শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

সেকশন

 

বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভুল নীতির কারণে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, চাপে ভোক্তা: সিপিডি

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৮

ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি নীতি-গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ। ছবি: আজকের পত্রিকা বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভুল নীতির কারণে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে এর দায় চাপিয়ে দিচ্ছে জনগণের ওপর। অথচ সরকার চাইলে বিকল্প ছিল। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই সমন্বয় নয়। বরং এটি ভোক্তার ওপর সরাসরি বাড়তি দাম চাপানো। বরং দাম বৃদ্ধি না করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ (কেন্দ্র ভাড়া) সমন্বয় করা দরকার। 

আজ বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেছে বেসরকারি নীতি-গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি: ভর্তুকি সমন্বয়ের অন্য বিকল্প আছে কী?’ শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষকেরা বলেন, দ্রব্যমূল্যর উচ্চগতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ভোক্তার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি না করে লোকসান কমানো যেতো, সেটা সরকার করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ শর্ত মেনে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয় চালু করা হয়েছে। আইএমএফের আরেকটি শর্ত ছিল বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভর্তুকি সমন্বয় করা। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভর্তুকি সমন্বয় করা হবে আগামী তিন বছরে ধাপে ধাপে। আইএমএফের শর্ত পূরণে বিদ্যুতের দাম  গত বছর তিন দফায় ৫ শতাংশ করে দাম বাড়ানো হয়েছে। গত মাসে এক দফায় বাড়ানো হয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। কিন্তু এভাবে পুরোটা ভোক্তার ওপর না চাপিয়ে খরচ কমাতে পারে সরকার।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)  যখন দাম বাড়াতো তখন ভোক্তার এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল। এতে সরকারি সংস্থার আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হতো। সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আইন সংশোধন করে দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নেয়, এতে নির্বাহী আদেশে দাম বৃদ্ধি করায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হচ্ছে না। এটি আবার বিইআরসির হাতে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর  সিপিডি গত বছরের নভেম্বরে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওপর প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে একটা জরিপ করে।  এতে দেখা গেছে, আবাসিক খাতে গড়ে খরচ বাড়বে সাড়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এতে তাদের বিদ্যুৎ বিল বাড়বে গড়ে ১০৬ থেকে ১১৮ টাকা। তবে কৃষির সেচে খরচ বাড়বে ১১ শতাংশের বেশি। এতে করে কৃষি পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ চালিত কারখানার উৎপাদিত পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। সেখানেও ভোক্তার খরচ বাড়বে।

সিপিডি  বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটিকে বড় সমস্যা বলে মনে করছে। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বলা হয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভাড়া সরকারের মাথা ব্যথার বড় কারণ হয়েছে।  শুধু কেন্দ্র ভাড়া নয়, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনাও খরচ বাড়ার কারণ। এর পাশাপাশি এ খাতে প্রতিযোগিতার অভাব। ইচ্ছেমতো সমঝোতা করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কম হতো বলেও সিপিডির মত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য সরকারের হাতে চারটি বিকল্প রয়েছে। এগুলো হলো-সময় মতো বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা, বেসরকারি খাতে নতুন বিদ্যুৎ কিনতে নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট শর্তে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো এবং প্রয়োজনে খুবই সামান্য পরিমাণে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা। এগুলো বাস্তবায়ন করলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ খাতে আর ভর্তুকির প্রয়োজন পড়বে না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত, মাশফিক আহসান ও ফয়সাল কাইয়ূম।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    পঠিতসর্বশেষ

    এলাকার খবর

     

    ত্রিপুরার ময়রার ছেলে ২৯ হাজার কোটির ব্যাংকের মালিক, পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

    ইস্পাহানি ৪র্থ বাংলাদেশ ওপেন স্কোয়াশের পুরস্কার বিতরণ

    প্রবৃদ্ধিতে দেশের নির্মাণশিল্প, ২০২৮ নাগাদ আয় দাঁড়াবে ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি: গবেষণা

    ওয়ালটন-বিএসজেএ স্পোর্টস কার্নিভ্যালের সমাপনী, টুর্নামেন্ট সেরা মাঝহারুল ইসলাম

    সিঙ্গার ওয়েবসাইটে পণ্য কিনে বিকাশ পেমেন্টে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক

    প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই নর্দান করপোরেশনের

    বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

    গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার নীড়

    ছত্তিশগড়ে ৩৬ মাওবাদী নিহত 

    প্রথম থেকে খেলার ‘সুযোগ নেই’ জামালের

    কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বাড়লেও বন্যার আশঙ্কা নেই

    ভূঞাপুরে জুয়ার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব, সালিসে যুবককে কুপিয়ে হত্যা