মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। এসব আবেদনপত্রের এখন শুনানি চলছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে দেশ। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করছে। সপ্তাহে চার দিন হরতাল বা অবরোধ ডাকা হচ্ছে।
কিন্তু এসব হরতাল বা অবরোধ শুরু থেকেই ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছিল। এখন যানবাহন, অফিস-আদালত, দোকানপাট অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। তবে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মাঠে সক্রিয়ভাবে নেই। অনেক নেতাই কারাগারে, আবার অনেকে আত্মগোপনে আছেন। বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু কিছু ঝটিকা মিছিল হতে দেখা যাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্য পরিবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, ট্রেনেও করা হয়েছে। তাতে জনমনে কিছুটা ভীতি আছে।
যাত্রীবাহী বাস কিছুটা পরিহার করা হচ্ছে। এসব অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সে কারণে বিএনপি হরতাল ও অবরোধে মাঠে খুব একটা সক্রিয় নেই।
প্রেসক্লাব, বিজয়নগর সড়ক, তোপখানা রোডে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং অন্যান্য দলের স্বল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে মিছিল ও বক্তৃতা করতে দেখা যায়। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অনলাইনে প্রতিদিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তাঁদের চলমান আন্দোলন সফল হবে, নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না, বিএনপি কীভাবে নির্বাচন প্রতিহত করবে।
রাজনীতিসচেতন মানুষ মনে করছে, বিএনপির সঙ্গে যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাই এদের সবার সম্মিলিত শক্তি দিয়ে নির্বাচনের আগে আগে নির্বাচন পণ্ড করার জন্য তারা বড় ধরনের কোনো সহিংসতা করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ককটেল বানানোর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংস হয়ে ওঠার মতো কোনো ঘটনা ঘটতেও পারে।
আবার অনেকে মনে করছেন, ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাস করার মতো অবস্থা বিএনপি-জামায়াতের এবার নেই। এ সবই অনুমাননির্ভর কথা। বাস্তবে কী হবে না হবে, সেটা কয়েক দিন পরেই দেখা যাবে। তবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিও অনেকটাই যেন এখন গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ছোট নামসর্বস্ব দলের নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হচ্ছে। তবে সংযোজনের বিষয়টি হচ্ছে, বাম গণতান্ত্রিক মোর্চাকেও প্রায় একই দাবিতে পুরানা পল্টন এলাকায় মিছিল করতে দেখা যায়। সিপিবি, বাসদসহ বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে একত্রে না হলেও একই কর্মসূচিতে মাঠে নামার বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। যে আন্দোলনে জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, সেই আন্দোলনের সঙ্গে সিপিবি, বাসদের সহাবস্থান নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবেই অনেকে মনে করছে।
বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামি দলগুলো মাঠে নেই। কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ডান-বাম নামসর্বস্ব দল। কিন্তু আন্দোলন বলতে যা বোঝায়, তার ছিটেফোঁটাও নেই। জনগণও ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এখন স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা ও কাজকর্ম করছে। তবে টেলিভিশনের টকশোতে মাঠের আন্দোলনকারী ডান-বাম নেতাদের অনেকেই তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েই যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেন এগিয়ে চলেছে। জনগণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে কেমনভাবে অংশগ্রহণ করবে, তা সেদিনই কেবল বোঝা যাবে। আপাতত প্রতি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বিভিন্ন দল ও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার মতো পরিবেশ নেই এটা যেমন দাবি করা যাবে না, তেমনি আবার উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সে কথাও বলা ঠিক হবে না।
বিএনপি দাবি করছে, তাদের আন্দোলন সফল হবে। তাদের আশঙ্কা ছিল বিপুলসংখ্যক বড় নেতা দল ছেড়ে চলে যাতে পারেন। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ছাড়া বড় কোনো নেতা না গেলেও বিএনপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন ত্রিশের অধিক নেতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেদিক থেকে বিএনপির জন্য স্বস্তি যে বেশিসংখ্যক নেতা দল ছেড়ে যাননি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান কতটা সংহত থাকবে তা বলা মুশকিল। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবে এমন আশায় অনেকেই বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের হঠকারিতা সবকিছুকে ওলট-পালট করে দিয়েছে।
ওই দিন বিএনপি আসলে কী করতে চেয়েছিল, তা দলের সমর্থকদের অনেকেরই অজানা। সেদিন পুলিশ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, বিচারপতিদের লাউঞ্জ আক্রমণ, পুলিশের ৯টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কথিত জো বাইডেনের উপদেষ্টার আবির্ভাবের রহস্য অনেকের কাছেই নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। সরকার উৎখাতের কোনো পরিকল্পনা থেকেই সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের এভাবে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা নিয়েও নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। অথচ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অনেকেই ধরে রেখেছিলেন যে এই আন্দোলন দ্বারা সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব না হলেও সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির কাজটি চূড়ান্ত করেই যুগপৎ আন্দোলনকারীরা নির্বাচনে অংশ নিলে সরকার বেশ বেকায়দায়ই পড়ত।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে যা কিছু ঘটছে, তার ফলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে তা ভবিষ্যৎই কেবল বলতে পারবে। আপাতত নির্বাচন ভন্ডুল করার মতো কোনো বাস্তব অবস্থা বিএনপির সমর্থকেরাও খুব একটা দেখছেন না। কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো অর্জন ঘটবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সরকার কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি দলীয় কর্মীদের দিক থেকে ছাড় দেবে না। সেই অবস্থায় নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ধরে রাখা যাবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর যেমন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি, এবারও ৭ জানুয়ারির পর আন্দোলন করার কোনো বাস্তবতা থাকবে না।
তফসিল বাতিলের আন্দোলন সফল হবে না, নির্বাচনও বাতিল হবে না। বিএনপি এ পর্যন্ত যেসব স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখিয়েছিল, সেগুলো যেমন বাস্তবে রূপ নেয়নি, তফসিল বাতিলের আন্দোলনও একইভাবে ব্যর্থ হবে। বিএনপির আন্দোলন শুরু থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ ও কৌশল নির্মাণে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে বিবেচনায় নেয়নি। বিএনপি মনে করেছিল, বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিতে পারলে সরকারকে একঘরে করে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি সফল হয়নি।
সুতরাং তফসিল বাতিলের আন্দোলন অসফল হওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিস্তেজ হওয়া ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। বিএনপির আন্দোলন ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ‘মরা গাঙে’ পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে কূলে ওঠার শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তার পরও বিএনপির রাজনীতি এবং দল নিঃশেষিত হওয়ার নয়। কিন্তু প্রাণবন্ত হওয়ার সুযোগ বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিতে পারেননি।
এখানেই দল হিসেবে বিএনপির সামর্থ্যের অভাব—এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন জামায়াতের ওপর ভর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তাতে পেট্রলবোমা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি, নির্বাচন কেন্দ্র, সরকারি স্থাপনা ইত্যাদিতে আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনকে কতটা কাবু করা যাবে, তা দেখার বিষয়। তবে বিএনপির ভাবমূর্তিতে দেশে ও বিদেশে চিড় ধরার আশঙ্কা রয়েছে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। এসব আবেদনপত্রের এখন শুনানি চলছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে দেশ। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করছে। সপ্তাহে চার দিন হরতাল বা অবরোধ ডাকা হচ্ছে।
কিন্তু এসব হরতাল বা অবরোধ শুরু থেকেই ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছিল। এখন যানবাহন, অফিস-আদালত, দোকানপাট অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। তবে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মাঠে সক্রিয়ভাবে নেই। অনেক নেতাই কারাগারে, আবার অনেকে আত্মগোপনে আছেন। বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু কিছু ঝটিকা মিছিল হতে দেখা যাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্য পরিবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, ট্রেনেও করা হয়েছে। তাতে জনমনে কিছুটা ভীতি আছে।
যাত্রীবাহী বাস কিছুটা পরিহার করা হচ্ছে। এসব অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সে কারণে বিএনপি হরতাল ও অবরোধে মাঠে খুব একটা সক্রিয় নেই।
প্রেসক্লাব, বিজয়নগর সড়ক, তোপখানা রোডে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং অন্যান্য দলের স্বল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে মিছিল ও বক্তৃতা করতে দেখা যায়। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অনলাইনে প্রতিদিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তাঁদের চলমান আন্দোলন সফল হবে, নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না, বিএনপি কীভাবে নির্বাচন প্রতিহত করবে।
রাজনীতিসচেতন মানুষ মনে করছে, বিএনপির সঙ্গে যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাই এদের সবার সম্মিলিত শক্তি দিয়ে নির্বাচনের আগে আগে নির্বাচন পণ্ড করার জন্য তারা বড় ধরনের কোনো সহিংসতা করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ককটেল বানানোর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংস হয়ে ওঠার মতো কোনো ঘটনা ঘটতেও পারে।
আবার অনেকে মনে করছেন, ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাস করার মতো অবস্থা বিএনপি-জামায়াতের এবার নেই। এ সবই অনুমাননির্ভর কথা। বাস্তবে কী হবে না হবে, সেটা কয়েক দিন পরেই দেখা যাবে। তবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিও অনেকটাই যেন এখন গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ছোট নামসর্বস্ব দলের নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হচ্ছে। তবে সংযোজনের বিষয়টি হচ্ছে, বাম গণতান্ত্রিক মোর্চাকেও প্রায় একই দাবিতে পুরানা পল্টন এলাকায় মিছিল করতে দেখা যায়। সিপিবি, বাসদসহ বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে একত্রে না হলেও একই কর্মসূচিতে মাঠে নামার বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। যে আন্দোলনে জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, সেই আন্দোলনের সঙ্গে সিপিবি, বাসদের সহাবস্থান নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবেই অনেকে মনে করছে।
বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামি দলগুলো মাঠে নেই। কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ডান-বাম নামসর্বস্ব দল। কিন্তু আন্দোলন বলতে যা বোঝায়, তার ছিটেফোঁটাও নেই। জনগণও ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এখন স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা ও কাজকর্ম করছে। তবে টেলিভিশনের টকশোতে মাঠের আন্দোলনকারী ডান-বাম নেতাদের অনেকেই তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েই যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেন এগিয়ে চলেছে। জনগণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে কেমনভাবে অংশগ্রহণ করবে, তা সেদিনই কেবল বোঝা যাবে। আপাতত প্রতি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বিভিন্ন দল ও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার মতো পরিবেশ নেই এটা যেমন দাবি করা যাবে না, তেমনি আবার উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সে কথাও বলা ঠিক হবে না।
বিএনপি দাবি করছে, তাদের আন্দোলন সফল হবে। তাদের আশঙ্কা ছিল বিপুলসংখ্যক বড় নেতা দল ছেড়ে চলে যাতে পারেন। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ছাড়া বড় কোনো নেতা না গেলেও বিএনপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন ত্রিশের অধিক নেতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেদিক থেকে বিএনপির জন্য স্বস্তি যে বেশিসংখ্যক নেতা দল ছেড়ে যাননি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান কতটা সংহত থাকবে তা বলা মুশকিল। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবে এমন আশায় অনেকেই বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের হঠকারিতা সবকিছুকে ওলট-পালট করে দিয়েছে।
ওই দিন বিএনপি আসলে কী করতে চেয়েছিল, তা দলের সমর্থকদের অনেকেরই অজানা। সেদিন পুলিশ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, বিচারপতিদের লাউঞ্জ আক্রমণ, পুলিশের ৯টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কথিত জো বাইডেনের উপদেষ্টার আবির্ভাবের রহস্য অনেকের কাছেই নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। সরকার উৎখাতের কোনো পরিকল্পনা থেকেই সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের এভাবে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা নিয়েও নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। অথচ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অনেকেই ধরে রেখেছিলেন যে এই আন্দোলন দ্বারা সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব না হলেও সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির কাজটি চূড়ান্ত করেই যুগপৎ আন্দোলনকারীরা নির্বাচনে অংশ নিলে সরকার বেশ বেকায়দায়ই পড়ত।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে যা কিছু ঘটছে, তার ফলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে তা ভবিষ্যৎই কেবল বলতে পারবে। আপাতত নির্বাচন ভন্ডুল করার মতো কোনো বাস্তব অবস্থা বিএনপির সমর্থকেরাও খুব একটা দেখছেন না। কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো অর্জন ঘটবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সরকার কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি দলীয় কর্মীদের দিক থেকে ছাড় দেবে না। সেই অবস্থায় নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ধরে রাখা যাবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর যেমন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি, এবারও ৭ জানুয়ারির পর আন্দোলন করার কোনো বাস্তবতা থাকবে না।
তফসিল বাতিলের আন্দোলন সফল হবে না, নির্বাচনও বাতিল হবে না। বিএনপি এ পর্যন্ত যেসব স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখিয়েছিল, সেগুলো যেমন বাস্তবে রূপ নেয়নি, তফসিল বাতিলের আন্দোলনও একইভাবে ব্যর্থ হবে। বিএনপির আন্দোলন শুরু থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ ও কৌশল নির্মাণে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে বিবেচনায় নেয়নি। বিএনপি মনে করেছিল, বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিতে পারলে সরকারকে একঘরে করে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি সফল হয়নি।
সুতরাং তফসিল বাতিলের আন্দোলন অসফল হওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিস্তেজ হওয়া ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। বিএনপির আন্দোলন ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ‘মরা গাঙে’ পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে কূলে ওঠার শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তার পরও বিএনপির রাজনীতি এবং দল নিঃশেষিত হওয়ার নয়। কিন্তু প্রাণবন্ত হওয়ার সুযোগ বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিতে পারেননি।
এখানেই দল হিসেবে বিএনপির সামর্থ্যের অভাব—এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন জামায়াতের ওপর ভর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তাতে পেট্রলবোমা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি, নির্বাচন কেন্দ্র, সরকারি স্থাপনা ইত্যাদিতে আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনকে কতটা কাবু করা যাবে, তা দেখার বিষয়। তবে বিএনপির ভাবমূর্তিতে দেশে ও বিদেশে চিড় ধরার আশঙ্কা রয়েছে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। এসব আবেদনপত্রের এখন শুনানি চলছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে দেশ। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করছে। সপ্তাহে চার দিন হরতাল বা অবরোধ ডাকা হচ্ছে।
কিন্তু এসব হরতাল বা অবরোধ শুরু থেকেই ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছিল। এখন যানবাহন, অফিস-আদালত, দোকানপাট অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। তবে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মাঠে সক্রিয়ভাবে নেই। অনেক নেতাই কারাগারে, আবার অনেকে আত্মগোপনে আছেন। বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু কিছু ঝটিকা মিছিল হতে দেখা যাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্য পরিবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, ট্রেনেও করা হয়েছে। তাতে জনমনে কিছুটা ভীতি আছে।
যাত্রীবাহী বাস কিছুটা পরিহার করা হচ্ছে। এসব অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সে কারণে বিএনপি হরতাল ও অবরোধে মাঠে খুব একটা সক্রিয় নেই।
প্রেসক্লাব, বিজয়নগর সড়ক, তোপখানা রোডে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং অন্যান্য দলের স্বল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে মিছিল ও বক্তৃতা করতে দেখা যায়। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অনলাইনে প্রতিদিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তাঁদের চলমান আন্দোলন সফল হবে, নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না, বিএনপি কীভাবে নির্বাচন প্রতিহত করবে।
রাজনীতিসচেতন মানুষ মনে করছে, বিএনপির সঙ্গে যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাই এদের সবার সম্মিলিত শক্তি দিয়ে নির্বাচনের আগে আগে নির্বাচন পণ্ড করার জন্য তারা বড় ধরনের কোনো সহিংসতা করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ককটেল বানানোর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংস হয়ে ওঠার মতো কোনো ঘটনা ঘটতেও পারে।
আবার অনেকে মনে করছেন, ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাস করার মতো অবস্থা বিএনপি-জামায়াতের এবার নেই। এ সবই অনুমাননির্ভর কথা। বাস্তবে কী হবে না হবে, সেটা কয়েক দিন পরেই দেখা যাবে। তবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিও অনেকটাই যেন এখন গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ছোট নামসর্বস্ব দলের নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হচ্ছে। তবে সংযোজনের বিষয়টি হচ্ছে, বাম গণতান্ত্রিক মোর্চাকেও প্রায় একই দাবিতে পুরানা পল্টন এলাকায় মিছিল করতে দেখা যায়। সিপিবি, বাসদসহ বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে একত্রে না হলেও একই কর্মসূচিতে মাঠে নামার বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। যে আন্দোলনে জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, সেই আন্দোলনের সঙ্গে সিপিবি, বাসদের সহাবস্থান নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবেই অনেকে মনে করছে।
বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামি দলগুলো মাঠে নেই। কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ডান-বাম নামসর্বস্ব দল। কিন্তু আন্দোলন বলতে যা বোঝায়, তার ছিটেফোঁটাও নেই। জনগণও ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এখন স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা ও কাজকর্ম করছে। তবে টেলিভিশনের টকশোতে মাঠের আন্দোলনকারী ডান-বাম নেতাদের অনেকেই তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েই যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেন এগিয়ে চলেছে। জনগণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে কেমনভাবে অংশগ্রহণ করবে, তা সেদিনই কেবল বোঝা যাবে। আপাতত প্রতি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বিভিন্ন দল ও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার মতো পরিবেশ নেই এটা যেমন দাবি করা যাবে না, তেমনি আবার উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সে কথাও বলা ঠিক হবে না।
বিএনপি দাবি করছে, তাদের আন্দোলন সফল হবে। তাদের আশঙ্কা ছিল বিপুলসংখ্যক বড় নেতা দল ছেড়ে চলে যাতে পারেন। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ছাড়া বড় কোনো নেতা না গেলেও বিএনপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন ত্রিশের অধিক নেতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেদিক থেকে বিএনপির জন্য স্বস্তি যে বেশিসংখ্যক নেতা দল ছেড়ে যাননি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান কতটা সংহত থাকবে তা বলা মুশকিল। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবে এমন আশায় অনেকেই বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের হঠকারিতা সবকিছুকে ওলট-পালট করে দিয়েছে।
ওই দিন বিএনপি আসলে কী করতে চেয়েছিল, তা দলের সমর্থকদের অনেকেরই অজানা। সেদিন পুলিশ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, বিচারপতিদের লাউঞ্জ আক্রমণ, পুলিশের ৯টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কথিত জো বাইডেনের উপদেষ্টার আবির্ভাবের রহস্য অনেকের কাছেই নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। সরকার উৎখাতের কোনো পরিকল্পনা থেকেই সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের এভাবে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা নিয়েও নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। অথচ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অনেকেই ধরে রেখেছিলেন যে এই আন্দোলন দ্বারা সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব না হলেও সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির কাজটি চূড়ান্ত করেই যুগপৎ আন্দোলনকারীরা নির্বাচনে অংশ নিলে সরকার বেশ বেকায়দায়ই পড়ত।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে যা কিছু ঘটছে, তার ফলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে তা ভবিষ্যৎই কেবল বলতে পারবে। আপাতত নির্বাচন ভন্ডুল করার মতো কোনো বাস্তব অবস্থা বিএনপির সমর্থকেরাও খুব একটা দেখছেন না। কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো অর্জন ঘটবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সরকার কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি দলীয় কর্মীদের দিক থেকে ছাড় দেবে না। সেই অবস্থায় নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ধরে রাখা যাবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর যেমন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি, এবারও ৭ জানুয়ারির পর আন্দোলন করার কোনো বাস্তবতা থাকবে না।
তফসিল বাতিলের আন্দোলন সফল হবে না, নির্বাচনও বাতিল হবে না। বিএনপি এ পর্যন্ত যেসব স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখিয়েছিল, সেগুলো যেমন বাস্তবে রূপ নেয়নি, তফসিল বাতিলের আন্দোলনও একইভাবে ব্যর্থ হবে। বিএনপির আন্দোলন শুরু থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ ও কৌশল নির্মাণে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে বিবেচনায় নেয়নি। বিএনপি মনে করেছিল, বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিতে পারলে সরকারকে একঘরে করে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি সফল হয়নি।
সুতরাং তফসিল বাতিলের আন্দোলন অসফল হওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিস্তেজ হওয়া ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। বিএনপির আন্দোলন ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ‘মরা গাঙে’ পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে কূলে ওঠার শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তার পরও বিএনপির রাজনীতি এবং দল নিঃশেষিত হওয়ার নয়। কিন্তু প্রাণবন্ত হওয়ার সুযোগ বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিতে পারেননি।
এখানেই দল হিসেবে বিএনপির সামর্থ্যের অভাব—এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন জামায়াতের ওপর ভর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তাতে পেট্রলবোমা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি, নির্বাচন কেন্দ্র, সরকারি স্থাপনা ইত্যাদিতে আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনকে কতটা কাবু করা যাবে, তা দেখার বিষয়। তবে বিএনপির ভাবমূর্তিতে দেশে ও বিদেশে চিড় ধরার আশঙ্কা রয়েছে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। এসব আবেদনপত্রের এখন শুনানি চলছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে দেশ। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করছে। সপ্তাহে চার দিন হরতাল বা অবরোধ ডাকা হচ্ছে।
কিন্তু এসব হরতাল বা অবরোধ শুরু থেকেই ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছিল। এখন যানবাহন, অফিস-আদালত, দোকানপাট অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। তবে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে মাঠে সক্রিয়ভাবে নেই। অনেক নেতাই কারাগারে, আবার অনেকে আত্মগোপনে আছেন। বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু কিছু ঝটিকা মিছিল হতে দেখা যাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্য পরিবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, ট্রেনেও করা হয়েছে। তাতে জনমনে কিছুটা ভীতি আছে।
যাত্রীবাহী বাস কিছুটা পরিহার করা হচ্ছে। এসব অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সে কারণে বিএনপি হরতাল ও অবরোধে মাঠে খুব একটা সক্রিয় নেই।
প্রেসক্লাব, বিজয়নগর সড়ক, তোপখানা রোডে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং অন্যান্য দলের স্বল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে মিছিল ও বক্তৃতা করতে দেখা যায়। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অনলাইনে প্রতিদিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তাঁদের চলমান আন্দোলন সফল হবে, নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না, বিএনপি কীভাবে নির্বাচন প্রতিহত করবে।
রাজনীতিসচেতন মানুষ মনে করছে, বিএনপির সঙ্গে যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাই এদের সবার সম্মিলিত শক্তি দিয়ে নির্বাচনের আগে আগে নির্বাচন পণ্ড করার জন্য তারা বড় ধরনের কোনো সহিংসতা করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ককটেল বানানোর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংস হয়ে ওঠার মতো কোনো ঘটনা ঘটতেও পারে।
আবার অনেকে মনে করছেন, ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাস করার মতো অবস্থা বিএনপি-জামায়াতের এবার নেই। এ সবই অনুমাননির্ভর কথা। বাস্তবে কী হবে না হবে, সেটা কয়েক দিন পরেই দেখা যাবে। তবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিও অনেকটাই যেন এখন গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ছোট নামসর্বস্ব দলের নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হচ্ছে। তবে সংযোজনের বিষয়টি হচ্ছে, বাম গণতান্ত্রিক মোর্চাকেও প্রায় একই দাবিতে পুরানা পল্টন এলাকায় মিছিল করতে দেখা যায়। সিপিবি, বাসদসহ বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে একত্রে না হলেও একই কর্মসূচিতে মাঠে নামার বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। যে আন্দোলনে জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, সেই আন্দোলনের সঙ্গে সিপিবি, বাসদের সহাবস্থান নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবেই অনেকে মনে করছে।
বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামি দলগুলো মাঠে নেই। কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং আরও কিছু ডান-বাম নামসর্বস্ব দল। কিন্তু আন্দোলন বলতে যা বোঝায়, তার ছিটেফোঁটাও নেই। জনগণও ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এখন স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা ও কাজকর্ম করছে। তবে টেলিভিশনের টকশোতে মাঠের আন্দোলনকারী ডান-বাম নেতাদের অনেকেই তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েই যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেন এগিয়ে চলেছে। জনগণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে কেমনভাবে অংশগ্রহণ করবে, তা সেদিনই কেবল বোঝা যাবে। আপাতত প্রতি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বিভিন্ন দল ও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার মতো পরিবেশ নেই এটা যেমন দাবি করা যাবে না, তেমনি আবার উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সে কথাও বলা ঠিক হবে না।
বিএনপি দাবি করছে, তাদের আন্দোলন সফল হবে। তাদের আশঙ্কা ছিল বিপুলসংখ্যক বড় নেতা দল ছেড়ে চলে যাতে পারেন। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ছাড়া বড় কোনো নেতা না গেলেও বিএনপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন ত্রিশের অধিক নেতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেদিক থেকে বিএনপির জন্য স্বস্তি যে বেশিসংখ্যক নেতা দল ছেড়ে যাননি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান কতটা সংহত থাকবে তা বলা মুশকিল। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবে এমন আশায় অনেকেই বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের হঠকারিতা সবকিছুকে ওলট-পালট করে দিয়েছে।
ওই দিন বিএনপি আসলে কী করতে চেয়েছিল, তা দলের সমর্থকদের অনেকেরই অজানা। সেদিন পুলিশ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, বিচারপতিদের লাউঞ্জ আক্রমণ, পুলিশের ৯টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কথিত জো বাইডেনের উপদেষ্টার আবির্ভাবের রহস্য অনেকের কাছেই নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। সরকার উৎখাতের কোনো পরিকল্পনা থেকেই সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের এভাবে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা নিয়েও নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। অথচ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অনেকেই ধরে রেখেছিলেন যে এই আন্দোলন দ্বারা সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব না হলেও সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির কাজটি চূড়ান্ত করেই যুগপৎ আন্দোলনকারীরা নির্বাচনে অংশ নিলে সরকার বেশ বেকায়দায়ই পড়ত।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে যা কিছু ঘটছে, তার ফলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে তা ভবিষ্যৎই কেবল বলতে পারবে। আপাতত নির্বাচন ভন্ডুল করার মতো কোনো বাস্তব অবস্থা বিএনপির সমর্থকেরাও খুব একটা দেখছেন না। কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো অর্জন ঘটবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সরকার কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি দলীয় কর্মীদের দিক থেকে ছাড় দেবে না। সেই অবস্থায় নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ধরে রাখা যাবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর যেমন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি, এবারও ৭ জানুয়ারির পর আন্দোলন করার কোনো বাস্তবতা থাকবে না।
তফসিল বাতিলের আন্দোলন সফল হবে না, নির্বাচনও বাতিল হবে না। বিএনপি এ পর্যন্ত যেসব স্বপ্ন নেতা-কর্মীদের দেখিয়েছিল, সেগুলো যেমন বাস্তবে রূপ নেয়নি, তফসিল বাতিলের আন্দোলনও একইভাবে ব্যর্থ হবে। বিএনপির আন্দোলন শুরু থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ ও কৌশল নির্মাণে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে বিবেচনায় নেয়নি। বিএনপি মনে করেছিল, বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিতে পারলে সরকারকে একঘরে করে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি সফল হয়নি।
সুতরাং তফসিল বাতিলের আন্দোলন অসফল হওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিস্তেজ হওয়া ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। বিএনপির আন্দোলন ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ‘মরা গাঙে’ পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে কূলে ওঠার শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। তার পরও বিএনপির রাজনীতি এবং দল নিঃশেষিত হওয়ার নয়। কিন্তু প্রাণবন্ত হওয়ার সুযোগ বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিতে পারেননি।
এখানেই দল হিসেবে বিএনপির সামর্থ্যের অভাব—এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন জামায়াতের ওপর ভর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তাতে পেট্রলবোমা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি, নির্বাচন কেন্দ্র, সরকারি স্থাপনা ইত্যাদিতে আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনকে কতটা কাবু করা যাবে, তা দেখার বিষয়। তবে বিএনপির ভাবমূর্তিতে দেশে ও বিদেশে চিড় ধরার আশঙ্কা রয়েছে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে।
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে।
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে।
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী। ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে।
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫