Ajker Patrika

মিমের রাজা জেভিয়ার, কে তিনি?

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, ২৩: ২৪
মিমের রাজা জেভিয়ার, কে তিনি?

মিমের যুগে জেভিয়ারকে চেনেন না এমন কেউ আছে কি? অন্তত নেটিজেনদের মধ্যে এমন কেউ থাকাটা প্রায় অসম্ভব! এমন কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নেই যেখানে জেভিয়ারকে পাওয়া যাবে না। তাঁর মিম এবং কৌতুকগুলো কঠিন বিষণ্ন মুহূর্তেও আপনাকে হাসিয়ে ছাড়বে। 

কিন্তু কে এই লোক? এ নিয়ে রহস্যের কিনারা নেই। নির্বিকার, গোঁফযুক্ত একটা মধ্যবয়সী মানুষ প্রায় দেড় যুগ ধরে নেটিজেনদের হাসিয়ে যাচ্ছেন, অথচ তাঁর আসল পরিচয়ের হদিস এখনো মিললো না! 

তবে এ নিয়ে অনেক তত্ত্ব আছে। অনেকে বলেন তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আসল নাম পাকালু পাপিতো। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস শহরে। তিনি যদি কোনো লাতিন নামকে ছদ্মনাম হিসেবে বেছে নিয়ে থাকেন তাহলে উচ্চারণ হওয়ার কথা— হাভিয়ের। 

প্রথমটির মতো নির্বিকার নির্লিপ্ত ভাব যুক্ত ছবিই প্রোফাইল পিক হিসেবে ব্যবহার করেন হাভিয়ের।হাভিয়ের প্রথম ভাইরাল হন ২০১৫ সালে। বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে নাকি মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। বন্ধুরা তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেছিল, তোমার ফলোয়ার ৫০০-এর বেশি হবে না। হাভিয়ের তখন ৫ হাজারের বেশি ফলোয়ার জোগার করে দেখাবেন বলে ঘোষণা দিয়ে কোমর বেঁধে নামেন। পরে ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট খোলেন। 

টুইটার পেজে এখন হাভিয়েরের ফলোয়ার ২ লাখের বেশি। আর ফেসবুক পেজে সাড়ে ১৮ লাখেরও বেশি। তবে আসল হাভিয়ের কি না বলা মশকিল!

টুইটার এবং ফেসবুকে হাভিয়ের যে প্রোফাইল ফটোটি ব্যবহার করেন সেটি পাকালু পাপিতো নামে টুইটারে জনপ্রিয় এক কমেডিয়ানের ছবি। হাভিয়েরের নামে যেসব মিম পাওয়া সেগুলোর সঙ্গে @pakalupapito অ্যাকাউন্টটির কমেডির অনেক মিল। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝিতে ওই কমেডিয়ান বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। 

অনেকের বিশ্বাস, হাভিয়ের মূলত দক্ষিণ ভারতীয় কেউ। তবে কেউ কেউ দাবি করেন তিনি আসলে উত্তর ভারতের। তাঁর আসল নাম ওম প্রকাশ। আইআইটি কানপুরে পদার্থবিদ্যা বিভাগে এখনো কাজ করেন। 

tecপাকালু পাপিতো টুইটার পেজের অ্যাডমিন ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। তবে টুইটারে বলা কৌতুকগুলোই সাধারণত তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাকালু পাপিতো ফেসবুক পেজের লাইক দাঁড়ায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার। 

দুঃখের বিষয় হলো পাকালু পাপিতোর জনপ্রিয়তার আয়ু বেশি দিন ছিল না। ২০১৮ সালেই তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত হয় এবং ফেসবুক পেজ ডিলিট হয়ে যায়। তবে কী কারণে এমন জনপ্রিয় দুটি অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেল সেটি আজও জানা যায়নি। 

@pakalupapito অ্যাকাউন্টটি ব্লক হওয়ার পর প্রায় একই নামে @pakalupapitow একটি অ্যাকাউন্ট দেখা যায়। সেটিও টুইটারে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। একই ধরনের কৌতুক পোস্ট করেন অ্যাডমিন। তবে এই অ্যাকাউন্টের পেছনেও আগের সেই ব্যক্তিই কি না তা স্পষ্ট নয়। 
 
FB_IMG_1607165488731অনলাইনে মিম পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘নো ইয়োর মিম’—এর তথ্য অনুসারে, পাকালু পাপিতো নামে কমেডি অ্যাকাউন্টটি টুইটারে ২০১৩ সাল থেকে সচল। এই অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথম টুইটটি করা হয় ২০১৩ সালে জুলাই মাসে। প্রথম টুইটটি ছিল ইংরেজিতে—hello Twitter I’m single। 

ব্যক্তিগত পরিচয়ের স্থানে হাভিয়ের লিখেছেন—

Origin: South India

Occupation: Store Keeper/IT Professional

Marital Status on Social Media: Unlimited Single (Akhand Single) 

Real Life Marital Stutus: Maried

Tweets abouts: Relationship

Family: Not Known

Wife Name: Xavier’s Wife

Origin: South India

Current Location: Minneapolis, Minnesota, USA

Height: 5 ’7 

Color: Dark

In competition with: David

হাভিয়েরকে বলা যায় ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার স্ট্রিট আর্টিস্ট বাঙ্কসি। অবশ্য তিনি সামাজিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেন না। তাঁর কৌতুকগুলোতে কখনো আপত্তি জানানোর মতো কেউ কিছু খুঁজে পায় না। ইন্টারনেটজুড়ে যখন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রভাবিত কনটেন্ট, তখন হাভিয়ের নির্বিকার ও ক্লান্তিহীনভাবে নির্ভেজাল আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন। 

নানা আদর্শিক মূল্যবোধ এবং ধর্মের মানুষ হাভিয়েরের কৌতুক থেকে নির্মল আনন্দ নিতে কুণ্ঠিত হন না। বিরুদ্ধ মতের লোকেরাও একসঙ্গে বসে হাসতে পারেন। 

হাভিয়েরের বিখ্যাত মিমগুলো নিয়ে অনেকে ইউটিউবে ভিডিও বানিয়েছে। ফলে হ্যাভিয়েরের বিচরণ এখন সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সকালের নাশতা কখন খাবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

সকালের নাশতা বা ব্রেকফাস্টকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী খাচ্ছেন, সেটা বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হলো, কখন খাচ্ছেন। পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি এড়াতে সকালের নাশতা খাওয়ার সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভালো অভ্যাসের জন্য জেনে নিন, কখন নাশতা খাবেন। সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যকর নাশতা শুধু আপনার শরীরের ওজন বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবে না, বরং সারা দিনের শক্তি, মানসিক স্বচ্ছতা এবং কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করবে।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষায় ‘দুই ঘণ্টার নিয়ম’

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে সকালের ভারসাম্যপূর্ণ নাশতা সেরে ফেলা উচিত। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সরাসরি সাহায্য করে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পরে অস্বাস্থ্যকর নাশতা বা বেশি পরিমাণে খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান ভেরোনিকা রাউস এবং ডোবরা মারফির মতে, নাশতার সময় যত দ্রুত হয়, কোলেস্টেরলের জন্য, তা তত মঙ্গলজনক। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত সকালের নাশতা এড়িয়ে যান, তাঁদের শরীরে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ২০২১ সালে চীনে ৩৭ হাজার ৩৫৫ জন প্রাপ্তবয়স্কের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নাশতা খান না, তাঁদের রক্তে চর্বির পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মোট কোলেস্টেরল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের অন্য একটি বিশ্লেষণ বলছে, নাশতা বাদ দিলে এলডিএল কোলেস্টেরল গড়ে ৯ দশমিক ৮৯ এমজি/ডিএল পর্যন্ত বাড়তে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ১২ ঘণ্টার ফাস্টিং

যদি আপনার লক্ষ্য হয় ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখা, তবে খাবারের সময়ের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ হিসাব কাজ করে। নাশতা মানেই উপবাস ভাঙা। গবেষকদের মতে, আগের দিনের রাতের খাবার এবং পরের দিনের সকালের নাশতার মধ্যে অন্তত ১২ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত। যেমন আপনি যদি রাত ৮টায় রাতের খাবার খেয়ে নেন, তবে সকাল ৮টার আগে নাশতা না করাই ভালো। এই ১২ ঘণ্টার বিরতি শরীরে কেটোসিস প্রক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে; যেখানে শরীর শক্তির জন্য গ্লুকোজের বদলে জমানো চর্বি পোড়াতে থাকে। এ ছাড়া এই বিরতি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবায়োমকে বিশ্রাম ও পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়, যা মেটাবলিজম দ্রুত করে।

কত দেরি হলে তা ‘খুব দেরি’

একটি গবেষণা অনুযায়ী, সকাল ৯টার মধ্যে নাশতা সেরে ফেলা আদর্শ সময়। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। এর কারণ হলো, সকালে আমাদের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়া সবচেয়ে ভালো কাজ করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ইনসুলিন প্রতিরোধী হতে শুরু করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং পেটে চর্বি জমায়। তবে মনে রাখতে হবে, ১২ ঘণ্টার উপবাসের নিয়মটি নমনীয়। যদি কোনো কারণে রাতে দেরি করে খাবার খান, তবে পরের দিন ১২ ঘণ্টা পূর্ণ করেই হালকা নাশতা করা উচিত।

দেরিতে ডিনার ও নাশতা বর্জন নয়

ইউরোপীয় ‘জার্নাল অব প্রিভেনটিভ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত গবেষণায় দেরিতে রাতের খাবার এবং সকালের নাশতা বাদ দেওয়াকে মারাত্মক উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁরা এই অভ্যাসে অভ্যস্ত, তাঁদের হৃদ্‌রোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং শরীরে প্রদাহের ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষকেরা একে একটি ‘কিলার’ বা প্রাণঘাতী কম্বিনেশন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

কোলেস্টেরল কমাতে আদর্শ নাশতা

ডোনাট বা পেস্ট্রির মতো চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা সরাসরি এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায়। নাশতায় উদ্ভিজ্জ খাবার বা প্ল্যান্ট-বেসড খাবারের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফল ও ওটস: এতে থাকা সলুবল ফাইবার অন্ত্রে কোলেস্টেরলকে আটকে ফেলে রক্তে মিশতে বাধা দেয়।

হোল-গ্রেইন টোস্ট বা সিরিয়াল: এতে থাকা ভিটামিন-বি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়।

বাদাম ও বীজ: এগুলো স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্ল্যান্ট স্টেরল সমৃদ্ধ।

ব্যায়ামের ভূমিকা

নাশতার পাশাপাশি নিয়মিত সকালে ব্যায়াম কোলেস্টেরলের জন্য মহৌষধ। এটি এলডিএল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। হার্টের সুস্বাস্থ্যের জন্য সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি পরিশ্রম, যেমন দ্রুত হাঁটা অথবা ৭৫ মিনিট দৌড়ানোর মতো কঠিন কাজ করা জরুরি।

সূত্র: ভোগ, ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় স্কুলের ফুটবল টিমে গোলকিপার ছিলেন জাইমা রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।

তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।

সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।

এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’

১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে কেন টার্কি খাওয়া হয়, প্রচলন হয়েছিল কীভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৪
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল ময়ূর বা রাজহাঁসের মাংস।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে টার্কিকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব ভিক্টোরিয়ান যুগের। রানি ভিক্টোরিয়া যখন তাঁর রাজকীয় ক্রিসমাস ভোজে টার্কি খাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটি আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ১৮৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ দেখা যায়, একসময়ের কৃপণ ইবেনেজার স্ক্রুজ বড়দিনে ক্র্যাচিট পরিবারকে একটি বিশাল টার্কি উপহার পাঠাচ্ছেন। এই গল্প সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দেয় যে—বড়দিনের আদর্শ খাবার মানেই টার্কি।

কেন টার্কিই সেরা পছন্দ

টার্কি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কিছু ব্যবহারিক কারণও রয়েছে। আকার ও উপযোগিতা—গরু দুধ দেয় আর মুরগি দেয় ডিম; কিন্তু টার্কির অন্য কোনো ব্যবহার নেই। এ ছাড়া একটি বড় টার্কি দিয়ে অনায়াসেই পুরো পরিবারের ভোজ সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো ছোট পাখি রান্না করার চেয়ে একটি বড় পাখি রান্না করা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।

হিমায়িত বা ফ্রোজেন টার্কি—রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে টাটকা টার্কি কেনা ছিল বেশ ঝক্কির কাজ। কিন্তু ফ্রোজেন টার্কি বাজারে আসার পর মানুষ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এটি কিনতে শুরু করে, যা এর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত
রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত

পরদিনের চমৎকার নাশতা—বড়দিনের পরদিন অর্থাৎ ‘বক্সিং ডে’তে টার্কির বেঁচে যাওয়া মাংস (Leftovers) দিয়ে স্যান্ডউইচ, স্টু, কারি বা পাই তৈরি করা যায়। বিশেষ করে, টার্কি কারি এখন অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়।

যুক্তরাজ্যে টার্কির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও ক্রিসমাসে টার্কি খাওয়ার রীতি বজায় আছে।

যাঁরা বড় টার্কি রান্না করতে চান না বা ঝামেলা ছাড়াই উৎসবের খাবার উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্যও আজ নানা ধরনের প্রস্তুত টার্কি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে—যা ক্রিসমাস উদ্‌যাপনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বড়দিনের এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের কারণে আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টার্কি ছাড়া উৎসবের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনিও কি এবার বড়দিনের আয়োজনে টার্কি রাখছেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম কেন খাবেন, কতটুকু খাবেন

ফিচার ডেস্ক
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা

কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা

কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।

হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য

কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।

কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না

আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।

খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়

কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।

মনে রাখবেন

পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।

লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।

অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত