Ajker Patrika

স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান শেখ হাসিনার

বাসস
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ৫১
স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং অঞ্চলটিতে অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আমি সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি এই ভয়াবহ যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

গতকাল সৌদি আরবের জেদ্দায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) আয়োজনে ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ এ সময় তিনি ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের পক্ষে তাঁর ভূমিকা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তির জন্য তাদের মুসলিম নারীদের আওয়াজ শুনতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা করছি। গাজার এই নৃশংসতা ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার ২ লাখ নারীর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই নৃশংস ঘটনাগুলো আমাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং নারী ও শিশুসহ পরিবারের অন্য সদস্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এটি মিয়ানমারের হাজার হাজার নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর নির্যাতনের দৃশ্যকেই ফুটিয়ে তোলে, যারা নৃশংসতার শিকার হলে ২০১৭ সালের আগস্টে আমাদের সীমান্তে আশ্রয় চেয়েছিল।’ 

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মুসলিম নারীদের জন্য একগুচ্ছ পরামর্শ দেন। পরামর্শগুলো হলো—

প্রথমত, ফিলিস্তিনে অবিলম্বে সংঘাতের অবসান এবং সেখানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অপরাধের বিচার।

দ্বিতীয়ত, সমস্ত অপরাধ, সহিংসতা, বৈষম্য ও নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়াকে ‘না’ বলুন।

তৃতীয়ত, এসডিজি-৫ পূরণের লক্ষ্যে লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারীদের ক্ষমতায়নের দিকে যথাযথ মনোযোগ দিন।

চতুর্থত, মুসলিম নারীরা যেন ইচ্ছেমতো স্বাধীনভাবে জনসমক্ষে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করুন।

পঞ্চমত, নারী ক্ষমতায়ন ও মূল স্রোতে নারীদের ভূমিকার উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এসংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রস্তুত। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এই বহুল প্রতীক্ষিত ইস্যুগুলোতে সংলাপ প্রত্যাশিত। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে এর সম্ভাবনা উপলব্ধি করে খুব তাড়াতাড়ি ওআইসির নারী উন্নয়ন সংস্থায় (ডব্লিউডিও) যোগ দেয়। তিনি বলেন, ‘ডব্লিউডিও এর যাত্রা শুরু করেছে এবং আমি আশা করি, ইসলামকে আরও ভালোভাবে বোঝার মাধ্যমে আজকের চাহিদাগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এ ম্যান্ডেটকে প্রসারিত করা যেতে পারে। আর তবেই আমরা একটি বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বিশ্বের স্বপ্ন দেখতে পারি। আমি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাফল্য কামনা করছি।’ 

শেখ হাসিনা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইসলামে নারীর মর্যাদা তুলে ধরার জন্য সৌদি আরব ও ওআইসিকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নারীমুক্তির জন্য সৌদি আরবের যুগান্তকারী উদ্যোগগুলোকে আগ্রহের সঙ্গেই লক্ষ করি। আমি মহামান্য বাদশাহ ও হিজ রয়েল হাইনেস যুবরাজের এই রূপান্তরমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করি।’ ইসলামকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লামের আহ্বানে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ছিলেন একজন নারী—বিবি খাদিজা।’ 

পবিত্র কোরআনের সুরা আন-নিসা’র আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আর আল্লাহকে ভয় করো, যার নামে তোমরা পরস্পরের এবং রক্ত সম্পর্কের অধিকার চাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বদাই তোমাদের ওপর পর্যবেক্ষক।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর অধিকার ও লিঙ্গ সমতা রক্ষায় তাদের গর্বিত ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশের রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতো পথপ্রদর্শক আছেন, যিনি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত তার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইতে নারী নেতৃত্বাধীন বিশ্বের কল্পনা করেছিলেন। ইংরেজিতে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর, অর্ধেক তা করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ 
 
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমমর্যাদা নিশ্চিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি সংরক্ষিত আসনের বিধান করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর মেয়ে হিসেবে তিনি নারী ক্ষমতায়নের এ কাজ অব্যাহত রেখেছেন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৫০টিতে উন্নীত করেছেন। আমাদের জাতীয় সংসদে এখন ৭৩ জন নারী সাংসদ রয়েছেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীরা সব সময়ই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক সংস্কার ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রথম সারিতে থেকেছেন। তাঁরা নিজেরাই যেন কাজের মাধ্যমে তাঁদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন, আমি তাঁদের প্রতি সেই আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বৈশ্বিক সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একটি অনন্য উদাহরণ আছে, যেখানে জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা ও সরকারি দলের উপনেতা সবাই নারী। এ ছাড়া আমাদের স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বস্তরে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যতবার আমি দায়িত্বে এসেছি, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের উন্নীত করার জন্য সমস্ত বাধা দূর করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্য সংস্থায় আমাদের নারীদের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হতে দেখে আমি গর্বিত বোধ করি।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তাদের মেয়েরা পাবলিক পরীক্ষা, প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ ও জাতীয় পর্যায়ের খেলায় অংশ নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির হোস্ট হিসাবে আমি ওআইসি সদস্য দেশগুলোর তরুণ নারীদের এই চমৎকার প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে নারীদের জন্য সুবিধাসহ সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক অগ্রগতিও আমাদের নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের প্রমাণ। 

বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রায় ৪৬% নারী কর্মী। নারী উদ্যোক্তারা আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্পে বড় ধরনের অবদান রাখছেন। আইটি ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স ও স্টার্ট-আপে নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি রয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার অর্থ, বাজার, ধারণা ও প্রশিক্ষণে নারীদের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।’ সরকারি ক্ষেত্রে ছয় মাসের সবেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করা হয়। 

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি, যাতে বিদেশে কর্মরত নারী কর্মীদের সুরক্ষা ও মঙ্গল নিশ্চিত করা যায়। সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র, বিধবা, পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নারীরা উপকৃত হচ্ছেন। সরকার বিনা মূল্যের আবাসন ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্বামী ও স্ত্রী উভয়কে যৌথ মালিকানা দিচ্ছে, যাতে বিচ্ছেদ হলে সেটি স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও সাইবার হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন বাড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ১ লাখ ৯৩ হাজার ছাড়াল, চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত

বাসস, ঢাকা 
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৬
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ১ লাখ ৯৩ হাজার ছাড়াল, চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দেওয়ার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৪ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

আজ শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে এই তথ্য জানা যায়। আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমদ খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে মোট ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৪ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৯ এবং নারীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৯৬৫ জন।

দেশভিত্তিক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের প্রবাসী ভোটাররা শীর্ষে রয়েছেন; যেখানে ৩৮ হাজার ২৬৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ১৯ হাজার ২৭১ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

নির্বাচন কমিশন প্রবাসীদের সুবিধার্থে নিবন্ধনের সময়সীমা আরও বাড়িয়েছে। ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে এই সময়সীমা ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকেই এই অ্যাপ ডাউনলোড করে যে কেউ ভোটার নিবন্ধন করতে পারছেন।

নির্বাচন কমিশন পোস্টাল ব্যালট পেপার নির্বিঘ্নে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সঠিক ঠিকানা প্রদানের ওপর জোর দিয়েছে। ইসি থেকে পাঠানো এক বার্তায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধ জানানো হয়েছে:

নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা দিন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা ব্যবহার করুন।

নিবন্ধনের সময় ভুল ঠিকানা দিয়ে থাকলে, ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মোবাইল অ্যাপের এডিট মেনু ব্যবহার করে তা সংশোধন করুন।

ইসি সতর্ক করেছে যে সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রদান ব্যতিরেকে পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারদের নিকট পাঠানো সম্ভব হবে না।

সেই সঙ্গে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন ও ভোট দেওয়ার সময় ইন্টারনেট ভিপিএন ব্যবহার না করার ব্যাপারে সতর্ক করেছে।

অভ্যন্তরীণ পোস্টাল ভোটিং (আইসিপিভি) চালু হবে

ইসি সচিব আখতার আহমেদ আরও জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া সরকারি কর্মকর্তা, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটার এবং নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং (আইসিপিভি) প্রক্রিয়াও চালু করা হবে।

তিনি জানান, আইসিপিভির জন্য তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ দিনের মেয়াদে নিবন্ধনপ্রক্রিয়া চালু করা হবে।

উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ১৮ নভেম্বর ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেছিলেন। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোহিঙ্গাদের জন্য ইউক্রেন থেকে এল ৩০০০ টন সূর্যমুখী তেল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তার জন্য ‘গ্রেইন ফ্রম ইউক্রেন’ উদ্যোগের অধীনে ৩ হাজার টন সূর্যমুখী তেল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের মধুরছড়ায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-এর লজিস্টিকস হাবে এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, সুইডেন এবং ইউক্রেন সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।

ইউক্রেন সরকারের ২০২২ সালে চালু করা ‘গ্রেইন ফ্রম ইউক্রেন’ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মানবিক সংকটে ইউক্রেনীয় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দেওয়া এই সূর্যমুখী তেল ইউক্রেনেই উৎপাদিত হয়েছে। এই তেলের সংগ্রহ ও পরিবহন বাবদ মোট ৭ মিলিয়ন (৭০ লাখ) মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে, যা সম্পূর্ণরূপে সুইডেন সরকার বহন করেছে।

অনুষ্ঠানের পর প্রতিনিধিদল খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে ডব্লিউএফপি-এর ই-ভাউচার পদ্ধতির মাধ্যমে সূর্যমুখী তেল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই সিস্টেমে প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারকে মাসিক মাথাপিছু ১২ মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা দিয়ে তাঁরা প্রয়োজনীয় খাদ্য, তাজা সবজি, মাছ ও মুরগি কিনতে পারেন। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কেনার এই ব্যবস্থাটি স্থানীয় অর্থনীতিকেও সমর্থন জোগায়।

অনুষ্ঠানে ইউক্রেন, সুইডেন এবং ডব্লিউএফপি-এর প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ বজায় রাখার এবং সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ডব্লিউএফপি-এর কার্যক্রমে ১৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতির কারণে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসেই খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শত্রুমুক্ত তিনটি জেলা

নতুন দেশের জন্য এল প্রথম স্বীকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, যশোর, কুড়িগ্রাম ও ফেনী প্রতিনিধি
নতুন দেশের জন্য এল প্রথম স্বীকৃতি

স্বাধীনতা ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া বাংলাদেশকে একই দিন স্বীকৃতি দিয়েছিল ভুটান ও ভারত। দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর। যুদ্ধের শেষ দিকে বাংলাদেশের বিজয় ক্রমেই নিশ্চিত হয়ে আসায় এই স্বীকৃতি এসেছিল। আবার একই দিন শত্রুসেনামুক্ত হয়েছিল দেশের সীমান্তবর্তী দুই জেলা যশোর ও ফেনী।

বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাছে ভুটানের তৎকালীন রাজা স্বীকৃতি দিয়ে পাঠিয়েছিলেন এক ঐতিহাসিক বার্তা।

ভুটান ও ভারতের মধ্যে কোন দেশ প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল, এ নিয়ে কখনো কখনো মিডিয়ার খবরের সূত্রে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ভারত ও ভুটান যথাক্রমে ৬ ও ৭ ডিসেম্বর স্বীকৃতি দিয়েছে—মিডিয়ার একাংশের এমন খবরের পর একবার বিতর্ক ছড়ায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক সত্য নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই...। ১৯৭১ সালে ভুটান প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ৬ ডিসেম্বর একটি ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।...আমাদের ইতিহাসে রয়েছে যে এমনকি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের আগেই ভুটান প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারত ও ভুটান উভয়ই ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু প্রথমে দিয়েছে ভুটান।’

অর্থাৎ দুই প্রতিবেশীর স্বীকৃতি এসেছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে।

সচিব জানিয়েছিলেন, স্বীকৃতির বার্তায় ভুটানের তখনকার রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক বাংলাদেশের জনগণের সাফল্য কামনা করেন এবং স্বাধীনতা-যুদ্ধের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করেন।’

ভুটান সরকার ২০১৪ সালে বাংলাদেশের কাছে সেই ওয়্যারলেস বার্তার একটি টেক্সট হস্তান্তর করেছিল।

এই দিনেই শত্রুমুক্ত যশোর ও ফেনী

একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনী ও যশোরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।

৬ তারিখ দুপুরের পরপরই যশোর সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা। শত্রুমুক্ত হয় যশোর জেলা। শহরে ওড়ে বিজয়ী বাংলাদেশের পতাকাখচিত প্রথম পতাকা।

যশোরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম জানান, ১৯৭১ সালের ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ সময় সহায়তাকারী ভারতের মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাকিস্তানি সেনা স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পর্যুদস্ত হয়ে পাকিস্তানি বাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পালানো শুরু করে। যশোর সেনানিবাস ছেড়ে তারা খুলনার গিলাতলা সেনানিবাসের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলির রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড লড়াই হয়। ৬ ডিসেম্বর বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী সেনানিবাসে প্রবেশ করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে শহরে। মুক্তির আনন্দে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে ফেটে পড়ে গোটা জেলার মানুষ।

ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসন আজ শনিবার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মো. আশেক হাসান।

৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামও হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনে বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকারের নেতৃত্বে ৩৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বিকেল ৪টায় কুড়িগ্রাম শহরে প্রথম প্রবেশ করে। এরপর তারা নতুন শহরের পানির ট্যাংকের ওপরে (বর্তমান সদর থানার উত্তরে অবস্থিত) স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে চারদিকে ছড়িয়ে দেয় বিজয়বার্তা। বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানাতে হাজারো মুক্তিকামী মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।

মুক্তিযুদ্ধে অর্ধশতাধিক অভিযানে অংশ নেওয়া আব্দুল হাই সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। আমরা যুদ্ধ করেছি জাতির মুক্তির আশায়; প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদের জন্য।...মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নেই। সবাই শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে।’

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কুড়িগ্রাম জেলা ও সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ড, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, প্রীতিলতা ব্রিগেডসহ কয়েকটি সংগঠন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আজ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশের সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণে বিজয় র‌্যালি করে শহরের কলেজ মোড়ের বিজয়স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল আরেক জেলা ফেনী। পাকিস্তানি সেনারা প্রথম আত্মসমর্পণ করেছিল সীমান্তের বিলোনিয়ায়।

৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনী শহরে প্রবেশ করতে থাকেন। পরে শহরের রাজাঝির দীঘিরপাড়ে ডাকবাংলোর সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে কেঁপে ওঠে শহর। পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস সদস্যরা ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যান।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, এখনো তরুণ প্রজন্ম চাইলে এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এজন্য সবার আগে দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দিতে হবে।’

ফেনীমুক্ত দিবস সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ভিপি বলেন, ‘ডিসেম্বরের শুরু থেকে গেরিলা যুদ্ধ করতে করতে আমরা পাঁচগাছিয়া এলাকার কাছাকাছি চলে আসি। ৫ ডিসেম্বর আমরা ঠিক ফেনীর কাছাকাছি যখন আসি, তখন পাকিস্তানি সেনারা রণেভঙ্গ দিয়ে শেষ রাতের দিকে শুভপুর ও বারইয়ারহাট হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।

ঐতিহাসিক এদিনটি উপলক্ষে আজ ফেনীতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ এতে অংশ নিয়ে স্মরণ করবেন বিজয়ের সেই স্মরণীয় মুহূর্তকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্তঃসত্ত্বা সোনালীকে অবশেষে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করল বিজিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১১
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সোনালীকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ছবি: বিজিবি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সোনালীকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ছবি: বিজিবি

ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর কূটনৈতিক যোগাযোগের ভিত্তিতে অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মানবিক ঝুঁকি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আইসিপিতে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সোনালী খাতুন এবং তার আট বছরের সন্তান মো. সাব্বির শেখকে সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবি সদরদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হস্তান্তর শেষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, বিএসএফের এই অমানবিক পুশইন কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড ও দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। দীর্ঘদিন ধরে এসব কর্মকাণ্ড সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকট তৈরি করছে এবং দুই দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও শুভ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুর নিরাপত্তা এবং চিকিৎসাগত ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির এই উদ্যোগ দায়িত্বশীলতার এক উদাহরণ।

বিজিবি আশা প্রকাশ করেছে, পুশইনসহ এ ধরনের আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী ও অমানবিক কর্মকাণ্ড বিএসএফ ভবিষ্যতে বন্ধ করবে এবং সীমান্তে মানবিক, আইনসঙ্গত ও সৌহার্দ্যপূর্ণ প্রক্রিয়া বজায় রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত