ডয়চে ভেলে

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
ডয়চে ভেলে

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
৮ ঘণ্টা আগেআমানুর রহমান রনি, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রার্থীদের পুলিশের নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তবে পুলিশ বলেছে, প্রার্থীর ঝুঁকি বিবেচনায় ‘ক্যাটাগরি করে’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলি করে দু্র্বৃত্তরা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ওপর প্রকাশ্যে হামলার ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। প্রচারে নিরাপত্তাঝুঁকি ও শঙ্কার কথাও বলছেন অনেকে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ কম হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।
অবশ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঝুঁকি বিবেচনায় নিরাপত্তার বিধান করা হবে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ও ঝুঁকিতে আছেন মনে করেন, তিনি পুলিশের কাছে আসবেন, আমরা তাঁর ঝুঁকি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, পারিবারিক ও নিরাপত্তাসহ একাধিক কারণে তিনি এই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সিকিউরিটি কনসার্ন হচ্ছে আমার পরিবার। আমার পরিবারের সঙ্গে এই জায়গায় নেগোসিয়েশন করতে পারছি না। তবে বিষয়টা এমন না যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সেই কারণে সরে যাচ্ছি।’
তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থী, ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক গণসংযোগেও নেমেছিলেন। কিন্তু হাদির ওপর হামলার পর তাঁরা মাঠে নামতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখন প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই বললেই চলে।
জানতে চাইলে গতকাল কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী আমির হামজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার পর আমরা সতর্ক রয়েছি। পুলিশ সুপার, ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা হয়তো সামনে নিরাপত্তা দেবে। প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকায় এখন বাইরে কোথাও যাই না। এখন যখনই কোথাও যাই, অন্তত ১৫ জন সঙ্গে নিয়ে যাই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনে করছেন, বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন এনসিপির প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধারা। হাদি সম্মুখসারির জুলাই যোদ্ধা। এনসিপির নেতৃত্বে রয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
নরসিংদী-২ আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ, তবে আমরা ভীত নই। আমি যে আসন থেকে নির্বাচন করব, সেখানে নিয়মিত আমাকে ও আমার নেতা-কর্মীদের, এমনকি সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি ছেড়ে দিতে আমার নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে।’
এর আগে ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চালিতাতলীতে বিএনপির প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের গুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত এবং এরশাদউল্লাহসহ দুজন আহত হন। বাবলাকে হত্যার জন্য ওই হামলা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে হাদির ওপর হামলার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। গত সোমবার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং তাঁদের জন্য সশস্ত্র ব্যক্তি (রিটেইনার) নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪।
সূত্র জানায়, রোববার ও সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ কর্মকর্তারা একাধিক বৈঠক করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে করণীয় ঠিক করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। করণীয় ঠিক করতে প্রতিটি রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন আইজিপি।
তবে ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অদৃশ্য একটি ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, অনেকেই নির্বাচন করতে দিতে চাইছে না। স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা এখনো সক্রিয়। তারা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছে, এটি আরও ভয় তৈরি করছে।
একই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ফয়জুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বস্তি বোধ করছেন না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিশ্চিত করা হবে। এগুলো হলো, অতিঝুঁকিতে, মাঝারি ঝুঁকিতে ও কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি। ঝুঁকিতে থাকা প্রত্যেক প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে আলোচনা করে, যেভাবে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন, যা নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকবে। প্রার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রনেতা, জুলাই যোদ্ধা, শিক্ষকসহ আরও কয়েকটি শ্রেণির ব্যক্তিও এই নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইতিমধ্যে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ চলছে।
যেসব প্রার্থীর নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি, তাঁরা সার্বক্ষণিক গানম্যান পাবেন। প্রয়োজনে বাসা ও অফিসে স্থায়ীভাবে গানম্যান নিয়োজিত থাকবে। এক্ষেত্রে জুলাই যোদ্ধা ও অতিঝুঁকিতে থাকা প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মূল্যায়নে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হলে প্রার্থীরা নিজেরা সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতে পারবেন, না পারলে পুলিশের পক্ষ থেকে দেহরক্ষী দেওয়া হবে। বাসা, অফিস ও যাতায়াতের সময় এ নিরাপত্তা কার্যকর থাকবে।
ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও চলাচলের সময়সূচি সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে আগাম জানাতে বলা হয়েছে, যাতে পুলিশ আগে থেকেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিতে পারে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং থানার সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী গণসংযোগ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সমন্বিত ‘নিরাপত্তা প্রটোকল’ তৈরি করছে, যেখানে প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকনির্দেশনা থাকবে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সব ইউনিট ও থানাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিরাপদবোধ করলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেউ ক্ষমতা চায়। তাই দেশে এই অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তাই সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের যেমন দায় রয়েছে, তেমনি নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোরও উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সদাচরণ করতে হবে। তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রার্থীদের পুলিশের নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তবে পুলিশ বলেছে, প্রার্থীর ঝুঁকি বিবেচনায় ‘ক্যাটাগরি করে’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলি করে দু্র্বৃত্তরা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ওপর প্রকাশ্যে হামলার ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। প্রচারে নিরাপত্তাঝুঁকি ও শঙ্কার কথাও বলছেন অনেকে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ কম হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।
অবশ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঝুঁকি বিবেচনায় নিরাপত্তার বিধান করা হবে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ও ঝুঁকিতে আছেন মনে করেন, তিনি পুলিশের কাছে আসবেন, আমরা তাঁর ঝুঁকি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, পারিবারিক ও নিরাপত্তাসহ একাধিক কারণে তিনি এই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সিকিউরিটি কনসার্ন হচ্ছে আমার পরিবার। আমার পরিবারের সঙ্গে এই জায়গায় নেগোসিয়েশন করতে পারছি না। তবে বিষয়টা এমন না যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সেই কারণে সরে যাচ্ছি।’
তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থী, ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক গণসংযোগেও নেমেছিলেন। কিন্তু হাদির ওপর হামলার পর তাঁরা মাঠে নামতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখন প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই বললেই চলে।
জানতে চাইলে গতকাল কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী আমির হামজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার পর আমরা সতর্ক রয়েছি। পুলিশ সুপার, ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা হয়তো সামনে নিরাপত্তা দেবে। প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকায় এখন বাইরে কোথাও যাই না। এখন যখনই কোথাও যাই, অন্তত ১৫ জন সঙ্গে নিয়ে যাই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনে করছেন, বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন এনসিপির প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধারা। হাদি সম্মুখসারির জুলাই যোদ্ধা। এনসিপির নেতৃত্বে রয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
নরসিংদী-২ আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ, তবে আমরা ভীত নই। আমি যে আসন থেকে নির্বাচন করব, সেখানে নিয়মিত আমাকে ও আমার নেতা-কর্মীদের, এমনকি সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি ছেড়ে দিতে আমার নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে।’
এর আগে ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চালিতাতলীতে বিএনপির প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের গুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত এবং এরশাদউল্লাহসহ দুজন আহত হন। বাবলাকে হত্যার জন্য ওই হামলা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে হাদির ওপর হামলার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। গত সোমবার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং তাঁদের জন্য সশস্ত্র ব্যক্তি (রিটেইনার) নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪।
সূত্র জানায়, রোববার ও সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ কর্মকর্তারা একাধিক বৈঠক করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে করণীয় ঠিক করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। করণীয় ঠিক করতে প্রতিটি রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন আইজিপি।
তবে ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অদৃশ্য একটি ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, অনেকেই নির্বাচন করতে দিতে চাইছে না। স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা এখনো সক্রিয়। তারা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছে, এটি আরও ভয় তৈরি করছে।
একই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ফয়জুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বস্তি বোধ করছেন না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিশ্চিত করা হবে। এগুলো হলো, অতিঝুঁকিতে, মাঝারি ঝুঁকিতে ও কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি। ঝুঁকিতে থাকা প্রত্যেক প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে আলোচনা করে, যেভাবে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন, যা নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকবে। প্রার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রনেতা, জুলাই যোদ্ধা, শিক্ষকসহ আরও কয়েকটি শ্রেণির ব্যক্তিও এই নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইতিমধ্যে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ চলছে।
যেসব প্রার্থীর নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি, তাঁরা সার্বক্ষণিক গানম্যান পাবেন। প্রয়োজনে বাসা ও অফিসে স্থায়ীভাবে গানম্যান নিয়োজিত থাকবে। এক্ষেত্রে জুলাই যোদ্ধা ও অতিঝুঁকিতে থাকা প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মূল্যায়নে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হলে প্রার্থীরা নিজেরা সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতে পারবেন, না পারলে পুলিশের পক্ষ থেকে দেহরক্ষী দেওয়া হবে। বাসা, অফিস ও যাতায়াতের সময় এ নিরাপত্তা কার্যকর থাকবে।
ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও চলাচলের সময়সূচি সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে আগাম জানাতে বলা হয়েছে, যাতে পুলিশ আগে থেকেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিতে পারে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং থানার সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী গণসংযোগ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সমন্বিত ‘নিরাপত্তা প্রটোকল’ তৈরি করছে, যেখানে প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকনির্দেশনা থাকবে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সব ইউনিট ও থানাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিরাপদবোধ করলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেউ ক্ষমতা চায়। তাই দেশে এই অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তাই সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের যেমন দায় রয়েছে, তেমনি নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোরও উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সদাচরণ করতে হবে। তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারস
০১ জুলাই ২০২৫
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
৮ ঘণ্টা আগেস্মৃতিসৌধে জনতার ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, সাভার

মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে তারা।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মঙ্গলবার সকাল থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় মানুষের ঢল নামে। হাতে লাল-সবুজের পতাকা, মুখে বিজয়ের গান, হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা—শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্র হয়।
স্বাধীনতার ৫৫তম বছরে প্রবেশের এই ঐতিহাসিক দিনে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে দেশকে ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে হবে।’
সাভারের উত্তরপাড়া থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কলেজছাত্র বিশাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাই।’
ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় আজও আমাদের প্রেরণা।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জামায়াত ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেশের শান্তি কামনা করেনি, এমনকি এখনো করে না। তারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এখনো চায় না। তারা চায় দেশটা একটা বিপাকে পড়ুক, একটা খারাপ অবস্থায় চলে যাক, অশান্তিময় থাকুক।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার ও পুলিশের ওপর নির্ভর করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। আমাদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’
এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণসংহতি আন্দোলন প্রভৃতি দলও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায়।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যখন থেকে আমরা স্বাধীন হলাম, তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটা গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার। অনেক বছর পর এখন আবার মনে হচ্ছে, ওই জিনিসগুলো আমরা অর্জন করতে পারিনি। পারিনি বলেই তো গণ-অভ্যুত্থান হলো, বিপ্লব হলো।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমরা আশা করি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যে ভিত্তি গণতন্ত্রকে যেমন সুদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের যে প্রত্যয়, সেটা আমাদের মধ্যে ছিল দেখেই আমরা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণের একটা সুযোগ করে নিতে পেরেছি। এখানে এলে ভালো লাগে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, আহত মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, যাঁরা ওই সময়ে নানান আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মন সিক্ত হয়।’
এদিকে বিজয় দিবস ঘিরে সাভারে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ এবং বাইপাইল থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ ত্যাগের পর সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের জন্য চার স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সাভারের আমিনবাজার থেকে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পোশাকে এবং সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।

মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে তারা।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মঙ্গলবার সকাল থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় মানুষের ঢল নামে। হাতে লাল-সবুজের পতাকা, মুখে বিজয়ের গান, হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা—শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্র হয়।
স্বাধীনতার ৫৫তম বছরে প্রবেশের এই ঐতিহাসিক দিনে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে দেশকে ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে হবে।’
সাভারের উত্তরপাড়া থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কলেজছাত্র বিশাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাই।’
ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় আজও আমাদের প্রেরণা।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জামায়াত ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেশের শান্তি কামনা করেনি, এমনকি এখনো করে না। তারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এখনো চায় না। তারা চায় দেশটা একটা বিপাকে পড়ুক, একটা খারাপ অবস্থায় চলে যাক, অশান্তিময় থাকুক।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার ও পুলিশের ওপর নির্ভর করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। আমাদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’
এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণসংহতি আন্দোলন প্রভৃতি দলও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায়।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যখন থেকে আমরা স্বাধীন হলাম, তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটা গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার। অনেক বছর পর এখন আবার মনে হচ্ছে, ওই জিনিসগুলো আমরা অর্জন করতে পারিনি। পারিনি বলেই তো গণ-অভ্যুত্থান হলো, বিপ্লব হলো।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমরা আশা করি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যে ভিত্তি গণতন্ত্রকে যেমন সুদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের যে প্রত্যয়, সেটা আমাদের মধ্যে ছিল দেখেই আমরা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণের একটা সুযোগ করে নিতে পেরেছি। এখানে এলে ভালো লাগে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, আহত মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, যাঁরা ওই সময়ে নানান আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মন সিক্ত হয়।’
এদিকে বিজয় দিবস ঘিরে সাভারে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ এবং বাইপাইল থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ ত্যাগের পর সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের জন্য চার স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সাভারের আমিনবাজার থেকে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পোশাকে এবং সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারস
০১ জুলাই ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে পতাকামিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন উদীচী সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। তাঁরা পরিবেশন করেন—‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’, ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘গেরিলা আমরা, আমরা গেরিলা’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’সহ বেশ কিছু গান। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন তিনটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
সমাবেশে মাহমুদ সেলিম বলেন, বিজয়ের ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থামায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের নিত্যনতুন ইতিহাস তৈরি করে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব মিথ্যাবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে না দিতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। এসব অপশক্তিকে রুখে দিতে প্রয়োজনে একাত্তরের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহমুদ সেলিম।
মাহমুদ সেলিম বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস, স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসে মুক্তি, আত্মত্যাগ ও অগ্রযাত্রার প্রতীক। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য পতাকামিছিল ও মুক্তির গান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা বিজয়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য, মানবিকতা ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
এর আগে, বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ।

মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে পতাকামিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন উদীচী সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। তাঁরা পরিবেশন করেন—‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’, ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘গেরিলা আমরা, আমরা গেরিলা’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’সহ বেশ কিছু গান। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন তিনটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
সমাবেশে মাহমুদ সেলিম বলেন, বিজয়ের ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থামায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের নিত্যনতুন ইতিহাস তৈরি করে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব মিথ্যাবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে না দিতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। এসব অপশক্তিকে রুখে দিতে প্রয়োজনে একাত্তরের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহমুদ সেলিম।
মাহমুদ সেলিম বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস, স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসে মুক্তি, আত্মত্যাগ ও অগ্রযাত্রার প্রতীক। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য পতাকামিছিল ও মুক্তির গান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা বিজয়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য, মানবিকতা ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
এর আগে, বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ।

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারস
০১ জুলাই ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
৮ ঘণ্টা আগেমহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা। দিবসটিকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র বাহিনী মনোজ্ঞ ফ্লাই পাস্ট, প্যারা জাম্প ও বিশেষ অ্যারোবেটিক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। বিজয় দিবস উদ্যাপনে নানা আয়োজন নিয়ে এই ছবির গল্প:
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

























২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারস
০১ জুলাই ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
৬ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকামিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
৬ ঘণ্টা আগে