জাহীদ রেজা নূর

আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি পরে যিনি পানের দোকান চালাচ্ছেন, তাঁর নাম কী হতে পারে, তা নিশ্চয়ই আগাম জানা যাবে না। কিন্তু তাঁর কাছে গিয়ে ভিডিও করার অনুমতি নেওয়ার পর নাম জেনে নেওয়াটাই তো রেওয়াজ।
রোববার দুপুর দেড়টা। রাস্তাঘাট ফাঁকা। কলাবাগানে রাস্তার ধারে যে বাগান বসেছে, তারই একপাশে দেখলাম আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে বসে আছেন তিনি। সচরাচর যেভাবে কথাবার্তা শুরু করি, আজ তা করলাম না। আমরা দুজনেই বুঝতে পারছি, আমাদের কথা গড়াবে আর্জেন্টিনার কোপা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনার দিকে। কিন্তু দুজনেই সেটা লুকিয়ে কথা শুরু করলাম।
কিসের ব্যবসা আপনার।
‘পানের। আর জর্দার।’
আপনার নাম কী?
‘নাম মো. মেহেদী হাসান মেসি।’
নামের সঙ্গে ‘মেসি’টা এল কী করে, সেটা ভাবতে ভাবতেই জানতে চাই, ‘পরের মেসিটা কে লাগাল? নিজেই?’
‘না। আমার দোস্ত।’
কোপায় সবগুলো খেলাই দেখেছেন?
‘মেসির সব খেলা দেখছি।’
আর কারও খেলা দেখেননি?
‘আমি মেসির খেলা দেখি। মেসির সব খেলা দেখসি।’
কী মনে হইসিল? মেসি পারবে? মেসি তো বহুদিন দেশের জন্য খেলেও চ্যাম্পিয়ন হয়নি?
‘কী যেন কন! ভবিষ্যতেও ইনশা আল্লাহ আরও পাইব।’ মো. মেহেদী হাসান মেসির কণ্ঠে প্রত্যয় আর দৃঢ়তা।
বয়স খুব বেশি নয়। স্কুলপড়ুয়া বলে মনে হয়। এই বয়সেই জর্দা দেওয়া পান তাঁর মুখে। পানের ঘ্রাণ আসছিল আমার মাস্ক ভেদ করে।
খেলা যখন হচ্ছিল, তখন ভয় করছিল না?
‘খেলার সময় ভয়, মানে আতঙ্ক তো থাকবেই। খেলা মানেই ভয়। খেলা মানেই আতঙ্ক।’
আর্জেন্টিনা জিতল যখন, তখন কেমন লাগল?
‘পুরাই…যখন গোলটা দিসে, তখন কেমন লাগসে, তা আমি বুঝায় কইতে পারব না।’ আনন্দে কথা একটার সঙ্গে একটা বাড়ি খায়।
খেলা একা দেখেছেন নাকি আর কেউ ছিল সঙ্গে?
‘না, একা কেমনে দেখে। ছিল বন্ধুবান্ধব। লাফালাফি দৌড়াদৌড়ি।’
একটু প্রসঙ্গ পাল্টাই—‘আপনার ব্যবসা কত দিনের?’
‘এইটা আমার বাবার ব্যবসা।’
আপনি কী করেন।
‘আমি পড়াশোনা করি। নিউ মডেল স্কুলে।’
ইউরো দেখেন?
‘দেখি।’
আজ তো ফাইনাল। ইতালি–ইংল্যান্ড। দেখবেন?
‘এখন যদি সময় পাই, তাহলে অবশ্যই দেখব। আসলে মেসি কাপ পেয়ে গেছে, এর পর আর খেলা…’ কথাটা শেষ না করলেও আমরা বুঝে ফেলি, মেসিময় দিনে আর কিছু টানছে না মেহেদী হাসান মেসিকে।
আপনার বাবা কোন দল সাপোর্ট করে?
প্রশ্নটা করেই বুঝতে পারি, এটা আমাদের মেসির জন্য খুব উপযুক্ত প্রশ্ন নয়। বুঝতে পারি এ কারণে যে, মেসি বাবার পছন্দের দলের নাম না বলে বলেন, ‘সেটা বাবার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
আমরা আরও বুঝতে পারি, এখন যে প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে, সেটি মেসির খুব পছন্দের উত্তর নয়। তারপরও এক শব্দে প্রশ্ন ছুড়ে দিই: ‘ব্রাজিল?’
‘হ্যাঁ, ব্রাজিল।’
এ কথা বলে একজন ক্রেতার হাতে পান তুলে দেন মেহেদী হাসান মেসি। আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে পুনরাবৃত্তি করেন, ‘ভবিষ্যতে মেসি আরও অনেক কাপ পাইব।’

আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি পরে যিনি পানের দোকান চালাচ্ছেন, তাঁর নাম কী হতে পারে, তা নিশ্চয়ই আগাম জানা যাবে না। কিন্তু তাঁর কাছে গিয়ে ভিডিও করার অনুমতি নেওয়ার পর নাম জেনে নেওয়াটাই তো রেওয়াজ।
রোববার দুপুর দেড়টা। রাস্তাঘাট ফাঁকা। কলাবাগানে রাস্তার ধারে যে বাগান বসেছে, তারই একপাশে দেখলাম আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে বসে আছেন তিনি। সচরাচর যেভাবে কথাবার্তা শুরু করি, আজ তা করলাম না। আমরা দুজনেই বুঝতে পারছি, আমাদের কথা গড়াবে আর্জেন্টিনার কোপা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনার দিকে। কিন্তু দুজনেই সেটা লুকিয়ে কথা শুরু করলাম।
কিসের ব্যবসা আপনার।
‘পানের। আর জর্দার।’
আপনার নাম কী?
‘নাম মো. মেহেদী হাসান মেসি।’
নামের সঙ্গে ‘মেসি’টা এল কী করে, সেটা ভাবতে ভাবতেই জানতে চাই, ‘পরের মেসিটা কে লাগাল? নিজেই?’
‘না। আমার দোস্ত।’
কোপায় সবগুলো খেলাই দেখেছেন?
‘মেসির সব খেলা দেখছি।’
আর কারও খেলা দেখেননি?
‘আমি মেসির খেলা দেখি। মেসির সব খেলা দেখসি।’
কী মনে হইসিল? মেসি পারবে? মেসি তো বহুদিন দেশের জন্য খেলেও চ্যাম্পিয়ন হয়নি?
‘কী যেন কন! ভবিষ্যতেও ইনশা আল্লাহ আরও পাইব।’ মো. মেহেদী হাসান মেসির কণ্ঠে প্রত্যয় আর দৃঢ়তা।
বয়স খুব বেশি নয়। স্কুলপড়ুয়া বলে মনে হয়। এই বয়সেই জর্দা দেওয়া পান তাঁর মুখে। পানের ঘ্রাণ আসছিল আমার মাস্ক ভেদ করে।
খেলা যখন হচ্ছিল, তখন ভয় করছিল না?
‘খেলার সময় ভয়, মানে আতঙ্ক তো থাকবেই। খেলা মানেই ভয়। খেলা মানেই আতঙ্ক।’
আর্জেন্টিনা জিতল যখন, তখন কেমন লাগল?
‘পুরাই…যখন গোলটা দিসে, তখন কেমন লাগসে, তা আমি বুঝায় কইতে পারব না।’ আনন্দে কথা একটার সঙ্গে একটা বাড়ি খায়।
খেলা একা দেখেছেন নাকি আর কেউ ছিল সঙ্গে?
‘না, একা কেমনে দেখে। ছিল বন্ধুবান্ধব। লাফালাফি দৌড়াদৌড়ি।’
একটু প্রসঙ্গ পাল্টাই—‘আপনার ব্যবসা কত দিনের?’
‘এইটা আমার বাবার ব্যবসা।’
আপনি কী করেন।
‘আমি পড়াশোনা করি। নিউ মডেল স্কুলে।’
ইউরো দেখেন?
‘দেখি।’
আজ তো ফাইনাল। ইতালি–ইংল্যান্ড। দেখবেন?
‘এখন যদি সময় পাই, তাহলে অবশ্যই দেখব। আসলে মেসি কাপ পেয়ে গেছে, এর পর আর খেলা…’ কথাটা শেষ না করলেও আমরা বুঝে ফেলি, মেসিময় দিনে আর কিছু টানছে না মেহেদী হাসান মেসিকে।
আপনার বাবা কোন দল সাপোর্ট করে?
প্রশ্নটা করেই বুঝতে পারি, এটা আমাদের মেসির জন্য খুব উপযুক্ত প্রশ্ন নয়। বুঝতে পারি এ কারণে যে, মেসি বাবার পছন্দের দলের নাম না বলে বলেন, ‘সেটা বাবার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
আমরা আরও বুঝতে পারি, এখন যে প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে, সেটি মেসির খুব পছন্দের উত্তর নয়। তারপরও এক শব্দে প্রশ্ন ছুড়ে দিই: ‘ব্রাজিল?’
‘হ্যাঁ, ব্রাজিল।’
এ কথা বলে একজন ক্রেতার হাতে পান তুলে দেন মেহেদী হাসান মেসি। আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে পুনরাবৃত্তি করেন, ‘ভবিষ্যতে মেসি আরও অনেক কাপ পাইব।’

প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪
ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪
কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪