Ajker Patrika

গেমিং ল্যাপটপের অতিরিক্ত গরম হওয়া ঠেকাতে যা করবেন

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, ১২: ২১
গেমিং ল্যাপটপের অতিরিক্ত গরম হওয়া ঠেকাতে যা করবেন

ভালো কনফিগারেশনের বা দামি ল্যাপটপও অতিরিক্ত গরম হতে পারে। বিশেষ করে গেমিং কম্পিউটারগুলো বেশি গরম হয়। অপর্যাপ্ত কুলিং সিস্টেম, সীমিত বায়ুপ্রবাহ ও ধুলাবালু জমার কারণে ল্যাপটপগুলো অতিরিক্ত গরম হয়। 

ল্যাপটপকে অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে বাঁচাতে প্রথমেই এর কারণ খুঁজে করতে হবে। সে অনুযায়ী ল্যাপটপের যত্ন নিতে হবে এবং অতিরিক্ত গরম হওয়া সমস্যার সমাধান করতে হবে। 

ল্যাপটপ গরম হওয়ার সম্ভাব্য কারণ 
অপর্যাপ্ত বায়ুপ্রবাহ: বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা সঠিক ও পর্যাপ্ত না হলে ল্যাপটপটি বেশি গরম হতে পারে। সঠিক বায়ু চলাচলের জন্য ল্যাপটপে চারপাশে পর্যাপ্ত বায়ুপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। 

ঘরের তাপমাত্রা: যে ঘরে ল্যাপটপ ব্যবহার করা হয়ে, সেই ঘর গরম হলে ডিভাইসটিও অতিরিক্ত গরম হয়ে যাবে। তাই দরজা-জানালা খুলে পর্যাপ্ত বাতাস ঘরে প্রবেশ করাতে হবে বা এসি ব্যবহার করতে হবে। 

অপর্যাপ্ত কুলিং সিস্টেম: যদি ল্যাপটপের কুলিং সিস্টেম, ফ্যান ও হিট সিঙ্ক ভালোভাবে কাজ না করে, তাহলে এটি অতিরিক্ত তাপ বের করতে পারে না। ফলে ল্যাপটপ গরম হয়ে যায়। 

হার্ডওয়্যার সীমাবদ্ধতা: কিছু ল্যাপটপে এমন হার্ডওয়্যার উপাদান থাকতে পারে, যেগুলো জটিল কাজ করার জন্য নকশা করা হয়নি। ফলে ল্যাপটপটি অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে। 

ধুলাবালু: আপনার ল্যাপটপের কুলিং ফ্যান, ভেন্টে ধুলোবালি জমে বায়ুপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণ হতে পারে। 

ওভারক্লকিং: ল্যাপটপের সিপিইউ বা জিপিইউকে কোম্পানির রেকেমেনডশন বা সুপারিশের চেয়ে বেশি কাজ দিলে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। ফলে ডিভাইসটি অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে। 

অতিরিক্ত গরম হওয়া ঠেকাতে যা যা করা যায়

সমতল পৃষ্ঠে ল্যাপটপ ব্যবহার করুন 
গেমিংয়ের সময় ল্যাপটপকে ঠান্ডা রাখার একটি সহজ উপায় হলো—একে টেবিল বা সমতল জায়গায় রাখা। একটি ডেস্ক বা টেবিল ল্যাপটপে বাতাস অবাধে সঞ্চালন করতে দেয়। ফলে ল্যাপটপ ঠান্ডা হতে পারে। নিজের কোলে রেখে বা বিছানার ওপর রেখে ল্যাপটপ চালানো মোটেও উচিত নয়।

ডেস্ক বা টেবিল দেয়াল বা অন্যান্য আসবাবপত্র যেন ল্যাপটপের গা ঘেঁষে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ল্যাপটপকে উঁচু করার জন্য একটি ল্যাপটপ স্ট্যান্ডও ব্যবহার করা যায়। যদি সোফা থেকে আরাম করে গেমিং পছন্দ করেন, তবে ল্যাপ ডেস্ক একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে। এগুলো ল্যাপটপের বাতাস অবাধে সঞ্চালন করতে দেয়। 

ল্যাপটপ পরিষ্কার রাখুন
ধুলো ও ময়লা ল্যাপটপের ভেন্ট এবং ফ্যানকে আটকে রেখে বায়ুপ্রবাহকে হ্রাস করে। তাই ল্যাপটপ এবং এর আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা অপরিহার্য। ল্যাপটপ পরিষ্কার করার জন্য সংকুচিত বাতাসের একটি ক্যানিস্টার (এক ধরনের ডিভাইস যা দিয়ে জোরে বায়ুপ্রবাহ দেওয়া হয়) ও একটি হালকা ভেজা কাপড় ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে ভেন্ট ও ফ্যানগুলো সাবধানে পরিষ্কার করা যায়। 

কিবোর্ডের জন্যও এই ক্যানিস্টার ব্যবহার করে কিগুলোর মধ্যে বা নিচে লুকিয়ে থাকা ধুলাবালি সরানো যায়। পরিষ্কার করতে বেশি ভেজা কাপড় ব্যবহার করা যাবে না। 

কুলিং প্যাডে বিনিয়োগ করুন
ল্যাপটপ কুলিং প্যাড হল একটি বাহ্যিক অনুষঙ্গ যা গেমিং সেশনের সময় আপনার ল্যাপটপকে ঠান্ডা করার জন্য নকশা করা হয়েছে। কুলিং প্যাডগুলো গেমিং ল্যাপটপের নিচে স্থাপন করা যেতে পারে অথবা  সরাসরি ল্যাপটপ বা ল্যাপটপ স্ট্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। 

বেশির ভাগ ল্যাপটপ কুলিং প্যাড ইউএসবি-চালিত। একক বা একাধিক বিল্ট-ইন ফ্যান ব্যবহার করে কাজ করে এসব কুলিং প্যাড ল্যাপটপের বাইরের দিকে শীতল বাতাস প্রবাহিত করে। ফলে ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয় না। যা আপনার ল্যাপটপের ঘরে ভালো বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা থাকলে ল্যাপটপ কুলিং প্যাড কার্যকরভাবে গেমিং ল্যাপটপের তাপমাত্রা কমাতে পারে। 

থার্মাল পেস্ট বা প্যাড পরিবর্তন করুন
যদি ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয় তবে বিদ্যমান থার্মাল পেস্ট বা থার্মাল প্যাডগুলো পরিবর্তন করতে হতে পারে। থার্মাল পেস্ট প্রসেসর থেকে দূরে তাপ সঞ্চালনে সহায়তা করে। অপরদিকে থার্মাল প্যাডগুলো মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশ ঠান্ডা করতে ব্যবহৃত হয়। যেমন মেমোরি ও পাওয়ার রেগুলেটর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো ক্ষয় হয়ে যেতে পারে ও তাপ অপসারণে কম কার্যকর হতে পারে যার ফলে ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয়। 

ল্যাপটপ কয়েক বছর ব্যবহারের পরে সাধারণত এসব থার্মাল পেস্ট বা প্যাড পরিবর্তনে প্রয়োজন হয়। একটি নতুন ল্যাপটপ কেনা সম্ভব না হলে তাই এসব পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। 

তবে এসব নিজে নিজে পরিবর্তন করা যাবে না। এজন্য কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে হবে। 

গ্রাফিকস সেটিংস পরিবর্তন করুন
গেমের গ্রাফিকস ও এফপিএস সেটিংস কমিয়ে ল্যাপটপের হার্ডওয়্যারের ওপর চাপ কমানো যায়।। উচ্চ গ্রাফিকস ও এফপিএস সেটিংস জিপিইউ–কে বেশি চাপ দেয়। ফলে ল্যাপটপে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয়। তাই এসব সেটিংস কমিয়ে রাখা জরুরি। 

স্ট্র্যাটেজি ওয়ার গেমস ও দ্রুত গতির শুটারের মতো গেমগুলো ল্যাপটপের ওপর বেশি চাপ তৈরি করে। বেশির ভাগ গেম ডেভেলপার গেমটির জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে তার স্পেসিফিকেশন জানিয়ে দেয়। তাই গেমের কোম্পানিগুলোর এসব পরামর্শগুলো জেনেই ল্যাপটপে গেমগুলো ইনস্টল করা উচিত। 

সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন
গেমিং সেশনের সময় ল্যাপটপের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখার একটি কার্যকর উপায় হল ঘরটি ঠান্ডা রাখা ও ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা। ঘর গরম হলে ল্যাপটপ গরম হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মতো ল্যাপটপের ঠান্ডা করার জন্য বাতাসের প্রয়োজন। জানালা খুলে ঘরের বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। বায়ু চলাচলের জন্য ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে। আর ঘর ঠান্ডা করার জন্য এয়ার কন্ডিশনার চালু রাখা যেতে পারে। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার কম গরম হবে। 

তথ্যসূত্র: ডিজিটাল ট্রেন্ডস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিবিএসের জরিপ: ইন্টারনেটের আওতার বাইরে দেশের ৪৪% পরিবার

  • মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার।
  • ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যবহার করে স্মার্টফোন।
  • কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে, কমেছে রেডিও শোনা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ১০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।

‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।

‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।

এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।

২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।

রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।

সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।

সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির সাশ্রয়ী ফোন আনল রিয়েলমি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।

ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।

এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।

ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।

রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইকে ব্যক্তিগত অর্থ উপদেষ্টা বানালেন ২৭ বছরের এই সিইও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স
তাকি ওং। ছবি: রয়টার্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।

ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।

ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।

তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।

এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত