Ajker Patrika

আ. লীগের একাধিক অপরাধী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০: ০৯
আ. লীগের একাধিক অপরাধী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

র‍্যাবকে কখনই বিরোধী দলকে দমনের কাজে ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বরং অপরাধে জড়িয়ে পড়া আওয়ামী লীগেরই কয়েকজন র‍্যাব বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। মাদক বা অন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়া এসব ব্যক্তি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য বা নেতৃস্থানীয় পদেও ছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করেন মো. শাহরিয়ার আলম।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘র‍্যাবকে কখনোই বিরোধী দলকে দমনে ব্যবহার করা হয়নি। বরং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে সদস্য বা নেতৃত্বে ছিলেন—এ রকম একাধিক ব্যক্তি—মাদকের সঙ্গে জড়িত বা অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত—এমন একাধিক ব্যক্তি র‍্যাব বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। ফলে র‍্যাবকে যে যুক্তিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেটি হাস্যকর।’ 

র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশ অনেক কিছু করেছে এবং অনেক কিছু করছে। এটি নিশ্চিত যে এ বিষয়টিকে পুঁজি করে বাড়তি সুবিধা বা সস্তা রাজনীতি বন্ধ হয়ে গেছে। এটাকে কেন্দ্র করে বড় আকারের ষড়যন্ত্র এবং লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তা হালে পানি পায়নি।’

র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সদস্যের চিঠি দেওয়া এবং ইইউর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কার্যকরী বৈঠক হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ সামনের দিনগুলোতে ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। নিষেধাজ্ঞার অন্য কোথাও কোনো ধরনের প্রভাব নেই। আমরা এ বিষয়ে গত এক-দেড় মাস ধরে যে কাজ করেছি, তাতে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও এ নিষেধাজ্ঞার কোনো বিস্তার লাভের সম্ভাবনা নেই। বেশ কিছু উড়ো খবর বের হয়েছে—বাড়তি মানুষকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তবে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে র‍্যাবের ওপর, তাদের সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। সে জায়গা থেকে আইনি বিষয়গুলো দেখছি।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা জানতে চাচ্ছি ঠিক কী কারণে মার্কিন দুটি দপ্তর থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আর এর ব্যাপ্তি কতটুকু। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। যার উত্তর একটু সময় নিয়ে দেবে মার্কিনরা। আমরা আইনি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে রয়েছি। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।’ 

আগে র‍্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে মার্কিন চিঠি আমলে নেওয়া হয়নি? এর উত্তরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, র‍্যাবকে ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। এ যুক্তিটি হাস্যকর। টেকনাফের যে ঘটনাটি ঘটেছিল, সে ভদ্রলোক (কাউন্সিলর একরামুল হক) আওয়ামী লীগ করত। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে সদস্য বা নেতৃত্বে ছিলেন এ রকম একাধিক ব্যক্তি মাদকের সঙ্গে জড়িত বা অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত—তাদের ধরতে গিয়ে র‍্যাবের বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশে বসেও বিরোধী দল দমনে র‍্যাবকে ব্যবহার করা হয়েছে —এর কোনো উদাহরণ নেই।’

জাতিসংঘের দেওয়া গুম হওয়া ব্যক্তির তালিকার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭০ থেকে ৮০ জনের তালিকার কথা বলা হয়। এর মধ্যে অর্ধেকের রাজনৈতিক পরিচয় হচ্ছে সরকারদলীয় সমর্থক। র‍্যাব যদি বিরোধী দল দমনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তাহলে কেন সরকারদলীয় মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে?’

 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...