Ajker Patrika

বিনা খরচে আইনগত সহায়তা পাবেন যেভাবে

সুলতান মাহমুদ
আপডেট : ০৮ মে ২০২৩, ১৭: ২০
বিনা খরচে আইনগত সহায়তা পাবেন যেভাবে

কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার কামারপাড়া গ্রামের হুমাইরা আক্তার রুমকি। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই দাম্পত্য কলহ শুরু হলে চলে আসেন বাবার বাড়ি। সে সময় তিনি সন্তানসম্ভবা ছিলেন। স্বামী মমিনুল ইসলামও স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। রুমকি প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে থাকেন, হয়তো স্বামী তাঁকে নিতে আসবেন। কিন্তু দিন গড়িয়ে মাস পেরোয়, মমিনুল আসেন না।

রুমকি ও তাঁর বাবা-মা স্থানীয়দের মাধ্যমে মীমাংসার উদ্যোগ নেন। কিন্তু মমিনুল সাড়া দেন না। এর মধ্যে রুমকির কোলজুড়ে আসে একটি কন্যাসন্তান। এবার রুমকি ও তাঁর পরিবারের লোকজন আশায় বুক বেঁধে থাকেন। অন্তত সন্তানের মুখ দেখতে মমিনুল আসবেন। কিন্তু সেই আশার গুড়েও বালি! 

রুমকির পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও প্রতিকার পায়নি। মমিনুল স্ত্রী-সন্তান কারও খোঁজ নেন না। রুমকির সন্তান আস্তে আস্তে হাঁটতে শেখে। কিন্তু বাবাকে দেখা হয় না। এভাবে কেটে যায় চারটি বছর। মমিনুল স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে যান না, খোঁজও নেন না। রুমকির প্রতীক্ষার শেষ হয় না। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। 

অবশেষে রুমকির পরিবার জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের শরণাপন্ন হয়। লিগ্যাল এইড অফিস থেকে মমিনুলকে নোটিশ করে কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে অভিযোগ শোনেন। মীমাংসার প্রস্তাব দেন। মমিনুলকে স্ত্রী ও সন্তানের গুরুত্ব বোঝানো হয়। আইনগত ঝামেলার বিষয়েও তাঁকে সতর্ক করা হয়। মমিনুল যেন সংজ্ঞা ফিরে পান! তিনি স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে নিতে রাজি হন। 

লিগ্যাল এইড অফিসারের উদ্যোগে মমিনুল-রুমকির চার বছরের দাম্পত্য কলহের অবসান ঘটে। তাঁদের মেয়ে পায় বাবাকে। বর্তমানে মমিনুল ও রুমকি মেয়েকে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার করছেন।

রুমকি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে আমার স্বামীর মধ্যে একটা পরিবর্তন আসছে। তিনি আর আগের মতো নেই। আমার ও মেয়ের ভরণপোষণও ঠিকমতো দিচ্ছেন। আমরা এখন ভালো আছি। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আমাদের চার বছরের কষ্টের অবসান হয়েছে। আমার মেয়ে তার বাবা পেয়েছে।’

রুমকি-মমিনুল দম্পতির মতো শত শত পরিবারের কলহ, নির্যাতন, প্রতারণা, পাওনা টাকা আদায়সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের নিষ্পত্তি ও আইনি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস। এসব সেবা মিলছে সম্পূর্ণ বিনা খরচে। এতে মামলার দীর্ঘসূত্রতা ও অর্থ খরচ থেকে রেহাই পাচ্ছে শত শত পরিবার। মিলছে হয়রানি থেকে মুক্তি। 

২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আইনগত সহায়তা
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৯২৯ জনকে সহায়তা দিয়েছে। সংস্থাটি দেশব্যাপী আইনি সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫৬ জনকে আইনি পরামর্শ দিয়েছে। একই সময়ে সংস্থাটি ৮২ হাজার ৫৮৮টি বিরোধ/মামলা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করেছে এবং বিরোধে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ১৩৪ কোটি ৯০ লাখ ৬ হাজার ৪৯৮ টাকা আদায় করে দিয়েছে।

বিনা খরচে আইনগত সহায়তা পাবেন যেভাবে

  • জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টার থেকে আইনগত সহায়তা পাওয়া যাবে। সরকার ২০১৬ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে টোল ফ্রি জাতীয় হেল্পলাইন চালু করেছে। 

অফিস চলাকালীন এই কল সেন্টারের ১৬৪৩০ নম্বরে যে কোনো মোবাইল/টেলিফোন থেকে কল করে আইনি পরামর্শ, আইনগত তথ্য, লিগ্যাল কাউন্সেলিং, মামলা করার প্রাথমিক তথ্য, সরকারি আইনি সেবা সম্পর্কিত যেকোনো পরামর্শ, সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেকোনো অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণ সম্পর্কিত সেবা পাওয়া যায়। এর জন্য কোনো কলচার্জ কাটা যায় না। 

  • জেলা পর্যায়ের মামলা পরিচালনায় আইনগত সহায়তা লাভের জন্য ৬৪টি জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির কাছে আবেদন করতে হয়। সুপ্রিম কোর্টে সরকারি আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত ‘সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের’ মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির কাছে আবেদন করতে হয়। 
  • ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য বিশেষ কমিটির কাছে আবেদন করতে হয়। চৌকি আদালতে সরকারি আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট চৌকি আদালত বিশেষ কমিটির কাছে আবেদন করতে হয়। 
  • বিডি লিগ্যাল এইড অ্যাপের সহায়তায়ও এই সেবা পাওয়া যায়। অনলাইনে আইনি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০১৮ সালে বিডি লিগ্যাল এইড অ্যাপ চালু করে। বিদেশ থেকে +৮৮০৯১২৩১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে বিনা খরচে সরকারি আইনি সেবা নেওয়া যাবে। 

যাঁরা আইনগত সহায়তা পাবেন:
কোনো মামলায় বাদী, বিবাদী বা আসামি যে কেউ আইনগত সহায়তা পেতে পারেন। আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা, ২০১৪-এর ধারা ২-এ বলা হয়েছে কারা আইনগত সহায়তা পাবেন।

  • আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তি, যার বাৎসরিক আয় ১ লাখ টাকার বেশি নয়। 
  •  উচ্চ আদালতে এই সেবা পাবেন, যার বাৎসরিক আয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি নয়। 
  • কর্মে অক্ষম, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন কোনো ব্যক্তি। অর্থাৎ একজন বেকার ব্যক্তি আইনগত সহায়তা পেতে পারেন। 
  • কোনো মুক্তিযোদ্ধা, যিনি বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে অক্ষম।
  • কোনো শ্রমিক, যাঁর বাৎসরিক আয় ১ লাখ টাকার বেশি নয়। 
  • যেকোনো শিশু। 
  • মানব পাচারের শিকার কোনো ব্যক্তি। 
  • শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার কোনো নারী ও শিশু। 
  • যাঁর কোনো আশ্রয় নেই অর্থাৎ নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে। 
  • ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি। 
  • পারিবারিক সহিংসতার শিকার অথবা সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন কোনো ব্যক্তি। 
  • বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন কোনো ব্যক্তি। 
  • ভিজিডি কার্ডধারী কোনো দুস্থ মা। 
  • দুর্বৃত্ত কর্তৃক অ্যাসিডদগ্ধ নারী বা শিশু। 
  • আদর্শগ্রামে জমি বা ঘর বরাদ্দ পাওয়া কোনো ব্যক্তি। 
  • অসচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুস্থ নারী। 
  • যেকোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। 
  • আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অসমর্থ ব্যক্তি। 
  • বিনা বিচারে আটক এমন কোনো ব্যক্তি, যিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অসচ্ছল। 
  • আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় ও অসচ্ছল বলে বিবেচিত কোনো ব্যক্তি। 
  • জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে সুপারিশকৃত বা বিবেচিত কোনো ব্যক্তি। 

এ ছাড়া আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০-এর উদ্দেশ্য পূরণে, সংস্থা সময়-সময় চিহ্নিত আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থসামাজিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি, যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা বা মামলা পরিচালনায় অসমর্থ, তিনিও আইনগত সহায়তা পাবেন।

আইনগত সহায়তা পাওয়ার শর্ত
অনেকের মধ্যে এমন একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, মামলা করার প্রয়োজন হলেই হয়তো জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাবে। কিন্তু মামলা করার প্রয়োজন ছাড়াও যেকোনো আইনগত পরামর্শের মাধ্যমে আইনগত সহায়তা পাওয়া যায়। কোনো ব্যক্তি যখন কোনো প্রকারের আইনগত সমস্যার সম্মুখীন হন, তখন জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা থেকে আইনি পরামর্শ নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে লিগ্যাল এইড অফিসার আইনগত পরামর্শ দেন, আপস-মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি করেন বা মামলায় সহযোগিতা করেন। যেকোনো ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্ট, জেলায় অবস্থিত নিম্ন আদালত, শ্রম আদালতে আইনগত সহায়তা পেতে পারেন। 

আইনগত সহায়তা প্রদান প্রবিধানমালা, ২০১৫-এর ধারা ৩ অনুযায়ী প্রত্যেক বিচারপ্রার্থীকে তাঁর নাম, পূর্ণ ঠিকানা এবং আইনগত সহায়তার কারণ উল্লেখ করে সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া সাদা কাগজে লিখেও আবেদন করা যায়। 

আপিল বিভাগ বা হাইকোর্ট বিভাগে বিচারের বিষয় হলে সুপ্রিম কোর্ট কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। অন্যান্য আদালতে বিচারের বিষয় হলে জেলা কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। শ্রম আদালতে বিচারের বিষয় হলে শ্রম আদালতের বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। 

এ ছাড়া বিচারাধীন মামলার আইনগত সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতকে জানিয়ে সহযোগিতা পাওয়া যায়। 

যেভাবে আবেদন করা যাবে
দুইভাবে আবেদন করা যায়। এক. অনলাইনে। দুই. সরাসরি লিগ্যাল এইড অফিসে গিয়ে। লিগ্যাল এইডের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে। 

যদি কেউ অনলাইনে আবেদন করেন, তাহলে ওই দিন তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লিগ্যাল এইড অফিস থেকে যোগাযোগ করে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় আবেদনটি গ্রহণ করা হবে কি না। যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে একটি আবেদন নম্বর তৈরি হবে। এরপর একটি নির্দিষ্ট তারিখে উভয় পক্ষকে লিগ্যাল এইড অফিসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়। 

যদি নির্দিষ্ট তারিখে উভয় পক্ষ আসে, তাহলে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। যদি অপর পক্ষ না আসে, তাহলে লিগ্যাল এইড অফিস থেকে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে মামলাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

আর যদি সরাসরি কেউ লিগ্যাল এইড অফিসে গিয়ে হাজির হন, তাহলে সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা সেবাপ্রার্থী ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁর নাম-ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করবেন। এরপর উভয় পক্ষকে একটি নির্দিষ্ট দিনে লিগ্যাল এইড অফিসে আসার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হবে। যদি অপর পক্ষ না আসে তাহলে লিগ্যাল এইড অফিস থেকে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে মামলাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

সশরীরে কোথায় যোগাযোগ করবেন
প্রতি জেলায় জেলা জজ আদালত ভবনে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির অফিস রয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ এর চেয়ারম্যান। সেখানে যোগাযোগ করলে লিগ্যাল এইড অফিসার ও কর্মচারীরা আইনগত সহায়তার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেবেন। সুপ্রিম কোর্টের বিষয়ে আইনগত সহায়তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস রয়েছে। 

এ ছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় উপজেলা কমিটি রয়েছে, উপজেলা চেয়ারম্যান ওই কমিটির চেয়ারম্যান। প্রতি ইউনিয়নে ইউনিয়ন কমিটি রয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। কমিটিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনগত সহায়তার বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া যায়। এ ছাড়া জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত জাতীয় হেল্পলাইন থেকে সাহায্য নিয়ে যোগাযোগ করা যায়।

বিচারপ্রার্থী বা আইনগত সহায়তাপ্রার্থীর দায়িত্ব
আইনগত সহায়তা প্রদান প্রবিধানমালা, ২০১৫-এর ৪ ধারা মতে বিচারপ্রার্থীর কিছু দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্বগুলোর মধ্যে রয়েছে—আবেদন নির্ভুল হতে হবে এবং পরিপূর্ণ তথ্য দিতে হবে। কমিটি, লিগ্যাল এইড অফিসার এবং নিযুক্ত আইনজীবীকে সহায়তা করতে হবে। কমিটি যেসব শর্ত দেবে, তা পালন করতে হবে।

আইনজীবী নিয়োগ
আইনগত সহায়তা প্রদান প্রবিধানমালা, ২০১৫-এর ৫ ধারামতে, কোনো বিচারপ্রার্থীকে আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে মামলা পরিচালনার জন্য কমিটি তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের মধ্যে থেকে তিনজন আইনজীবীকে মনোনীত করবে এবং বিচারপ্রার্থীর সম্মতি সাপেক্ষে তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ করা হবে। 

(এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো, ডেইলি স্টারে হামলা ও নূরুল কবীরকে হেনস্তার ঘটনায় বিপিজেএর নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো, ডেইলি স্টারে হামলা ও নূরুল কবীরকে হেনস্তার ঘটনায় বিপিজেএর নিন্দা

দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।

আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হারুন জামিল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী লিথো এই প্রতিবাদ জানান।

বিপিজেএ নেতারা বলেন, সংবাদপত্রের ওপর যেকোনো ধরনের হামলা স্বাধীন মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য।

বিবৃতিতে তাঁরা উল্লেখ করেন, সমাজে ভিন্নমত থাকবেই এবং মতের ভিন্নতা একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সহায়তা করে। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধমূলক কাজ নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার দায় দুষ্কৃতকারীদের। নেতারা বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢালাওভাবে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা চরম অন্যায়।

বিবৃতিতে নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যখন একটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপচেষ্টা হতে পারে।

বিপিজেএ অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৬
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব

দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।

আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জ্ঞাপন ও শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।

এতে বলা হয়, ‘এই হামলা শুধু গণমাধ্যমের ওপর নয়, এটা আমাদের সমাজের ওপর, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ। সর্বোপরি বাংলাদেশের ওপর আক্রমণ। গভীর রাতের ওই হামলায় প্রতিষ্ঠান দুটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও সম্পদহানির পাশাপাশি সংবাদকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের দায় এবং দায়িত্বহীনতারও স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব মনে করে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুরু থেকেই মব ভায়োলেন্স (সংগঠিত) প্রতিরোধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার যে ধারাবাহিকতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, সর্বশেষ ঘটনা তার আরেকটি ভয়াবহ উদাহরণ। গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা প্রমাণ করে যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’

একই সঙ্গে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব ছায়ানটে হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে ফোন করে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন এবং পাশে আছেন বলে জানান। তবে এই হামলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। বিবৃতি বা আশ্বাস নয়, অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারসহ সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তায় ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।

পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে উদ্বেগ, নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানালেন জাতিসংঘের ফলকার তুর্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৭
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হাদির মৃত্যুর ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দায়ীদের জবাবদিহি এবং আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।’

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ফলকার তুর্ক সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ কেবল বিভাজন বাড়াবে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।’

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সময়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল উল্লেখ করে ফলকার তুর্ক বলেন, ‘এই সময়ে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, যেখানে জনজীবনে সবার নিরাপদ অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনভাবে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকবে।’

ফলকার তুর্ক আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ অস্থিরতা যাতে আর না বাড়ে, সে বিষয়ে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যার প্রতিবাদে গণমাধ্যমের ওপর হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না: টিআইবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্‌স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্‌স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।

টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত