আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক মাধুর্য। শৈশব থেকে তাঁর চারিত্রিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করত। যৌবনে মক্কার সবচেয়ে বিশ্বস্ত যুবক তথা আল-আমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন খোদ মক্কার নেতৃস্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। নবুওয়ত লাভের পর তাঁর অনুপম ব্যক্তিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে আরবের পথে-প্রান্তরে। তাঁর মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে শত্রুরাও নির্দ্বিধায় তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে পাঠ করেছেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ তাঁর জীবদ্দশাতেই সেকালের অনেক বড় শাসকও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য আলামত দেখে তাঁকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। যুগে যুগে সত্যসন্ধানী অনেক অমুসলিম গবেষকও তাঁর অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছেন।
ওমানের বাদশাহ জুলানদি ছিলেন সত্যানুসন্ধানী বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দাওয়াত পাঠান। সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.) দাওয়াত নিয়ে যান। বিচক্ষণ এই বাদশাহ নবীজি (সা.)-এর সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহর কসম, (দূত) আমাকে এমন একজন উম্মি নবীর কথা বলেছেন, তিনি যখনই কোনো ভালো কাজের আদেশ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই সেই কাজটি করেন। আর যে কাজ তিনি নিষেধ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই তা বর্জন করেন। তিনি বিজয়ী হয়েও অহংকার করেন না। কেউ তাঁর ওপর প্রতাপ দেখালে রুষ্ট হন না। তিনি ওয়াদা পালন করেন। চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিঃসন্দেহে তিনি একজন সত্য নবী।’ (আশ-শিফা: ১/ ২৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রমাধুর্যের খানিক ঝলক বাদশাহ জুলানদির এই মন্তব্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। নবীজির চরিত্র ছিল পূর্ণতা ও পরিব্যাপ্তিতে বিভাসিত। তাঁর চরিত্রের প্রতিটি দিক ছিল ষোলোকলায় পূর্ণ। পাহাড়সম ধৈর্য ও দুর্বার সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয় ছিল তাঁর যাপিত জীবনের ছত্রে ছত্রে। দয়ামায়া, সহনশীলতা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ চূড়ায় ছিল তাঁর অবস্থান। সময়ের আবর্তনে তাঁর চরিত্রিক মাধুর্যে তারতম্য ঘটেনি। জীবনের কোনো সময়ে একটু বেশি আবার কখনো একটু কম—এমনটা ঘটেনি। তিনি ছাড়া জগতের আর কোনো মানুষের মধ্যে একসঙ্গে এত চারিত্রিক গুণের সমাবেশ পরিলক্ষিত হয়নি। বিখ্যাত জার্মান লেখক ও দার্শনিক কবি জোহান গ্যাটে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ইতিহাসের পাতায় আমি তন্ন তন্ন করে সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ মানুষের দৃষ্টান্ত খুঁজেছি, অবশেষে তা পেয়েছি আরবের নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে।’ (শামসুল আরব তাসতায়ু আলাল গারব: ৪৬৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রাবলির মূল উৎস কী ছিল? কোন সে প্রেরণায় চরিত্রমাধুর্যে তিনি আকাশের উচ্চতাকেও হার মানিয়েছেন? তা ছিল পবিত্র কোরআন। হ্যাঁ, কোরআনই ছিল তাঁর অনন্য চরিত্র মাধুর্যের উৎস। তিনি পবিত্র কোরআন থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আহরণ ও সমৃদ্ধ করেছেন। ফলে কোরআনই তাঁর পূর্ণ গুণাবলিকে পোঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। তাঁর সুন্দর শিষ্টাচারকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এটা সম্ভব হয়েছে কোরআনের প্রতি তাঁর আত্মনিবেদনের বদৌলতে। তিনি নিজেকে কোরআনের প্রতিটি কল্যাণের দিকেই সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কোরআনের অনুপম নির্দেশনামালা তাঁর যাপিত জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে চমৎকারভাবে। যেন তিনি ছিলেন কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই তো হজরত সাদ ইবনে হিশাম ইবনে আমের (রা.) যখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি?’ সাদ ইবনে হিশাম বললেন, ‘পড়েছি।’ হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র-শিষ্টাচার।’ (মুসলিম: ৭৪৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর পরিবারে, সাথি-সঙ্গী মুমিনদের মাঝে, সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের মাঝে। এমনকি যুদ্ধরত শত্রুদলের মাঝেও তাঁর সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ তাঁর চরিত্রকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। কুরাইশ সরদার আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণের আগেই তাঁর উত্তম চরিত্রের নমুনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আপনার ওপর আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আপনি একজন মহান ব্যক্তি। আমি যুদ্ধ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনি কত-ই না উত্তম যোদ্ধা ছিলেন! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আপনি কতই না উত্তম চুক্তিকারী ছিলেন! মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’ (মারিফাতুস সাহাবাহ: ৩/ ১৫০৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্র এতটা ব্যাপক যে, তা যেন এক বিশাল দরিয়া। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হয়েছেন মুসলিম থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক অমুসলিম পণ্ডিতও। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর অনন্য চরিত্রের কথা স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক উইলিয়াম ম্যুর বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ছিল সহজ ও স্বাভাবিকতার নান্দনিক চিত্র। তাঁর অনন্য রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর বহু অনুসারীর কথায়। বিনয়, নম্রতা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্যদান এবং প্রচুর দানশীলতা তাঁর চরিত্রকে দিয়েছিল এক অনন্যসাধারণ সৌন্দর্য। তাঁর ভালোবাসার আকর্ষণ চারপাশের সবাইকে মোহিত করে রাখত...।’ (হায়াতু মুহাম্মদ)
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সংক্রামক। এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। শুদ্ধ ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুদ্ধ হয় আশপাশের মানুষ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চারিত্রিক পূর্ণতা তাঁর সাহাবিদেরও পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছিল। ফলে তাঁরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন অনুপম এক পৃথিবী। তাই নিজেকে শুদ্ধ করতে হলে, সমাজকে উন্নত ও মানবিক করতে হলে তাঁর চরিত্র ধারণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক মাধুর্য। শৈশব থেকে তাঁর চারিত্রিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করত। যৌবনে মক্কার সবচেয়ে বিশ্বস্ত যুবক তথা আল-আমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন খোদ মক্কার নেতৃস্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। নবুওয়ত লাভের পর তাঁর অনুপম ব্যক্তিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে আরবের পথে-প্রান্তরে। তাঁর মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে শত্রুরাও নির্দ্বিধায় তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে পাঠ করেছেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ তাঁর জীবদ্দশাতেই সেকালের অনেক বড় শাসকও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য আলামত দেখে তাঁকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। যুগে যুগে সত্যসন্ধানী অনেক অমুসলিম গবেষকও তাঁর অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছেন।
ওমানের বাদশাহ জুলানদি ছিলেন সত্যানুসন্ধানী বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দাওয়াত পাঠান। সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.) দাওয়াত নিয়ে যান। বিচক্ষণ এই বাদশাহ নবীজি (সা.)-এর সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহর কসম, (দূত) আমাকে এমন একজন উম্মি নবীর কথা বলেছেন, তিনি যখনই কোনো ভালো কাজের আদেশ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই সেই কাজটি করেন। আর যে কাজ তিনি নিষেধ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই তা বর্জন করেন। তিনি বিজয়ী হয়েও অহংকার করেন না। কেউ তাঁর ওপর প্রতাপ দেখালে রুষ্ট হন না। তিনি ওয়াদা পালন করেন। চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিঃসন্দেহে তিনি একজন সত্য নবী।’ (আশ-শিফা: ১/ ২৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রমাধুর্যের খানিক ঝলক বাদশাহ জুলানদির এই মন্তব্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। নবীজির চরিত্র ছিল পূর্ণতা ও পরিব্যাপ্তিতে বিভাসিত। তাঁর চরিত্রের প্রতিটি দিক ছিল ষোলোকলায় পূর্ণ। পাহাড়সম ধৈর্য ও দুর্বার সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয় ছিল তাঁর যাপিত জীবনের ছত্রে ছত্রে। দয়ামায়া, সহনশীলতা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ চূড়ায় ছিল তাঁর অবস্থান। সময়ের আবর্তনে তাঁর চরিত্রিক মাধুর্যে তারতম্য ঘটেনি। জীবনের কোনো সময়ে একটু বেশি আবার কখনো একটু কম—এমনটা ঘটেনি। তিনি ছাড়া জগতের আর কোনো মানুষের মধ্যে একসঙ্গে এত চারিত্রিক গুণের সমাবেশ পরিলক্ষিত হয়নি। বিখ্যাত জার্মান লেখক ও দার্শনিক কবি জোহান গ্যাটে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ইতিহাসের পাতায় আমি তন্ন তন্ন করে সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ মানুষের দৃষ্টান্ত খুঁজেছি, অবশেষে তা পেয়েছি আরবের নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে।’ (শামসুল আরব তাসতায়ু আলাল গারব: ৪৬৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রাবলির মূল উৎস কী ছিল? কোন সে প্রেরণায় চরিত্রমাধুর্যে তিনি আকাশের উচ্চতাকেও হার মানিয়েছেন? তা ছিল পবিত্র কোরআন। হ্যাঁ, কোরআনই ছিল তাঁর অনন্য চরিত্র মাধুর্যের উৎস। তিনি পবিত্র কোরআন থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আহরণ ও সমৃদ্ধ করেছেন। ফলে কোরআনই তাঁর পূর্ণ গুণাবলিকে পোঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। তাঁর সুন্দর শিষ্টাচারকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এটা সম্ভব হয়েছে কোরআনের প্রতি তাঁর আত্মনিবেদনের বদৌলতে। তিনি নিজেকে কোরআনের প্রতিটি কল্যাণের দিকেই সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কোরআনের অনুপম নির্দেশনামালা তাঁর যাপিত জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে চমৎকারভাবে। যেন তিনি ছিলেন কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই তো হজরত সাদ ইবনে হিশাম ইবনে আমের (রা.) যখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি?’ সাদ ইবনে হিশাম বললেন, ‘পড়েছি।’ হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র-শিষ্টাচার।’ (মুসলিম: ৭৪৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর পরিবারে, সাথি-সঙ্গী মুমিনদের মাঝে, সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের মাঝে। এমনকি যুদ্ধরত শত্রুদলের মাঝেও তাঁর সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ তাঁর চরিত্রকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। কুরাইশ সরদার আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণের আগেই তাঁর উত্তম চরিত্রের নমুনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আপনার ওপর আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আপনি একজন মহান ব্যক্তি। আমি যুদ্ধ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনি কত-ই না উত্তম যোদ্ধা ছিলেন! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আপনি কতই না উত্তম চুক্তিকারী ছিলেন! মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’ (মারিফাতুস সাহাবাহ: ৩/ ১৫০৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্র এতটা ব্যাপক যে, তা যেন এক বিশাল দরিয়া। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হয়েছেন মুসলিম থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক অমুসলিম পণ্ডিতও। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর অনন্য চরিত্রের কথা স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক উইলিয়াম ম্যুর বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ছিল সহজ ও স্বাভাবিকতার নান্দনিক চিত্র। তাঁর অনন্য রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর বহু অনুসারীর কথায়। বিনয়, নম্রতা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্যদান এবং প্রচুর দানশীলতা তাঁর চরিত্রকে দিয়েছিল এক অনন্যসাধারণ সৌন্দর্য। তাঁর ভালোবাসার আকর্ষণ চারপাশের সবাইকে মোহিত করে রাখত...।’ (হায়াতু মুহাম্মদ)
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সংক্রামক। এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। শুদ্ধ ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুদ্ধ হয় আশপাশের মানুষ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চারিত্রিক পূর্ণতা তাঁর সাহাবিদেরও পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছিল। ফলে তাঁরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন অনুপম এক পৃথিবী। তাই নিজেকে শুদ্ধ করতে হলে, সমাজকে উন্নত ও মানবিক করতে হলে তাঁর চরিত্র ধারণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর।
আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক মাধুর্য। শৈশব থেকে তাঁর চারিত্রিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করত। যৌবনে মক্কার সবচেয়ে বিশ্বস্ত যুবক তথা আল-আমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন খোদ মক্কার নেতৃস্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। নবুওয়ত লাভের পর তাঁর অনুপম ব্যক্তিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে আরবের পথে-প্রান্তরে। তাঁর মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে শত্রুরাও নির্দ্বিধায় তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে পাঠ করেছেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ তাঁর জীবদ্দশাতেই সেকালের অনেক বড় শাসকও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য আলামত দেখে তাঁকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। যুগে যুগে সত্যসন্ধানী অনেক অমুসলিম গবেষকও তাঁর অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছেন।
ওমানের বাদশাহ জুলানদি ছিলেন সত্যানুসন্ধানী বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দাওয়াত পাঠান। সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.) দাওয়াত নিয়ে যান। বিচক্ষণ এই বাদশাহ নবীজি (সা.)-এর সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহর কসম, (দূত) আমাকে এমন একজন উম্মি নবীর কথা বলেছেন, তিনি যখনই কোনো ভালো কাজের আদেশ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই সেই কাজটি করেন। আর যে কাজ তিনি নিষেধ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই তা বর্জন করেন। তিনি বিজয়ী হয়েও অহংকার করেন না। কেউ তাঁর ওপর প্রতাপ দেখালে রুষ্ট হন না। তিনি ওয়াদা পালন করেন। চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিঃসন্দেহে তিনি একজন সত্য নবী।’ (আশ-শিফা: ১/ ২৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রমাধুর্যের খানিক ঝলক বাদশাহ জুলানদির এই মন্তব্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। নবীজির চরিত্র ছিল পূর্ণতা ও পরিব্যাপ্তিতে বিভাসিত। তাঁর চরিত্রের প্রতিটি দিক ছিল ষোলোকলায় পূর্ণ। পাহাড়সম ধৈর্য ও দুর্বার সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয় ছিল তাঁর যাপিত জীবনের ছত্রে ছত্রে। দয়ামায়া, সহনশীলতা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ চূড়ায় ছিল তাঁর অবস্থান। সময়ের আবর্তনে তাঁর চরিত্রিক মাধুর্যে তারতম্য ঘটেনি। জীবনের কোনো সময়ে একটু বেশি আবার কখনো একটু কম—এমনটা ঘটেনি। তিনি ছাড়া জগতের আর কোনো মানুষের মধ্যে একসঙ্গে এত চারিত্রিক গুণের সমাবেশ পরিলক্ষিত হয়নি। বিখ্যাত জার্মান লেখক ও দার্শনিক কবি জোহান গ্যাটে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ইতিহাসের পাতায় আমি তন্ন তন্ন করে সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ মানুষের দৃষ্টান্ত খুঁজেছি, অবশেষে তা পেয়েছি আরবের নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে।’ (শামসুল আরব তাসতায়ু আলাল গারব: ৪৬৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রাবলির মূল উৎস কী ছিল? কোন সে প্রেরণায় চরিত্রমাধুর্যে তিনি আকাশের উচ্চতাকেও হার মানিয়েছেন? তা ছিল পবিত্র কোরআন। হ্যাঁ, কোরআনই ছিল তাঁর অনন্য চরিত্র মাধুর্যের উৎস। তিনি পবিত্র কোরআন থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আহরণ ও সমৃদ্ধ করেছেন। ফলে কোরআনই তাঁর পূর্ণ গুণাবলিকে পোঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। তাঁর সুন্দর শিষ্টাচারকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এটা সম্ভব হয়েছে কোরআনের প্রতি তাঁর আত্মনিবেদনের বদৌলতে। তিনি নিজেকে কোরআনের প্রতিটি কল্যাণের দিকেই সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কোরআনের অনুপম নির্দেশনামালা তাঁর যাপিত জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে চমৎকারভাবে। যেন তিনি ছিলেন কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই তো হজরত সাদ ইবনে হিশাম ইবনে আমের (রা.) যখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি?’ সাদ ইবনে হিশাম বললেন, ‘পড়েছি।’ হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র-শিষ্টাচার।’ (মুসলিম: ৭৪৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর পরিবারে, সাথি-সঙ্গী মুমিনদের মাঝে, সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের মাঝে। এমনকি যুদ্ধরত শত্রুদলের মাঝেও তাঁর সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ তাঁর চরিত্রকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। কুরাইশ সরদার আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণের আগেই তাঁর উত্তম চরিত্রের নমুনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আপনার ওপর আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আপনি একজন মহান ব্যক্তি। আমি যুদ্ধ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনি কত-ই না উত্তম যোদ্ধা ছিলেন! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আপনি কতই না উত্তম চুক্তিকারী ছিলেন! মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’ (মারিফাতুস সাহাবাহ: ৩/ ১৫০৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্র এতটা ব্যাপক যে, তা যেন এক বিশাল দরিয়া। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হয়েছেন মুসলিম থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক অমুসলিম পণ্ডিতও। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর অনন্য চরিত্রের কথা স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক উইলিয়াম ম্যুর বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ছিল সহজ ও স্বাভাবিকতার নান্দনিক চিত্র। তাঁর অনন্য রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর বহু অনুসারীর কথায়। বিনয়, নম্রতা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্যদান এবং প্রচুর দানশীলতা তাঁর চরিত্রকে দিয়েছিল এক অনন্যসাধারণ সৌন্দর্য। তাঁর ভালোবাসার আকর্ষণ চারপাশের সবাইকে মোহিত করে রাখত...।’ (হায়াতু মুহাম্মদ)
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সংক্রামক। এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। শুদ্ধ ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুদ্ধ হয় আশপাশের মানুষ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চারিত্রিক পূর্ণতা তাঁর সাহাবিদেরও পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছিল। ফলে তাঁরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন অনুপম এক পৃথিবী। তাই নিজেকে শুদ্ধ করতে হলে, সমাজকে উন্নত ও মানবিক করতে হলে তাঁর চরিত্র ধারণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক মাধুর্য। শৈশব থেকে তাঁর চারিত্রিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করত। যৌবনে মক্কার সবচেয়ে বিশ্বস্ত যুবক তথা আল-আমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন খোদ মক্কার নেতৃস্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। নবুওয়ত লাভের পর তাঁর অনুপম ব্যক্তিত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে আরবের পথে-প্রান্তরে। তাঁর মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে শত্রুরাও নির্দ্বিধায় তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে পাঠ করেছেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ তাঁর জীবদ্দশাতেই সেকালের অনেক বড় শাসকও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য আলামত দেখে তাঁকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। যুগে যুগে সত্যসন্ধানী অনেক অমুসলিম গবেষকও তাঁর অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছেন।
ওমানের বাদশাহ জুলানদি ছিলেন সত্যানুসন্ধানী বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দাওয়াত পাঠান। সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.) দাওয়াত নিয়ে যান। বিচক্ষণ এই বাদশাহ নবীজি (সা.)-এর সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহর কসম, (দূত) আমাকে এমন একজন উম্মি নবীর কথা বলেছেন, তিনি যখনই কোনো ভালো কাজের আদেশ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই সেই কাজটি করেন। আর যে কাজ তিনি নিষেধ করেন, প্রথমে তিনি নিজেই তা বর্জন করেন। তিনি বিজয়ী হয়েও অহংকার করেন না। কেউ তাঁর ওপর প্রতাপ দেখালে রুষ্ট হন না। তিনি ওয়াদা পালন করেন। চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিঃসন্দেহে তিনি একজন সত্য নবী।’ (আশ-শিফা: ১/ ২৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রমাধুর্যের খানিক ঝলক বাদশাহ জুলানদির এই মন্তব্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। নবীজির চরিত্র ছিল পূর্ণতা ও পরিব্যাপ্তিতে বিভাসিত। তাঁর চরিত্রের প্রতিটি দিক ছিল ষোলোকলায় পূর্ণ। পাহাড়সম ধৈর্য ও দুর্বার সাহসিকতার অপূর্ব সমন্বয় ছিল তাঁর যাপিত জীবনের ছত্রে ছত্রে। দয়ামায়া, সহনশীলতা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ চূড়ায় ছিল তাঁর অবস্থান। সময়ের আবর্তনে তাঁর চরিত্রিক মাধুর্যে তারতম্য ঘটেনি। জীবনের কোনো সময়ে একটু বেশি আবার কখনো একটু কম—এমনটা ঘটেনি। তিনি ছাড়া জগতের আর কোনো মানুষের মধ্যে একসঙ্গে এত চারিত্রিক গুণের সমাবেশ পরিলক্ষিত হয়নি। বিখ্যাত জার্মান লেখক ও দার্শনিক কবি জোহান গ্যাটে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘ইতিহাসের পাতায় আমি তন্ন তন্ন করে সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠ মানুষের দৃষ্টান্ত খুঁজেছি, অবশেষে তা পেয়েছি আরবের নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে।’ (শামসুল আরব তাসতায়ু আলাল গারব: ৪৬৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রাবলির মূল উৎস কী ছিল? কোন সে প্রেরণায় চরিত্রমাধুর্যে তিনি আকাশের উচ্চতাকেও হার মানিয়েছেন? তা ছিল পবিত্র কোরআন। হ্যাঁ, কোরআনই ছিল তাঁর অনন্য চরিত্র মাধুর্যের উৎস। তিনি পবিত্র কোরআন থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি আহরণ ও সমৃদ্ধ করেছেন। ফলে কোরআনই তাঁর পূর্ণ গুণাবলিকে পোঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। তাঁর সুন্দর শিষ্টাচারকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এটা সম্ভব হয়েছে কোরআনের প্রতি তাঁর আত্মনিবেদনের বদৌলতে। তিনি নিজেকে কোরআনের প্রতিটি কল্যাণের দিকেই সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। কোরআনের অনুপম নির্দেশনামালা তাঁর যাপিত জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে চমৎকারভাবে। যেন তিনি ছিলেন কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই তো হজরত সাদ ইবনে হিশাম ইবনে আমের (রা.) যখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি?’ সাদ ইবনে হিশাম বললেন, ‘পড়েছি।’ হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র-শিষ্টাচার।’ (মুসলিম: ৭৪৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর পরিবারে, সাথি-সঙ্গী মুমিনদের মাঝে, সমাজে বসবাসরত অমুসলিমদের মাঝে। এমনকি যুদ্ধরত শত্রুদলের মাঝেও তাঁর সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ তাঁর চরিত্রকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। কুরাইশ সরদার আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণের আগেই তাঁর উত্তম চরিত্রের নমুনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আপনার ওপর আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আপনি একজন মহান ব্যক্তি। আমি যুদ্ধ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনি কত-ই না উত্তম যোদ্ধা ছিলেন! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, আপনি কতই না উত্তম চুক্তিকারী ছিলেন! মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’ (মারিফাতুস সাহাবাহ: ৩/ ১৫০৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তম চরিত্র এতটা ব্যাপক যে, তা যেন এক বিশাল দরিয়া। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হয়েছেন মুসলিম থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক অমুসলিম পণ্ডিতও। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর অনন্য চরিত্রের কথা স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক উইলিয়াম ম্যুর বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ছিল সহজ ও স্বাভাবিকতার নান্দনিক চিত্র। তাঁর অনন্য রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর বহু অনুসারীর কথায়। বিনয়, নম্রতা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্যদান এবং প্রচুর দানশীলতা তাঁর চরিত্রকে দিয়েছিল এক অনন্যসাধারণ সৌন্দর্য। তাঁর ভালোবাসার আকর্ষণ চারপাশের সবাইকে মোহিত করে রাখত...।’ (হায়াতু মুহাম্মদ)
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সংক্রামক। এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। শুদ্ধ ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুদ্ধ হয় আশপাশের মানুষ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চারিত্রিক পূর্ণতা তাঁর সাহাবিদেরও পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছিল। ফলে তাঁরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন অনুপম এক পৃথিবী। তাই নিজেকে শুদ্ধ করতে হলে, সমাজকে উন্নত ও মানবিক করতে হলে তাঁর চরিত্র ধারণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর।

প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
২ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

সৌদি কর্তৃপক্ষ মসজিদে হারামের অভ্যন্তরে হারিয়ে যাওয়া শিশু ও বয়স্কদের খুঁজে বের করার জন্য বিনা মূল্যে সেফটি ব্রেসলেট (রিস্টব্যান্ড) বিতরণ করছে। এই ব্রেসলেটগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে আজইয়াদ গেট ৩ এবং কিং ফাহাদ গেট ৭৯-এ।
গ্র্যান্ড মসজিদে আগত অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট গেটগুলোতে প্রবেশের সময় এই ব্রেসলেটগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। কর্মী বাহিনী এই সুনির্দিষ্ট স্থানগুলোতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে।
এই সুরক্ষা ব্রেসলেটগুলো গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে—তাদের সহজে ট্র্যাক করতে সাহায্য করছে এবং হারিয়ে যাওয়া শিশুর ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে।
নিরাপত্তাকর্মী ও মসজিদ স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া শিশু বা বয়স্কদের দেখলে ব্রেসলেটগুলো পরীক্ষা করতে পারেন এবং দ্রুত সেখানে তালিকাভুক্ত অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্রেসলেটগুলোতে যোগাযোগের তথ্য সংযুক্ত থাকে, যাতে কোনো হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে দ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ব্রেসলেটগুলো একজন দর্শনার্থীর অবস্থানকালীন পুরো সময়জুড়ে সক্রিয় থাকে এবং প্রস্থান করার সময় নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর জন্য কোনো খরচ লাগে না এবং কোনো ব্যক্তিগত তথ্যও সংরক্ষণ করা হয় না।
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন

সৌদি কর্তৃপক্ষ মসজিদে হারামের অভ্যন্তরে হারিয়ে যাওয়া শিশু ও বয়স্কদের খুঁজে বের করার জন্য বিনা মূল্যে সেফটি ব্রেসলেট (রিস্টব্যান্ড) বিতরণ করছে। এই ব্রেসলেটগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে আজইয়াদ গেট ৩ এবং কিং ফাহাদ গেট ৭৯-এ।
গ্র্যান্ড মসজিদে আগত অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট গেটগুলোতে প্রবেশের সময় এই ব্রেসলেটগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। কর্মী বাহিনী এই সুনির্দিষ্ট স্থানগুলোতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে।
এই সুরক্ষা ব্রেসলেটগুলো গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে—তাদের সহজে ট্র্যাক করতে সাহায্য করছে এবং হারিয়ে যাওয়া শিশুর ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে।
নিরাপত্তাকর্মী ও মসজিদ স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া শিশু বা বয়স্কদের দেখলে ব্রেসলেটগুলো পরীক্ষা করতে পারেন এবং দ্রুত সেখানে তালিকাভুক্ত অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্রেসলেটগুলোতে যোগাযোগের তথ্য সংযুক্ত থাকে, যাতে কোনো হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে দ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ব্রেসলেটগুলো একজন দর্শনার্থীর অবস্থানকালীন পুরো সময়জুড়ে সক্রিয় থাকে এবং প্রস্থান করার সময় নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর জন্য কোনো খরচ লাগে না এবং কোনো ব্যক্তিগত তথ্যও সংরক্ষণ করা হয় না।
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার স্বনামধন্য শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন।
আজ জোহরের নামাজের পর তাঁর কর্মস্থল জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে পিরোজপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
শৈশবেই নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি দ্বীনি শিক্ষার পথে অগ্রসর হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম বাদুরা মাদ্রাসায় উর্দু, ফারসি ও মিজান জামাত সম্পন্ন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজুলিয়া মাদ্রাসায় নাহবেমির ও হেদায়াতুন্নাহু জামাত শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে গওহরডাঙ্গা দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে কাফিয়া জামাত সমাপ্ত করে বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় শরহে জামি, শরহে বেকায়া ও হেদায়া জামাত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে জালালাইন, মেশকাত, তাকমিলে দাওরা ও তাকমিলে আদব সম্পন্ন করেন। মেশকাত জামাতে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৭ সালে তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উর্দু সাহিত্যে মাস্টার্স সমমানের কামেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেন এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। একই সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে খোশখাত বা ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষ সনদও অর্জন করেন।
শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় ভারতের রাজস্থানের জামিয়া লতিফিয়ায়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি বুখারি শরিফ, তিরমিজি, মুসলিম ও মিশকাত শরিফের দরস প্রদান করেন। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জামিয়া রহমাতুল্লাহ আমলাপাড়া মাদ্রাসায় এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জামিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে তিনি সেখানে বুখারি ও তিরমিজি শরিফের দরস শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি এখানে শিক্ষাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন এবং আমৃত্যু জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি লালমাটিয়া মাদ্রাসার পাশাপাশি লালবাগ জামিয়া শায়েখিয়া, জামিয়া আবরারিয়া কামরাঙ্গীরচরসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় বুখারি শরিফের দরস প্রদান করেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক কেল্লা শাহী মসজিদে নিয়মিত খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলাহি ও তাসাউফের ক্ষেত্রে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালেই মাওলানা মছিহুল্লাহ খান জালালাবাদী (রহ.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে শাহ আবরারুল হক (রহ.) এবং এরপর আল্লামা কমরুদ্দীনের হাতে রুজু ও বাইআত গ্রহণ করে খেলাফত লাভ করেন।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সফর করে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্রবৃন্দ ও ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার স্বনামধন্য শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন।
আজ জোহরের নামাজের পর তাঁর কর্মস্থল জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে পিরোজপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
শৈশবেই নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি দ্বীনি শিক্ষার পথে অগ্রসর হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম বাদুরা মাদ্রাসায় উর্দু, ফারসি ও মিজান জামাত সম্পন্ন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজুলিয়া মাদ্রাসায় নাহবেমির ও হেদায়াতুন্নাহু জামাত শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে গওহরডাঙ্গা দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে কাফিয়া জামাত সমাপ্ত করে বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় শরহে জামি, শরহে বেকায়া ও হেদায়া জামাত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে জালালাইন, মেশকাত, তাকমিলে দাওরা ও তাকমিলে আদব সম্পন্ন করেন। মেশকাত জামাতে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৭ সালে তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উর্দু সাহিত্যে মাস্টার্স সমমানের কামেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেন এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। একই সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে খোশখাত বা ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষ সনদও অর্জন করেন।
শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় ভারতের রাজস্থানের জামিয়া লতিফিয়ায়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি বুখারি শরিফ, তিরমিজি, মুসলিম ও মিশকাত শরিফের দরস প্রদান করেন। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জামিয়া রহমাতুল্লাহ আমলাপাড়া মাদ্রাসায় এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জামিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে তিনি সেখানে বুখারি ও তিরমিজি শরিফের দরস শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি এখানে শিক্ষাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন এবং আমৃত্যু জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি লালমাটিয়া মাদ্রাসার পাশাপাশি লালবাগ জামিয়া শায়েখিয়া, জামিয়া আবরারিয়া কামরাঙ্গীরচরসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় বুখারি শরিফের দরস প্রদান করেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক কেল্লা শাহী মসজিদে নিয়মিত খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলাহি ও তাসাউফের ক্ষেত্রে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালেই মাওলানা মছিহুল্লাহ খান জালালাবাদী (রহ.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে শাহ আবরারুল হক (রহ.) এবং এরপর আল্লামা কমরুদ্দীনের হাতে রুজু ও বাইআত গ্রহণ করে খেলাফত লাভ করেন।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সফর করে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্রবৃন্দ ও ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
২ ঘণ্টা আগে
তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ি নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
হাবিবুল্লাহ রায়হান মরহুমের কর্মজীবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘হাজি সেলিম সাহেব দীর্ঘকাল ধরে দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে একটি বিশেষ জামাতের খেদমতে তাঁর অবদান ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য, যা সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।’
হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, মরহুম হাজি সেলিমের জানাজা আজ জোহরের নামাজের পর মান্দাইল-জিনজিরা ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
তাঁর ইন্তেকালে দাওয়াত ও তাবলিগের অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাবলিগের সাথি ভাই ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছেন—তিনি যেন তাঁকে ক্ষমা করেন, তাঁর কবরকে প্রশস্ত করেন, জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে ধৈর্য ধারণের তৌফিক দান করেন।

তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ি নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
হাবিবুল্লাহ রায়হান মরহুমের কর্মজীবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘হাজি সেলিম সাহেব দীর্ঘকাল ধরে দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে একটি বিশেষ জামাতের খেদমতে তাঁর অবদান ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য, যা সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।’
হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, মরহুম হাজি সেলিমের জানাজা আজ জোহরের নামাজের পর মান্দাইল-জিনজিরা ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
তাঁর ইন্তেকালে দাওয়াত ও তাবলিগের অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাবলিগের সাথি ভাই ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছেন—তিনি যেন তাঁকে ক্ষমা করেন, তাঁর কবরকে প্রশস্ত করেন, জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে ধৈর্য ধারণের তৌফিক দান করেন।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
২ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
৪ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনগণের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হতে এবং জনগণকে বলা হয়েছে শাসকের ভালো কাজের আনুগত্য করতে।
শাসনক্ষমতা মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিয়ামত। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এই ক্ষমতা দান করেন, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা কেড়ে নেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বলো, হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ, তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও; যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা তুমি হীন করো। কল্যাণ তোমার হাতেই। নিশ্চয়ই তুমি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা আলে ইমরান: ২৬)
একজন শাসকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো ন্যায়পরায়ণতা। জনগণের অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শাসকের মৌলিক কর্তব্য। ইসলামে ন্যায়বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইনসাফ ও দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়স্বজনকে (তাদের হক) প্রদানের হুকুম দেন আর অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও জুলুম করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নাহল: ৯০)
ন্যায়পরায়ণ শাসককে পরকালে এক বিশাল পুরস্কারের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। কিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনে, যখন কোনো আশ্রয় থাকবে না, তখন ন্যায়পরায়ণ শাসক আল্লাহর আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না; প্রথমজন হলেন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (শাসক)।’ (বুখারি: ১৪২৩)
সুতরাং, ইসলামে শাসনক্ষমতাকে একটি আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়, যার সঠিক ব্যবহার শাসককে ইহকাল ও পরকালে সফল করে তোলে।

আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। কাউকে শাসক বানিয়েছেন এবং কাউকে শাসিত। এই বিন্যাস মানবসমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। ইসলামে শাসক ও জনগণের মধ্যে এক ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনগণের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হতে এবং জনগণকে বলা হয়েছে শাসকের ভালো কাজের আনুগত্য করতে।
শাসনক্ষমতা মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিয়ামত। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এই ক্ষমতা দান করেন, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা কেড়ে নেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বলো, হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ, তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও; যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো আর যাকে ইচ্ছা তুমি হীন করো। কল্যাণ তোমার হাতেই। নিশ্চয়ই তুমি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা আলে ইমরান: ২৬)
একজন শাসকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো ন্যায়পরায়ণতা। জনগণের অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শাসকের মৌলিক কর্তব্য। ইসলামে ন্যায়বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইনসাফ ও দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়স্বজনকে (তাদের হক) প্রদানের হুকুম দেন আর অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও জুলুম করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নাহল: ৯০)
ন্যায়পরায়ণ শাসককে পরকালে এক বিশাল পুরস্কারের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। কিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনে, যখন কোনো আশ্রয় থাকবে না, তখন ন্যায়পরায়ণ শাসক আল্লাহর আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না; প্রথমজন হলেন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (শাসক)।’ (বুখারি: ১৪২৩)
সুতরাং, ইসলামে শাসনক্ষমতাকে একটি আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়, যার সঠিক ব্যবহার শাসককে ইহকাল ও পরকালে সফল করে তোলে।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরশপাথর। তাঁর ছোঁয়ায় মাটির মানুষ পরিণত হতো খাঁটি সোনায়। আরবের এক গোলযোগপূর্ণ সময়ে তাঁর আগমন ঘটেছিল পৃথিবীতে। মানুষ হানাহানি, যুদ্ধ, অহংকার ও অমানবিকতায় ডুবে ছিল। আল্লাহ তাঁকে সেই অন্ধকার সমাজে হিদায়াতের প্রদীপ বানিয়ে পাঠালেন। তাঁকে দান করলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারিত্রিক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
২ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাবলিগ জামাতের প্রবীণ ও বিশিষ্ট মুরব্বি হাজি সেলিম আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কেরানীগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফজরের নামাজের আগে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৬ ঘণ্টা আগে