Ajker Patrika

পুলিশ কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সভা

মাদকের মামলার জন্য পৃথক তথ্য ব্যবস্থাপনা

  • অনলাইনে এফআইআর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
  • চাকরিপ্রার্থীর সনদ, নম্বরপত্র যাচাই পুলিশ ভেরিফিকেশনের অংশ নয়।
  • চাকরির ভেরিফিকেশন দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৪০
মাদকের মামলার জন্য পৃথক তথ্য ব্যবস্থাপনা

দেশের সব আসামির মামলা-সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত থাকা পুলিশের ক্রিমিনাল ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) সফটওয়্যারে মাদক কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার দিচ্ছে না সরকার। পুলিশ সদর দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিজস্ব সিডিএমএস তৈরি করবে।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে ২৩ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গতকাল সোমবার পাঠানো সভার কার্যবিবরণীতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পুলিশের সিডিএমএস সফটওয়্যারে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার প্রদান বা বিকল্প হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে নিজস্ব সিডিএমএস তৈরি করে সেখানে সময়-সময় জনগণের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করে পুলিশ সংস্কার কমিশন।

এ বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে, পুলিশের সিডিএমএস সফটওয়্যারে অনেক স্পর্শকাতর তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এই সফটওয়্যারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাইরে যে কারও প্রবেশাধিকার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে পুলিশ মহাপরিদর্শক উল্লেখ করেছেন। এ কারণে সফটওয়্যারটিতে জনগণের সরাসরি প্রবেশাধিকার দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। আইজিপি জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিজস্ব সিডিএমএস তৈরি করতে পারে এবং এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে পারবে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুলিশের সিডিএমএস সফটওয়্যারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ছাড়া যে কারও প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তর দেবে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য ও অন্যান্য সহায়তা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিজস্ব সিডিএমএস তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ করবে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিজস্ব সিডিএমএসে জনগণের প্রবেশাধিকার থাকবে কি না, কার্যবিবরণীতে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

থানায় বাধ্যতামূলকভাবে জিডি গ্রহণ নিয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সভায় অনলাইনে জিডি গ্রহণে জোর দেওয়া হয়েছে। সভায় আইজিপি জানান, ৭৫ শতাংশ থানা বা ইউনিটে অনলাইন জিডি কার্যক্রম চালু রয়েছে। সব থানায় পর্যায়ক্রমে অনলাইন জিডি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২২ জুলাই পর্যন্ত ৫ হাজার ৮০৬টি জিডি অনলাইনে দায়ের হয়েছে।

কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, অনলাইনে এফআইআর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এ জন্য পুলিশ অধিদপ্তর ফৌজদারি কার্যবিধিতে সংশোধনীর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অনলাইন এফআইআরের ফরম্যাট তৈরির কার্যক্রম চলছে।

চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, নম্বরপত্র যাচাই-বাছাই পুলিশ ভেরিফিকেশনের অংশ হবে না বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শ চাকরিপ্রার্থীর ভেরিফিকেশন রিপোর্টের অংশ হবে না। চাকরির জন্য সব পুলিশ ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।

অভিযান পরিচালনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের কাছে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম, ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস থাকা ও ভেস্ট পরার সুপারিশ করে সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে সভায় আইজিপি বলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে এই পাইলটিং শুরু হয়েছে। সারা দেশে এই কার্যক্রম শুরু করতে ৪০ হাজার জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম, ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস ও ভেস্ট প্রয়োজন। এসব বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

কেস ডায়েরি আদালতে দাখিল করে আদালতের আদেশ ছাড়া কোনোভাবেই এফআইআর-বহির্ভূত আসামি গ্রেপ্তার না করার সুপারিশ করেছিল সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে সভায় স্বরাষ্ট্রসচিব ও আইজিপি জানান, প্রতিটি ক্ষেত্রে কেস ডায়েরি আদালতে দাখিল করে আদালতের আদেশক্রমে আসামি ধরতে হলে প্রকৃত অপরাধীর পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। ফলে সভায় বর্তমান পদ্ধতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পুলিশের জন্য পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সার্ভিস গঠনের সুপারিশের বিষয়ে সভায় স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, মেডিকেল সার্ভিস গঠন করা হলে এর আওতায় নিয়োগকৃত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পদোন্নতি ও পদায়নের বিষয়ে জটিলতা তৈরি হবে। তাঁদের মধ্যে পেশা নিয়ে হতাশা তৈরি হবে এবং তাঁদের কাছ থেকে সেবা প্রাপ্তি ব্যাহত হবে। ফলে নিচের দিকের পদে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে প্রেষণে এবং সিনিয়র পর্যায়ে প্রেষণে বা চুক্তিভিত্তিক কনসালট্যান্ট নিয়োগ করে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন সচিব।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সদর দপ্তর যৌথভাবে প্রতিবেদন সরকারকে দেবে। আর সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের সভায় পুলিশের অ্যাজেন্ডা থাকলে আইজিপিকে বোর্ডে উপস্থিত রাখার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরে স্থাপিত আইজিপিস কপ্লেইন সেলের মতো করে র‍্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে সেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত ছাড়াও ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর সুরক্ষার জন্য আইন ও বিচার বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের উদ্যোগ এবং ছয়টি বিভাগীয় শহরে সায়েন্টিফিক ইন্টিগ্রেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষিণ সুদানে যাত্রা করলেন নৌবাহিনীর ৭১ সদস্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস মিশন ইন সাউথ সুদান’ (আনমিস)-এ নিয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ জন নৌসদস্য আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাঁরা দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে রওনা হন। এই কন্টিনজেন্ট সেখানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। এর আগে ৯ ডিসেম্বর প্রথম গ্রুপে ৯৯ জন নৌসদস্য এই মিশনে যোগ দিতে দেশ ছাড়েন।

দক্ষিণ সুদানের প্রতিকূল ও দুর্গম এলাকায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে—নীল নদের নৌপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানি, খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও মানবিক সাহায্য বহনকারী বার্জসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। নৌপথে জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণ ও তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। স্থানীয় জনগণের অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা এবং বেসামরিক নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ উদ্ধার এবং মিশনে নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক সদস্যদের রসদসামগ্রী দুর্গম স্থানে পৌঁছে দেওয়া।

এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর
এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর

গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। নীল নদের ১ হাজার ৩১১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত ৭১টি লজিস্টিক অপারেশন (অপারেশন লাইফ লাইন) সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন নৌসদস্যরা।

দক্ষিণ সুদান ছাড়াও লেবাননের ভূমধ্যসাগরে উপমহাদেশের একমাত্র মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ নিয়োজিত রয়েছে। নৌবাহিনীর এই গৌরবময় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম উজ্জ্বল করছে।

উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই-তে সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউএন ঘাঁটি আক্রমণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত ও আটজন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানুয়ারির মাঝামাঝি সাংবাদিকদের মহাসম্মেলনের ঘোষণা নোয়াব সভাপতির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৩
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝিতে সাংবাদিকদের মহাসম্মেলন আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছেন সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ।

তিনি জানিয়েছেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, আগুন এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে এ মহাসম্মেলন করা হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার প্রতিবাদ সভায় এ কে আজাদ এ কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)।

সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে যখন হামলা হলো, তখন ডেইলি স্টার সম্পাদক সরকারের সব সংস্থাকে অনুনয় করেছিলেন নিরাপত্তা দিতে। কিন্তু কারও সাহায্য তিনি পাননি।

সভায় নোয়াব সভাপতি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথম আলোতে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। তখনই ডেইলি স্টার সম্পাদক আশঙ্কা করেছিলেন এরপরে হামলাকারীরা ডেইলি স্টারে যাবে। তখন তিনি সরকারের এমন কোনো সংস্থা নাই, এমন কোনো ব্যক্তি নাই, যাকে অনুরোধ, অনুনয়-বিনয় করেন নাই যে আপনারা ডেইলি স্টারের সামনে ‘প্রোটেকশন’ দেন। কিন্তু তিনি কোনো সাহায্য সাড়া পাননি। যখন পেয়েছেন পোড়ার পরে পেয়েছেন।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ কে আজাদ আরও বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক যখন অসহায়ের মতো নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর সামনে দিয়ে লুটকারীরা কম্পিউটার, চেয়ার, মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে তখন আইনশৃঙ্খলার সমস্ত বাহিনী ছিল। কিন্তু বাহিনীগুলোর কেউ একটা প্রতিবাদ করেনি।

নোয়াব সভাপতি আরও বলেন, সেই রাতে ডেইলি সম্পাদক তাঁকে জানান, ভবনটিতে ২৮ থেকে ২৯ জন আটকা পড়েছিল। আর ১৫ মিনিট আগুন জ্বললে তাদের অনেকেই সেই ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেত।

একে আজাদ বলেন, আমরা এভাবে মারা যেতে চাই না। এভাবে আমাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করা যাবে না।

প্রতিবাদ সভায় জানানো হয়, সাংবাদিকদের মতামতের ভিত্তিতে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মহাসম্মেলন আয়োজন করা হবে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, উদীচী, ছায়ানটে যারা আগুন দিয়েছে যত দিন তাদের বিচার না হবে, সাংবাদিকেরা যত দিন মত প্রকাশের স্বাধীনতা না পাবে, তত দিন পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে শুধু প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নয়, আজকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। তাই গণতন্ত্রী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।

ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ডেইলি স্টার, প্রথম আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল।

প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাঁদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

বাসস, ঢাকা  
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার ঢাকায় রাশিয়ান ফেডারেশনের দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার বর্তমান উত্তেজনা যত দ্রুত সম্ভব নিরসন করা প্রয়োজন। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, রাশিয়া দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। খোজিন বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হওয়া উচিত।’ বর্তমান পরিস্থিতিকে আর বাড়তে না দেওয়ার বিষয়েও তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সতর্ক করেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। রাষ্ট্রদূত খোজিন আশা প্রকাশ করেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি নির্বাচনের আগে দেশে একটি অনুকূল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, রাশিয়া এ বিষয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য তারা এখন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

২০২৬ সালের হজে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধনকারীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত হজ-১ শাখা থেকে জারিকৃত পত্রে বলা হয়েছে, ‘হজ ২০২৬-এর সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জমাদানপূর্বক প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। হজ প্যাকেজ ও গাইডলাইন ২০২৬ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের সমুদয় অর্থ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে জমা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। বর্ণিতাবস্থায়, হজ ২০২৬ এর যে সকল হজযাত্রী নির্বাচিত প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ জমা প্রদান করেননি তাদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট সমুদয় অর্থ জমা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

এ সময়ের মধ্যে কোনো নিবন্ধিত হজযাত্রী প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা না দিলে সেই হজযাত্রীর হজে গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত