Ajker Patrika

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কী?

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১২: ১১
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কী?

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরুর আগে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আসলে কী?

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেদিকে বায়ার বা ক্লায়েন্ট কাজ করিয়ে নেয় এবং ফ্রিল্যান্সররা কাজ সম্পূর্ণ করে দিয়ে টাকা উপার্জন করেন।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চান এবং নিজের ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যাপারে পারদর্শী হতে হবে। এর জন্য সেরা কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে হবে। 

ফ্রিল্যান্সিং করতে কী প্রয়োজন? 
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় পেশা হিসেবে পরিচিত। নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে সার্ভিস প্রদান এবং আর্থিক লেনদেনের ঝামেলা ছাড়াই ইনকাম করার সহজ মাধ্যম। 

এই জগৎটায় সফলতা অর্জন সম্ভব, যদি ইচ্ছা ও ধৈর্যশক্তি থাকে। নিজের কাজের দক্ষতার পাশাপাশি যোগাযোগ ও ইংরেজি ভাষায় কথা বলার বেসিক দক্ষতার প্রয়োজন হয়। 

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য চারটি জিনিস প্রয়োজন হয়
১. মার্কেটপ্লেস অনুযায়ী নিজের দক্ষতা
২. ডিভাইস-ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ এবং ইন্টারনেট কানেকশন
৩. ইংরেজি ভাষায় বেসিক ধারণা
৪. একটি স্মার্টফোন

 ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে এ ধরনের ওয়েবসাইট সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন। কারণ, এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেগুলো আপনাকে নানা ধরনের কাজের বিপরীতে ভালো মজুরির আশ্বাস দিলেও কার্যত তা হয় না। অনেকেই প্রতারিত হন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে, যারা আপনাকে ঠকানোর জন্য বসে আছে। আবার অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেগুলোতে কাজ পাওয়াটা কিছুটা কঠিন। কারণ, সেখানে কার্যাদেশ দেওয়া লোকের সংখ্যা কম। তাই নতুন কোনো সাইটে কাজ করতে চাইলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া জরুরি। যেখানে কাজ করতে চাইছেন, দেখতে হবে, তা সক্রিয় ও বিশ্বাসযোগ্য কি না। 

আজ আমরা যেসব ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করব, তার প্রতিটি আন্তর্জাতিক মানের প্ল্যাটফর্ম। এসব ওয়েবসাইটে লাখ লাখ মানুষ কাজ করছে। তাই এই ওয়েবসাইটগুলোর ওপর আপনি সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন। 

২০২২ সালের সেরা ১৩টি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
আমরা সবাই জানি ২০২২ সালে এসে ফ্রিল্যান্সিং হয়ে উঠেছে অনেক বেশি জনপ্রিয়। অনেকেই এতে আগ্রহী হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে টাকা আয় করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে এর জন্য সব চেয়ে সেরা চাহিদাসম্পন্ন এবং সুবিধা প্রদানকারী ওয়েবসাইটগুলো কী কী। 

স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। আজকের নিবন্ধ থেকে ২০২২ সালের সেরা ১৩টি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সম্পর্কে আমরা জানব। এই ওয়েবসাইটগুলো আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করবে। 

১৩টি টপ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বা ওয়েবসাইট
আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস পাবেন। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করাই সবচেয়ে লাভজনক ও ভালো। তবে সবার সুবিধার্থে বাংলাদেশি কিছু মার্কেটপ্লেস সম্পর্কেও বলব। এবার আসি মূল বিষয়ে—

 ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট

  • Upwork
  • Fiverr
  • Freelancer
  • People Per Hour
  •  99 designs
  • Guru
  • Toptal
  • We Work Remotely
  • Dribbble
  • SimplyHired
  • ClearVoice

বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
বিল্যান্সার
স্বাধীন কাজ

১. upwork.com
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হচ্ছে Upwork। এটা এমন এক সাইট, যেখানে জব পোস্টিং ফিড খুব দ্রুত আপডেট হয়। 

আপওয়ার্কে যেকোনো ছোট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এসে ফ্রিল্যান্সার খুঁজে নেয় নিজেদের জন্য। কাজের বিনিময়ে ন্যায্য মজুরিও দেয়। এই সাইট এত বেশি জনপ্রিয় যে, আপনি খুব সহজেই আপনার পছন্দের কাজটি বেছে নিতে পারবেন। 

এই প্ল্যাটফর্মের প্রতিটি সেক্টরে প্রচুর আপডেটেড কাজ দেওয়া থাকে, যা থেকে আপনি আপনার পছন্দের কাজটি বেছে নিতে পরবেন। আপওয়ার্কে আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিকস ডিজাইন, কাস্টমার সাপোর্ট, ফ্রিল্যান্স রাইটিং এবং ওয়ার্ডপ্রেস ম্যানেজমেন্টের মতো কাজগুলো অনায়াসে পাবেন। এই কাজগুলোর চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি। 

সাধারণত আপওয়ার্কে ফিক্সড এবং ঘণ্টাভিত্তিক—উভয় রেটেই কাজ পেতে আপনাকে সাহায্য করবে। আর এই ওয়েবসাইট পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্রান্সফার কেন্দ্রিক পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে। তাই Upwork-এ কাজ করার আগে অবশ্যই পেমেন্ট মেথড সম্পর্কে জেনে নিন। 

২. fiverr.com
এখন আমরা কথা বলছি আরেকটি জনপ্রিয় ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইট নিয়ে। এটি হলো fiverr.com, যা অন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোর তুলনায় বেশ এগিয়ে আছে। নতুনদের জন্য Fiverr দিয়ে আউটসোর্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা অনেকটাই সুবিধাজনক। 

আপনি আউটসোর্সিং নতুন শুরু করলে আপনার জন্য ফাইবার হতে পারে সবচেয়ে সেরা সুযোগ। এই ওয়েবসাইটে সর্বনিম্ন ৫ ডলার থেকে শুরু করে অনেক বেশি পরিমাণ টাকার কাজও দেওয়া হয়। 

কী কী কাজ করা যায় এখানে? এই সাইট থেকে সবচেয়ে বেশি যে কাজ পাবেন, তা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং, লোগো ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, অনুবাদ, অডিও ও ভিডিও এডিটিং। এই প্রতিটি কাজের চাহিদা এই সময়ে অনেক। 

আপনি যেকোনো কাজ নিয়ে প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ করে দিলে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে যে টাকা দেবে, তা থেকে ফাইবার আবার ২০ শতাংশ কেটে রাখবে। আর এটা হচ্ছে Fiverr. com-এর পলিসি। এদিকে কাজ করার ক্ষেত্রে শুধু ফিক্সড রেটের কাজই আপনি পাবেন। এই ওয়েবসাইটে কাজ করার পরও একইভাবে আপনাকে পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতিতে ফাইবার থেকে আয় করা টাকা উত্তোলন করতে হবে। 

৩. freelancer.com
freelancer.com হচ্ছে আরেকটি পুরোনো ও জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যা ফ্রিল্যান্সারদের কাছে জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস। প্রায় ১৬ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার এখানে কাজ করেন। 

এই সাইট এত বেশি জনপ্রিয় যে, অনেক বেশি ব্যবহারকারী এর সঙ্গে যুক্ত। এ কারণে freelancer.com-এ কাজের সুযোগ এবং প্রতিযোগিতা অন্য সব সাইট থেকে অনেক বেশি। আপনি এখান থেকে ঘণ্টাভিত্তিক ও ফিক্সড রেট—দুভাবেই কাজ পেতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং জগতে অভিজ্ঞতা বাড়লে এই সাইট থেকে কাজ করাটা আপনার জন্য সুবিধাজনক হবে। নতুনদের জন্য আমরা এই সাইট সাজেস্ট করছি না। কারণ, প্রথম দিকে নতুন প্রজেক্ট শেষ করার পর আপনাকে কিছু অতিরিক্ত ভাতা দিতে হয় এই সাইটে। 

কিন্তু যেকোনো স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য উপার্জিত অর্থের ১০ থেকে ২০ শতাংশ টাকা কোম্পানি নিজেই নিয়ে নেয়। এ সাইট থেকে কাজ করে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে আপনাকে পেপাল, স্ক্রিল, পেওনিয়ার ও ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতিই গ্রহণ করতে হবে। 

৪. peopleperhour.com
পিপল পার আওয়ার হচ্ছে লন্ডন ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস। এই সাইট তার নাম দিয়েই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, এখানে ঘণ্টাভিত্তিক রেটে কাজ পাওয়া যাবে। কিন্তু বর্তমানে আপনি ফিক্সড রেটের কাজও পেয়ে যাবেন এই জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে। 

পিপল পার আওয়ার প্ল্যাটফর্মেও কাজের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। এখানে কাজ করলে প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য সর্বনিম্ন ২০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। আবার সে আয় করা টাকা থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সে সাইট নিজেদের কাছে রেখে দেয়। এই সাইটে কাজ করে টাকা উত্তোলন করতে আপনাকে একইভাবে পেপাল, স্ক্রিল, পেওনিয়ার ও ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। 

৫. 99designs.com
ধরুন আপনি ডিজাইনিং খুব পছন্দ করেন এবং স্বাধীনভাবে ডিজাইন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে টাকা আয় করতে চান। এ ক্ষেত্রে আপনার সামনে রয়েছে সকল ফ্রিল্যান্স ডিজাইন লাভারদের পছন্দের সাইট ৯৯ ডিজাইনস ওয়েবসাইট। 

কীভাবে কাজ করা যায় ৯৯ ডিজাইনস ওয়েবসাইটে? এই প্ল্যাটফর্মে ডিজাইন কিনতে আগ্রহী ব্যক্তিরা তাদের পছন্দের ডিজাইনের বর্ণনা লিখে কনটেস্টের আয়োজন করে। যারা কাজ করতে চান, তাঁরা ক্লায়েন্টের প্রত্যাশা পূরণ করতে তাদের নির্দেশনা মেনে ডিজাইন সাবমিট করবে। জমা পড়া ডিজাইন থেকে যেটি ক্লায়েন্টের পছন্দ হবে, সেটি তারা গ্রহণ করবে। যে ডিজাইনার কাজ পেলেন, তিনিই পূর্বঘোষিত অর্থ পাবেন। 

এই ওয়েবসাইটে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করে ভালো টাকা উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। সাধারণত প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য আপনি গড়ে ১৯৯ ডলার আয় করতে পারবেন। এই সাইট থেকে কাজ করে পেমেন্ট পেতে পেওনিয়ার ও পেপাল ফলো করুন। 

৬. guru.com
আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় আরেকটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের নাম হলো Guru। এই সাইট ফিক্সড ও ঘণ্টাভিত্তিক রেটে কাজ করার সুযোগ দেয়। সাইটটিতে পোস্ট করা কাজগুলোর বাজেট সাধারণত ১০ থেকে ২০০ ডলারের মধ্যে হয়। 

এই ওয়েবসাইটেও একইভাবে প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার পর ক্লায়েন্ট প্রদত্ত টাকার ৪ দশমিক ৯৫ থেকে ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়, যা অন্য ওয়েবসাইটের তুলনায় কম। তাই আপনি চাইলে এই সাইটে কাজ করতে পারেন খুব সহজেই। অন্য সাইটের মতো এখানেও প্রতিযোগিতা খুব বেশি। পেমেন্ট প্রসেস হচ্ছে পেপাল, পেওনিয়ার ও ব্যাংক ট্রান্সফার সিস্টেম। 

 ৭. toptal.com
আপনি যদি আউটসোর্সিং করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান, তাহলে আপনাকে আমরা টপটাল প্ল্যাটফর্মটি ঘুরে দেখতে বলব। কেন আমরা এই ওয়েবসাইটটি সাজেস্ট করছি? কারণ, টপটাল ওয়েবসাইটে কাজ করে আপনি চাইলে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন, যেখানে রয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। 

এই সাইটে কাজ করার নিয়মের সঙ্গে অফিসে বসে কাজ করার অনেকটা মিল আছে। এই সাইট থেকে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে হয়তো অনলাইনে আপনার সাক্ষাৎকারও নেওয়া হতে পারে। এই কাজগুলো সম্পন্নের পর আপনি এই সাইট থেকে অনেক বড় বড় প্রজেক্ট আপনার হাতে পেতে পারেন এবং ভালো টাকা উপার্জন করতে পারেন। 

তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, এই ওয়েবসাইট আইটি বিষয়ে দক্ষ এবং প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে যাদের আলাদা স্বপ্ন আছে, তাদের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি। তাই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি হয় ইঞ্জিনিয়ারিং, তাহলে সেটা অবশ্যই আপনার জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট। 

৮. weworkremotely
এই প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে আগ্রহীদের জন্য রয়েছে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা। উই ওয়ার্ক রিমোটলি সাইট থেকে প্রোগ্রামিং, ডিজাইন, কপিরাইটিং, মার্কেটিং, সেলসসহ নানা ধরনের কাজের অফার পাওয়া যায়। 

এই সাইটে কাজ করার জন্য আপনি চাইলে নিউজলেটারেও আবেদন করতে পারবেন। যে সেক্টরে আপনি পারদর্শী, ঠিক সে সেক্টরটি নির্বাচন করে কাজের সন্ধান করুন। এই সাইটে আপনি ফুল-টাইম ও যেকোনো চুক্তির আওতায় কাজ করতে পারবেন। সুযোগ রয়েছে চুক্তিতে থাকা শর্তগুলো দেখে নেওয়ারও। 

উই ওয়ার্ক রিমোটলি ওয়েবসাইটটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন কাজের আপডেট দেয়। তাই আপনি কিছু সময় পরপর এ ওয়েবসাইট চেক করুন নতুন কাজের সন্ধানে। 

৯. dribbble
এখন আরেকটি বিশাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নিয়ে আলোচনা করছি, যার নাম Dribbble। মূলত Dribbble একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এটি একই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসও। এখানে কী কী কাজ করা যায়? এই সাইটে সারা বিশ্বের ডিজাইনার ও ক্রিয়েটিভরা তাঁদের সেরা কাজগুলো শেয়ার করেন। 

বর্তমানে Dribbble তাদের প্ল্যাটফর্মে একটি চাকরির বোর্ড যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপনি ডিজাইনিং নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হলে এই সাইটে ঢুঁ মারতে বলব আপনাকে। এই সাইটে আপনি গ্রাফিকস, ইলাস্ট্রেটর, মোবাইল ও ওয়েব ডিজাইনার, অ্যানিমেটর ও ব্র্যান্ড ডিজাইনারের মতো কাজগুলোর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

এ ছাড়া চাইলে এখানে ফুল-টাইম চাকরিও করতে পারেন। নিজের প্রোফাইলে সেরা কাজগুলো ভালো কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে আপলোড করুন। এতে আপনার সেরা কাজগুলো সবার কাছে পৌঁছে যাবে সহজেই। অন্যরা তখন চাইলে আপনাকে হায়ার করবে তাদের নিজেদের কাজ করে দেওয়ার জন্য। এভাবে আপনি টাকা উপার্জনের সুযোগ পাবেন। 

১০. simplyhired.com 
SimplyHired হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করার আরেকটি অসাধারণ আউটসোর্সিং প্ল্যাটফর্ম। এই সাইট ভিজিট করলে আপনি প্রযুক্তি থেকে শুরু করে ঘর-বাড়ি তৈরির কাজ পর্যন্ত পেতে পারেন। এই ওয়েবসাইটের কাজ শুধু অনলাইনভিত্তিক নয়। বরং আপনার জন্য এই সাইট থেকে অফলাইনেও কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। 

SimplyHired.Com-এ প্রায় ২৪টি দেশের মানুষ কাজের অফার দিচ্ছে এবং কাজ খুঁজছে। তাই ধীরে ধীরে এই সাইটটিও ভালো জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। তাদের আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে, তারা সব সময় মানসম্মত অথোরিটি মেনটেইন করার চেষ্টা করে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সাইটে কাজের অফার দেওয়া-নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তির সাফল্য-ব্যর্থতার গল্প, ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন আর্টিকেলও থাকে, যা বিশেষত নতুনদের জন্য বেশ সহায়ক। 

১১. clearvoice
আপনার যদি ক্রিয়েটিভিটি থেকে থাকে তাহলে ClearVoice সাইটটি আপনার জন্য। ক্রিয়েটিভ কাজ করার ক্ষেত্রে এই সাইট সেরা বলা যায়। এই সাইট থেকে আপনি কনটেন্ট ক্রিয়েটর যেমন: আর্টিকেল রাইটার, ভয়েস ওভার, শর্ট ভিডিও ইত্যাদি কাজের প্রজেক্ট পেয়ে যাবেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে এই সাইট আপনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। 

এই সাইটে কাজ করার জন্য তারা আপনাকে একটি বিনা মূল্যের সিভি পোর্টফোলিও দেবে, যার মাধ্যমে আপনি আগের কাজের ওপর ভিত্তি করে নতুন কোনো কাজ পেতে পারেন। এ ছাড়া আপনি চাইলে আপনার নিজস্ব পোর্টফোলিও কাস্টমাইজ করতে পারেন, চাইলে এতে প্রফেশনাল লুকও দিতে পারবেন। 

বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
এবার আসুন বাংলাদেশি কিছু ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইট নিয়ে কথা বলি। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং পেশার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আর ফ্রিল্যান্সারদের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সব কার্যক্ষেত্র, যেখানে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। 

যদিও বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো এখনো খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আসুন দেখে নিই বাংলাদেশি কিছু সাইটের তথ্য, যেখানে কাজ করে আপনি চাইলে টাকা আয় করতে পারবেন। 

১২. স্বাধীন কাজ
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোর মধ্যে স্বাধীন কাজ ডটকম একটি পরিচিত প্ল্যাটফর্ম। এই সাইট মূলত তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের টার্গেট করে। এখানে কেমন কাজ পাবেন? আপনি এই সাইটটিতে প্রজেক্টভিত্তিক লোকাল, অর্থাৎ দেশীয় কাজ পাবেন। 

যদি আপনি বাংলাদেশি সাইটে কাজ করতে আগ্রহী হন, তাহলে আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং কাজ শুরু করতে হবে। কাজ সম্পূর্ণ করে টাকা ওঠানোর ক্ষেত্রে আপনাকে বিকাশ ইউজার হতে হবে। 

 ১৩. বিল্যান্সার
এবার আমরা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি বাংলাদেশের প্রথম বাংলা ফ্রিল্যান্সিং সাইট বিল্যান্সারের সঙ্গে। এই সাইটের বেশির ভাগ ফ্রিল্যান্সার ও ক্লায়েন্ট বাংলাদেশি মানুষ। 

এই মার্কেটপ্লেস বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে জায়গা করে নিতে যথেষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। আপনি আগ্রহী ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকলে আজই এখানে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে পারেন। এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে আপনাকে পেপাল, বিকাশ ও মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে হবে। 

আমাদের দেওয়া ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি কাজ করতে চাইলে সঠিকভাবে প্রতিটি ওয়েবসাইটের নিয়ম মেনে কাজ করুন। হ্যাপি ফ্রিল্যান্সিং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিএসের জরিপ: ইন্টারনেটের আওতার বাইরে দেশের ৪৪% পরিবার

  • মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার।
  • ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যবহার করে স্মার্টফোন।
  • কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে, কমেছে রেডিও শোনা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ১০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।

‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।

‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।

এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।

২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।

রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।

সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।

সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির সাশ্রয়ী ফোন আনল রিয়েলমি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।

ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।

এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।

ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।

রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইকে ব্যক্তিগত অর্থ উপদেষ্টা বানালেন ২৭ বছরের এই সিইও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।

ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।

ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।

তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।

এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত