Ajker Patrika

হুমায়ূন-সাহিত্যের মূল্য ও মূল্যায়ন

আতাউর রহমান মারুফ
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২১, ১২: ৪৪
হুমায়ূন-সাহিত্যের মূল্য ও মূল্যায়ন

হ‌ুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। এ সত্যে কোনো খাদ নেই। মানুষ তাঁর সাহিত্য পড়তে ভালোবাসেন। পড়ে ভীষণ আনন্দ পান। কিন্তু বড় মুখ করে তা অন্যের কাছে বলতে সংকোচ করেন। ‘মূলধারা’র সাহিত্যপাঠেও হ‌ুমায়ূনকে নিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য নেই। ফলে একটা সংকট আঁচ করা যায়। হ‌ুমায়ূনের অত্যন্ত স্বতন্ত্র সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য এর প্রধান কারণ। আর সাহিত্য পাঠজনিত আমাদের জাতীয় দীনতাও তার জন্য কম দায়ী নয়। এই সূত্রের ওপর ভিত্তি করে হ‌ুমায়ূন আহমেদ: পাঠপদ্ধতি ও তাৎপর্য বইটি নির্মিত। আমাদের জাতীয় জীবনের অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়কে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে হ‌ুমায়ূন তাঁর কথাসাহিত্যে ফুটিয়ে তোলার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এই বইয়ের মোট নয়টি অধ্যায়ে সে বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে। সংযুক্তি হিসেবে রয়েছে প্রাসঙ্গিক আরও তিনটি প্রবন্ধ। আড়াই শ পৃষ্ঠার এই বইয়ে হ‌ুমায়ূনকে দেখার সম্ভাব্য সব ক’টি চোখই যাচাই-বাছাই করেছেন মোহাম্মদ আজম।

হ‌ুমায়ূনের একজন একনিষ্ঠ পাঠক আজম। পঁচিশ বছর ধরে হ‌ুমায়ূন পড়ছেন। একই সঙ্গে তিনি ‘পেশাদার’ পাঠকও। সাহিত্য পড়ান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে হ‌ুমায়ূনকে বোঝাপড়ার এক নিজস্ব নিরীক্ষায় রত আছেন। সাহিত্যবোদ্ধাদের হ‌ুমায়ূন-মূল্যায়নেও রেখেছেন কড়া নজর। ‘কেন হুমায়ূন আহমেদ’ অধ্যায়ে তিনি তাঁর এই যৌথ প্রযোজনার ফলাফল তুলে ধরেন। তাঁর মতে, হাতে-কলমে ‘শিক্ষিত’ নয় বলে অনেকে হুমায়ূন আহমেদকে যোগ্য ভাবেন না। তবে আজম নিজে হ‌ুমায়ূনকে একজন ‘জাত লেখক’ বলে মনে করেন। তাই হ‌ুমায়ূনকে আবিষ্কারের সংকল্পে এই বইয়ে হাত দিয়েছেন। তাতে আরেকটি কাজও উদ্ধার হবে—‘শিক্ষিত’ লেখকশ্রেণির হালহকিকত বের করে আনা যাবে।

জনপ্রিয়তা হ‌ুমায়ূন-পাঠের প্রধান অন্তরায়। জনপ্রিয় সাহিত্য নিয়ে সাহিত্যবোদ্ধাদের জনপ্রিয় উক্তি বিষয়টিকে আরও জটিল করেছে। জনপ্রিয় সাহিত্যকে পড়ার প্রচলিত কিছু পদ্ধতি আছে। বিপদ হচ্ছে, হ‌ুমায়ূন সেসব খোপে আঁটেন না। ‘হ‌ুমায়ূন-পাঠের সমস্যা’ অধ্যায়ে মোহাম্মদ আজম হ‌ুমায়ূনের লেখার বৈশিষ্ট্যটি চিহ্নিত করেন। হ‌ুমায়ূন তাঁর চরিত্রগুলোর ওপর কোনো ধরনের মতাদর্শ চাপিয়ে দেন না। তার মানে, উদারনৈতিক ধারার সরলরৈখিক ভালো-মন্দের দিকনির্দেশনা তাঁর লেখায় উঠে এসেছে, তা-ও নয়। হ‌ুমায়ূন মূলত নাগরিক মধ্যবিত্তদের নিয়ে লিখেছেন। তবে নগরের বৃহৎ ক্যানভাস তুলে ধরেননি। তাঁর গল্প পারিবারিক আবহে সীমাবদ্ধ থেকেছে। সেখানেই আবর্তিত হয়েছে প্রেম, সমাজ বা রাজনীতি; এমনকি মুক্তিযুদ্ধের অসাধারণ চিত্রকল্প। মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তাঁর সাহিত্যের একটা প্রধান বিষয়। কিন্তু আধুনিকতাবাদী সাহিত্যে মনস্তত্ত্বের যেসব নিপুণ নিরীক্ষা করা হয়েছে, তার আশপাশেও ঘেঁষেননি হ‌ুমায়ূন। এসবে অবশ্য একটা সুবিধা হয়েছে—গল্পের চরিত্র বা পরিবেশের নিজস্বতা বজায় থাকে। হ‌ুমায়ূনের সাহিত্যে যে স্বাভাবিক ‘ঢাকা’র চিত্র পাওয়া যায়, তা বাংলা সাহিত্যে খুব সুলভ নয়। তবে এটাই আবার হ‌ুমায়ূন-পাঠের প্রধান প্রতিবন্ধক। সাহিত্যপাঠের প্রচলিত পদ্ধতি দিয়ে তাঁকে বোঝা দুরূহ হয়ে ওঠে। তবে সাহিত্য সমালোচনার সক্রিয়তাকে আরও বেগবান করার মাধ্যমে হ‌ুমায়ূন-পাঠ সহজ হবে বলে আজম মনে করেন। 

মধ্যবিত্ত পরিবারের যাপিত জীবনের দৈনন্দিনতাকে নিপুণভাবে চিত্রিত করতে হ‌ুমায়ূন অতুলনীয়। সে সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত থেকে সহানুভূতির উদার দৃষ্টি নিয়েই তাঁদের গল্প লিখেছেন। জীবনকে তিনি দেখতেন ইতিবাচক অর্থে। সেটাই প্রচার করেছেন সাহিত্যে। নিজের ভাব ফুটিয়ে তুলতে উপযোগী আর মনোরম ভাষা ছিল তাঁর সহজাত অস্ত্র। লেখার এই পদ্ধতি ছিল পাঠকের জন্য খুবই আরামদায়ক। ফলে হ‌ুমায়ূন হয়ে ওঠেন প্রতিদ্বন্দ্বীহীন জনপ্রিয় সাহিত্যিক। ‘জনপ্রিয় হ‌ুমায়ূন’ অধ্যায়ে তাঁর এই অভাবনীয় গ্রহণযোগ্যতার কারণগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 

বাঙালি জনগোষ্ঠীর গড় বৈশিষ্ট্যকে হ‌ুমায়ূন দারুণ বুঝতে পেরেছিলেন। ফলে তাঁর গল্প বলার ধারা পাল্টেছে; কিন্তু সেই বৈশিষ্ট্যের সমান উপস্থাপনায় হেরফের হয়নি। পরিবার এখনো বাঙালির প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান। তাই ভবঘুরে হিমু বা জটিল-কঠিন রহস্য সমাধানকারী মিসির আলির জীবনযাপন পদ্ধতি থেকে পারিবারিক বলয় বাদ পড়ে না। এসব চরিত্র গড়পড়তা বাঙালির স্বভাবমুক্তও থাকে না। হ‌ুমায়ূনের বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনিতেও অজপাড়া গাঁয়ের সজীব আবহ বজায় থাকে। মানুষ ‘কল্পকাহিনি’ ঠিক যেসব কারণে পছন্দ করে, বাস্তব তুলে ধরতে হ‌ুমায়ূন সেসব উপকরণের কার্যকর প্রয়োগ করেন লেখায়। ফলে অপরিচিত প্লটকেও পাঠক অবচেতনে আপন ভাবতে পারেন। আবার এসব বৈশিষ্ট্যের ফলে হ‌ুমায়ূনের সাহিত্যে পাওয়া যায় দেশজতার একটা তাজা ঘ্রাণ। জনপ্রিয় হয়েও ‘মূলধারা’র সাহিত্যে এ কারণে তিনি অবধারিত পাঠ্য হবেন।

হ‌ুমায়ূনের কথাসাহিত্যে তাঁর নিজের আরোপিত কথা খুব কম পাওয়া যায়। চরিত্রগুলোর সংলাপ আর মনোজগতের তৎপরতা নিয়ে কাহিনির কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেলেন। হ‌ুমায়ূন নিজে বিশেষ কোনো পক্ষের ওকালতি করেন না; বরং তাঁর বিশেষ নজর থাকে প্রতিটি চরিত্রের জন্য একটি অনুকূল পরিস্থিতির সুযোগ তৈরি করা। যাতে চরিত্রগুলোর অন্তস্থ শক্তি ও সুপ্ত মানবিকতা সহজাতভাবেই বিকাশের সুযোগ পায়। এটাই তাঁর সাহিত্য দর্শন। ‘কথাশিল্পী হ‌ুমায়ূন’ অধ্যায়ে তাঁর সাহিত্যিক সফলতা ও সীমাবদ্ধতার বিষয়টি উঠে এসেছে। হুমায়ূন আহমেদ বড় উপন্যাস লিখেছিলেন। তবে সেগুলো সার্থক উপন্যাস হিসেবে গড়ে তুলতে পুরোপুরি সফল হননি। কিন্তু ছোটগল্প বা ছোট উপন্যাসে ইঙ্গিতধর্মী ও তীক্ষ্ণ বর্ণনা তৈরিতে তিনি অসাধারণভাবে সফল। এসব ক্ষেত্রের বহুসংখ্যক রচনা ও সফলতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ লেখক হিসেবে চিহ্নিত করবে।

হ‌ুমায়ূনের ভাষার সারল্য বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ‍হুমায়ূনের ভাষাবিষয়ক অধ্যায়ে দেখানো হয়েছে; সরল রেখেও ভাষার গভীরতা বজায় রাখতে হ‌ুমায়ূনের বেগ পেতে হয়নি। হ‌ুমায়ূন গল্প বলতেন ‍মুখের ভাষায়। ফলে তাঁর লেখায় জনগোষ্ঠীর অকৃত্রিম স্বর উপস্থাপিত হয়েছে। তাঁর রচনাপাঠের জন্য দুটিই প্রয়োজন—নান্দনিকবোধ আর সারল্যের মধ্যেই গভীরতা আবিষ্কারের সামর্থ্য।

মুক্তিযুদ্ধ হ‌ুমায়ূনের সৃষ্টিকর্মে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখিতে হ‌ুমায়ূন অধিকতর বাস্তবনিষ্ঠ থাকতে চেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রচলিত মত বা দৃষ্টিভঙ্গিসমূহকে বিভিন্নভাবে নিরীক্ষা করেছেন হ‌ুমায়ূন। হ‌ুমায়ূনের মুক্তিযুদ্ধ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়নি। একটি যুদ্ধের আঁচ কীভাবে ব্যক্তি বা পরিবারের নিত্যনৈমিত্তিকতাকে ছুঁয়ে দিয়ে সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে, তার দুর্দান্ত চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন হ‌ুমায়ূন। গ্রামে বা শহরে গেরিলা বাহিনীর সক্রিয়তার বাঙ্ময় উপস্থাপনাও উঠে এসেছে। সর্বোপরি, মুক্তিযুদ্ধকে একটি ‘জনযুদ্ধে’র ভাষ্য হিসেবে খুঁজে পেতে হ‌ুমায়ূনের সাহিত্য অতুলনীয়।

হ‌ুমায়ূনের সাহিত্যে উঠে আসা মওলানা বা ভাটি অঞ্চল নিয়ে দুটি অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। ‘মূলধারা’য় অবহেলিত মওলানা শ্রেণিকে নতুন চোখে দেখার চেষ্টা করেছেন হ‌ুমায়ূন। এসব মওলানা ক্ষমতাকাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন বা নিষ্ক্রিয়। তবে ধর্মের নিরপেক্ষ চর্চার বাস্তবতা উপস্থাপন পুরো দৃষ্টিভঙ্গিকে নতুন আঙ্গিক দিয়েছে। একইভাবে ভাটি অঞ্চল বা গ্রামীণ জীবনের যে অনুপুঙ্খ বিবরণ হ‌ুমায়ূন তুলে ধরেছেন, বাংলা সাহিত্যে তার দৃষ্টান্ত অত বেশি নেই। 

এই বইয়ের সর্বশেষ অধ্যায়ে হ‌ুমায়ূনের সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বকে খুব স্বল্প কথায় তুলে ধরা হয়েছে। সাহিত্যিক হিসেবে হ‌ুমায়ূনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—তিনি যা দেখতেন, তাই তুলে ধরতেন। তার লেখায় পিতৃতন্ত্র এসেছে; কিন্তু পুরুষতন্ত্র প্রাধান্য পায়নি। নারী চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু পরিবারকাঠামোর বাইরে ক্ষমতাবান কোনো নারী চরিত্র পাওয়া যায় না। সামাজিক মূল্যবোধের এমন রক্ষণশীল উপস্থাপনে তার পাঠকগোষ্ঠীও সম্মত ছিল বলে ধরা যায়। তবে, চূড়ান্তভাবে, হ‌ুমায়ূনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা সাহিত্য ও পাঠাভ্যাসকে ঔপনিবেশিকতার অবধারিত প্রভাব থেকে মুক্ত পাঠের স্বাদ এনে দেয়।

সবশেষে বলা যায়, এই বই সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে পদ্ধতিগতভাবে মূল্যায়নের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রচেষ্টা। হুমায়ূন আহমেদকে পড়ার প্রচলিত পদ্ধতির বিপরীত স্রোতে দাঁড়িয়ে এবং ‘মূলধারা’র সাহিত্যে তাঁর অবস্থান নির্ণয়ের প্রচেষ্টা—দুই-ই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উদ্যোগ। তবে মোহাম্মদ আজম তা দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন। যথাযথ প্রশংসা বা সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি প্রশংসনীয় সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। আজমের আলোচনার পদ্ধতিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাহিত্য, ইতিহাস বা সাংস্কৃতিক কানাগলির প্রাসঙ্গিক সব গুরুত্বপূর্ণ নমুনা তিনি হাজির করেছেন। তার ছাঁচে ফেলে হ‌ুমায়ূনকে বিচার করেছেন। বিপুল তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্তের ফলাফল পাঠকেও মজাদার করে তোলে। বক্তব্যের প্রাঞ্জলতা ধরে রাখতে ভাষার সীমাবদ্ধতাকে উতরে যেতে চেয়েছেন। শব্দের ব্যবহার চমক জাগানিয়া, তবে অনুভূতিকে তৃপ্তি দেয়। ফলে গবেষণাধর্মী হলেও বইটি পড়ার উত্তেজনা পুরো সময়ে টানটান হয়ে থাকে। সংস্কৃতি অধ্যয়নের (কালচারাল স্টাডিজ) নিরিখে সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বকে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে এই বই একটি ‍উৎকৃষ্ট নিদর্শন এবং বাংলা সাহিত্যে আদর্শস্থানীয়।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ: পাঠপদ্ধতি ও তাৎপর্য
লেখক: মোহাম্মদ আজম
প্রথমা প্রকাশন
মূল্য: ৫০০ টাকা

আরও পড়ুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৪
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান শাখার প্রথম বর্ষের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধা, শরিফ ওসমান হাদি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন করা হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল জুলাই যোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। যা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয় ও বিষয়গুলো এক থেকে চার বিষয়ে ২০২৫ সালে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয় ও বিষয়গুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরে সাদা কাগজে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে।

আরও বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আরও বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি (চতুর্থ বিষয় ছাড়া) ২ হাজার ৪৩৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ হিসেবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে।কোনো শিক্ষার্থীর নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট ২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যা ‘প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক’ খ্যাত—আইসিপিসির এই রিজিওনাল পর্বটি ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বিইউবিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার গৌরব অর্জন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য ড. এ বি এম শওকত আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের এবং এই আয়োজনের গর্বিত স্পনসরদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশ থেকে বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রামারদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া।’

শওকত আলী আরও জানান, এবারের আয়োজনে সারা বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। মোট ৩১৩টি টিমের ৯৩৯ জন মেধাবী প্রোগ্রামার এই চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন, যা বাংলাদেশে আইসিপিসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য মো. শামসুল হুদা এফসিএ।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর আরসিডি (RCD) এবং বিইউবিটির সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান এবং আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ও এনএসইউর ইসিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল লায়েস এম এস হক।

এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস বিচারক (২০০৩-২০১৮) শাহরিয়ার মঞ্জুর এবং বিইউবিটির প্রকৌশল ও ফলিতবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের ‎আসন্ন নির্বাচনে ক্যাম্পাসে প্রচার শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তফসিল অনুযায়ী টানা ১৩ দিন চলবে এই প্রচার। তবে প্রচার শুরুর পর তিন দিন পার হলেও প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।

‎‎তফসিল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর। প্রচারণার ১৩ দিন সময়ের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচারণায় বাধার অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা।

‎‎শিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল’ থেকে ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যালট নম্বর না থাকায় প্রচার ও পেপার ছাপাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নাম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

‎ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল’ থেকে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচার ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণিত হয়। দ্রুত ব্যালট নম্বর প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‎স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দায়িত্বহীন। প্রার্থিতা ও আচরণবিধি-সংক্রান্ত অভিযোগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি ব্যালট নম্বর না দেওয়ায় প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

‎‎এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রার্থীদের নাম সংশোধনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন এসেছে অনেকগুলো। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নাম সংশোধন বা নিকনেম রাখার জন্য কাজ করছি। ফলে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’

‎এর আগে ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহারকৃত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর, ভোট গণনা ৩০ ডিসেম্বর (ভোট গ্রহণ শেষে) এবং ফলাফল ঘোষণা ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত