Ajker Patrika

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৪৩
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি

বিদেশি মোবাইল নম্বর থেকে বিত্তশালী কাউকে কল দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করত তারা। ভয় দেখাতে মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের কয়েকজন পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীর পরিচয় ব্যবহার করত। এই চক্রের মূল টার্গেট থাকত বড় ব্যবসায়ী ও নির্মাণাধীন বাড়ির মালিকেরা। নির্দিষ্ট সময়ে চাহিদামতো টাকা না পেলে ডাকাতি করত এরা।

এই চক্রের মূল হোতা জহিরুল ইসলাম ওরফে জহিরসহ ছয়জনকে গত শনিবার দিবাগত রাতে ডাকাতির টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ কেরানীগঞ্জ ও ধামরাই থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ১২ অক্টোবর রাজধানীর ইডেন অটোস মোটরসাইকেল শোরুমে ডাকাতির ঘটনাতেও জড়িত ছিল এই চক্রটি। গ্রেপ্তারকৃত বাকিরা হলো জসিম উদ্দিন, জাহিদুল ইসলাম শিকদার, খায়রুল ভূঁইয়া, রাকিব হাসান ও মো. নয়ন।

গতকাল রোববার কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, চক্রটির সদস্যরা অটোরিকশাচালক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, লেবার, পিয়নসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে মূলত ডাকাতিই করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

চক্রের সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মঈন জানান, ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় শ্যামলীর মোটরসাইকেল শোরুমে ঢুকে এই ডাকাত দলের সদস্যরা সেখানকার ম্যানেজার ওয়াদুদ সজীব এবং মোটর টেকনিশিয়ান নুর নবী হাসানকে ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় অন্যরা দোতলায় উঠে গ্লাস, কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং ক্যাশ ড্রয়ার ইত্যাদি ভাঙচুর করে এবং ক্যাশ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ডেস্কটপ মনিটর নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় শোরুমের মালিকপক্ষ থেকে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, র‍্যাবের অভিযানে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত চারটি চাপাতি, শোরুম থেকে লুণ্ঠিত ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করেছে।

মঈন জানান, চক্রটির সদস্যসংখ্যা ৮-১০ জন। তারা সবাই এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে এবং এই সূত্রে পরস্পরের পরিচিত। তারা মোহাম্মদপুর, বছিলা, শ্যামলী এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা চাইত। চাঁদা না পেলেই করত ডাকাতি।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, কয়েক মাস ধরে একজন পলাতক সন্ত্রাসীর নামে ইডেন অটোসের কাছেও চাঁদা চেয়েছিল এই চক্রটি। পরে চাঁদা না পেয়ে তারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটিতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ১১ অক্টোবর তারা ঢাকা উদ্যান এলাকায় জসিমের বাসায় মিলিত হয়ে নানা পরিকল্পনা করে। জসিম ও জহির ঢাকা উদ্যান কাঁচাবাজার থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চারটি চাপাতিও কিনে আনে। পরে ১২ অক্টোবর ঢাকা উদ্যানে জড়ো হয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী শোরুমের লোকজন ও আশপাশের লোকজনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। একপর্যায়ে কয়েকজন ভেতরে ঢুকে যায়। বাকিরা বাইরে পাহারা দেয়।

মঈন বলেন, তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই শোরুমে ঢুকেই ভীতি সৃষ্টি করে। চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে শোরুমের স্টাফদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...