মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মুহূর্তে বিএনপিকে মাঠে চাঙা করার রাজনীতিতে নিরলসভাবে দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, কথা বলছেন। তাঁর রাজনৈতিক কণ্ঠ বেশ আকর্ষণীয়, বলেনও গুছিয়ে। তাঁকে একজন শিক্ষিত ও মার্জিত মানুষ বলে দলে এবং দলের বাইরে অনেকেই মনে করেন। তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন আছেন, যাঁদের নিয়ে তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতৃত্ব প্রদান করছেন। বিএনপির মূল নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতে। কিন্তু তাঁরা দুজনই দণ্ডিত। খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালি নেতাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। মাঠে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে অন্যরা দলীয় সভা-সমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছেন, বক্তৃতা করছেন, দল ও জোটকে ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনে প্রস্তুত করছেন। দলীয় সভা-সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তৃতা করছেন তিনি। তিনি অনেক কথাই বলছেন, বিতর্কেরও জন্ম দিচ্ছেন। আবার প্রকৃত সত্যকে চাতুর্যের সঙ্গে মিথ্যার প্রলেপ জড়িয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা হয়তো বিএনপির রাজনীতিরই অংশ। কিন্তু দেশ ও জাতিকে সঠিক তথ্য ও ধারণা দেওয়ার মহান ব্রত নিয়ে যে রাজনীতি এ দেশে একসময় বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ আমাদের জাতীয় নেতারা সৃষ্টি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই বক্তৃতার রাজনীতিকে মেলানো যাবে না। এটি আমাদের জাতীয় রাজনীতির এক বড় দুর্ভাগ্য। এই আক্ষেপ শুধু আমার একার নয়, যাঁরা দেশের রাজনীতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন, তাঁরা পঁচাত্তর-পরবর্তী শূন্য মাঠে হাজিরা দেওয়া বেশির ভাগ নেতার বক্তৃতাকে অনেকটাই গলাবাজি মনে করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুদিন আগে দেশের অবস্থার কথা বলতে গিয়ে আমরা নাকি পাকিস্তানের চাইতেও খারাপ অবস্থায় আছি—এমন মন্তব্য করে তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসের আসল চরিত্রটি অনেকের কাছে স্পষ্ট করেছেন। মাস কয়েক আগে তিনি বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে—এমন কথাও একাধিক দিন বলেছেন। তাঁর সুরেলা কণ্ঠের এই বক্তৃতা শুনে কেউ কেউ কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেও পড়েছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি উপমহাদেশের অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে আছে বলে তথ্য প্রদান করছিল। দেশের বিশেষজ্ঞরাও যখন বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার কোনো আশঙ্কাই নেই বলে দাবি করায় মির্জা ফখরুলের আতঙ্ক ছড়ানোর মিশন সফল হয়নি।
মির্জা ফখরুল সাহেব যখন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো ভয়ানক আতঙ্কের কথা উচ্চারণ করেন, তখনই সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে একশ্রেণির কল্পিত গল্পকার, ছড়াকার বেশ উৎফুল্ল চিত্তে সবকিছু ‘গেল গেল’ বলে রব তুলতে থাকেন। দেশ-বিদেশ থেকে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক, সামাজিক গণমাধ্যম পরিচালনাকারীরা একসঙ্গে আতঙ্ক ও কল্পকাহিনি ছড়াতে উঠেপড়ে লেগে যান। একসময় এসব প্রচার-প্রচারণা কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলেও এগুলোর আসল মাজেজা যে অন্তঃসারশূন্য, সেটি এরই মধ্যে একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব সম্প্রতি কয়েকটি জনসভা ও সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দুটি বক্তব্যকে নিজের মতো করে উপস্থাপন করেছেন, যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে একেবারেই ভিন্ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ২০২৩ সালে বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা থেকে অনেক বেশি দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলে আগাম সতর্কতা প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও এরই মধ্যে পৃথিবীতে প্রায় ৫০টির মতো দেশে চরম খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই আশঙ্কার সঙ্গে আন্তর্জাতিক এসব সংস্থার ধারণার মিল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ যাতে কোনো খাদ্য ঘাটতিতে না পড়ে, সে জন্য দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির তাগিদ বারবার দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির ব্যাপারেও সরকার আগাম ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে বাংলাদেশে আগামী বছর নাকি দুর্ভিক্ষ হবে—এ কথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলছেন বলে দাবি করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, তিনি সংবাদ সম্মেলন করেও প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতিকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে তুলে ধরেছেন এবং চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের ইতিহাস বয়ান করেছেন। ১৯৭৪-এর প্রেক্ষাপট কী ছিল, তা সেই প্রজন্মের অনেকেরই জানা আছে। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ছিল—সে কথা তখনো সবাই জানত, এখনো জানে। তা ছাড়া, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বাহাত্তর-পরবর্তী সময়ে জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছাড়া ১৯৭২-৭৫-এর জটিল পর্বটি আমরা অতিক্রম করে টিকে থাকতে পারতাম কি না, সেটি মস্ত বড় প্রশ্ন।
আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে দেশে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে—এমন আজগুবি কথা ১৯৯১ সালেও শোনা গেছে, ২০০১ সালেও শোনা গেছে। এখনো বিএনপির নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হয়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ ও ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে। দেশে তো চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ একবারও ফিরে আসেনি। তাহলে দুর্ভিক্ষের জুজুর ভয় কেন বারবার দেখানো হচ্ছে? যাঁরা রাজনীতিকে সস্তা গলাবাজির বিষয় মনে করেন, তাঁরাই কেবল এসব মনগড়া কথা বলতে পারেন। বাংলাদেশে এখন যে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়, তা সত্তরের দশকের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি। এই সময় আমাদের জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের কিছু বেশি। তা ছাড়া, শেখ হাসিনার প্রতিটি শাসনামলে খাদ্য উৎপাদনের পেছনে সার, কীটনাশক ও নানা ধরনের ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তার ধারেকাছেও বিএনপি বা জাতীয় পার্টির শাসনামলে দেওয়া হয়নি। ফলে দেশ নিরবচ্ছিন্নভাবে খাদ্য উৎপাদনে অগ্রগতি লাভ করেছে। মঙ্গা শব্দটি এখন আর বাংলাদেশে শোনা যায় না। এ বছর জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সিলেট অঞ্চলে কিছু ফসলহানি ঘটেছে। অন্যত্র বৃষ্টির অভাবে আমন উৎপাদন কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। তার পরও দেশে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি হওয়ার মতো কোনো আশঙ্কাই দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়া ফসলহানির আশঙ্কা কৃষকেরাও দেখছেন না। সুতরাং দেশে আগামী বছর দুর্ভিক্ষ আসবে—এমন জুজুর ভয় বিএনপির মতো একটি বড় দলের মহাসচিব যখন বারবার শোনাতে থাকেন, তখন সেটি যদি কারও মনে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে, তাহলে সেই জুজুই মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য হবে। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আস্থার কথা গণমাধ্যমে বারবার প্রচারিত হচ্ছে। এই প্রচার মোটেও অমূলক নয়, বরং মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার। বঙ্গবন্ধু সেই আত্মবিশ্বাসের বীজ রোপণ করেছেন। শেখ হাসিনা সেটির বিস্তার ঘটাচ্ছেন। মানুষ তার ফলও পাচ্ছে।
বিএনপির নেতারা দেশের রিজার্ভ নিয়ে একটি ভয়ানক আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে নেমেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতা-কর্মী ও তাঁদের সমর্থকেরা সামাজিক গণমাধ্যমগুলোয় দেশের রিজার্ভ নিয়ে কাল্পনিক নানা কাহিনি ছড়াচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে। সেখানে ডলারের মূল্যমান অন্য সব আন্তর্জাতিক মুদ্রার চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মতো দেশগুলোতে রিজার্ভের ওপর চাপ বেশি পড়েছে। বৈশ্বিক এই সংকট নিয়ে সব দেশই কমবেশি বিপদগ্রস্ত। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং বেশ কিছু পণ্যের আমদানি মূল্য বেড়ে গেছে।
আবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু দেশ থেকে কম মূল্যে সেগুলো কেনা সম্ভবও হচ্ছে না। বৈশ্বিক এই সংকট উপেক্ষা করার কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু বিএনপির নেতারা বৈশ্বিক এই অবস্থাকে আড়াল করে দায়টি কেবল বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের ওপর চাপাচ্ছেন। বাংলাদেশে কী পরিমাণ রিজার্ভ আছে, তা আমাদের জন্য কতটা স্বস্তির পর্যায়ে রয়েছে, সে সম্পর্কে জানানোর একমাত্র দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু মির্জা ফখরুল রিজার্ভ গিলে খাওয়ার চটকদারি মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে সরকারি দলকে বিতর্কে লিপ্ত হতে উসকে দিয়েছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে নানা আতঙ্ক ও হতাশাও বাড়তে পারে।
রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কোনো অবস্থাতেই অন্যদের তুলনায় শোচনীয় বলার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। ভারত বিশাল অর্থনীতির বড় দেশ, কিন্তু সেই তুলনায় আমরা অনেক ছোট দেশ হলেও কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। আমাদের যে রিজার্ভ আছে, তাতে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। কিন্তু এই পাঁচ মাসে আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছু কম-বেশি হলেও রিজার্ভ আশঙ্কাজনক অবস্থায় নামবে বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন না। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করবে। কিন্তু মির্জা ফখরুল রিজার্ভ গিলে খাওয়ার যে চটকদারি মন্তব্য করে বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন, সেটি করার মতো রাজনৈতিক ও নৈতিক অবস্থা কি তাঁর রয়েছে? বিএনপি শাসনের শেষ বছর ২০০৬ সালের জুনের শেষে রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩.৪ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এর আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৩ বিলিয়নের একটু বেশি। ২০০৪ সালের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল মাত্র ২.৭ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে রিজার্ভ বাড়তে থাকে। জুনের শেষে তা ৭.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এর পরবর্তী বছরগুলো রিজার্ভ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রাখে। ২০১৯ সালে ৩২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকার সময় আমাদের স্বস্তি থাকলে ৭ বিলিয়ন ফিক্সডসহ এখন ৩৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে কেন এত হাহাকার? বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে যথেষ্ট প্রতিকূলে। কিন্তু এ জন্য মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করে অযথা আতঙ্ক ছড়িয়ে মানুষের মনোবল ভাঙার চেষ্টা মোটেও সৎ রাজনীতি নয়।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মুহূর্তে বিএনপিকে মাঠে চাঙা করার রাজনীতিতে নিরলসভাবে দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, কথা বলছেন। তাঁর রাজনৈতিক কণ্ঠ বেশ আকর্ষণীয়, বলেনও গুছিয়ে। তাঁকে একজন শিক্ষিত ও মার্জিত মানুষ বলে দলে এবং দলের বাইরে অনেকেই মনে করেন। তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন আছেন, যাঁদের নিয়ে তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতৃত্ব প্রদান করছেন। বিএনপির মূল নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতে। কিন্তু তাঁরা দুজনই দণ্ডিত। খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালি নেতাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। মাঠে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে অন্যরা দলীয় সভা-সমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছেন, বক্তৃতা করছেন, দল ও জোটকে ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনে প্রস্তুত করছেন। দলীয় সভা-সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তৃতা করছেন তিনি। তিনি অনেক কথাই বলছেন, বিতর্কেরও জন্ম দিচ্ছেন। আবার প্রকৃত সত্যকে চাতুর্যের সঙ্গে মিথ্যার প্রলেপ জড়িয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা হয়তো বিএনপির রাজনীতিরই অংশ। কিন্তু দেশ ও জাতিকে সঠিক তথ্য ও ধারণা দেওয়ার মহান ব্রত নিয়ে যে রাজনীতি এ দেশে একসময় বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ আমাদের জাতীয় নেতারা সৃষ্টি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই বক্তৃতার রাজনীতিকে মেলানো যাবে না। এটি আমাদের জাতীয় রাজনীতির এক বড় দুর্ভাগ্য। এই আক্ষেপ শুধু আমার একার নয়, যাঁরা দেশের রাজনীতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন, তাঁরা পঁচাত্তর-পরবর্তী শূন্য মাঠে হাজিরা দেওয়া বেশির ভাগ নেতার বক্তৃতাকে অনেকটাই গলাবাজি মনে করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুদিন আগে দেশের অবস্থার কথা বলতে গিয়ে আমরা নাকি পাকিস্তানের চাইতেও খারাপ অবস্থায় আছি—এমন মন্তব্য করে তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসের আসল চরিত্রটি অনেকের কাছে স্পষ্ট করেছেন। মাস কয়েক আগে তিনি বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে—এমন কথাও একাধিক দিন বলেছেন। তাঁর সুরেলা কণ্ঠের এই বক্তৃতা শুনে কেউ কেউ কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেও পড়েছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি উপমহাদেশের অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে আছে বলে তথ্য প্রদান করছিল। দেশের বিশেষজ্ঞরাও যখন বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার কোনো আশঙ্কাই নেই বলে দাবি করায় মির্জা ফখরুলের আতঙ্ক ছড়ানোর মিশন সফল হয়নি।
মির্জা ফখরুল সাহেব যখন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো ভয়ানক আতঙ্কের কথা উচ্চারণ করেন, তখনই সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে একশ্রেণির কল্পিত গল্পকার, ছড়াকার বেশ উৎফুল্ল চিত্তে সবকিছু ‘গেল গেল’ বলে রব তুলতে থাকেন। দেশ-বিদেশ থেকে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক, সামাজিক গণমাধ্যম পরিচালনাকারীরা একসঙ্গে আতঙ্ক ও কল্পকাহিনি ছড়াতে উঠেপড়ে লেগে যান। একসময় এসব প্রচার-প্রচারণা কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলেও এগুলোর আসল মাজেজা যে অন্তঃসারশূন্য, সেটি এরই মধ্যে একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব সম্প্রতি কয়েকটি জনসভা ও সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দুটি বক্তব্যকে নিজের মতো করে উপস্থাপন করেছেন, যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে একেবারেই ভিন্ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ২০২৩ সালে বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা থেকে অনেক বেশি দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলে আগাম সতর্কতা প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও এরই মধ্যে পৃথিবীতে প্রায় ৫০টির মতো দেশে চরম খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই আশঙ্কার সঙ্গে আন্তর্জাতিক এসব সংস্থার ধারণার মিল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ যাতে কোনো খাদ্য ঘাটতিতে না পড়ে, সে জন্য দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির তাগিদ বারবার দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির ব্যাপারেও সরকার আগাম ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে বাংলাদেশে আগামী বছর নাকি দুর্ভিক্ষ হবে—এ কথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলছেন বলে দাবি করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, তিনি সংবাদ সম্মেলন করেও প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতিকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে তুলে ধরেছেন এবং চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের ইতিহাস বয়ান করেছেন। ১৯৭৪-এর প্রেক্ষাপট কী ছিল, তা সেই প্রজন্মের অনেকেরই জানা আছে। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ছিল—সে কথা তখনো সবাই জানত, এখনো জানে। তা ছাড়া, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বাহাত্তর-পরবর্তী সময়ে জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছাড়া ১৯৭২-৭৫-এর জটিল পর্বটি আমরা অতিক্রম করে টিকে থাকতে পারতাম কি না, সেটি মস্ত বড় প্রশ্ন।
আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে দেশে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে—এমন আজগুবি কথা ১৯৯১ সালেও শোনা গেছে, ২০০১ সালেও শোনা গেছে। এখনো বিএনপির নেতাদের মুখ থেকে শুনতে হয়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ ও ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে। দেশে তো চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ একবারও ফিরে আসেনি। তাহলে দুর্ভিক্ষের জুজুর ভয় কেন বারবার দেখানো হচ্ছে? যাঁরা রাজনীতিকে সস্তা গলাবাজির বিষয় মনে করেন, তাঁরাই কেবল এসব মনগড়া কথা বলতে পারেন। বাংলাদেশে এখন যে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়, তা সত্তরের দশকের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি। এই সময় আমাদের জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের কিছু বেশি। তা ছাড়া, শেখ হাসিনার প্রতিটি শাসনামলে খাদ্য উৎপাদনের পেছনে সার, কীটনাশক ও নানা ধরনের ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তার ধারেকাছেও বিএনপি বা জাতীয় পার্টির শাসনামলে দেওয়া হয়নি। ফলে দেশ নিরবচ্ছিন্নভাবে খাদ্য উৎপাদনে অগ্রগতি লাভ করেছে। মঙ্গা শব্দটি এখন আর বাংলাদেশে শোনা যায় না। এ বছর জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সিলেট অঞ্চলে কিছু ফসলহানি ঘটেছে। অন্যত্র বৃষ্টির অভাবে আমন উৎপাদন কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। তার পরও দেশে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি হওয়ার মতো কোনো আশঙ্কাই দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়া ফসলহানির আশঙ্কা কৃষকেরাও দেখছেন না। সুতরাং দেশে আগামী বছর দুর্ভিক্ষ আসবে—এমন জুজুর ভয় বিএনপির মতো একটি বড় দলের মহাসচিব যখন বারবার শোনাতে থাকেন, তখন সেটি যদি কারও মনে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে, তাহলে সেই জুজুই মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য হবে। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আস্থার কথা গণমাধ্যমে বারবার প্রচারিত হচ্ছে। এই প্রচার মোটেও অমূলক নয়, বরং মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার। বঙ্গবন্ধু সেই আত্মবিশ্বাসের বীজ রোপণ করেছেন। শেখ হাসিনা সেটির বিস্তার ঘটাচ্ছেন। মানুষ তার ফলও পাচ্ছে।
বিএনপির নেতারা দেশের রিজার্ভ নিয়ে একটি ভয়ানক আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে নেমেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতা-কর্মী ও তাঁদের সমর্থকেরা সামাজিক গণমাধ্যমগুলোয় দেশের রিজার্ভ নিয়ে কাল্পনিক নানা কাহিনি ছড়াচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে। সেখানে ডলারের মূল্যমান অন্য সব আন্তর্জাতিক মুদ্রার চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মতো দেশগুলোতে রিজার্ভের ওপর চাপ বেশি পড়েছে। বৈশ্বিক এই সংকট নিয়ে সব দেশই কমবেশি বিপদগ্রস্ত। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং বেশ কিছু পণ্যের আমদানি মূল্য বেড়ে গেছে।
আবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু দেশ থেকে কম মূল্যে সেগুলো কেনা সম্ভবও হচ্ছে না। বৈশ্বিক এই সংকট উপেক্ষা করার কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু বিএনপির নেতারা বৈশ্বিক এই অবস্থাকে আড়াল করে দায়টি কেবল বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের ওপর চাপাচ্ছেন। বাংলাদেশে কী পরিমাণ রিজার্ভ আছে, তা আমাদের জন্য কতটা স্বস্তির পর্যায়ে রয়েছে, সে সম্পর্কে জানানোর একমাত্র দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু মির্জা ফখরুল রিজার্ভ গিলে খাওয়ার চটকদারি মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে সরকারি দলকে বিতর্কে লিপ্ত হতে উসকে দিয়েছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে নানা আতঙ্ক ও হতাশাও বাড়তে পারে।
রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কোনো অবস্থাতেই অন্যদের তুলনায় শোচনীয় বলার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। ভারত বিশাল অর্থনীতির বড় দেশ, কিন্তু সেই তুলনায় আমরা অনেক ছোট দেশ হলেও কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। আমাদের যে রিজার্ভ আছে, তাতে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। কিন্তু এই পাঁচ মাসে আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছু কম-বেশি হলেও রিজার্ভ আশঙ্কাজনক অবস্থায় নামবে বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন না। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করবে। কিন্তু মির্জা ফখরুল রিজার্ভ গিলে খাওয়ার যে চটকদারি মন্তব্য করে বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন, সেটি করার মতো রাজনৈতিক ও নৈতিক অবস্থা কি তাঁর রয়েছে? বিএনপি শাসনের শেষ বছর ২০০৬ সালের জুনের শেষে রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩.৪ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এর আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৩ বিলিয়নের একটু বেশি। ২০০৪ সালের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল মাত্র ২.৭ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে রিজার্ভ বাড়তে থাকে। জুনের শেষে তা ৭.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এর পরবর্তী বছরগুলো রিজার্ভ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রাখে। ২০১৯ সালে ৩২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকার সময় আমাদের স্বস্তি থাকলে ৭ বিলিয়ন ফিক্সডসহ এখন ৩৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে কেন এত হাহাকার? বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে যথেষ্ট প্রতিকূলে। কিন্তু এ জন্য মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করে অযথা আতঙ্ক ছড়িয়ে মানুষের মনোবল ভাঙার চেষ্টা মোটেও সৎ রাজনীতি নয়।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
০৪ নভেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
০৪ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
০৪ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
০৪ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫