ইসলাম ডেস্ক

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন তিনি। সেই গল্পের শেষাংশের বর্ণনা অনুযায়ী, কয়েকজন খ্রিষ্টান পাদ্রির কথা শুনে সালমান ফারসি মদিনায় আসেন।
সালমান ফারসির মদিনায় আগমন
দীর্ঘ হাদিসের শেষে সালমান ফারসি (রা.) কীভাবে মদিনায় এলেন তা বর্ণনা করে বলেন, ‘এরপর আমার পাশ দিয়ে কালব গোত্রের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা যাচ্ছিল। আমি তাদের বললাম, তোমরা আমাকে আরবে নিয়ে চল। (বিনিময়ে) আমি তোমাদের এই গাভি ও বকরিগুলো দিয়ে দেব। তারা বলল, ঠিক আছে। এরপর আমি তাদের সেগুলো দিয়ে দিলাম আর তারা আমাকে নিয়ে চলল। যখন তারা আমাকে নিয়ে ওয়াদিউল কুরায় পৌঁছাল, তখন আমাকে অত্যাচার করল এবং দাস হিসেবে এক ইহুদির কাছে বিক্রি করে দিল। ফলে আমি সেই ইহুদির কাছে থাকতে বাধ্য হলাম এবং তার খেজুরগাছ দেখাশোনা করতে লাগলাম।’
হজরত সালমান আরও বলেন, ‘এরপর আমার মনিবের চাচাতো ভাই, যে মদিনায় থাকত, আমাকে কিনে মদিনায় নিয়ে গেল। আল্লাহর কসম, মদিনা দেখামাত্রই আমার বন্ধুর (পাদ্রি) বর্ণনামতো আমি তা চিনে ফেললাম। আমি এখানে অবস্থান করতে লাগলাম।’
মহানবী (সা.)-এর সন্ধান
সালমান ফারসি (রা.)-এর বর্ণনাটি এমন—এরপর ইসলামের নবী হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সা.)কে পৃথিবীতে পাঠানো হলো। তিনি মক্কায় যত দিন থাকার থাকলেন। আমি গোলামির জীবনে ব্যস্ত থাকায় তাঁর কোনো খবর পেলাম না। এরপর একদিন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন। আল্লাহর কসম, আমি আমার মালিকের খেজুরগাছের মাথায় কাজ করছিলাম। আর আমার মনিব বসে ছিলেন। এমন সময় তাঁর চাচাতো ভাই এলেন এবং বললেন, ‘হে অমুক, আল্লাহ বনী কায়লাদের (মদিনাবাসী) ধ্বংস করুন। আল্লাহর কসম, তারা কুবায় মক্কা থেকে আজকে আগত এক ব্যক্তির কাছে সমবেত হয়েছে। তারা তাকে নবী বলে ধারণা করছে।’
এ কথা শুনে আমার দেহে কম্পন শুরু হয়ে গেল। একপর্যায়ে আমি ধারণা করলাম, আমি আমার মনিবের ওপর পড়ে যাব। এরপর আমি খেজুরগাছ থেকে নেমে এলাম এবং তাঁর চাচাতো ভাইকে বলতে লাগলাম, আপনি কী বলছিলেন? আপনি কী বলছিলেন? এ কথা শুনে আমার মনিব চটে গেলেন এবং আমাকে খুব জোরে আঘাত করলেন এবং বললেন, ‘এ ব্যাপারে তোমার নাক গলাতে হবে না। তুমি তোমার কাজে যাও।’ আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তিনি যা বলেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছি।
মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, আমার কাছে কিছু সম্পদ ছিল, যা আমি সঞ্চয় করে রেখেছিলাম। যখন সন্ধ্যা হলো, তখন আমি তা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি কুবায় ছিলেন। তাঁকে বললাম, আমরা জানতে পেরেছি, আপনি একজন সৎ ব্যক্তি। আপনার সঙ্গে আপনার দরিদ্র সাথিরা রয়েছেন। এগুলো (সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ) আমার পক্ষ থেকে সদকা করছি। এগুলোর ব্যাপারে আপনারাই অধিক হকদার বলে আমি মনে করি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাথিদের বললেন, ‘তোমরা খাও।’ নবী (সা.) নিজে হাত সংযত করলেন এবং কিছুই খেলেন না।
নবী হওয়ার প্রমাণ পেলেন
সালমান ফারসি বলেন, আমি ধরে নিলাম, এটি (নবী হওয়ার) প্রথম আলামত। এরপর আমি তাঁর কাছ থেকে চলে এলাম এবং আরও কিছু পণ্য সঞ্চয় করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় চলে এলেন। এরপর আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমি আপনাকে সদকার সম্পদ খেতে দেখিনি আর এগুলো আপনার জন্য হাদিয়া, যা দিয়ে আপনার মেহমানদারি করছি। এবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এগুলো থেকে খেলেন এবং সাহাবিদের আদেশ করলে তাঁরাও তাঁর সঙ্গে আহার করলেন।
এবার বুঝতে পারলাম, এটি হলো (নবী হওয়ার) দ্বিতীয় আলামত। এরপর ‘বাকিউল গারকাদ নামক স্থানে আমি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি এক সাহাবির জানাজার পেছন-পেছন যাচ্ছিলেন। তাঁর পরিধানে দুটি চাদর ছিল। তিনি তাঁর সাথিদের সঙ্গে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। এরপর আমি তাঁর পিঠের দিকে ঘুরে দেখতে লাগলাম। যেন আমার বন্ধুর (খ্রিষ্টান পাদ্রি) বর্ণনা মোতাবেক নবুওয়াতের মোহরটি দেখতে পাই।
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে দেখলেন যে আমি তাঁর পেছনে পেছনে ঘুরছি, তখন তিনি বুঝতে পারলেন, আমি কোনো কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছি, যা আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে। তখন তিনি পিঠ থেকে চাদর সরিয়ে ফেললেন। আমি মোহর দেখতে পেলাম এবং তাঁকে চিনতে পারলাম (যে ইনিই নবী)। আমি তাঁর ওপর ঝুঁকে পড়লাম এবং তাকে চুমু দিয়ে কাঁদতে লাগলাম।
এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘এদিকে এসো।’ আমি এলাম এবং তাঁর কাছে আমার (অতীতের) সব ঘটনা বর্ণনা করলাম (যা হাদিসের শুরুর অংশে বিবৃত হয়েছে)। এ ঘটনা সাহাবিদেরও শোনাতে চাইলেন রাসুল (সা.)। এরপর আমি আবার দাসত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ফলে বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি।
৩০০ খেজুরগাছ রোপণ
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি (তোমার মালিকের সঙ্গে দাসত্ব মুক্তির ব্যাপারে) চুক্তি করো।’ আমি তাঁর সঙ্গে ৩০০ খেজুরগাছের চারা ফলদায়ক হওয়া পর্যন্ত গর্তে পানি দেওয়া এবং চল্লিশ উকিয়া আদায় করার বিনিময়ে চুক্তি করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো।’
সাহাবিরা আমাকে খেজুরগাছ (চারা) দিয়ে সাহায্য করলেন। এক ব্যক্তি ৩০টি চারা দিলেন, আরেকজন ২০টি। অন্যজন ১৫টি, আরেকজন ১০টি চারা দিলেন। অর্থাৎ, প্রত্যেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী আমাকে সাহায্য করলেন। একপর্যায়ে আমার ৩০০ চারা হয়ে গেল। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি যাও এবং এগুলো রোপণ করার জন্য গর্ত খনন করো। যখন শেষ করবে, তখন আমার কাছে আসবে। আমি নিজ হাতে তা রোপণ করব।’
আমি গর্ত খনন করলাম। এ কাজে সাহাবিরা আমাকে সাহায্য করলেন। যখন আমি কাজ শেষ করলাম, তখন তাঁর কাছে গিয়ে সেই সংবাদ দিলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার সঙ্গে বাগানের দিকে চললেন। আমরা তাঁকে গাছের চারা দেওয়া শুরু করলাম আর তিনি নিজ হাতে তা রোপণ করতে লাগলেন। ওই সত্তার কসম, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! ওই চারাগুলোর একটিও মারা যায়নি। আমি গাছের চুক্তি পূর্ণ করেছি।
৪০ উকিয়া স্বর্ণ যেভাবে আদায় করেন
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, বাকি ছিল ৪০ উকিয়া স্বর্ণের চুক্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো এক যুদ্ধের গনিমত থেকে মুরগির ডিমের সমান স্বর্ণের একটি টুকরা এল। তিনি বললেন, ‘সালমান তার চুক্তির ব্যাপারে কী করেছে?’ এরপর আমাকে ডাকা হলো। নবী (সা.) বললেন, ‘সালমান এটি নাও এবং তোমার যে ঋণ আছে, তা আদায় করো।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার ওপর যে ঋণ আছে, এটি কীভাবে তার বরাবর হবে?’ তিনি বললেন, ‘এটা নাও। কারণ আল্লাহ তাআলা এটি দিয়েই তোমার ঋণ আদায় করে দেবেন।’ আমি তা নিলাম এবং মাপলাম। ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! তা চল্লিশ উকিয়া হলো। আমি মনিবের চুক্তি পূর্ণভাবে আদায় করলাম এবং মুক্তি লাভ করলাম। এরপর আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে খন্দক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। তারপর তাঁর সঙ্গে আর কোনো যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত থাকিনি।
সূত্র: মুসনাদে আহমাদ: ২৩৭৮৮; সিলসিলা সহিহাহ: ৮৯৪

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন তিনি। সেই গল্পের শেষাংশের বর্ণনা অনুযায়ী, কয়েকজন খ্রিষ্টান পাদ্রির কথা শুনে সালমান ফারসি মদিনায় আসেন।
সালমান ফারসির মদিনায় আগমন
দীর্ঘ হাদিসের শেষে সালমান ফারসি (রা.) কীভাবে মদিনায় এলেন তা বর্ণনা করে বলেন, ‘এরপর আমার পাশ দিয়ে কালব গোত্রের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা যাচ্ছিল। আমি তাদের বললাম, তোমরা আমাকে আরবে নিয়ে চল। (বিনিময়ে) আমি তোমাদের এই গাভি ও বকরিগুলো দিয়ে দেব। তারা বলল, ঠিক আছে। এরপর আমি তাদের সেগুলো দিয়ে দিলাম আর তারা আমাকে নিয়ে চলল। যখন তারা আমাকে নিয়ে ওয়াদিউল কুরায় পৌঁছাল, তখন আমাকে অত্যাচার করল এবং দাস হিসেবে এক ইহুদির কাছে বিক্রি করে দিল। ফলে আমি সেই ইহুদির কাছে থাকতে বাধ্য হলাম এবং তার খেজুরগাছ দেখাশোনা করতে লাগলাম।’
হজরত সালমান আরও বলেন, ‘এরপর আমার মনিবের চাচাতো ভাই, যে মদিনায় থাকত, আমাকে কিনে মদিনায় নিয়ে গেল। আল্লাহর কসম, মদিনা দেখামাত্রই আমার বন্ধুর (পাদ্রি) বর্ণনামতো আমি তা চিনে ফেললাম। আমি এখানে অবস্থান করতে লাগলাম।’
মহানবী (সা.)-এর সন্ধান
সালমান ফারসি (রা.)-এর বর্ণনাটি এমন—এরপর ইসলামের নবী হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সা.)কে পৃথিবীতে পাঠানো হলো। তিনি মক্কায় যত দিন থাকার থাকলেন। আমি গোলামির জীবনে ব্যস্ত থাকায় তাঁর কোনো খবর পেলাম না। এরপর একদিন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন। আল্লাহর কসম, আমি আমার মালিকের খেজুরগাছের মাথায় কাজ করছিলাম। আর আমার মনিব বসে ছিলেন। এমন সময় তাঁর চাচাতো ভাই এলেন এবং বললেন, ‘হে অমুক, আল্লাহ বনী কায়লাদের (মদিনাবাসী) ধ্বংস করুন। আল্লাহর কসম, তারা কুবায় মক্কা থেকে আজকে আগত এক ব্যক্তির কাছে সমবেত হয়েছে। তারা তাকে নবী বলে ধারণা করছে।’
এ কথা শুনে আমার দেহে কম্পন শুরু হয়ে গেল। একপর্যায়ে আমি ধারণা করলাম, আমি আমার মনিবের ওপর পড়ে যাব। এরপর আমি খেজুরগাছ থেকে নেমে এলাম এবং তাঁর চাচাতো ভাইকে বলতে লাগলাম, আপনি কী বলছিলেন? আপনি কী বলছিলেন? এ কথা শুনে আমার মনিব চটে গেলেন এবং আমাকে খুব জোরে আঘাত করলেন এবং বললেন, ‘এ ব্যাপারে তোমার নাক গলাতে হবে না। তুমি তোমার কাজে যাও।’ আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তিনি যা বলেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছি।
মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, আমার কাছে কিছু সম্পদ ছিল, যা আমি সঞ্চয় করে রেখেছিলাম। যখন সন্ধ্যা হলো, তখন আমি তা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি কুবায় ছিলেন। তাঁকে বললাম, আমরা জানতে পেরেছি, আপনি একজন সৎ ব্যক্তি। আপনার সঙ্গে আপনার দরিদ্র সাথিরা রয়েছেন। এগুলো (সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ) আমার পক্ষ থেকে সদকা করছি। এগুলোর ব্যাপারে আপনারাই অধিক হকদার বলে আমি মনে করি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাথিদের বললেন, ‘তোমরা খাও।’ নবী (সা.) নিজে হাত সংযত করলেন এবং কিছুই খেলেন না।
নবী হওয়ার প্রমাণ পেলেন
সালমান ফারসি বলেন, আমি ধরে নিলাম, এটি (নবী হওয়ার) প্রথম আলামত। এরপর আমি তাঁর কাছ থেকে চলে এলাম এবং আরও কিছু পণ্য সঞ্চয় করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় চলে এলেন। এরপর আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমি আপনাকে সদকার সম্পদ খেতে দেখিনি আর এগুলো আপনার জন্য হাদিয়া, যা দিয়ে আপনার মেহমানদারি করছি। এবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এগুলো থেকে খেলেন এবং সাহাবিদের আদেশ করলে তাঁরাও তাঁর সঙ্গে আহার করলেন।
এবার বুঝতে পারলাম, এটি হলো (নবী হওয়ার) দ্বিতীয় আলামত। এরপর ‘বাকিউল গারকাদ নামক স্থানে আমি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি এক সাহাবির জানাজার পেছন-পেছন যাচ্ছিলেন। তাঁর পরিধানে দুটি চাদর ছিল। তিনি তাঁর সাথিদের সঙ্গে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। এরপর আমি তাঁর পিঠের দিকে ঘুরে দেখতে লাগলাম। যেন আমার বন্ধুর (খ্রিষ্টান পাদ্রি) বর্ণনা মোতাবেক নবুওয়াতের মোহরটি দেখতে পাই।
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে দেখলেন যে আমি তাঁর পেছনে পেছনে ঘুরছি, তখন তিনি বুঝতে পারলেন, আমি কোনো কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছি, যা আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে। তখন তিনি পিঠ থেকে চাদর সরিয়ে ফেললেন। আমি মোহর দেখতে পেলাম এবং তাঁকে চিনতে পারলাম (যে ইনিই নবী)। আমি তাঁর ওপর ঝুঁকে পড়লাম এবং তাকে চুমু দিয়ে কাঁদতে লাগলাম।
এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘এদিকে এসো।’ আমি এলাম এবং তাঁর কাছে আমার (অতীতের) সব ঘটনা বর্ণনা করলাম (যা হাদিসের শুরুর অংশে বিবৃত হয়েছে)। এ ঘটনা সাহাবিদেরও শোনাতে চাইলেন রাসুল (সা.)। এরপর আমি আবার দাসত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ফলে বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি।
৩০০ খেজুরগাছ রোপণ
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি (তোমার মালিকের সঙ্গে দাসত্ব মুক্তির ব্যাপারে) চুক্তি করো।’ আমি তাঁর সঙ্গে ৩০০ খেজুরগাছের চারা ফলদায়ক হওয়া পর্যন্ত গর্তে পানি দেওয়া এবং চল্লিশ উকিয়া আদায় করার বিনিময়ে চুক্তি করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো।’
সাহাবিরা আমাকে খেজুরগাছ (চারা) দিয়ে সাহায্য করলেন। এক ব্যক্তি ৩০টি চারা দিলেন, আরেকজন ২০টি। অন্যজন ১৫টি, আরেকজন ১০টি চারা দিলেন। অর্থাৎ, প্রত্যেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী আমাকে সাহায্য করলেন। একপর্যায়ে আমার ৩০০ চারা হয়ে গেল। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি যাও এবং এগুলো রোপণ করার জন্য গর্ত খনন করো। যখন শেষ করবে, তখন আমার কাছে আসবে। আমি নিজ হাতে তা রোপণ করব।’
আমি গর্ত খনন করলাম। এ কাজে সাহাবিরা আমাকে সাহায্য করলেন। যখন আমি কাজ শেষ করলাম, তখন তাঁর কাছে গিয়ে সেই সংবাদ দিলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার সঙ্গে বাগানের দিকে চললেন। আমরা তাঁকে গাছের চারা দেওয়া শুরু করলাম আর তিনি নিজ হাতে তা রোপণ করতে লাগলেন। ওই সত্তার কসম, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! ওই চারাগুলোর একটিও মারা যায়নি। আমি গাছের চুক্তি পূর্ণ করেছি।
৪০ উকিয়া স্বর্ণ যেভাবে আদায় করেন
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, বাকি ছিল ৪০ উকিয়া স্বর্ণের চুক্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো এক যুদ্ধের গনিমত থেকে মুরগির ডিমের সমান স্বর্ণের একটি টুকরা এল। তিনি বললেন, ‘সালমান তার চুক্তির ব্যাপারে কী করেছে?’ এরপর আমাকে ডাকা হলো। নবী (সা.) বললেন, ‘সালমান এটি নাও এবং তোমার যে ঋণ আছে, তা আদায় করো।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার ওপর যে ঋণ আছে, এটি কীভাবে তার বরাবর হবে?’ তিনি বললেন, ‘এটা নাও। কারণ আল্লাহ তাআলা এটি দিয়েই তোমার ঋণ আদায় করে দেবেন।’ আমি তা নিলাম এবং মাপলাম। ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! তা চল্লিশ উকিয়া হলো। আমি মনিবের চুক্তি পূর্ণভাবে আদায় করলাম এবং মুক্তি লাভ করলাম। এরপর আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে খন্দক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। তারপর তাঁর সঙ্গে আর কোনো যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত থাকিনি।
সূত্র: মুসনাদে আহমাদ: ২৩৭৮৮; সিলসিলা সহিহাহ: ৮৯৪
ইসলাম ডেস্ক

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন তিনি। সেই গল্পের শেষাংশের বর্ণনা অনুযায়ী, কয়েকজন খ্রিষ্টান পাদ্রির কথা শুনে সালমান ফারসি মদিনায় আসেন।
সালমান ফারসির মদিনায় আগমন
দীর্ঘ হাদিসের শেষে সালমান ফারসি (রা.) কীভাবে মদিনায় এলেন তা বর্ণনা করে বলেন, ‘এরপর আমার পাশ দিয়ে কালব গোত্রের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা যাচ্ছিল। আমি তাদের বললাম, তোমরা আমাকে আরবে নিয়ে চল। (বিনিময়ে) আমি তোমাদের এই গাভি ও বকরিগুলো দিয়ে দেব। তারা বলল, ঠিক আছে। এরপর আমি তাদের সেগুলো দিয়ে দিলাম আর তারা আমাকে নিয়ে চলল। যখন তারা আমাকে নিয়ে ওয়াদিউল কুরায় পৌঁছাল, তখন আমাকে অত্যাচার করল এবং দাস হিসেবে এক ইহুদির কাছে বিক্রি করে দিল। ফলে আমি সেই ইহুদির কাছে থাকতে বাধ্য হলাম এবং তার খেজুরগাছ দেখাশোনা করতে লাগলাম।’
হজরত সালমান আরও বলেন, ‘এরপর আমার মনিবের চাচাতো ভাই, যে মদিনায় থাকত, আমাকে কিনে মদিনায় নিয়ে গেল। আল্লাহর কসম, মদিনা দেখামাত্রই আমার বন্ধুর (পাদ্রি) বর্ণনামতো আমি তা চিনে ফেললাম। আমি এখানে অবস্থান করতে লাগলাম।’
মহানবী (সা.)-এর সন্ধান
সালমান ফারসি (রা.)-এর বর্ণনাটি এমন—এরপর ইসলামের নবী হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সা.)কে পৃথিবীতে পাঠানো হলো। তিনি মক্কায় যত দিন থাকার থাকলেন। আমি গোলামির জীবনে ব্যস্ত থাকায় তাঁর কোনো খবর পেলাম না। এরপর একদিন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন। আল্লাহর কসম, আমি আমার মালিকের খেজুরগাছের মাথায় কাজ করছিলাম। আর আমার মনিব বসে ছিলেন। এমন সময় তাঁর চাচাতো ভাই এলেন এবং বললেন, ‘হে অমুক, আল্লাহ বনী কায়লাদের (মদিনাবাসী) ধ্বংস করুন। আল্লাহর কসম, তারা কুবায় মক্কা থেকে আজকে আগত এক ব্যক্তির কাছে সমবেত হয়েছে। তারা তাকে নবী বলে ধারণা করছে।’
এ কথা শুনে আমার দেহে কম্পন শুরু হয়ে গেল। একপর্যায়ে আমি ধারণা করলাম, আমি আমার মনিবের ওপর পড়ে যাব। এরপর আমি খেজুরগাছ থেকে নেমে এলাম এবং তাঁর চাচাতো ভাইকে বলতে লাগলাম, আপনি কী বলছিলেন? আপনি কী বলছিলেন? এ কথা শুনে আমার মনিব চটে গেলেন এবং আমাকে খুব জোরে আঘাত করলেন এবং বললেন, ‘এ ব্যাপারে তোমার নাক গলাতে হবে না। তুমি তোমার কাজে যাও।’ আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তিনি যা বলেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছি।
মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, আমার কাছে কিছু সম্পদ ছিল, যা আমি সঞ্চয় করে রেখেছিলাম। যখন সন্ধ্যা হলো, তখন আমি তা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি কুবায় ছিলেন। তাঁকে বললাম, আমরা জানতে পেরেছি, আপনি একজন সৎ ব্যক্তি। আপনার সঙ্গে আপনার দরিদ্র সাথিরা রয়েছেন। এগুলো (সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ) আমার পক্ষ থেকে সদকা করছি। এগুলোর ব্যাপারে আপনারাই অধিক হকদার বলে আমি মনে করি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাথিদের বললেন, ‘তোমরা খাও।’ নবী (সা.) নিজে হাত সংযত করলেন এবং কিছুই খেলেন না।
নবী হওয়ার প্রমাণ পেলেন
সালমান ফারসি বলেন, আমি ধরে নিলাম, এটি (নবী হওয়ার) প্রথম আলামত। এরপর আমি তাঁর কাছ থেকে চলে এলাম এবং আরও কিছু পণ্য সঞ্চয় করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় চলে এলেন। এরপর আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমি আপনাকে সদকার সম্পদ খেতে দেখিনি আর এগুলো আপনার জন্য হাদিয়া, যা দিয়ে আপনার মেহমানদারি করছি। এবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এগুলো থেকে খেলেন এবং সাহাবিদের আদেশ করলে তাঁরাও তাঁর সঙ্গে আহার করলেন।
এবার বুঝতে পারলাম, এটি হলো (নবী হওয়ার) দ্বিতীয় আলামত। এরপর ‘বাকিউল গারকাদ নামক স্থানে আমি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি এক সাহাবির জানাজার পেছন-পেছন যাচ্ছিলেন। তাঁর পরিধানে দুটি চাদর ছিল। তিনি তাঁর সাথিদের সঙ্গে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। এরপর আমি তাঁর পিঠের দিকে ঘুরে দেখতে লাগলাম। যেন আমার বন্ধুর (খ্রিষ্টান পাদ্রি) বর্ণনা মোতাবেক নবুওয়াতের মোহরটি দেখতে পাই।
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে দেখলেন যে আমি তাঁর পেছনে পেছনে ঘুরছি, তখন তিনি বুঝতে পারলেন, আমি কোনো কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছি, যা আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে। তখন তিনি পিঠ থেকে চাদর সরিয়ে ফেললেন। আমি মোহর দেখতে পেলাম এবং তাঁকে চিনতে পারলাম (যে ইনিই নবী)। আমি তাঁর ওপর ঝুঁকে পড়লাম এবং তাকে চুমু দিয়ে কাঁদতে লাগলাম।
এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘এদিকে এসো।’ আমি এলাম এবং তাঁর কাছে আমার (অতীতের) সব ঘটনা বর্ণনা করলাম (যা হাদিসের শুরুর অংশে বিবৃত হয়েছে)। এ ঘটনা সাহাবিদেরও শোনাতে চাইলেন রাসুল (সা.)। এরপর আমি আবার দাসত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ফলে বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি।
৩০০ খেজুরগাছ রোপণ
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি (তোমার মালিকের সঙ্গে দাসত্ব মুক্তির ব্যাপারে) চুক্তি করো।’ আমি তাঁর সঙ্গে ৩০০ খেজুরগাছের চারা ফলদায়ক হওয়া পর্যন্ত গর্তে পানি দেওয়া এবং চল্লিশ উকিয়া আদায় করার বিনিময়ে চুক্তি করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো।’
সাহাবিরা আমাকে খেজুরগাছ (চারা) দিয়ে সাহায্য করলেন। এক ব্যক্তি ৩০টি চারা দিলেন, আরেকজন ২০টি। অন্যজন ১৫টি, আরেকজন ১০টি চারা দিলেন। অর্থাৎ, প্রত্যেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী আমাকে সাহায্য করলেন। একপর্যায়ে আমার ৩০০ চারা হয়ে গেল। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি যাও এবং এগুলো রোপণ করার জন্য গর্ত খনন করো। যখন শেষ করবে, তখন আমার কাছে আসবে। আমি নিজ হাতে তা রোপণ করব।’
আমি গর্ত খনন করলাম। এ কাজে সাহাবিরা আমাকে সাহায্য করলেন। যখন আমি কাজ শেষ করলাম, তখন তাঁর কাছে গিয়ে সেই সংবাদ দিলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার সঙ্গে বাগানের দিকে চললেন। আমরা তাঁকে গাছের চারা দেওয়া শুরু করলাম আর তিনি নিজ হাতে তা রোপণ করতে লাগলেন। ওই সত্তার কসম, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! ওই চারাগুলোর একটিও মারা যায়নি। আমি গাছের চুক্তি পূর্ণ করেছি।
৪০ উকিয়া স্বর্ণ যেভাবে আদায় করেন
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, বাকি ছিল ৪০ উকিয়া স্বর্ণের চুক্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো এক যুদ্ধের গনিমত থেকে মুরগির ডিমের সমান স্বর্ণের একটি টুকরা এল। তিনি বললেন, ‘সালমান তার চুক্তির ব্যাপারে কী করেছে?’ এরপর আমাকে ডাকা হলো। নবী (সা.) বললেন, ‘সালমান এটি নাও এবং তোমার যে ঋণ আছে, তা আদায় করো।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার ওপর যে ঋণ আছে, এটি কীভাবে তার বরাবর হবে?’ তিনি বললেন, ‘এটা নাও। কারণ আল্লাহ তাআলা এটি দিয়েই তোমার ঋণ আদায় করে দেবেন।’ আমি তা নিলাম এবং মাপলাম। ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! তা চল্লিশ উকিয়া হলো। আমি মনিবের চুক্তি পূর্ণভাবে আদায় করলাম এবং মুক্তি লাভ করলাম। এরপর আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে খন্দক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। তারপর তাঁর সঙ্গে আর কোনো যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত থাকিনি।
সূত্র: মুসনাদে আহমাদ: ২৩৭৮৮; সিলসিলা সহিহাহ: ৮৯৪

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন তিনি। সেই গল্পের শেষাংশের বর্ণনা অনুযায়ী, কয়েকজন খ্রিষ্টান পাদ্রির কথা শুনে সালমান ফারসি মদিনায় আসেন।
সালমান ফারসির মদিনায় আগমন
দীর্ঘ হাদিসের শেষে সালমান ফারসি (রা.) কীভাবে মদিনায় এলেন তা বর্ণনা করে বলেন, ‘এরপর আমার পাশ দিয়ে কালব গোত্রের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা যাচ্ছিল। আমি তাদের বললাম, তোমরা আমাকে আরবে নিয়ে চল। (বিনিময়ে) আমি তোমাদের এই গাভি ও বকরিগুলো দিয়ে দেব। তারা বলল, ঠিক আছে। এরপর আমি তাদের সেগুলো দিয়ে দিলাম আর তারা আমাকে নিয়ে চলল। যখন তারা আমাকে নিয়ে ওয়াদিউল কুরায় পৌঁছাল, তখন আমাকে অত্যাচার করল এবং দাস হিসেবে এক ইহুদির কাছে বিক্রি করে দিল। ফলে আমি সেই ইহুদির কাছে থাকতে বাধ্য হলাম এবং তার খেজুরগাছ দেখাশোনা করতে লাগলাম।’
হজরত সালমান আরও বলেন, ‘এরপর আমার মনিবের চাচাতো ভাই, যে মদিনায় থাকত, আমাকে কিনে মদিনায় নিয়ে গেল। আল্লাহর কসম, মদিনা দেখামাত্রই আমার বন্ধুর (পাদ্রি) বর্ণনামতো আমি তা চিনে ফেললাম। আমি এখানে অবস্থান করতে লাগলাম।’
মহানবী (সা.)-এর সন্ধান
সালমান ফারসি (রা.)-এর বর্ণনাটি এমন—এরপর ইসলামের নবী হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সা.)কে পৃথিবীতে পাঠানো হলো। তিনি মক্কায় যত দিন থাকার থাকলেন। আমি গোলামির জীবনে ব্যস্ত থাকায় তাঁর কোনো খবর পেলাম না। এরপর একদিন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন। আল্লাহর কসম, আমি আমার মালিকের খেজুরগাছের মাথায় কাজ করছিলাম। আর আমার মনিব বসে ছিলেন। এমন সময় তাঁর চাচাতো ভাই এলেন এবং বললেন, ‘হে অমুক, আল্লাহ বনী কায়লাদের (মদিনাবাসী) ধ্বংস করুন। আল্লাহর কসম, তারা কুবায় মক্কা থেকে আজকে আগত এক ব্যক্তির কাছে সমবেত হয়েছে। তারা তাকে নবী বলে ধারণা করছে।’
এ কথা শুনে আমার দেহে কম্পন শুরু হয়ে গেল। একপর্যায়ে আমি ধারণা করলাম, আমি আমার মনিবের ওপর পড়ে যাব। এরপর আমি খেজুরগাছ থেকে নেমে এলাম এবং তাঁর চাচাতো ভাইকে বলতে লাগলাম, আপনি কী বলছিলেন? আপনি কী বলছিলেন? এ কথা শুনে আমার মনিব চটে গেলেন এবং আমাকে খুব জোরে আঘাত করলেন এবং বললেন, ‘এ ব্যাপারে তোমার নাক গলাতে হবে না। তুমি তোমার কাজে যাও।’ আমি বললাম, কিছুই না। আমি শুধু তিনি যা বলেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছি।
মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, আমার কাছে কিছু সম্পদ ছিল, যা আমি সঞ্চয় করে রেখেছিলাম। যখন সন্ধ্যা হলো, তখন আমি তা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি কুবায় ছিলেন। তাঁকে বললাম, আমরা জানতে পেরেছি, আপনি একজন সৎ ব্যক্তি। আপনার সঙ্গে আপনার দরিদ্র সাথিরা রয়েছেন। এগুলো (সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ) আমার পক্ষ থেকে সদকা করছি। এগুলোর ব্যাপারে আপনারাই অধিক হকদার বলে আমি মনে করি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাথিদের বললেন, ‘তোমরা খাও।’ নবী (সা.) নিজে হাত সংযত করলেন এবং কিছুই খেলেন না।
নবী হওয়ার প্রমাণ পেলেন
সালমান ফারসি বলেন, আমি ধরে নিলাম, এটি (নবী হওয়ার) প্রথম আলামত। এরপর আমি তাঁর কাছ থেকে চলে এলাম এবং আরও কিছু পণ্য সঞ্চয় করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় চলে এলেন। এরপর আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমি আপনাকে সদকার সম্পদ খেতে দেখিনি আর এগুলো আপনার জন্য হাদিয়া, যা দিয়ে আপনার মেহমানদারি করছি। এবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এগুলো থেকে খেলেন এবং সাহাবিদের আদেশ করলে তাঁরাও তাঁর সঙ্গে আহার করলেন।
এবার বুঝতে পারলাম, এটি হলো (নবী হওয়ার) দ্বিতীয় আলামত। এরপর ‘বাকিউল গারকাদ নামক স্থানে আমি নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি এক সাহাবির জানাজার পেছন-পেছন যাচ্ছিলেন। তাঁর পরিধানে দুটি চাদর ছিল। তিনি তাঁর সাথিদের সঙ্গে বসা ছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। এরপর আমি তাঁর পিঠের দিকে ঘুরে দেখতে লাগলাম। যেন আমার বন্ধুর (খ্রিষ্টান পাদ্রি) বর্ণনা মোতাবেক নবুওয়াতের মোহরটি দেখতে পাই।
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে দেখলেন যে আমি তাঁর পেছনে পেছনে ঘুরছি, তখন তিনি বুঝতে পারলেন, আমি কোনো কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছি, যা আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে। তখন তিনি পিঠ থেকে চাদর সরিয়ে ফেললেন। আমি মোহর দেখতে পেলাম এবং তাঁকে চিনতে পারলাম (যে ইনিই নবী)। আমি তাঁর ওপর ঝুঁকে পড়লাম এবং তাকে চুমু দিয়ে কাঁদতে লাগলাম।
এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘এদিকে এসো।’ আমি এলাম এবং তাঁর কাছে আমার (অতীতের) সব ঘটনা বর্ণনা করলাম (যা হাদিসের শুরুর অংশে বিবৃত হয়েছে)। এ ঘটনা সাহাবিদেরও শোনাতে চাইলেন রাসুল (সা.)। এরপর আমি আবার দাসত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ফলে বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি।
৩০০ খেজুরগাছ রোপণ
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি (তোমার মালিকের সঙ্গে দাসত্ব মুক্তির ব্যাপারে) চুক্তি করো।’ আমি তাঁর সঙ্গে ৩০০ খেজুরগাছের চারা ফলদায়ক হওয়া পর্যন্ত গর্তে পানি দেওয়া এবং চল্লিশ উকিয়া আদায় করার বিনিময়ে চুক্তি করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো।’
সাহাবিরা আমাকে খেজুরগাছ (চারা) দিয়ে সাহায্য করলেন। এক ব্যক্তি ৩০টি চারা দিলেন, আরেকজন ২০টি। অন্যজন ১৫টি, আরেকজন ১০টি চারা দিলেন। অর্থাৎ, প্রত্যেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী আমাকে সাহায্য করলেন। একপর্যায়ে আমার ৩০০ চারা হয়ে গেল। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে সালমান, তুমি যাও এবং এগুলো রোপণ করার জন্য গর্ত খনন করো। যখন শেষ করবে, তখন আমার কাছে আসবে। আমি নিজ হাতে তা রোপণ করব।’
আমি গর্ত খনন করলাম। এ কাজে সাহাবিরা আমাকে সাহায্য করলেন। যখন আমি কাজ শেষ করলাম, তখন তাঁর কাছে গিয়ে সেই সংবাদ দিলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার সঙ্গে বাগানের দিকে চললেন। আমরা তাঁকে গাছের চারা দেওয়া শুরু করলাম আর তিনি নিজ হাতে তা রোপণ করতে লাগলেন। ওই সত্তার কসম, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! ওই চারাগুলোর একটিও মারা যায়নি। আমি গাছের চুক্তি পূর্ণ করেছি।
৪০ উকিয়া স্বর্ণ যেভাবে আদায় করেন
সালমান ফারসি (রা.) বলেন, বাকি ছিল ৪০ উকিয়া স্বর্ণের চুক্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো এক যুদ্ধের গনিমত থেকে মুরগির ডিমের সমান স্বর্ণের একটি টুকরা এল। তিনি বললেন, ‘সালমান তার চুক্তির ব্যাপারে কী করেছে?’ এরপর আমাকে ডাকা হলো। নবী (সা.) বললেন, ‘সালমান এটি নাও এবং তোমার যে ঋণ আছে, তা আদায় করো।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার ওপর যে ঋণ আছে, এটি কীভাবে তার বরাবর হবে?’ তিনি বললেন, ‘এটা নাও। কারণ আল্লাহ তাআলা এটি দিয়েই তোমার ঋণ আদায় করে দেবেন।’ আমি তা নিলাম এবং মাপলাম। ওই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে সালমানের প্রাণ! তা চল্লিশ উকিয়া হলো। আমি মনিবের চুক্তি পূর্ণভাবে আদায় করলাম এবং মুক্তি লাভ করলাম। এরপর আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে খন্দক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। তারপর তাঁর সঙ্গে আর কোনো যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত থাকিনি।
সূত্র: মুসনাদে আহমাদ: ২৩৭৮৮; সিলসিলা সহিহাহ: ৮৯৪

মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি;
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি; এটি রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ।
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর মাতৃভূমি মক্কাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। যখন তিনি মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশে হিজরত করছিলেন, তখন মক্কাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর আবেগপূর্ণ উক্তি ছিল, ‘মক্কা, তুমি কতই-না পবিত্র শহর! আমার প্রিয়তম শহর তুমি। আমার সম্প্রদায় যদি আমাকে তাড়িয়ে না দিত, তবে আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কোথাও থাকতাম না।’ (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৯)
মক্কা ত্যাগ করে মদিনাকে যখন তিনি নিজের স্থায়ী আবাসভূমি বানালেন, তখন তিনি মদিনার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করতেন। মদিনাকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমার কাছে মক্কা যতটা প্রিয় ছিল, এর চেয়ে বেশি প্রিয় আমার কাছে মদিনাকে বানিয়ে দাও।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬০০)
নবীজি (সা.) মদিনাকে নিজের দেশ বানানোর পর তাঁর এই মহব্বত ছিল দৃশ্যমান। হজরত হুমাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি হজরত আনাস (রা.)-কে বলতে শুনেছেন—রাসুলুল্লাহ (সা.) সফর থেকে ফিরে যখন মদিনার উঁচু রাস্তাগুলো দেখতেন, তখন তিনি তাঁর উটনীকে মদিনার মহব্বতে দ্রুতগতিতে চালাতেন। তাঁর বাহন অন্য কোনো জন্তু হলে তিনি তাকে তাড়া দিতেন।’ (সহিহ বুখারি: ১৮০২, ১৬৮৫)
সুতরাং, এটি সুস্পষ্ট যে নিজের মাতৃভূমি বা স্বীয় দেশকে মহব্বত করা, ভালোবাসা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা মানব মনের একটি স্বভাবজাত বিষয়, ইসলামও এতে উৎসাহিত করে। রাসুল (সা.) নিজের দেশকে ভালোবেসেছেন; তাই দেশপ্রেম একটি সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত চেতনা।

মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি; এটি রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ।
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর মাতৃভূমি মক্কাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। যখন তিনি মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশে হিজরত করছিলেন, তখন মক্কাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর আবেগপূর্ণ উক্তি ছিল, ‘মক্কা, তুমি কতই-না পবিত্র শহর! আমার প্রিয়তম শহর তুমি। আমার সম্প্রদায় যদি আমাকে তাড়িয়ে না দিত, তবে আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কোথাও থাকতাম না।’ (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৯)
মক্কা ত্যাগ করে মদিনাকে যখন তিনি নিজের স্থায়ী আবাসভূমি বানালেন, তখন তিনি মদিনার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করতেন। মদিনাকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমার কাছে মক্কা যতটা প্রিয় ছিল, এর চেয়ে বেশি প্রিয় আমার কাছে মদিনাকে বানিয়ে দাও।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬০০)
নবীজি (সা.) মদিনাকে নিজের দেশ বানানোর পর তাঁর এই মহব্বত ছিল দৃশ্যমান। হজরত হুমাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি হজরত আনাস (রা.)-কে বলতে শুনেছেন—রাসুলুল্লাহ (সা.) সফর থেকে ফিরে যখন মদিনার উঁচু রাস্তাগুলো দেখতেন, তখন তিনি তাঁর উটনীকে মদিনার মহব্বতে দ্রুতগতিতে চালাতেন। তাঁর বাহন অন্য কোনো জন্তু হলে তিনি তাকে তাড়া দিতেন।’ (সহিহ বুখারি: ১৮০২, ১৬৮৫)
সুতরাং, এটি সুস্পষ্ট যে নিজের মাতৃভূমি বা স্বীয় দেশকে মহব্বত করা, ভালোবাসা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা মানব মনের একটি স্বভাবজাত বিষয়, ইসলামও এতে উৎসাহিত করে। রাসুল (সা.) নিজের দেশকে ভালোবেসেছেন; তাই দেশপ্রেম একটি সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত চেতনা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন
৩১ মার্চ ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৮ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৯ মিনিট | ০৫: ১৪ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৬ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৮ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৯ মিনিট | ০৫: ১৪ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৬ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন
৩১ মার্চ ২০২৩
মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি;
৫ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ দিন আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়। তাই একজন মুমিন কোনো বিজয়কেই নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখে না; বরং সর্বাবস্থায় নিজের সব সাফল্যকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ওপর ন্যস্ত করে। এ কারণেই বিজয়ের দিনে মুমিনের করণীয় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
প্রতিটি বিজয় প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার সাহায্য ও অনুগ্রহেরই ফল। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘বিজয় তো কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে, যিনি পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী এবং পরিপূর্ণ প্রজ্ঞার মালিক।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২৬) সুতরাং বিজয়ের মুহূর্তে মুমিনের প্রথম করণীয় হলো আল্লাহ তাআলার দরবারে শোকর আদায় করা।
অনেক সময় বিজয় মানুষকে ভুল পথ তথা অহংকার, গাফিলতি ও আত্মতুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা অহংকারী ও দাম্ভিক ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লুকমান: ১৮) প্রকৃত মুমিন বিজয়ের পর আরও বিনয়ী হয় এবং কৃতজ্ঞতায় আল্লাহ তাআলার দরবারে নত হয়ে পড়ে।
কোনো বিজয়ই কখনো একক প্রচেষ্টার ফল নয়। এর পেছনে থাকে বহু মানুষের অক্লান্ত শ্রম, অপরিসীম ত্যাগ, রক্ত ও জীবনের কোরবানি। তাই যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিজয় অর্জিত হয়েছে, বিজয় দিবসে তাদের জন্য দোয়া করা কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। জীবিতদের দোয়াই মৃতদের জন্য উপকারী। এর বাইরে বিজয় দিবসকে ঘিরে পরিচালিত অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড তাদের কোনো উপকারে আসে না।
বিজয় আসে ধৈর্য, ত্যাগ, নৈতিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে। এই বিজয়কে তাই স্থায়ী করতে হলে সমাজে ন্যায়, সততা, দায়িত্বশীলতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় সমাজ ও রাষ্ট্রে বিজয়ের প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে না।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়। তাই একজন মুমিন কোনো বিজয়কেই নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখে না; বরং সর্বাবস্থায় নিজের সব সাফল্যকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ওপর ন্যস্ত করে। এ কারণেই বিজয়ের দিনে মুমিনের করণীয় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
প্রতিটি বিজয় প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার সাহায্য ও অনুগ্রহেরই ফল। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘বিজয় তো কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে, যিনি পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী এবং পরিপূর্ণ প্রজ্ঞার মালিক।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২৬) সুতরাং বিজয়ের মুহূর্তে মুমিনের প্রথম করণীয় হলো আল্লাহ তাআলার দরবারে শোকর আদায় করা।
অনেক সময় বিজয় মানুষকে ভুল পথ তথা অহংকার, গাফিলতি ও আত্মতুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা অহংকারী ও দাম্ভিক ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লুকমান: ১৮) প্রকৃত মুমিন বিজয়ের পর আরও বিনয়ী হয় এবং কৃতজ্ঞতায় আল্লাহ তাআলার দরবারে নত হয়ে পড়ে।
কোনো বিজয়ই কখনো একক প্রচেষ্টার ফল নয়। এর পেছনে থাকে বহু মানুষের অক্লান্ত শ্রম, অপরিসীম ত্যাগ, রক্ত ও জীবনের কোরবানি। তাই যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিজয় অর্জিত হয়েছে, বিজয় দিবসে তাদের জন্য দোয়া করা কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। জীবিতদের দোয়াই মৃতদের জন্য উপকারী। এর বাইরে বিজয় দিবসকে ঘিরে পরিচালিত অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড তাদের কোনো উপকারে আসে না।
বিজয় আসে ধৈর্য, ত্যাগ, নৈতিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে। এই বিজয়কে তাই স্থায়ী করতে হলে সমাজে ন্যায়, সততা, দায়িত্বশীলতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় সমাজ ও রাষ্ট্রে বিজয়ের প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে না।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন
৩১ মার্চ ২০২৩
মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি;
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০১ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০১ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি সালমান ফারসি (রা.)-এর জবানিতেই তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিস্ময়কর অভিযাত্রার ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। পারস্য থেকে বিভিন্ন দেশ, জনপদ ও ধর্মগুরুদের কাছে হেদায়াতের খোঁজ করতে করতে কীভাবে মদিনায় এসে পৌঁছালেন, সেই গল্প একনাগাড়ে বলে গেছেন
৩১ মার্চ ২০২৩
মাতৃভূমি—যেখানে জন্মগ্রহণ করে, যে মাটির ঘ্রাণে শৈশব কাটে, আর যে ভূমির কণা ছুঁয়ে জীবন বেড়ে ওঠে—তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মানুষের এক স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। নিজের মাতৃভূমিকে মহব্বত করা এবং তার প্রতি আন্তরিক টান অনুভব করা স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত একটি স্বাভাবিক মনোবৃত্তি;
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
১ দিন আগে