Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি নিয়ে সাত কলেজে তীব্র অসন্তোষ

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি নিয়ে সাত কলেজে তীব্র অসন্তোষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজে শিক্ষক সংকট, শ্রেণিকক্ষ সংকট, গবেষণার সুযোগ না থাকা, ফল প্রকাশে বিলম্ব ও সার্টিফিকেট জটিলতাসহ নানা ধরনের সমস্যা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধিভুক্তির পর থেকে এসব সমস্যা লেগেই আছে। এসব সমস্যা সমাধানে ও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে প্রায়ই রাজপথে দেখা যায় কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্থবির শিক্ষা কার্যক্রমে যা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা এমন অসন্তোষ থেকে তারা এবার অধিভুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছেন।

সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা ‘সাত কলেজ সংস্কার চাই’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে তারা কলেজগুলোর সমস্যার চিত্র তুলে ধরছেন। গ্রুপের কিছু কিছু পোস্টে দেখা গেছে, সমস্যার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সমাধানের রোডম্যাপও উল্লেখ করছেন। সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি একটি বড় অংশের শিক্ষার্থী ওই গ্রুপে সরাসরি সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, অধিভুক্তি বাতিলের পর সাত কলেজ নিয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

প্রান্ত নামে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাবি নিজেদের অধিভুক্ত করলেও তারা সাত কলেজকে বিবেচনা করেছে সবসময়ই অর্থ উপর্জানের মাধ্যম হিসেবে। শিক্ষাগত মানোন্নয়ন তো ঘটেইনি, বরং নিত্য নতুন প্রতিবন্ধকতা আর ভুতুড়ে নিয়মনীতির ভেতর অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কলেজগুলোতে। অধিভুক্তকরণের সাত বছরে এসে ঢাবির অর্জন বলতে বিস্তর বৈষম্য সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না।’

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের চলমান অসন্তোষ নিয়ে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটোরিয়ামে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে কলেজটির শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্রান্ত বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশকে যখন বৈষম্যমুক্ত করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, তখন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজেও সংস্কার প্রয়োজন। সাত সরকারি কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সাত কলেজের সংস্কার’ বিষয়ক ওই মতবিনিময় সভায় সংস্কার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় উঠে আসে সাত কলেজে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বৈষম্য ও প্রতিবন্ধকতার কথা।’

২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ কমাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে সভা হয়। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কলেজগুলোকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে একমত হন।

এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয় রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ। ওইদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দফতর সংলগ্ন লাউঞ্জে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সাতটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। কলেজগুলো হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে আছে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল, টেক্সটাইল এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ। ১৩৪টি কলেজের মতোই চলার কথা ছিল নতুন যুক্ত হওয়া অধিভুক্ত সাত কলেজের। অধিভুক্ত অন্যান্য কলেজের মতো নতুন সংযোজিত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা পাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট। তবে সার্টিফিকেটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে অধিভুক্ত স্ব-স্ব কলেজের ও বিভাগের নাম। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটে হল ও বিভাগের নাম উল্লেখ থাকে। সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা বলছেন, অধিভুক্তির পরিচয় মিললেও বস্তুত তারা অধিকারহীন। তারা বৈষম্যের শিকার।

সাত কলেজে অসন্তোষ কী নিয়ে
ঢাকা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন। কিন্তু সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ নেই। স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় রয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। ঢাবি শিক্ষার্থীরা সরাসরি পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক পাচ্ছেন, সেখানে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকই পাচ্ছেন না। ঢাবি শিক্ষার্থীরা গবেষণার অফুরন্ত সুযোগ পাচ্ছেন, অন্যদিকে সাত কলেজে শ্রেণিকক্ষেরই তীব্র সংকট। ঢাবি শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হলেও সাত কলেজের সুনির্দিষ্ট কোনো অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার নেই। 

অসন্তোষের দীর্ঘ চিত্র তুলে ধরে আব্দুর রহমান বলেন, ঢাবির ২০২২-২৩ সেশনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এমনকি কিছুদিনের মধ্যে হয়ত ফলও প্রকাশ হবে। অথচ সাত কলেজের ২২-২৩ সেশনের এখনো পরীক্ষায়ই হয়নি। প্রত্যেক সেশনের একই অবস্থা। খোঁজ নিলে দেখা যাবে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ সিলেবাস কভার করার মতো পর্যাপ্ত ক্লাস পায়নি। সাত কলেজে ক্লাস নেয় বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক। আর প্রশ্ন করেন ঢাবির পিএইচডির শিক্ষক, খাতাও তারা দেখেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মূল্যায়ন যথাযথভাবে বিকশিত হচ্ছে না। সাত কলেজে কোনোরকম পরীক্ষা হলেও ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়। বিগত বছরগুলোতে দেখা, গেছে ঢাবি ৬-৭ মাস পর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। সাত কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোয় চরম দৈন্যদশা অবস্থা বিরাজ করছে। এখানে ব্যবহারিক ক্লাস করার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই।

সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের প্রস্তাব
শিক্ষার্থীদের আলোচনার মধ্যে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে নতুন একটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেছেন, ঢাকার বড় বড় ৭টি কলেজ এবং আরও কিছু কলেজ নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বা পশ্চিমবাংলার কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি collegiate university-তে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। এই ৭টি কলেজের আরও কয়েকটি কলেজে নিয়ে এর একটিকে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবন হিসাবে বানিয়ে বাকি কলেজগুলোকে এর অনুমোদিত কলেজে পরিণত করা। কলেজগুলোতে কেবল ৩-৪ বছরের অনার্স পড়াবে। সেখানে থাকবে না উচ্চ মাধ্যমিক বা ডিগ্রি পাসকোর্স। এই অনুমোদিত কলেজে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের মত।

শিক্ষকের যোগ্যতা ও কলেজগুলোর ডিগ্রি নিয়ে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে পিএইচডি। যেখানে এই অনুমোদিত কলেজের শিক্ষকদের সবারও ন্যূনতম পিএইচডি থাকা উচিত। ৪ বছরের অনার্সই হবে টার্মিনাল ডিগ্রি। এরপর পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে লিমিটেড সিটের জন্য ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মাস্টার্সে ভর্তি হবে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কেবল ৭ কলেজের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ক্যাম্পাসেই মাস্টার্স পড়ানো হবে।

তীব্র অসন্তোষ নিয়ে রোববার সংবাদ সম্মেলন
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘আগামীকাল রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দেশের উচ্চশিক্ষার সূচনালগ্নে অবদান রাখা সরকারি সাত কলেজ সংস্কারের অভিপ্রায়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একান্তই কাম্য। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের নিজ ক্যাম্পাসের উন্নয়নে সংস্কার কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি।’ আগামীকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা কলেজে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হবে।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে এখনো স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। সরকারের পতনের সঙ্গে অন্যান্য খাতের মতো ভেঙে পড়েছে শিক্ষাখাতও। প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন হয়েছে ভিসি-প্রোভিসি, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজে সে ধারাবাহিকতায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ঢাবির নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সাত কলেজের এক অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তারা এখনো চিঠি না পেলেও মুখে মুখে এ বৈঠকের কথা শুনেছেন। ঢাবির সঙ্গে প্রথম বৈঠকে তারা শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয়টি ঢাবি প্রশাসনের সামনে তুলে ধরবেন।

প্রশাসন কী বলছে
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ‍উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও তার পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। মুঠোফোনে প্রতিক্রিয়া না জানালেও পরে তিনি ক্ষুদেবার্তায় তার অফিসে গিয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে আমাদের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। চাইলেই একেবারে সবকিছু রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। পরিবর্তনের জন্য আলোচনা করতে হবে। দুপক্ষকে কথা বলতে হবে, পক্ষগুলোকে একে অপরের কথা শুনতে হবে। আমরা শুনেছি, শিক্ষার্থীরা আগামীকাল একটা সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন, তারা তাদের কথাগুলো বলুক। আমরা তাদের কথা শুনতে চাই। এরপর প্রয়োজনে আমরা নিজেরা আবার আলোচনা করে সমস্যাগুলোর কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করবো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে মুখোমুখি শিক্ষক-অভিভাবকেরা

  • পিরোজপুর, পাবনায় শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের সংঘর্ষ।
  • অনেক জায়গায় স্কুলের তালা ভেঙে পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
  • শিক্ষকনেতাদের বদলি। প্রতিবাদে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।

এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’

এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।

বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।

একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।

জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’

সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।

সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাবিপ্রবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ৮ ডিসেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।

২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য: (পর্ব-১)

শিক্ষা ডেস্ক
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

  • Welcome to our bank. – আমাদের ব্যাংকে স্বাগতম।
  • May I have your name, please?– দয়া করে আপনার নাম বলবেন?
  • How can I assist you? – কীভাবে সাহায্য করতে পারি?
  • Please fill out this form. – দয়া করে এই ফরমটি পূরণ করুন।
  • Do you have an account with us? – আপনার আমাদের সঙ্গে কোনো অ্যাকাউন্ট আছে কি?
  • I would like to open a new account. – আমি একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে চাই।
  • What type of account would you like to open? – আপনি কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান?
  • I’d like a savings account, please.– সেভিংস অ্যাকাউন্ট, অনুগ্রহ করে।
  • I want to deposit money. – আমি টাকা জমা দিতে চাই।
  • How much would you like to deposit? – কত টাকা জমা দিতে চান?
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়, চীন। ছবি: সংগৃহীত
চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়, চীন। ছবি: সংগৃহীত

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।

সুযোগ-সুবিধা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।

আবেদনের যোগ্যতা

আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত