সায়েরা তখনো কেবল ভ্রূণ, পরম নিশ্চিন্তে মায়ের গর্ভে। আজমেরী হক বাঁধন বারবার একটা প্রশ্নে ‘পাগল’ করে ফেলেছিলেন ডাক্তারদের। ‘আমার ছেলে হবে না মেয়ে?’ কন্যাসন্তানের জন্য উন্মুখ ছিলেন তিনি। তারপর এল ২০১১ সালের ৬ অক্টোবর। সেদিন বাঁধনের কোলজুড়ে আসে মেয়ে সায়েরা। এরপর মেয়েকে নিয়ে, মেয়ের অধিকার নিয়ে কত লড়াই। বিশ্বমঞ্চে যেমন বাঁধনের অভিনয়ের জয়জয়কার, তেমনি মায়ের অধিকারও জিতেছেন বাঁধন। মেয়ে সায়েরার বয়স এখন প্রায় বারো বছর। মা-মেয়ের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের। একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার সম্পর্ক।
বাঁধন বলেন, ‘অভিনয়শিল্পীরা সন্তানকে সময় দিতে পারেন না বলে যে ধারণা আছে, তা আসলে ঠিক নয়।’ সায়েরার যখন আট মাস বয়স তখন থেকে বাঁধন আবার নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন। তার আগে অভিনয়ে মাতৃকালীন বিরতি নিয়েছিলেন। বাঁধন বলেন, ‘দুই বছর বয়স পর্যন্ত ও আমার সঙ্গে সেটে যেত। এ ক্ষেত্রে আমার সহকর্মী থেকে শুরু করে যেসব পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি, সবাই অনেক সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। দুই বছর হওয়ার পর যখন ও একটু বুঝতে শিখেছে, তখন ওকে বাসায় রেখে যেতাম। আমার মা অনেক সাপোর্ট দেয় ওকে লালন-পালনের জন্য। আর ও অনেক বুঝদারও।’
কেমন বুঝদার তাঁর মেয়ে? বাঁধন বললেন, ‘তখন সায়েরার বয়স মাত্র তিন বছর। একটি প্রি-স্কুলে পড়ত। সেখান থেকেই সবাইকে হ্যাপি মাদারস ডে লেখা একটি কার্ড বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাধারণত আমি দেরি করে বাসায় ফিরলে ও খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু সেদিন দেখি জেগে রয়েছে। আমার কাছে এসে বলল, ‘মা চোখটা একটু বন্ধ করো। চোখ খুলে দেখলাম, সুন্দর একটি কার্ড আমার হাতে দিয়ে ও আধো আধো কণ্ঠে বলে উঠল, “হ্যাপি মাদারস ডে।” সেই শব্দ এখনো আমার কানে বাজে। ওটাই ওর কাছ থেকে পাওয়া প্রথম এবং সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে