Ajker Patrika

স্ত্রী কমলার সমর্থক, স্বামী ট্রাম্পের— সংসারে শান্তির জন্য যা করেন এই দম্পতি

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ৩৩
স্ত্রী কমলার সমর্থক, স্বামী ট্রাম্পের— সংসারে শান্তির জন্য যা করেন এই দম্পতি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮ কোটির বেশি আগাম ভোটারের মধ্যে অন্যতম রজার ও লরার। উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলাওয়াকির বাসিন্দা এই বিবাহিত দম্পতি ভোটও দিয়েছেন।

এক ছাদের নিচে বসবাস হলেও রাজনীতিতে দুজন বিপরীত মেরুর মানুষ। একজন রক্ষণশীল, আরেকজন তুলনামূলক উদার। তাহলে দুজন একসঙ্গে একই ছাদের নিচে থাকেন কীভাবে?

তাঁদের সঙ্গে সোল্লিস গ্রিল নামে উত্তর মিলওয়াকির এক ডিনার রেস্তোরাঁয় বসে বিবিসির প্রতিবেদক জেমি কুমারাস্বামী জবাবই খুঁজছিলেন। কথায় কথায় লরা জানালেন, তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমর্থক।

কমলাকে সমর্থনের পেছনে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বিবিসিকে বলেন, কারল, আমেরিকার নারীরা ‘পেছনে ফিরে যাক’ তা তিনি চান না।

তাঁর আশা ছিল, স্বামীকেও কমলার পক্ষে ভোট দিতে তিনি রাজি করাতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। কারণ, তিনি রক্ষণশীল অবস্থান থেকে একচুলও নড়তে অনড়।

রজার বিবিসিকে বলেন, তিনি প্রার্থীদের মধ্যে ‘মন্দের ভালো’ প্রার্থী অর্থাৎ রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। কারণ, তিনি একজন রক্ষণশীল এবং গর্ভপাতের বিরুদ্ধে তাঁর কট্টর অবস্থান।

তাহলে গৃহদাহ এড়ায় কী করে? জবাবে এই দম্পতি বলেন, ঘরে তাঁরা রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন না। সংসারে শান্তি বজায় রাখতে এই কৌশল নিয়েছেন তাঁদের।

তবে লরা বলেন, তাঁদের ‘বিয়ে’ একটি বিভক্ত দেশের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে তিনি ‘আশা’ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসিনার বিচার ভুক্তভোগীদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’: জাতিসংঘ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩১
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ঢাকায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়কে গত বছরের বিক্ষোভ দমনের সময় সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।

বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে (১৭ নভেম্বর) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে—২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘের তদন্ত-প্রতিবেদন থেকে শুরু করে তারা ধারাবাহিকভাবে দাবি করে এসেছে, যেসব ব্যক্তি এসব অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, বিশেষ করে যাঁরা নেতৃত্ব বা কমান্ডের অবস্থানে ছিলেন, তাঁদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় জানায়, তারা বিচারপ্রক্রিয়ার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত ছিল না। তবে তারা সব সময়ই জোর দিয়ে বলেছে—আন্তর্জাতিক অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে বিচার অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায়বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে সম্পন্ন হওয়া উচিত। বিশেষ করে বিচার যখন অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে পরিচালিত হয়। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম সাজা দেওয়া হলে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

তবে বিবৃতিতে এটাও বলা হয়েছে—‘আমরা সব পরিস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী।’

মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন—বাংলাদেশ এখন সত্য উদ্‌ঘাটন, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সর্বাঙ্গীণ প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হবে, যা জাতীয় পুনর্মিলন ও আরোগ্যের পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘বিচারের ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে নিরাপত্তা খাতের সংস্কারও জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে এমন লঙ্ঘন আর না ঘটে। এই প্রয়াসে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে সহায়তা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত।’

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সবাইকে শান্ত ও সংযত থাকার অনুরোধ করেছে হাইকমিশনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৮ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র সফরে সৌদি যুবরাজ, বড় চুক্তির সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ফাইল ছবি

সৌদি আরবের কার্যত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এক রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে (১৭ নভেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বঠকে বসছেন।

গত কয়েক দশক ধরে তেল ও নিরাপত্তা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, এবারের সফরে সেই সম্পর্ক আরও গভীর করার পাশাপাশি বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্যভাবে বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচিতেও সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে সৌদি এজেন্টরা হত্যা করার পর এটাই এমবিএসের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। এই হত্যাকাণ্ড বিশ্ব জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যমতে, খাশোগিকে ‘ধরা বা হত্যার’ অনুমোদনে এমবিএস জড়িত ছিলেন। তবে তিনি বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। দীর্ঘ সাত বছর পর এবার দুই দেশই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী হয়েছে।

ট্রাম্পের লক্ষ্য সৌদি আরবের প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিকে কাজে লাগানো। এ ক্ষেত্রে সৌদি আরব এবং স্বয়ং এমবিএসকে জড়িয়ে যেসব মানবাধিকার ইস্যু সামনে এসেছে সেগুলো এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল ট্রাম্প এর আগেও দেখিয়েছেন। এবারও তা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এমবিএসের প্রধান লক্ষ্য আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) প্রবেশাধিকার এবং সৌদির বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির দিকে অগ্রগতি নিশ্চিত করা।

প্রতিরক্ষা চুক্তি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তেল সরবরাহে সুবিধা দিয়ে এসেছে। এর বিনিময়ে তারা পেয়েছে নিরাপত্তা। তবে ২০১৯ সালে ইরানের আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর প্রতিক্রিয়ার অভাব সেই সমীকরণে অনিশ্চয়তা তৈরি করে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের কাতার আক্রমণের পর আবারও উদ্বেগ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে নির্বাহী আদেশে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদিও একই ধরনের কিছু পেতে পারে।

সৌদি আরব চায় মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তি। তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্ত বেঁধে দিতে চাইছে। আবার সৌদি নেতৃত্ব এই চুক্তির ওপর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মার্কিন অঙ্গীকারের শর্ত যুক্ত করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করায় বিষয়টি আরও জটিল হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এবার ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে সৌদি–যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সহযোগিতার কাঠামো ঘোষণা করবেন। যদিও এটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তির সমতুল্য নয়, তবে দুই পক্ষের মধ্যে তাৎক্ষণিক পরামর্শ, প্রতিরক্ষা সহায়তা, অস্ত্র প্রতিস্থাপন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন কিংবা নৌবাহিনী মোতায়েনের মতো সহায়তার পথ খুলে দিতে পারে।

আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার মধ্যে প্রযুক্তি ও পরমাণু চুক্তি

সৌদি আরব তার ভিশন ২০৩০–এর অংশ হিসেবে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে পারমাণবিক শক্তি ও উন্নত এআই প্রযুক্তি চাইছে। উন্নত কম্পিউটার চিপে প্রবেশাধিকার পেলে সৌদি আরব এআই–এর কেন্দ্রীয় হাব হতে পারে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারবে।

এমবিএস বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি চান। এটি হলে সৌদি আরব মার্কিন পরমাণু প্রযুক্তি ও বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধায় প্রবেশাধিকার পাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায় সৌদি আরব ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত না করার প্রতিশ্রুতি দিক।

এই ইস্যুতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। বিশ্লেষকদের মতে, সফরের সময় অন্তত একটি নীতিগত ঘোষণা বা চুক্তির পথে অগ্রগতির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউক্রেনকে ১০০টি ‘রাফালে’ যুদ্ধবিমান দেবে ফ্রান্স

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফ্রান্সের ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে উভয় দেশের পতাকা ও একটি রাফালে জেটের সামনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: রয়টার্স
ফ্রান্সের ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে উভয় দেশের পতাকা ও একটি রাফালে জেটের সামনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তি আরও জোরদার করতে ফ্রান্সের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি একটি সামরিক চুক্তি করেছে ইউক্রেন। সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি ও ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১০ বছরে ফ্রান্সে তৈরি সর্বোচ্চ ১০০টি রাফালে যুদ্ধবিমান ইউক্রেন পাবে। ফ্রান্সের ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে উভয় দেশের পতাকা ও একটি রাফালে জেটের সামনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, চুক্তিতে যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, গোলাবারুদ, ড্রোন ও ড্রোন প্রতিরোধ প্রযুক্তির কথাও উল্লেখ রয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘এই চুক্তি ইউক্রেনের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে, বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিরক্ষা সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব হবে।’

সংবাদ প্রকাশের পর রাফালে যুদ্ধবিমানের নির্মাতা ফরাসি কোম্পানি ড্যাসো-এর শেয়ারের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে এবং দুপুরে তা প্রায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ জানান, চুক্তিটি মূলত একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যা পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ ক্রয়চুক্তিতে রূপ নেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন তহবিল এবং রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে এই প্রকল্পের অর্থায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো ইইউভুক্ত দেশগুলোর চূড়ান্ত সম্মতি প্রয়োজন।

মাখোঁ বলেন, ‘১০০টি রাফালে, একটি বিশাল বহর। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে পুনর্গঠনের জন্য এমন সক্ষমতা জরুরি।’ স্বল্পমেয়াদে ড্রোন, ড্রোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও অন্যান্য জরুরি সরঞ্জাম দিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করা হবে বলেও জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘ মেয়াদে শান্তিচুক্তির পর যে কোনো নতুন আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনকে সক্ষম করাই এর মূল লক্ষ্য।

চুক্তির আওতায় নতুন প্রজন্মের এসএমপি/টি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারি এবং এএএসএম হ্যামার এয়ার-টু-সারফেস গোলাবারুদ সরবরাহের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রাফালে চালাতে ইউক্রেনীয় পাইলটদের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ফরাসি সরকারের বাজেট সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিশ্রুত সহায়তা কত দ্রুত বাস্তবায়িত হবে—তা নিয়েও কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে।

ফ্রান্স ও ব্রিটেন ইতিমধ্যে প্রায় ৩০টি দেশের একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যারা শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেন বা তার পশ্চিম সীমান্তে সৈন্য ও সামরিক সক্ষমতা মোতায়েনে আগ্রহী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মৎস্যজীবী থেকে অভিবাসী শ্রমিক—এক বছরে শত শত মানুষকে ফাঁসি দিল সৌদি আরব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ২৬
সৌদি আরবের রিয়াদ শহর। ছবি: সিএনএন
সৌদি আরবের রিয়াদ শহর। ছবি: সিএনএন

২৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ সাদ একজন মিসরীয় মৎস্যজীবী। প্রতিবারের মতো শর্ম আল-শেখ উপকূলে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। তাঁর পরিবার মাসের পর মাস খোঁজ করেও কোনো তথ্য পায়নি। এক বছর পর জানা যায়, সাদ সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলীয় তাবুক কারাগারে আটক রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় মাদক পাচারের অভিযোগ।

আট বছর বন্দী থাকার পর গত ২১ অক্টোবর সাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাঁর পরিবারকে কিছুই জানানো হয়নি। পরিবারের লোকেরা খবরটি জানতে পেরেছেন সাদের সঙ্গে কারাগারে থাকা এক ব্যক্তির কাছ থেকে।

শুধু তা-ই নয়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর সাদকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে—সে বিষয়েও কোনো তথ্য নেই তাঁর পরিবারের কাছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সাদ ছিলেন সৌদি আরবে চলতি বছরে ফাঁসি হওয়া কয়েক শ মানুষের একজন। এর মধ্যে বেশির ভাগের বিরুদ্ধেই প্রাণঘাতী নয় এমন মাদক-সম্পর্কিত অভিযোগ ছিল।

বার্লিনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইএসওএইচআর এবং সৌদি গণমাধ্যমের খবর পর্যালোচনা করা সংগঠন ‘রিপ্রাইভ’ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশটিতে ৩৪৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে—যা গত কয়েক বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ফাঁসি হওয়া ব্যক্তিদের একটি বড় অংশই ছিলেন বিদেশি শ্রমিক। বিশেষ করে—মিসরীয়, সোমালি ও ইথিওপিয়ার নাগরিক। জীবিকার সন্ধানে তাঁরা সৌদি আরবে গিয়েছিলেন এবং পরে দেশটির কঠোর বিচারব্যবস্থায় আটকে পড়েন।

জানা গেছে, বর্তমানে সৌদি আরবের তাবুক কারাগারে আরও বেশ কয়েকজন বিদেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের একজন এসসাম আল-শাজলি। ২৭ বছর বয়সী শাজলি মিসরের একজন মৎস্যজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে অ্যামফিটামিন ও অল্প পরিমাণে ‘হেরোইনসদৃশ’ পদার্থ বহনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তাঁর পরিবার দাবি করেছে, নৌকায় কী ছিল, শাজলি এর কিছুই জানতেন না।

এদিকে বিনা দোষে মৃত্যুদণ্ডের অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধিদের পাঠানো এক চিঠির জবাবে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—কোনো গোপনীয়তা নেই, তিন ধাপের বিচারপ্রক্রিয়া মানা হয়, বিদেশিদের কনস্যুলার সহায়তাও দেওয়া হয় এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর দণ্ডপ্রাপ্তদের দেহ নিজ দেশের দূতাবাসে হস্তান্তর করা হয়। তবে বহু পরিবার ও অধিকারকর্মী দাবি করেছেন, বিচারের ক্ষেত্রে অনেক সময় আইনজীবীর সহায়তা নিতে দেওয়া হয় না। আর দেওয়া হলেও বিচারের ফল বদলায় না।

তাবুক কারাগার থেকে পাওয়া বিবরণে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীরা প্রতিদিন সকালে আশঙ্কায় থাকেন—সেদিন তাঁদের নাম ডাকা হবে কি না।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) তাঁর দেশকে আধুনিকায়নের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি, ধর্মীয় নীতি পুলিশের কার্যক্রম সীমিত করা, সাংস্কৃতিক উৎসব, বিশ্বকাপ আয়োজন ইত্যাদির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সৌদি আরবের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে চাচ্ছেন তিনি। এই সপ্তাহেই তিনি সাত বছর পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে বৈঠক হবে। এ বৈঠকে মানবাধিকার ইস্যু আলোচনায় আসার সম্ভাবনা কম। তবে অধিকারকর্মীরা বলছেন, বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য, অস্ত্রচুক্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের আড়ালে সৌদি আরবে চলছে ভয় দেখানোর নীতি।

রিপ্রাইভের মধ্যপ্রাচ্যে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে কাজ করা একটি দলের প্রধান জিদ বায়সিউনি বলেছেন, এটি মিথ্যা ও নির্মমতার এক ব্যবস্থা। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবকিছুই গোপন ও নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই ভুক্তভোগীর পরিবারের জন্য অপেক্ষা আর আতঙ্ক ছাড়া কোনো পথই খোলা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত