে কম হাড়ওয়ালা মাংস। কিন্তু তাতেও তিনি দমলেন না। এবার লড়াইটা চালালেন অন্যভাবে, ‘ও এখান থেকেই মাংস নিক। কিংবা একটু অপেক্ষা করুক। তুমি আমার জন্য ট্রে ভরে নিয়ে এস। আগে আমি নেব, তারপর ও নেবে।’
তোলিয়া বলল, ‘এটা আমার দোকান। আমি যেভাবে চাইব, সেভাবেই হবে। আপনি মাংস নিলে নেবেন, না হলে লাইন থেকে সরে দাঁড়ান। অযথা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করবেন না!’
তোলিয়ার সঙ্গে তর্ক করে পারবে না বলে বুড়ি এবার আমাকেই গালাগাল দিতে লাগল। আমাদের কারণেই নাকি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙেছে, আমাদের পালতে গিয়েই সোভিয়েতরাজের খাজাঞ্চিখানা উজাড় হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
তখন খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিল। কিন্তু এখন ভাবি, সে সময় বুড়িরা হঠাৎ করে দারিদ্র্যের যে অকুল দরিয়ায় পড়েছিল, তাতে পৃথিবীর সবকিছুর প্রতিই তাদের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে দেশে ফেরার আগপর্যন্ত তোলিয়া আমার জন্য ওর নিয়মটাই বহাল রেখেছিল। এসব ছোট ছোট ভালোবাসার গল্পগুলোই আনন্দ দেয়।

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই।কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না। কোন যৌথ খামার থেকে এই আলু আসত, জানি না, কিন্তু যেভাবেই তা রান্না করতাম বা ভাজতাম, তাতে আলুর স্বাদটা হতো মনের মতো। আলুও যে আলাদাভাবে সুস্বাদু হতে পারে, সেটা আগ্রোপ্র্রোমের আলু খেয়েই প্রথম বুঝেছি। এর আগে আলু নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা ছিল না।
আরও একটা কথা, ‘নতুন আলু’ যে স্বাদে-গন্ধে পুরোনো আলুর চেয়ে একেবারেই আলাদা, সেটাও সোভিয়েত জীবন শুরু হওয়ার পর বুঝতে শুরু করেছিলাম।
ক্লাসের পর যখন একা লাগত, তখনই বের হয়ে পড়তাম। কখনো ট্রামে, কখনো ট্রলিবাসে, কখনো বাসে করে চলে যেতাম বহু দূর। সে অভিজ্ঞতার কথাও বলব ধীরে ধীরে। আজ বলব সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যখন দেশগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তার পরের কথা। সোভিয়েত যুগের নিশ্চিন্ত নির্ভরতা তত দিনে হারিয়ে গেছে। রুশ দেশের মানুষেরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে কত ধানে কত চাল। দুর্নীতি বেড়ে গেছে, তৈরি হয়েছে মাফিয়ার দল, বাইরের দেশ থেকে পণ্য আসছে, তা বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। তার বেশির ভাগই কালো বাজার। মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার একদল মানুষ টাকার পাহাড়ে বসে আছে। এ রকম এক অরাজক অবস্থায় আমরা দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন যে ঘটনার কথা বলব, সেটা মনে হয় ১৯৯৪–৯৫ সালের দিকের ঘটনা।
আগ্রোপ্রোম দোকানটায় বিদেশিরা খুব একটা যেত না। রাশান বা প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের লোকেরাই যেত। আমি সেখান থেকে কখনো কখনো বাজার করতাম।
সেই দোকানে মাংস বিক্রি করত তোলিয়া। আমার চেয়ে বয়সে বড়। আনাতোলিকে আদর করে তোলিয়া নামে ডাকা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের রীতি অনুসারে সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে হতো। একের পর এক ক্রেতা নিজেদের পছন্দমতো মাংসের টুকরো বেছে নিতেন।
একদিন তোলিয়া জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নাম কী?’
বললাম।
‘কোন দেশ থেকে এসেছ, কিউবা? ইন্ডিয়া?’
‘না। বাংলাদেশ।’
‘এটা কোথায়?’
‘ইন্ডিয়ার পাশেই।’
‘ইন্ডিয়ায় তো গরু খায় না!’
‘কেউ কেউ খায়। ওই দেশে অনেকগুলো ধর্মের মানুষ থাকে। কেউ গরু খায়, কেউ খায় না। আমরা বাংলাদেশে গরু খাই।’
‘ভালো ভালো!’
আমি আমার মনের মতো মাংস কিনে ফিরে এলাম।
এর পর থেকে ঘটতে থাকল এক অদ্ভুত ঘটনা। আমি যখনই আগ্রোপ্রামে যেতাম, লাইনে দাঁড়াতাম, তোলিয়া আড়চোখে আমাকে দেখত। কিন্তু কোনো কথা বলত না। আমি যখন একটু একটু করে লাইনের এক নম্বরে আসতাম, তখন ও আমাকে দাঁড়াতে বলে একটা মাংসের ট্রে নিয়ে চলে যেত ভিতরে। সেখান থেকে কুড়ালে মাংস কাটার শব্দ শোনা যেত। তারপর এমন মাংস নিয়ে আসত, যাতে হাড়ের চেয়ে মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি।
প্রথম দিকে কেউ সেটা খেয়াল করত না। কিছু হিংসুটে বুড়ি সব দেশেই থাকে। ওরা সবখানেই একটা গন্ডগোল বাধিয়ে দেয়। সে রকমই এক বুড়ির চোখে পড়ল, আমার পালা আসতেই তোলিয়া চলে যায় ভিতরে, সেখান থেকে ভালো ভালো মাংস নিয়ে আসে। তা থেকেই বেছে আমাকে দেয়।
সেই বুড়ি ছিল আমার ঠিক পেছনে। বিড়বিড় করে বলছিল, ‘এইবার কসাই ভিতরে গিয়ে ভালো মাংস নিয়ে আসবে। এই বিদেশি ছেলেটার জন্য আলাদা আয়োজন।’
বুড়ির বিড়বিড়ানি তোলিয়ার কানে গেল। সে বলল, ‘হ্যাঁ, ওর জন্য আমি ট্রে নিয়ে মাংস আনতে যাব।’
‘ওরা তো এ দেশে এসে দেশটা ছারখার করে দিল। আমরা এ দেশের নাগরিকেরাই খেতে পাই না, আর এরা এসে আমাদের খাওয়ায় ভাগ বসাচ্ছে!’
‘ওরা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। ওরা পড়াশোনা করছে। দেশে ফিরে প্রত্যেকেই বিজ্ঞানী হবে।’
‘ওদের বিজ্ঞানী হওয়ার নিকুচি করি। নিজের দেশে গিয়ে বিজ্ঞানী হোক। আমাদের দেশটাকে জ্বালাচ্ছে কেন?’
তোলিয়া বলল, ‘আমি ট্রেতে করে মাংস নিয়ে এলে কি সব মাংস ও নিয়ে যাবে? ওটার ভাগ আপনি পাবেন না?’
এবার কথাটা বুঝতে পারে বুড়ি। আসলে আমার জন্য মাংস কেটে আনলে তার ভাগ্যেও জুটবে কম হাড়ওয়ালা মাংস। কিন্তু তাতেও তিনি দমলেন না। এবার লড়াইটা চালালেন অন্যভাবে, ‘ও এখান থেকেই মাংস নিক। কিংবা একটু অপেক্ষা করুক। তুমি আমার জন্য ট্রে ভরে নিয়ে এস। আগে আমি নেব, তারপর ও নেবে।’
তোলিয়া বলল, ‘এটা আমার দোকান। আমি যেভাবে চাইব, সেভাবেই হবে। আপনি মাংস নিলে নেবেন, না হলে লাইন থেকে সরে দাঁড়ান। অযথা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করবেন না!’
তোলিয়ার সঙ্গে তর্ক করে পারবে না বলে বুড়ি এবার আমাকেই গালাগাল দিতে লাগল। আমাদের কারণেই নাকি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙেছে, আমাদের পালতে গিয়েই সোভিয়েতরাজের খাজাঞ্চিখানা উজাড় হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
তখন খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিল। কিন্তু এখন ভাবি, সে সময় বুড়িরা হঠাৎ করে দারিদ্র্যের যে অকুল দরিয়ায় পড়েছিল, তাতে পৃথিবীর সবকিছুর প্রতিই তাদের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে দেশে ফেরার আগপর্যন্ত তোলিয়া আমার জন্য ওর নিয়মটাই বহাল রেখেছিল। এসব ছোট ছোট ভালোবাসার গল্পগুলোই আনন্দ দেয়।
জাহীদ রেজা নূর

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই।কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না। কোন যৌথ খামার থেকে এই আলু আসত, জানি না, কিন্তু যেভাবেই তা রান্না করতাম বা ভাজতাম, তাতে আলুর স্বাদটা হতো মনের মতো। আলুও যে আলাদাভাবে সুস্বাদু হতে পারে, সেটা আগ্রোপ্র্রোমের আলু খেয়েই প্রথম বুঝেছি। এর আগে আলু নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা ছিল না।
আরও একটা কথা, ‘নতুন আলু’ যে স্বাদে-গন্ধে পুরোনো আলুর চেয়ে একেবারেই আলাদা, সেটাও সোভিয়েত জীবন শুরু হওয়ার পর বুঝতে শুরু করেছিলাম।
ক্লাসের পর যখন একা লাগত, তখনই বের হয়ে পড়তাম। কখনো ট্রামে, কখনো ট্রলিবাসে, কখনো বাসে করে চলে যেতাম বহু দূর। সে অভিজ্ঞতার কথাও বলব ধীরে ধীরে। আজ বলব সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যখন দেশগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তার পরের কথা। সোভিয়েত যুগের নিশ্চিন্ত নির্ভরতা তত দিনে হারিয়ে গেছে। রুশ দেশের মানুষেরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে কত ধানে কত চাল। দুর্নীতি বেড়ে গেছে, তৈরি হয়েছে মাফিয়ার দল, বাইরের দেশ থেকে পণ্য আসছে, তা বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। তার বেশির ভাগই কালো বাজার। মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার একদল মানুষ টাকার পাহাড়ে বসে আছে। এ রকম এক অরাজক অবস্থায় আমরা দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন যে ঘটনার কথা বলব, সেটা মনে হয় ১৯৯৪–৯৫ সালের দিকের ঘটনা।
আগ্রোপ্রোম দোকানটায় বিদেশিরা খুব একটা যেত না। রাশান বা প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের লোকেরাই যেত। আমি সেখান থেকে কখনো কখনো বাজার করতাম।
সেই দোকানে মাংস বিক্রি করত তোলিয়া। আমার চেয়ে বয়সে বড়। আনাতোলিকে আদর করে তোলিয়া নামে ডাকা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের রীতি অনুসারে সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে হতো। একের পর এক ক্রেতা নিজেদের পছন্দমতো মাংসের টুকরো বেছে নিতেন।
একদিন তোলিয়া জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নাম কী?’
বললাম।
‘কোন দেশ থেকে এসেছ, কিউবা? ইন্ডিয়া?’
‘না। বাংলাদেশ।’
‘এটা কোথায়?’
‘ইন্ডিয়ার পাশেই।’
‘ইন্ডিয়ায় তো গরু খায় না!’
‘কেউ কেউ খায়। ওই দেশে অনেকগুলো ধর্মের মানুষ থাকে। কেউ গরু খায়, কেউ খায় না। আমরা বাংলাদেশে গরু খাই।’
‘ভালো ভালো!’
আমি আমার মনের মতো মাংস কিনে ফিরে এলাম।
এর পর থেকে ঘটতে থাকল এক অদ্ভুত ঘটনা। আমি যখনই আগ্রোপ্রামে যেতাম, লাইনে দাঁড়াতাম, তোলিয়া আড়চোখে আমাকে দেখত। কিন্তু কোনো কথা বলত না। আমি যখন একটু একটু করে লাইনের এক নম্বরে আসতাম, তখন ও আমাকে দাঁড়াতে বলে একটা মাংসের ট্রে নিয়ে চলে যেত ভিতরে। সেখান থেকে কুড়ালে মাংস কাটার শব্দ শোনা যেত। তারপর এমন মাংস নিয়ে আসত, যাতে হাড়ের চেয়ে মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি।
প্রথম দিকে কেউ সেটা খেয়াল করত না। কিছু হিংসুটে বুড়ি সব দেশেই থাকে। ওরা সবখানেই একটা গন্ডগোল বাধিয়ে দেয়। সে রকমই এক বুড়ির চোখে পড়ল, আমার পালা আসতেই তোলিয়া চলে যায় ভিতরে, সেখান থেকে ভালো ভালো মাংস নিয়ে আসে। তা থেকেই বেছে আমাকে দেয়।
সেই বুড়ি ছিল আমার ঠিক পেছনে। বিড়বিড় করে বলছিল, ‘এইবার কসাই ভিতরে গিয়ে ভালো মাংস নিয়ে আসবে। এই বিদেশি ছেলেটার জন্য আলাদা আয়োজন।’
বুড়ির বিড়বিড়ানি তোলিয়ার কানে গেল। সে বলল, ‘হ্যাঁ, ওর জন্য আমি ট্রে নিয়ে মাংস আনতে যাব।’
‘ওরা তো এ দেশে এসে দেশটা ছারখার করে দিল। আমরা এ দেশের নাগরিকেরাই খেতে পাই না, আর এরা এসে আমাদের খাওয়ায় ভাগ বসাচ্ছে!’
‘ওরা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। ওরা পড়াশোনা করছে। দেশে ফিরে প্রত্যেকেই বিজ্ঞানী হবে।’
‘ওদের বিজ্ঞানী হওয়ার নিকুচি করি। নিজের দেশে গিয়ে বিজ্ঞানী হোক। আমাদের দেশটাকে জ্বালাচ্ছে কেন?’
তোলিয়া বলল, ‘আমি ট্রেতে করে মাংস নিয়ে এলে কি সব মাংস ও নিয়ে যাবে? ওটার ভাগ আপনি পাবেন না?’
এবার কথাটা বুঝতে পারে বুড়ি। আসলে আমার জন্য মাংস কেটে আনলে তার ভাগ্যেও জুটবে কম হাড়ওয়ালা মাংস। কিন্তু তাতেও তিনি দমলেন না। এবার লড়াইটা চালালেন অন্যভাবে, ‘ও এখান থেকেই মাংস নিক। কিংবা একটু অপেক্ষা করুক। তুমি আমার জন্য ট্রে ভরে নিয়ে এস। আগে আমি নেব, তারপর ও নেবে।’
তোলিয়া বলল, ‘এটা আমার দোকান। আমি যেভাবে চাইব, সেভাবেই হবে। আপনি মাংস নিলে নেবেন, না হলে লাইন থেকে সরে দাঁড়ান। অযথা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করবেন না!’
তোলিয়ার সঙ্গে তর্ক করে পারবে না বলে বুড়ি এবার আমাকেই গালাগাল দিতে লাগল। আমাদের কারণেই নাকি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙেছে, আমাদের পালতে গিয়েই সোভিয়েতরাজের খাজাঞ্চিখানা উজাড় হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
তখন খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিল। কিন্তু এখন ভাবি, সে সময় বুড়িরা হঠাৎ করে দারিদ্র্যের যে অকুল দরিয়ায় পড়েছিল, তাতে পৃথিবীর সবকিছুর প্রতিই তাদের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে দেশে ফেরার আগপর্যন্ত তোলিয়া আমার জন্য ওর নিয়মটাই বহাল রেখেছিল। এসব ছোট ছোট ভালোবাসার গল্পগুলোই আনন্দ দেয়।

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই।কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না। কোন যৌথ খামার থেকে এই আলু আসত, জানি না, কিন্তু যেভাবেই তা রান্না করতাম বা ভাজতাম, তাতে আলুর স্বাদটা হতো মনের মতো। আলুও যে আলাদাভাবে সুস্বাদু হতে পারে, সেটা আগ্রোপ্র্রোমের আলু খেয়েই প্রথম বুঝেছি। এর আগে আলু নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা ছিল না।
আরও একটা কথা, ‘নতুন আলু’ যে স্বাদে-গন্ধে পুরোনো আলুর চেয়ে একেবারেই আলাদা, সেটাও সোভিয়েত জীবন শুরু হওয়ার পর বুঝতে শুরু করেছিলাম।
ক্লাসের পর যখন একা লাগত, তখনই বের হয়ে পড়তাম। কখনো ট্রামে, কখনো ট্রলিবাসে, কখনো বাসে করে চলে যেতাম বহু দূর। সে অভিজ্ঞতার কথাও বলব ধীরে ধীরে। আজ বলব সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যখন দেশগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তার পরের কথা। সোভিয়েত যুগের নিশ্চিন্ত নির্ভরতা তত দিনে হারিয়ে গেছে। রুশ দেশের মানুষেরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে কত ধানে কত চাল। দুর্নীতি বেড়ে গেছে, তৈরি হয়েছে মাফিয়ার দল, বাইরের দেশ থেকে পণ্য আসছে, তা বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। তার বেশির ভাগই কালো বাজার। মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার একদল মানুষ টাকার পাহাড়ে বসে আছে। এ রকম এক অরাজক অবস্থায় আমরা দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন যে ঘটনার কথা বলব, সেটা মনে হয় ১৯৯৪–৯৫ সালের দিকের ঘটনা।
আগ্রোপ্রোম দোকানটায় বিদেশিরা খুব একটা যেত না। রাশান বা প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের লোকেরাই যেত। আমি সেখান থেকে কখনো কখনো বাজার করতাম।
সেই দোকানে মাংস বিক্রি করত তোলিয়া। আমার চেয়ে বয়সে বড়। আনাতোলিকে আদর করে তোলিয়া নামে ডাকা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের রীতি অনুসারে সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে হতো। একের পর এক ক্রেতা নিজেদের পছন্দমতো মাংসের টুকরো বেছে নিতেন।
একদিন তোলিয়া জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নাম কী?’
বললাম।
‘কোন দেশ থেকে এসেছ, কিউবা? ইন্ডিয়া?’
‘না। বাংলাদেশ।’
‘এটা কোথায়?’
‘ইন্ডিয়ার পাশেই।’
‘ইন্ডিয়ায় তো গরু খায় না!’
‘কেউ কেউ খায়। ওই দেশে অনেকগুলো ধর্মের মানুষ থাকে। কেউ গরু খায়, কেউ খায় না। আমরা বাংলাদেশে গরু খাই।’
‘ভালো ভালো!’
আমি আমার মনের মতো মাংস কিনে ফিরে এলাম।
এর পর থেকে ঘটতে থাকল এক অদ্ভুত ঘটনা। আমি যখনই আগ্রোপ্রামে যেতাম, লাইনে দাঁড়াতাম, তোলিয়া আড়চোখে আমাকে দেখত। কিন্তু কোনো কথা বলত না। আমি যখন একটু একটু করে লাইনের এক নম্বরে আসতাম, তখন ও আমাকে দাঁড়াতে বলে একটা মাংসের ট্রে নিয়ে চলে যেত ভিতরে। সেখান থেকে কুড়ালে মাংস কাটার শব্দ শোনা যেত। তারপর এমন মাংস নিয়ে আসত, যাতে হাড়ের চেয়ে মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি।
প্রথম দিকে কেউ সেটা খেয়াল করত না। কিছু হিংসুটে বুড়ি সব দেশেই থাকে। ওরা সবখানেই একটা গন্ডগোল বাধিয়ে দেয়। সে রকমই এক বুড়ির চোখে পড়ল, আমার পালা আসতেই তোলিয়া চলে যায় ভিতরে, সেখান থেকে ভালো ভালো মাংস নিয়ে আসে। তা থেকেই বেছে আমাকে দেয়।
সেই বুড়ি ছিল আমার ঠিক পেছনে। বিড়বিড় করে বলছিল, ‘এইবার কসাই ভিতরে গিয়ে ভালো মাংস নিয়ে আসবে। এই বিদেশি ছেলেটার জন্য আলাদা আয়োজন।’
বুড়ির বিড়বিড়ানি তোলিয়ার কানে গেল। সে বলল, ‘হ্যাঁ, ওর জন্য আমি ট্রে নিয়ে মাংস আনতে যাব।’
‘ওরা তো এ দেশে এসে দেশটা ছারখার করে দিল। আমরা এ দেশের নাগরিকেরাই খেতে পাই না, আর এরা এসে আমাদের খাওয়ায় ভাগ বসাচ্ছে!’
‘ওরা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। ওরা পড়াশোনা করছে। দেশে ফিরে প্রত্যেকেই বিজ্ঞানী হবে।’
‘ওদের বিজ্ঞানী হওয়ার নিকুচি করি। নিজের দেশে গিয়ে বিজ্ঞানী হোক। আমাদের দেশটাকে জ্বালাচ্ছে কেন?’
তোলিয়া বলল, ‘আমি ট্রেতে করে মাংস নিয়ে এলে কি সব মাংস ও নিয়ে যাবে? ওটার ভাগ আপনি পাবেন না?’
এবার কথাটা বুঝতে পারে বুড়ি। আসলে আমার জন্য মাংস কেটে আনলে তার ভাগ্যেও জুটবে কম হাড়ওয়ালা মাংস। কিন্তু তাতেও তিনি দমলেন না। এবার লড়াইটা চালালেন অন্যভাবে, ‘ও এখান থেকেই মাংস নিক। কিংবা একটু অপেক্ষা করুক। তুমি আমার জন্য ট্রে ভরে নিয়ে এস। আগে আমি নেব, তারপর ও নেবে।’
তোলিয়া বলল, ‘এটা আমার দোকান। আমি যেভাবে চাইব, সেভাবেই হবে। আপনি মাংস নিলে নেবেন, না হলে লাইন থেকে সরে দাঁড়ান। অযথা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করবেন না!’
তোলিয়ার সঙ্গে তর্ক করে পারবে না বলে বুড়ি এবার আমাকেই গালাগাল দিতে লাগল। আমাদের কারণেই নাকি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙেছে, আমাদের পালতে গিয়েই সোভিয়েতরাজের খাজাঞ্চিখানা উজাড় হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
তখন খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিল। কিন্তু এখন ভাবি, সে সময় বুড়িরা হঠাৎ করে দারিদ্র্যের যে অকুল দরিয়ায় পড়েছিল, তাতে পৃথিবীর সবকিছুর প্রতিই তাদের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে দেশে ফেরার আগপর্যন্ত তোলিয়া আমার জন্য ওর নিয়মটাই বহাল রেখেছিল। এসব ছোট ছোট ভালোবাসার গল্পগুলোই আনন্দ দেয়।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই। কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না...
০৮ মে ২০২২
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই। কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না...
০৮ মে ২০২২
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ ঘণ্টা আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই। কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না...
০৮ মে ২০২২
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। ঘাতকেরা এ জায়গাকে বেছে নিয়েছিল বধ্যভূমি হিসেবে।
স্বাধীনতার পরপরই এই বধ্যভূমির সন্ধান যখন পাওয়া যায়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল দেখতে পান। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে সে কঙ্কালগুলো দাফন করেন। এ পাম্পহাউসের ভেতরে উঁচু এক বেদিতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।
তথ্য: সংগ্রামের নোটবুক

ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। ঘাতকেরা এ জায়গাকে বেছে নিয়েছিল বধ্যভূমি হিসেবে।
স্বাধীনতার পরপরই এই বধ্যভূমির সন্ধান যখন পাওয়া যায়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল দেখতে পান। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে সে কঙ্কালগুলো দাফন করেন। এ পাম্পহাউসের ভেতরে উঁচু এক বেদিতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।
তথ্য: সংগ্রামের নোটবুক

তোলিয়ার চেহারাটা আজও ভুলিনি। ও ছিল কসাই। কসাই না বলে মাংসবিক্রেতা বললেই বুঝি ভালো হয়। আমাদের কুবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, তারই এক কোনে ‘আগ্রোপ্রোম’ নামে একটি মাছ-মাংস-সবজির দোকান ছিল। এই দোকানের আলুর স্বাদ আমি কোনো দিন ভুলব না...
০৮ মে ২০২২
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে