Ajker Patrika

দিনে ক্লাস-পরীক্ষা রাতে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা

কে এম হিমেল আহমেদ, বেরোবি
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৫৬
দিনে ক্লাস-পরীক্ষা রাতে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা

সারা দিন ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্টে ব্যস্ততার শেষ নেই। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী একাডেমিক কাজ শেষে রুমে ফিরে নিজেকে স্বস্তি দিতে বিশ্রাম, আড্ডা কিংবা ঘুরাঘুরি বেছে নেন। কিন্তু একাডেমিক সব কাজ সেরে বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খাবার বিক্রিতে ব্যস্ত থাকেন মাহবুব।

নিজে রান্না করে নিজেই খাবার পরিবেশন করেন। এ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ মেটানোসহ বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোনদের জন্য টাকা পাঠান। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লড়াকু এই শিক্ষার্থীর নাম মাহবুব মোর্শেদ।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়। বাবা আতিয়ার রহমান ও মা আমিনা খাতুন। মাহবুব তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। বোন তানিয়া আক্তার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ছোট ভাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে মাহবুব দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় তিন হাজার টাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে ‘ভার্সিটি ক্যাফে’ নামের একটি রেস্তোরাঁ চালু করেন। সেখানে পোলাও, বিরিয়ানি, ভুনা খিচুড়ি, নুডলস, কফি, চাওমিন ও মুরগির মাংসের সঙ্গে হাফ প্লেট করে খিচুড়িও বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। এই খাবারের দোকানে রান্না থেকে পরিবেশন—সবকিছু একাই করেন।

সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় মাহবুবের ছোট্ট দোকানে উপস্থিত হই। অল্প কিছু টেবিল-চেয়ার আছে সেখানে। একসঙ্গে ২০ জনের মতো বসতে পারেন। সবার সামনে ছোট্ট একটি রান্নাঘরে রান্না হচ্ছে নানান পদ। প্লেট পরিষ্কার করে উপস্থিত ক্রেতাদের টেবিলে নিজেই খাবার পরিবেশন করছেন মাহবুব। পোলাও-মাংসের সঙ্গে এক টুকরো লেবু ও দুই টুকরা শসা দিচ্ছেন। খাবার শেষে নিজেই টিস্যু পেপার দিয়ে ক্রেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে খাবার কেমন হয়েছে জানতেও চান তিনি। ‘আবার আসবেন’ বলে বিদায় দেন ক্রেতাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোনারুল ইসলাম মোনা এখানে মাঝেমধ্যে খেতে আসেন। মোনা জানান, ভার্সিটি ক্যাফের খাবারের মান ভালো, দামে কম ও সুস্বাদু। এমন দোকান এখানে চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেক সুবিধা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কাজের ফাঁকে মাহবুবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাজার করি। তারপর ডিপার্টমেন্টের ক্লাস বা পরীক্ষা শেষ করে এসে বিকেলে রান্না করি। খাবারের মান ঠিক রেখে ব্যবসা আরও বড় করব।’

ছোটবেলায় মায়ের রান্না দেখে শিখেছেন মাহবুব। তাঁর এই ছোট্ট দোকানে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। দিনে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয়। প্রতি মাসে অন্তত তিনটা বড় অর্ডার আসে। এসব অর্ডারে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয়। কথা প্রসঙ্গে মাহবুব জানান, পরিচিত এক বড় ভাই তাঁকে এই দোকানের জামানত বাবদ আড়াই লাখ টাকা, বাসনপত্র ও চেয়ার-টেবিল কেনা বাবদ আরও ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা মাহবুব পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করবেন। সেই ‘বড় ভাই’ ব্যবসার কোনো লভ্যাংশও নেবেন না।

মাহবুব মোর্শেদ জানান, বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাধারণত খুব একটা পড়াশোনা হয় না। এই সময়টা তিনি কাজে লাগিয়েছেন। কাজ করতে তাঁর কোনো লজ্জা বা হীনম্মন্যতা নেই।

নিজের লেখাপড়া চালানো এবং পরিবারকে সহায়তা করতেই মাহবুব মোর্শেদের এই প্রাণান্ত চেষ্টা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ পরিচয়ের বাইরে বয়ে চলেছেন শ্রমঘন জীবন। যে জীবনে প্রশান্তি আছে, আনন্দ আছে। খানিক ক্লান্তিও আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ৩৪ পদে লড়বেন ১৮৯ জন

জবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে ৩৪ পদে ১৮৯ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জকসুর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২১ পদে ১৫৬ এবং নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ছাত্রী হল সংসদের ১৩ পদে ৩৩ প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক তালিকা থেকে ৪২ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ৩৮ এবং হল সংসদের ৪ জন রয়েছেন।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জকসু নির্বাচনী তফসিলের (সংশোধিত) ক্রম ১২ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হলো। তবে প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা কয়েকজনের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত চলমান থাকায় তাঁদের নাম চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে আপাতত বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তাঁদের প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। ‎

‎এদিকে, রাত দেড়টায় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, জকসুর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদে ভিপি (সহসভাপতি) পদে ১৩, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ৯ ও এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে ৭ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়।

‎এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র পদে ৪, শিক্ষা ও গবেষণা পদে ৯, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৫, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৫, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে ৪, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ৮, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৭, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৭, পরিবহন সম্পাদক পদে ৪, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১০, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ৭ এবং সদস্য পদে ৫৭ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

‎ছাত্রী হলে ১৩ পদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৩, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৩, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ২, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৪, পাঠাগার সম্পাদক পদে ২, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ২, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদকে ৪ এবং ৪টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়।

‎সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহার করা তালিকা প্রকাশ, ১৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রচার, ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনা এবং ৩০ বা ৩১ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষা ক্যাডার: পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হলেন ২৭০৬ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৮
শিক্ষা ক্যাডার: পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হলেন ২৭০৬ জন

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে বড় পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২ হাজার ৭০৬ শিক্ষক। এর মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক থেকে ৯৯৫ জন অধ্যাপক হয়েছেন। আর সহকারী অধ্যাপক থেকে ১ হাজার ৭১১ জন হয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনের বলা হয়েছে, নতুন অধ্যাপকেরা চতুর্থ গ্রেডে ও সহযোগী অধ্যাপকেরা পঞ্চম গ্রেডে বেতন পাবেন। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে আগের পদের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।

এর আগে, গত ২০ নভেম্বর একসঙ্গে ১ হাজার ৮৭০ প্রভাষককে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। এর মধ্যে দিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো। অর্থাৎ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য তিনটি স্তরেই পদোন্নতি দেওয়া হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু, শেষ ২০ ডিসেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া এ প্রক্রিয়া চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বছর ভর্তিতে ‘সেকেন্ড টাইম’ পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে। তবে সেকেন্ড টাইমের প্রার্থীদের ৪ নম্বর কাটা যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।

২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিম বা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।

আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি ও জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটের ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা: কলা অনুষদের লিখিত অংশের প্রস্তুতি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামীকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা। শেষ মুহূর্তে এসে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এমসিকিউ সমাধানে পারদর্শী হলেও লিখিত প্রস্তুতিতে দুর্বল থেকে যায়। ফলস্বরূপ, লিখিত পরীক্ষায় কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে শেষ হয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। ভর্তি-ইচ্ছুকদের এই অন্তিম মুহূর্তে লিখিত অংশের প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন মো. সৈয়দুর রহমান।

পদ্য ও গদ্যের গুরুত্বপূর্ণ পঙ্‌ক্তি বা উক্তির ব্যাখ্যা পড়া

মূল পাঠ্যবইয়ের গদ্য ও পদ্যগুলোর অন্তর্নিহিত অর্থ ও শব্দার্থ ভালো করে পড়তে হবে। অধ্যায়ের শেষে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের যে ব্যাখ্যা দেওয়া থাকে, সেগুলো মুখস্থ করে ফেলতে হবে। অনেক সময় সমাস, সন্ধি বা উপসর্গসম্পর্কিত বিভিন্ন শব্দ গদ্য বা পদ্যের মধ্যে থাকে। সে শব্দগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। প্রতিটি ঘটনা বা উক্তি পড়ার সময় লেখক কোন প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি বলেছেন, সেটির দিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে।

বানান ও যতিচিহ্নের দিকে মনোযোগ দেওয়া

বানান বিষয়টিতেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী কম নম্বর পায়। এখন পুরো বইটি আরও একবার এমনভাবে পড়তে হবে, যেন কঠিন বানানগুলো আরও একবার চোখে পড়ে। যেমন: মহীয়সী, মুহুর্মুহু, মনীষী। বানান লিখতে ভুল করলে অনেক ভালো লিখেও বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব নয়। তাই এদিকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একই সঙ্গে বাক্য লেখার সময় এর যতিচিহ্নের যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

বাক্যের গঠন, কাঠামো ও সুন্দর হাতের লেখা

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় এমন অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেয়, যাদের মেধা অত্যন্ত বেশি। তবে খাতায় সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে না পারায় তারা ভালো নম্বর থেকে বঞ্চিত হয়। ভালো নম্বর পেতে হলে লেখাকে প্যারা আকারে সাজাতে হবে। চেষ্টা করতে হবে লেখার মধ্যে কোনো কাটাকাটি যেন না হয়। লেখার সময় একই শব্দ দুবার ব্যবহার না করে একটু ভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে সেটি ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করে। যেমন: ডাকসু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উচিত এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। এই লাইন এভাবে লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে।

নির্মিতি অংশের জন্য প্রস্তুতি

নির্মিতি অংশে সৃজনশীল ও বিশ্লেষণধর্মী লেখায় পারদর্শী না হলে সাধারণত নম্বর পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এই অংশে ভালো করার জন্য নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র অংশের সারাংশ বা সারমর্ম, ভাব সম্প্রসারণ, অনুবাদ, চিঠিপত্র অংশ ভালোভাবে পড়তে হবে। লেখার সময় বাস্তব জীবনের উদাহরণ সম্ভব হলে উল্লেখ করতে হবে। ইংরেজিতেও বারবার আসা টপিক যেমন প্যারাগ্রাফ, শর্টনোট ইত্যাদি লেখার জন্য মূল টেক্সটবুক আরও একবার রিভিশন দিতে হবে। ইংরেজির ক্ষেত্রে ভালো করার জন্য বাক্যের মধ্যে বিভিন্ন কানেক্টর যেমন: And, Or, But ব্যবহার করা উচিত।

এ মুহূর্তে নতুন টপিক না শেখা

শেষ সময়ে এসে নতুন কোনো বিষয় মুখস্থ করা যাবে না। অনেক শিক্ষার্থীর ভোকাবুলারি আর মুখস্থ হচ্ছে না, তাদের উচিত অন্য টপিকে দক্ষতা বাড়ানো। কারণ, একটি টপিক নিয়ে এখন আর বসে থাকার সময় নেই।

এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর সবার একই হবে। কিন্তু ফলাফলে বড় একটা পার্থক্য হয়ে যাবে লিখিত অংশের নম্বরে। তাই যাদের লিখিত অংশের প্রস্তুতি এখনো বাকি, তারা সম্পূর্ণরূপে এখন লিখিত পরীক্ষায় আসা টপিকে মনোনিবেশ করবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ও কিন্তু বিভিন্ন এমসিকিউ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানা হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত