Ajker Patrika

ছয় হাজার টাকায় শুরু `পদ্মপুরাণ'

মন্টি বৈষ্ণব
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১০: ২৯
ছয় হাজার টাকায় শুরু `পদ্মপুরাণ'

সিলেট বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মণিপুরী নারীদের হাতে বোনা মণিপুরী শাড়ির কথা। বাংলাদেশের গর্ব মণিপুরী শাড়িকে দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে পরিচিত করার স্বপ্ন জেব উন নাহার যূঁথীর। এ স্বপ্ন নিয়ে মণিপুরী শাড়ি নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা থেকে অনলাইনে শুরু করেন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম ‘পদ্মপুরাণ’। 

যূঁথীর জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি সব সিলেটেই। দেশীয় ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর টান ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পড়ালেখার শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেনাকাটার প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হন। এই আকর্ষণ থেকেই নিজের একটি ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টির ইচ্ছার জন্ম। তাই বেশ কয়েকটি চাকরিতে যুক্ত হলেও আর চাকরিজীবী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা স্থায়ী হয়নি। শুরু করেন ‘পদ্মপুরাণ’। 

ছোটবেলা থেকে স্বাধীনভাবে থাকতে পছন্দ করতেন যূঁথী। আর এই চিন্তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পর তাঁর জীবন-ভাবনায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এই সময়টা ছিল কোনো না কোনো পেশায় যুক্ত হওয়ার সময়। ঠিক সে সময়টাতে তিনি ভাবলেন, এই ১০ টা-৫টা রুটিন তাঁর জন্য নয়। তাই স্বাধীন পেশা নির্বাচন করতে গিয়েই অনলাইন ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেন। সিলেটের মানুষ হওয়ায় মণিপুরী শাড়ি দিয়েই শুরু করেন কাজ। 

 ‘পদ্মপুরাণ’-এর স্বত্বাধিকারী যূঁথীর শুরুর গল্পে তাকাতে হলে ফিরতে হবে ২০১৬ সালে। নিজেই জানালেন, ‘পদ্মপুরাণের জন্ম ২০১৬ সালে। শুরুর সেই সময়ে আমি একদমই বিক্রির চিন্তা বা চেষ্টা—কিছুই করিনি। সময় নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের পেজ ও ছবি দেখতাম। নিজে নিজে ছবি তোলার চেষ্টা করতাম। পদ্মপুরাণের নিয়মিত বিক্রি শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। মাত্র ছয় হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি।’ 

যেহেতু মণিপুরী শাড়ির দাম একটু বেশি, তাই শুরুতে চ্যালেঞ্জটাও বেশি ছিল। কিন্তু থেমে থাকেননি যূঁথি। এর মধ্যেই ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে গুজরাট মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। ভারতে থাকার সময় তাঁর প্রতিষ্ঠানের কাজে সহায়তার হাত বাড়ান পরিবারের লোকেরাই। বললেন, ‘২০১৮-১৯ সালে পদ্মপুরাণের যাবতীয় কাজ করেছেন আমার মা, আর ভাই। শাড়ি আনা, ছবি তোলা, ঠিকানা অনুযায়ী সেগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা—এ কাজগুলো করতেন তাঁরা। ২০২০ সালে ফিরে আমি আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করি। মণিপুরী শাড়ি, গামছা, ওড়না, শাল, মাফলার নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি। ইদানীং মণিপুরী শাড়িতে একটু আনকমন কম্বিনেশন নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমার মনে হয়, আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, এমন একটা পেশা নিতে পেরেছি, যা আমার প্যাশন। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ তাদের পেশাকে পছন্দ করতে পারে না।’ 

হাতে আঁকা শাড়ি বেশ সাড়া ফেলেছেযূঁথী মণিপুরী শাড়ি, ওড়নাসহ মণিপুরী অন্যান্য পণ্য, পেইন্টের শাড়ি, ড্রেস, ব্লাউজপিস, দেশীয় তাঁত শাড়ি, গৃহ সজ্জাসামগ্রী, টিপ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছেন। মণিপুরী শাড়ির পাশাপাশি খাদি কাপড়ের কামিজ পিস নিয়েও কাজ করেছেন। এ ছাড়া কাজ করেছেন টাঙ্গাইলের সুতি ও সফট কাতান নিয়ে। পেইন্টিংয়ের প্রতি দুর্বলতার কারণে ২০২০ সাল থেকে শুরু করেন ফ্যাব্রিক পেইন্টিংয়ের কাজ। 

এই সময়ে দেশে উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে অনলাইনে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যাও। দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ব্যবসায় যুক্ত হওয়া অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এই পেশাটা মানুষের মনে কিছুটা হলেও একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। যারা এই পেশায় এসেছেন বা আসতে চান তাঁদের বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আপনার ক্রিয়েটিভিটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করুন, তাহলেই মৌলিক কাজ বের হয়ে আসবে। অমুক ওই জিনিস বিক্রি করছে, তাই আমাকেও করতে হবে—এ রকম ধারণা মাথায় না আনাই ভালো। কারণ, প্রত্যকের ক্রেতা-শ্রেণি আলাদা। বিক্রির স্ট্র্যাটেজি আলাদা। তাই আগে বাজার ও পণ্য সম্পর্কে জানাটা বেশি জরুরি। তবে, এখন সবাই যেভাবে অনলাইন পেশায় আসছেন, তাতে সত্যি কথা বলতে পেশাদারি কতটা রাখতে পারছেন—এটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে এই পেশার প্রতি সম্মান বাড়ছে, এটা দেখতে ভালো লাগে।’ 

 ‘পদ্মপুরাণ’ গুটিসুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে সারা দেশ ছাড়িয়ে এখন বাইরের কয়েকটা দেশেও পৌঁছে গেছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে নিয়মিত যাচ্ছে পদ্মপুরাণের পণ্য। আগামী মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে দুজন আঁকিয়ে যুক্ত হবেন। মূল কাজে এখন আছেন দুজন সহকারী। আর আরেকটু গুছিয়ে উঠতে পারলে একটা বড় স্টুডিও নেওয়ার স্বপ্ন আছে যূঁথীর। যূঁথীর স্বপ্ন দেশীয় ফ্যাশনের প্রতি সবার সচেতনতা তৈরি করা। 

কাজের অনুপ্রেরণার বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আমার কাজের জন্য প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রেরণা দেয় আমার ভাই। তারপর মা ও কাছের বন্ধুরা। তবে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার ক্রেতারা। জানি না এমন ভাগ্য কারও হয় কি না। আমার ক্রেতারা আমাকে পরিবারের একজন করে নিয়েছেন। যে ভালোবাসা ক্রেতাদের কাছ থেকে পেয়েছি, তার জন্য যেকোনো বাধাই তুচ্ছ। এখন পদ্মপুরাণের সব ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে আমার বিশাল পরিবার।’ 

পদ্মপুরাণের পসরায় এখন টিপসহ নানা পণ্য যুক্ত হয়েছেগত দেড় বছর মহামারি করোনায় থমকে ছিল অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাজ। এই সময়ে আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেকেই। করোনাকালে কেমন ছিল ‘পদ্মপুরাণ’? যূঁথী বলেন, ‘করোনাকালে প্রথম লকডাউনের সময় কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু তাঁতি, বিশেষ করে আমার সাপ্লায়ার যিনি ছিলেন, তিনি সব সময় বলতেন—“আপনি যদি না নেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব? ” ওই সময় আমার সহকারী ছেলেটার সংসারের সবাই বেকার হয়ে পড়ে। আমিও কাজ বন্ধ রাখায় ছেলেটার রোজগারও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসব দিক বিবেচনা করে আবার চালু করি কাজ। আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে যেটুকু সম্ভব এই মানুষগুলোর জন্য কাজ চালিয়ে গেছি।’ 

তা ছাড়া করোনাকালে হোম ডেলিভারি দিয়েছেন যূঁথী। বললেন, ‘সিলেটে এসএ পরিবহন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস হিসেবে বেশ ভালো। কোভিডের প্রথমদিকে সুন্দরবনের হোম ডেলিভারি বন্ধ ছিল। শুধু এসএ পরিবহনে হোম ডেলিভারি হতো; চার্জ বেশি লাগত। সে সময় ২৫০,৩০০ এমনকি ৪০০ টাকা দিয়েও পার্সেল পাঠাতে হয়েছে। তবুও যেন ক্রেতারা নিরাপদে বাসায় বসেই পণ্য পান, এ জন্য এই ক্ষতিটা স্বীকার করে নিয়েছি। এখন পর্যন্ত এভাবেই হোম ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছি।’ 

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে মানুষ। স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখে সবাইকে। যুঁথীর স্বপ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার সব সময় স্বপ্ন ছিল এমন একটা পেশা নির্বাচন করব, যেখানে আমার চিন্তার ছাপ থাকবে। যেখানে আমি কখনো ক্লান্ত হব না। নিয়মিত পণ্যের পাশাপাশি অনেক ডিজাইনের টিপ বানিয়েছি। কিছু পেইন্টিংও বিক্রি করেছি। এটা ছিল আমার কাছে পুরস্কার পাওয়ার মতো আনন্দের। আজ এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় আমার সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি। সকালে চোখ মেলার পর থেকে মাঝরাত, কখনো কখনো শেষ রাত পর্যন্ত কাজ করি, তবুও নেশা যায় না। কখনো কাজ থেকে মন সরে যায় না। সত্যিই কেউ যদি নিজের স্বপ্নের সঙ্গে হাঁটে, তাহলে সাফল্য আসবেই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেবিএস হোল্ডিংসের ফ্ল্যাট কিনলে বিশেষ ছাড় পাবেন প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রাইম ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
প্রাইম ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

প্রাইম ব্যাংক পিএলসি দেশের শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেড থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ মূল্যছাড় সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

সম্প্রতি জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই অংশীদারত্বের আওতায় প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেড থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ মূল্যছাড় সুবিধা পাবেন, যা তাঁদের দেশের প্রিমিয়াম রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ আরও সহজলভ্য করবে।

চুক্তিতে প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন মামুর আহমেদ এবং জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের পক্ষে ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল হক।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেটস জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল এবং জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) মো. বেলায়েত হোসেনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের লাইফস্টাইলভিত্তিক মানসম্পন্ন সেবা ও আর্থিক সমাধান প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যা গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুনরায় বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবারও বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। ছবি: সংগৃহীত
আবারও বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। তিনি আম্বার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং দেশের টেক্সটাইল শিল্পে একজন উদ্যোক্তা।

গত ২৫ নভেম্বর বিটিএমএর গুলশান কার্যালয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিটিএমএ।

এতে বলা হয়, বিটিএমএর তিনজন ভাইস প্রেসিডেন্টও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাটাগরি থেকে মো. শামীম ইসলাম, ফ্যাব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাটাগরি থেকে মো. আবুল কালাম ও টেক্সটাইল প্রোডাক্ট প্রসেসের ক্যাটাগরি থেকে শফিকুল ইসলাম সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে ১২৬ টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বছরের শেষ দিকে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। বাড়তি চাপের কারণে আজ শনিবার খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকা পর্যন্ত।

অথচ গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ দর ছিল ১২৪ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ, মাত্র একদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কমপক্ষে ১ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ, ব্যাংকের নির্ধারিত দরের (১২২ টাকা ৩০ পয়সা) তুলনায় খোলাবাজারে ডলারের দাম এখন ৩ টাকা ৭০ পয়সা বেশি।

সরেজমিনে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও ফকিরাপুল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খোলাবাজারে নগদ ডলারের সরবরাহ যথেষ্ট থাকলেও মূলত চাহিদার চাপে দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে মানি চেঞ্জারগুলো প্রতি ডলার কিনেছিল ১২৩ টাকা ৮০ পয়সায়, বিক্রি করেছে ১২৪ টাকা ৮০ পয়সায়। কিন্তু গতকাল খোলাবাজারে ঘোষিত দর হিসাবে ক্রয়মূল্য ছিল ১২৪ টাকা ২০ পয়সা এবং বিক্রয়মূল্য ছিল ১২৫ টাকা ২০ পয়সা। শনিবার ছুটির দিন থাকায় নতুন দর আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বছর শেষে মানুষ ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি বিদেশে যায়। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। এবার ভারত, ভুটান ও মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশ ভিসায় কড়াকড়ি করছে। এতে করে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু এসব দেশের বাইরে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে যাচ্ছেন অনেকে। এই দেশগুলোতে ভারতের তুলনায় বেশি ডলার খরচ হয়। অনেকে ব্যাংক থেকে ডলার না পেয়ে খোলাবাজার থেকে কিনছেন। পাশাপাশি একটা গোষ্ঠী নগদ ডলার কিনে হাতে রাখছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে খোলাবাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। মূলত এর ফলে দাম বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ টাকা থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা পর্যন্ত। সব মিলিয়ে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ পর্যন্ত নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে মোট ২৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গৌতম দে বলেন, ‘ভারতসহ কয়েকটি দেশ ভিসায় কড়াকড়ি করছে। অনেকে বিকল্প হিসেবে অন্য দেশে যাওয়ার কথা ভাবছেন। এতে খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিকবাবে ১২৫ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত ডলার বিক্রি করছি। এর বেশি কেউ নিচ্ছে বলে জানা নেই। আর নতুন ঘোষিত দর রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস ও র‍্যাডিসন ব্লুর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ১১
র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস ও রেডিসন ব্লুর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস ও রেডিসন ব্লুর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেড এবং র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের পক্ষে সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার জানে আলম এবং র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনের পক্ষে ক্লাস্টার জেনারেল ম্যানেজার ডুকো এভারেন ডি ভ্রিস নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এন এম মনজুরুল হক মজুমদার, র‌্যাংগস গ্রুপ অব কোম্পানিজের অ্যাডভাইজর মেজর (অব.) মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার এবং র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের হেড অব পিআর অ্যান্ড এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স রাহেল রাব্বি।

এ ছাড়া র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনের ডিরেক্টর অব ফিন্যান্স শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার মনফুজা মাসুদ চৌধুরী, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব সেলস শামীম আল মামুনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় র‌্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনের সেবাগ্রহীতারা বিশেষ সুবিধা ও প্রণোদনা উপভোগ করবেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে দুই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বিভিন্ন করপোরেট ও সামাজিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করবে।

সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন, এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি, কার্যকর ও ফলপ্রসূ অংশীদারত্ব গড়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত