Ajker Patrika

সাংবাদিকদের বেসিক মিনিমাম পেমেন্ট ঠিক করতে হবে: প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাংবাদিকদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আমি ওয়েজবোর্ডের বিরোধী না, তবে তার আগে আমাদের বেসিক মিনিমাম পেমেন্টটা ঠিক করতে হবে। এটা পুরো পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই আছে। আমাদের দেশের গার্মেন্টস কর্মীদের জন্যও আছে। নৌ পরিবহন শ্রমিকদের জন্য আছে। সাংবাদিকদেরও এ রকম করতে হবে যে এর নিচে দেওয়া যাবে না এবং তাঁদের ((সাংবাদিক) সেফটি ইকুইপমেন্ট দিতে হবে।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ফ্রি প্রেস ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত ‘কেমন গণমাধ্যম চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিকদের খুবই কম বেতন দেওয়া হয়। এটা মানবেতর জীবনযাপন। এটা কল্পনা করা যায় না। এই জায়গায় আমাদের ইউনিয়নের লিডাররা বছরের পর বছর ফেল করেছে। আমাদের যেই ছেলেটা সাংবাদিকতায় আসবে তাঁকে আমরা দিচ্ছি ৫ হাজার টাকা, ১০ হাজার টাকা। এটা (সাংবাদিকতা) একটা নেশার মতো। সে তার নাম ছাপায় দেখতে চায়, একটা গল্প বলতে চায়। এই নেশার কারণেই আসে। আর এই আসার কারণেই তাকে ট্র‍্যাপে ফেলছে মালিকেরা। আজকে এই যে প্রিয় মারা গেল বা হাসান মেহেদী মারা গেল, এর জন্য খুনি হাসিনা যেমন দায়ী তেমনি কিছুটা হলেও ব্লেম মালিকদের। আমরা যারা সাংবাদিকতা করি তারা কী আমাদের সেফটি ইকুইপমেন্ট দিচ্ছেন? আমরা কী একটা হেলমেট পাচ্ছি, আমরা কী একটা বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পাচ্ছি? এটাতো বেসিক মিনিমাম জিনিস। বাইরে (দেশের বাইরে) এগুলো ছাড়া সাংবাদিকতা করতেই দেয় না।’

সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণের জন্য সবার একযোগে আওয়াজটা তোলা উচিত মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটা প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটের একযোগে এই আওয়াজটা তোলা উচিত যে আমাদের বেতনের জায়গায় যেই (মিডিয়া মালিক) সাংবাদিকতা করতে আসুক না কেন সেটা আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা হোক বা ওয়েবসাইটই হোক তাঁকে একটা ভালো রকমের বেসিক মিনিমাম পেমেন্ট দিতে হবে। আর যদি এর নিচে দেন তাহলে জার্নালিজম করতে আইসেন না। জার্নালিজম করতে হলে আপনার টাকা খরচ করতে হবে। আপনি এসে হাতে একটা প্রেস কার্ড ধরিয়ে দিলেন বা একটা আইডি কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বললেন সাংবাদিকতা করে খাও, এটা যাতে না হয়। এটা খুবই প্রকট হচ্ছে গ্রাম অঞ্চলে। অনেক টাকার মালিক তাদের জেলা প্রতিনিধিদের হয়তো দুই হাজার টাকা দিচ্ছেন বা দিচ্ছেনই না। কার্ড দিয়ে বলছেন তুমি করে খাও। এ রকম মানুষের মুখ উন্মোচন করা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকেন নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ বিরোধী নতুন সাংবাদিকতা হবে। যাতে বাংলাদেশে আরেকটা ফ্যাসিবাদ না তৈরি হয়। হাসিনা একটা মনস্টার চলে গেছে, আরেকটা মনস্টার যাতে না তৈরি হয় সেটার ব্যাপারে আমাদের সবার শপথ নিতে হবে।’

আন্দোলনে নিহত হওয়া সাংবাদিকদের নিয়ে তিনি আরও বলেন, গত জুলাই-আগস্টে আমাদের সাংবাদিকেরা যেরকম সাংবাদিকতা করেছেন সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা দেখি নাই। আমি বলব বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সাংবাদিকদের জন্য একটা গর্বিত মুহূর্ত। আর যেসব সাংবাদিকসহ যারা মারা গেলেন, আমি আসলে মারা গেলেন বলব না, যারা খুন হলো সেই গল্পগুলো আমরা তখনই শুনেছি। ১৯৭১ এর পর থেকে ১৯৭২ থেকে এই পর্যন্ত একটা ইভেন্টে এত সাংবাদিক কখনো মারা যায়নি। সাতজন সাংবাদিক মারা গেছেন, শহীদ হয়েছেন। আমার মনে হয় এটা আমাদের প্রত্যেকটা প্রেসক্লাবে, রিপোর্টারদের যতগুলো অ্যাসোসিয়েশন আছে সব জায়গায় এদের নামটা লিখে রাখা উচিত সোনার অক্ষরে।’

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এম আব্দুল্লাহ বলেন, আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা যে কতটা তা বলে বোঝানো যাবে না। এরা কিন্তু কেউ তারকাখ্যাত সাংবাদিক না তবুও তারা কাজ করে গিয়েছেন সম্মুখে গিয়ে। যারা কাজ করে গেছেন যারা মারা গিয়েছেন আমরা কিন্তু তাদের কথা বলছি না। গত ১৫ বছরে ৬১ জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে সাগর রুনিও আছে, যার শেষ হয়েছে হাসান মেহেদী, প্রিয়দের মাধ্যমে।

ছেলের স্মৃতিচারণ করে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান বলেন, ‘এক সময় আমরা সিনেমাটোগ্রাফি বা ফটোগ্রাফিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতাম না। কারণ যেহেতু আমরা এই সমন্ধে বুঝতাম না। কিন্তু আমি আজকে আমার ছেলের কাজের জন্য গর্বিত।’

তিনি বলেন, ‘প্রিয় অল্প বয়সে বিয়ে করেছে। আমি বলেছিলাম তুমি ভুল করেছ। এখন ভালো লাগলেও অভাব আসলে সেটা আর ভালো লাগবে না। তারপর সে অনলাইন পত্রিকা দ্যা রিপোর্টে চাকরি নেয়। তার বেতন ছিল ১৪ হাজার টাকা। পরিবার নিয়ে একটি মানুষ ঢাকার শহরে ১৪ হাজার টাকায় কীভাবে চলে। তাদের যে পরিমান খাটুনি হয় সে অনুযায়ী তাদের বেতন কিছুই না। আমি মনে করি সংবাদকর্মীদের বেতন বাড়ানো হোক। আমার মনে হয় সংবাদের অফিসগুলোর সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হোক। তাহলে কর্মীরা আরও ভালো কাজ করতে পারবে। তাদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া দরকার। কারণ সারা দিন তারা ঘুরে বেড়ায়। তাদের যে বেতন, তারা কী খাবে নাকি সংসার চালাবে?

শহীদ প্রিয়র মা বলেন, ‘আমার ছেলের মতো যে সাংবাদিক বা যে সন্তানগুলোকে মারা হলো, আমার মনে হয় তাদের না মারলেও হতো। আর এই চার মাসে সরকার কাজ করতে পারছে না। কারণ এখন যেসব মিডিয়া আছে সবার মাথায় আগের লোকজনই আছে। আমি সংবাদমাধ্যমের সংস্কার চাই।’

বাংলাদেশ ফ্রি প্রেস ইনিশিয়েটিভের আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাতের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক সিলমি সাদিয়ার সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ সাংবাদিক শাকিল হোসেনের বাবা মো. বেলায়েত হোসেন, শহীদ সাংবাদিক প্রদীপ কুমার ভৌমিকের ছেলে সুজন কুমার ভৌমিক, শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর বাবা মোশারেফ হোসেন হাওলাদার প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন, অংশ নিল লাখো জনতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শনিবার বেলা আড়াইটায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
শনিবার বেলা আড়াইটায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো জনতার অংশগ্রহণে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।

ওসমান হাদির জানাজায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ এই জানাজায় শরিক হন। জানাজাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবন এলাকা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী জানাজা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা আড়াইটায় শুরু হয়। জানাজা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ১০০০টি বডি ওর্ন ক্যামেরা ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে পুরো এলাকা সুরক্ষিত রাখা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু ছাড়াই অংশগ্রহণ করেন এবং সংসদ ভবন এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল।

ওসমান হাদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই দাফন করা হবে। এরই মধ্যে কবর প্রস্তুত করা হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধির পাশে হাদির কবর খননের কাজ শুরু হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে, সেখানে তাঁকে কবির সমাধির পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে আজ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের সমাধির পাশে হাদির দাফনের প্রস্তুতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় কবির সমাধির পাশেই চিরশায়িত হবেন ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় কবির সমাধির পাশেই চিরশায়িত হবেন ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই সমাহিত হবেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই বিপ্লবী শহীদ শরিফ ওসমান হাদি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ শনিবার সাড়ে ১১টার দিকে হাদির কবর খোঁড়ার কাজ শুরু হয় এবং ইতিমধ্যে তা সম্পন্ন হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি অনলাইন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ।

প্রক্টর জানান, ওসমান হাদির পরিবারের অনুরোধ এবং সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সমাহিত আছেন। ওই চত্বরে আরও কয়েকজন শিক্ষক ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর কবর রয়েছে। সেই স্থানেই শহিদ ওসমান হাদিকে দাফন করা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাদির দাফনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টিএসসি থেকে শাহবাগগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মসজিদ ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কবর খোঁড়ার কাজ শেষ হয়েছে এবং দাফনের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। পুরো এলাকায় শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একাধিক দাবি ও আন্দোলনের মিছিলে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল শরিফ ওসমান হাদিকে। যে রাজপথে, যে ক্যাম্পাসে তিনি বারবার কণ্ঠ তুলেছিলেন আজ সেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে তিনি ফিরছেন নিঃশব্দে। এবার আর স্লোগান দেবেন না তিনি; বরং নিজেই হয়ে উঠবেন স্লোগানের উৎস।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়।

আজ সকালে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে হাদির মরদেহ কঠোর নিরাপত্তায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি পুনরায় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে গোসল সম্পন্ন করা হয়। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় (মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ) তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা উপলক্ষে সেখানে ইতিমধ্যেই মানুষের ঢল নেমেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় কবির সমাধির পাশেই চিরশায়িত হবেন ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় কবির সমাধির পাশেই চিরশায়িত হবেন ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন পুরানা পল্টনে দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়, যেখানে গত বৃহস্পতিবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে আজ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জানাজার স্থানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ব্যতীত অন্য কোনো সংগঠনের পতাকা থাকবে না। শোকাতুর পরিবার জানাজার সার্বিক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

জানাজা ও দাফন ঘিরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। নিরাপত্তার খাতিরে ১০০০টি বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে মুসল্লিদের ব্যাগ বহন না করতে এবং সংসদ ভবন এলাকায় ড্রোন না ওড়াতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানাজা শেষে মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এ কে খন্দকার মারা গেছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৭
এ কে খন্দকার। ফাইল ছবি
এ কে খন্দকার। ফাইল ছবি

মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ সাবেক বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম মারা গেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে।

এ কে খন্দকার আজ শনিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে বার্তায় বলা হয়।

আইএসপিআর আরও জানায়, বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজায় জাতীয় পতাকা ছাড়া কোনো পতাকা না আনার অনুরোধ পরিবারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছাড়া অন্য কোনো পতাকা না আনার অনুরোধ জানিয়েছে তাঁর পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছাড়া অন্য কোনো পতাকা না আনার অনুরোধ জানিয়েছে তাঁর পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। এখন জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর নামাজে জানাজার প্রস্তুতি চলছে। সকাল থেকেই সেখানে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে।

হাদির পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জানাজার ময়দানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ব্যতীত অন্য কোনো সংগঠনের পতাকা রাখা যাবে না। এ ছাড়া হাদির শোকাতুর পরিবার জানাজার সার্বিক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘জানাজার নামাজের স্থানে বাংলাদেশের পতাকা ব্যতীত অন্য কোন পতাকা থাকবে না। আপনাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে তার পরিবার।’

এদিকে আজ সকালে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে হাদির মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স যোগে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় পুরো এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি পুনরায় জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

পারিবারিক ও ইনকিলাব মঞ্চ সূত্রে জানা গেছে, হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে মরদেহের গোসল সম্পন্ন করার পর নামাজে জানাজার জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হবে। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

জানাজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তার খাতিরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১০০০টি বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। আগতদের কোনো ধরনের ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংসদ ভবন ও এর আশপাশ এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

শহীদ ওসমান হাদির শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত