মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
জাহীদ রেজা নূর, নিউইয়র্ক থেকে

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে ততক্ষণে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল একটু একটু করে প্রকাশ পেতে থাকবে। বিজয়ের পাল্লা কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছে, সেটা আজকের পত্রিকার পাঠক ততক্ষণে জেনে যাবেন।
তাই এই লেখাটি তৈরি হবে নির্বাচনের আগের কিছু কথা নিয়ে। কোন কথা ফলল, তা এই লেখা দেখে সবাই একটু ঝালিয়ে নিতে পারেন। মিলিয়ে দেখতে পারেন, জয়ের ব্যাপারে যে ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফলছে কি না।
ট্রাম্পের বিজয়ের ব্যাপারে পাঁচটি কারণ দেখানো হয়েছিল। প্রথমেই বলা হয়েছিল, দেশজুড়ে এই মুদ্রাস্ফীতির কালে ট্রাম্প ক্ষমতায় নেই, সেটাই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের অর্থনীতি যে ভালো নেই, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়তি মূল্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার কারণে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টের প্রতি নাখোশ হচ্ছে জনগণ। করোনার মতো ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্নের পর মুদ্রাস্ফীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা সত্তরের দশকের পর যুক্তরাষ্ট্র আর কখনোই দেখেনি। এ কারণেই ট্রাম্প জনগণকে এই প্রশ্নটি স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন, ‘আপনারা কি চার বছর আগের তুলনায় এখন ভালো আছেন?’
না, ভালো নেই। চার বছর আগেই তো ট্রাম্প ক্ষমতা হারিয়েছিলেন বাইডেনের কাছে।
২০২৪ সালে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। করোনার প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি তার একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের এক-চতুর্থাংশ মানুষ কেবল দেশের অগ্রগতি হচ্ছে বলে মনে করেন। বাকিরা চাইছেন এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নানা ধরনের স্ক্যান্ডালের পরও তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো ৪০ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২১ সালে ক্যাপিটলের ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হওয়ার পরও ৪০ শতাংশ মানুষ তাঁর ওপর সমর্থন বজায় রেখেছে। যখন ডেমোক্র্যাটরা এবং রিপাবলিকান দলের একটি অংশ ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলে মনে করছেন, তখন রিপাবলিকান সমর্থকেরা ট্রাম্পকে ‘উইচ হান্টিং-এর শিকার’ বলে মনে করছেন। জনমত জরিপে কমলা আর ট্রাম্পের অবস্থান সমানে সমান। তাই ট্রাম্প আক্রোশের শিকার—এই কথা প্রচার করতে পারলে এবং এ কারণে তাঁর দিকে দোদুল্যমানদের ভোট গেলে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা আছে।
অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ট্রাম্পকে ভোটারদের বহুলাংশে সমর্থন করে। বাইডেনের শাসনামলে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, এটাই ট্রাম্পের জন্য ট্রাম্প কার্ড হয়ে উঠতে পারে।
উচ্চশিক্ষিত নন, এ রকম ভোটাররা একটু বেশি সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ট্রাম্পের ভাগ্য খুলবে। এই শ্রেণির মানুষই মনে করে থাকেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের মনে রাখেনি সরকার। ফলে তাঁদের ভোট অবধারিতভাবে যাবে ট্রাম্পের দিকে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এ কারণেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃত্ব ডেমোক্র্যাটদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, রিপাবলিকানরা সেখানে জায়গা করে নিচ্ছেন।
গ্রাম ও উপশহরের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারলে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দিকে পা বাড়িয়ে রাখতেই পারেন।
অস্থিতিশীল হয়ে আছে পৃথিবী। এ সময় শক্তিশালী নেতৃত্ব পছন্দ করে মানুষ। এই হিসেবে ট্রাম্পকে শক্তিশালী মানুষ হিসেবেই মনে করে থাকেন বিশ্বনেতারা। ট্রাম্প বলে থাকেন, তিনি হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন কোনো বড় যুদ্ধে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বহু মার্কিন নাগরিক এ সময় ইউক্রেন ও ইসরায়েলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা অপচয় করছে বলে বাইডেনের প্রতি নাখোশ হয়ে আছেন।
পুরুষ ভোটারদের এক অংশ স্রেফ পুরুষ হওয়ার কারণেই ট্রাম্পকে ভোট দেবেন।
এ তো গেল ট্রাম্পের পক্ষের কথা। কমলার বিজয়ের পক্ষেও রয়েছে এ রকম পাঁচটি কারণ। একেবারে প্রথম কারণটি হলো, কমলা ট্রাম্প নন। ট্রাম্পের মতো যখন-তখন যেকোনো কথা বলে ফেলেন না তিনি। যা বলেন, যুক্তি দিয়ে ভেবেচিন্তে বলেন। ২০২০ সালে যখন রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প, তখন সে নির্বাচনে কিন্তু ৭০ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাইডেন। আর এবার কমলা হ্যারিস তো বলে যাচ্ছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে কী সর্বনাশই-না হবে যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলেও প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই মনে করেন, দেশটি বেসামাল হয়ে যাচ্ছে। এই ভোটারদের কেউ কেউ যদি দেশকে নির্দিষ্ট পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কমলার ওপর নির্ভর করে থাকেন, তাহলে কমলার জয় ঠেকানো যাবে না।
কমলা বাইডেনও নন। এটাও তাঁর একটি ইতিবাচক দিক। বাইডেন যদি শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকতেন, তাহলে ডেমোক্র্যাট শিবির মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত যে ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডেমোক্র্যাটরা সংঘবদ্ধ হয়ে কমলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নির্ঘাত পরাজয়ের জায়গায় নিজেরা আবারও জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছে।
নারীদের ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে সোচ্চার কমলা। দেশের নারী ভোটারদের বহুলাংশই কমলাকে ভোট দেবেন। ২০২২ সালে গর্ভপাতবিরোধী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। ফলে নারীরা তাঁদের সুস্পষ্ট অবস্থান নিশ্চয়ই পরিষ্কার করতে চাইবেন এই নির্বাচনে। তা ছাড়া দেশ প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে—এই জায়গা থেকেও নারীদের ভোট কমলার দিকে যাবে।
বলা হচ্ছে, বর্ষীয়ান মানুষ ও উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভোট যাবে কমলার বাক্সে। এই শ্রেণির মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে থাকেন। অপর দিকে ট্রাম্প মূলত তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়। এই তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহ থাকে। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, কমলা ট্রাম্পের কাছে পিছিয়ে আছেন সেই শ্রেণির ভোটারদের কারণে, যাঁরা নিবন্ধিত ভোটার কিন্তু ২০২০ সালে ভোট দিতে যাননি।
আরও একটি কারণে কমলা জয়ী হতে পারেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে অনেক টাকা খরচ করেছেন। কমলা নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন জুলাই মাসে, এরপরই তিনি নির্বাচনী তহবিল হিসেবে এই টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। অপর দিকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকেই ট্রাম্প নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু কমলার মতো এত টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি।
দুই দিকের যুক্তিগুলো দেওয়া হলো। এই লেখা পড়ার সময়ই হয়তো যুক্তিগুলোর কোনটি বাস্তবিক অর্থে কাজ করেছে, তা জেনে যাবেন আপনি। জেনে যাবেন, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন।

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে ততক্ষণে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল একটু একটু করে প্রকাশ পেতে থাকবে। বিজয়ের পাল্লা কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছে, সেটা আজকের পত্রিকার পাঠক ততক্ষণে জেনে যাবেন।
তাই এই লেখাটি তৈরি হবে নির্বাচনের আগের কিছু কথা নিয়ে। কোন কথা ফলল, তা এই লেখা দেখে সবাই একটু ঝালিয়ে নিতে পারেন। মিলিয়ে দেখতে পারেন, জয়ের ব্যাপারে যে ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফলছে কি না।
ট্রাম্পের বিজয়ের ব্যাপারে পাঁচটি কারণ দেখানো হয়েছিল। প্রথমেই বলা হয়েছিল, দেশজুড়ে এই মুদ্রাস্ফীতির কালে ট্রাম্প ক্ষমতায় নেই, সেটাই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের অর্থনীতি যে ভালো নেই, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়তি মূল্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার কারণে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টের প্রতি নাখোশ হচ্ছে জনগণ। করোনার মতো ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্নের পর মুদ্রাস্ফীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা সত্তরের দশকের পর যুক্তরাষ্ট্র আর কখনোই দেখেনি। এ কারণেই ট্রাম্প জনগণকে এই প্রশ্নটি স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন, ‘আপনারা কি চার বছর আগের তুলনায় এখন ভালো আছেন?’
না, ভালো নেই। চার বছর আগেই তো ট্রাম্প ক্ষমতা হারিয়েছিলেন বাইডেনের কাছে।
২০২৪ সালে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। করোনার প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি তার একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের এক-চতুর্থাংশ মানুষ কেবল দেশের অগ্রগতি হচ্ছে বলে মনে করেন। বাকিরা চাইছেন এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নানা ধরনের স্ক্যান্ডালের পরও তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো ৪০ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২১ সালে ক্যাপিটলের ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হওয়ার পরও ৪০ শতাংশ মানুষ তাঁর ওপর সমর্থন বজায় রেখেছে। যখন ডেমোক্র্যাটরা এবং রিপাবলিকান দলের একটি অংশ ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলে মনে করছেন, তখন রিপাবলিকান সমর্থকেরা ট্রাম্পকে ‘উইচ হান্টিং-এর শিকার’ বলে মনে করছেন। জনমত জরিপে কমলা আর ট্রাম্পের অবস্থান সমানে সমান। তাই ট্রাম্প আক্রোশের শিকার—এই কথা প্রচার করতে পারলে এবং এ কারণে তাঁর দিকে দোদুল্যমানদের ভোট গেলে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা আছে।
অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ট্রাম্পকে ভোটারদের বহুলাংশে সমর্থন করে। বাইডেনের শাসনামলে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, এটাই ট্রাম্পের জন্য ট্রাম্প কার্ড হয়ে উঠতে পারে।
উচ্চশিক্ষিত নন, এ রকম ভোটাররা একটু বেশি সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ট্রাম্পের ভাগ্য খুলবে। এই শ্রেণির মানুষই মনে করে থাকেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের মনে রাখেনি সরকার। ফলে তাঁদের ভোট অবধারিতভাবে যাবে ট্রাম্পের দিকে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এ কারণেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃত্ব ডেমোক্র্যাটদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, রিপাবলিকানরা সেখানে জায়গা করে নিচ্ছেন।
গ্রাম ও উপশহরের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারলে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দিকে পা বাড়িয়ে রাখতেই পারেন।
অস্থিতিশীল হয়ে আছে পৃথিবী। এ সময় শক্তিশালী নেতৃত্ব পছন্দ করে মানুষ। এই হিসেবে ট্রাম্পকে শক্তিশালী মানুষ হিসেবেই মনে করে থাকেন বিশ্বনেতারা। ট্রাম্প বলে থাকেন, তিনি হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন কোনো বড় যুদ্ধে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বহু মার্কিন নাগরিক এ সময় ইউক্রেন ও ইসরায়েলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা অপচয় করছে বলে বাইডেনের প্রতি নাখোশ হয়ে আছেন।
পুরুষ ভোটারদের এক অংশ স্রেফ পুরুষ হওয়ার কারণেই ট্রাম্পকে ভোট দেবেন।
এ তো গেল ট্রাম্পের পক্ষের কথা। কমলার বিজয়ের পক্ষেও রয়েছে এ রকম পাঁচটি কারণ। একেবারে প্রথম কারণটি হলো, কমলা ট্রাম্প নন। ট্রাম্পের মতো যখন-তখন যেকোনো কথা বলে ফেলেন না তিনি। যা বলেন, যুক্তি দিয়ে ভেবেচিন্তে বলেন। ২০২০ সালে যখন রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প, তখন সে নির্বাচনে কিন্তু ৭০ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাইডেন। আর এবার কমলা হ্যারিস তো বলে যাচ্ছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে কী সর্বনাশই-না হবে যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলেও প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই মনে করেন, দেশটি বেসামাল হয়ে যাচ্ছে। এই ভোটারদের কেউ কেউ যদি দেশকে নির্দিষ্ট পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কমলার ওপর নির্ভর করে থাকেন, তাহলে কমলার জয় ঠেকানো যাবে না।
কমলা বাইডেনও নন। এটাও তাঁর একটি ইতিবাচক দিক। বাইডেন যদি শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকতেন, তাহলে ডেমোক্র্যাট শিবির মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত যে ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডেমোক্র্যাটরা সংঘবদ্ধ হয়ে কমলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নির্ঘাত পরাজয়ের জায়গায় নিজেরা আবারও জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছে।
নারীদের ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে সোচ্চার কমলা। দেশের নারী ভোটারদের বহুলাংশই কমলাকে ভোট দেবেন। ২০২২ সালে গর্ভপাতবিরোধী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। ফলে নারীরা তাঁদের সুস্পষ্ট অবস্থান নিশ্চয়ই পরিষ্কার করতে চাইবেন এই নির্বাচনে। তা ছাড়া দেশ প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে—এই জায়গা থেকেও নারীদের ভোট কমলার দিকে যাবে।
বলা হচ্ছে, বর্ষীয়ান মানুষ ও উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভোট যাবে কমলার বাক্সে। এই শ্রেণির মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে থাকেন। অপর দিকে ট্রাম্প মূলত তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়। এই তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহ থাকে। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, কমলা ট্রাম্পের কাছে পিছিয়ে আছেন সেই শ্রেণির ভোটারদের কারণে, যাঁরা নিবন্ধিত ভোটার কিন্তু ২০২০ সালে ভোট দিতে যাননি।
আরও একটি কারণে কমলা জয়ী হতে পারেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে অনেক টাকা খরচ করেছেন। কমলা নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন জুলাই মাসে, এরপরই তিনি নির্বাচনী তহবিল হিসেবে এই টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। অপর দিকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকেই ট্রাম্প নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু কমলার মতো এত টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি।
দুই দিকের যুক্তিগুলো দেওয়া হলো। এই লেখা পড়ার সময়ই হয়তো যুক্তিগুলোর কোনটি বাস্তবিক অর্থে কাজ করেছে, তা জেনে যাবেন আপনি। জেনে যাবেন, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
জাহীদ রেজা নূর, নিউইয়র্ক থেকে

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে ততক্ষণে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল একটু একটু করে প্রকাশ পেতে থাকবে। বিজয়ের পাল্লা কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছে, সেটা আজকের পত্রিকার পাঠক ততক্ষণে জেনে যাবেন।
তাই এই লেখাটি তৈরি হবে নির্বাচনের আগের কিছু কথা নিয়ে। কোন কথা ফলল, তা এই লেখা দেখে সবাই একটু ঝালিয়ে নিতে পারেন। মিলিয়ে দেখতে পারেন, জয়ের ব্যাপারে যে ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফলছে কি না।
ট্রাম্পের বিজয়ের ব্যাপারে পাঁচটি কারণ দেখানো হয়েছিল। প্রথমেই বলা হয়েছিল, দেশজুড়ে এই মুদ্রাস্ফীতির কালে ট্রাম্প ক্ষমতায় নেই, সেটাই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের অর্থনীতি যে ভালো নেই, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়তি মূল্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার কারণে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টের প্রতি নাখোশ হচ্ছে জনগণ। করোনার মতো ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্নের পর মুদ্রাস্ফীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা সত্তরের দশকের পর যুক্তরাষ্ট্র আর কখনোই দেখেনি। এ কারণেই ট্রাম্প জনগণকে এই প্রশ্নটি স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন, ‘আপনারা কি চার বছর আগের তুলনায় এখন ভালো আছেন?’
না, ভালো নেই। চার বছর আগেই তো ট্রাম্প ক্ষমতা হারিয়েছিলেন বাইডেনের কাছে।
২০২৪ সালে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। করোনার প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি তার একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের এক-চতুর্থাংশ মানুষ কেবল দেশের অগ্রগতি হচ্ছে বলে মনে করেন। বাকিরা চাইছেন এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নানা ধরনের স্ক্যান্ডালের পরও তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো ৪০ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২১ সালে ক্যাপিটলের ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হওয়ার পরও ৪০ শতাংশ মানুষ তাঁর ওপর সমর্থন বজায় রেখেছে। যখন ডেমোক্র্যাটরা এবং রিপাবলিকান দলের একটি অংশ ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলে মনে করছেন, তখন রিপাবলিকান সমর্থকেরা ট্রাম্পকে ‘উইচ হান্টিং-এর শিকার’ বলে মনে করছেন। জনমত জরিপে কমলা আর ট্রাম্পের অবস্থান সমানে সমান। তাই ট্রাম্প আক্রোশের শিকার—এই কথা প্রচার করতে পারলে এবং এ কারণে তাঁর দিকে দোদুল্যমানদের ভোট গেলে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা আছে।
অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ট্রাম্পকে ভোটারদের বহুলাংশে সমর্থন করে। বাইডেনের শাসনামলে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, এটাই ট্রাম্পের জন্য ট্রাম্প কার্ড হয়ে উঠতে পারে।
উচ্চশিক্ষিত নন, এ রকম ভোটাররা একটু বেশি সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ট্রাম্পের ভাগ্য খুলবে। এই শ্রেণির মানুষই মনে করে থাকেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের মনে রাখেনি সরকার। ফলে তাঁদের ভোট অবধারিতভাবে যাবে ট্রাম্পের দিকে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এ কারণেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃত্ব ডেমোক্র্যাটদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, রিপাবলিকানরা সেখানে জায়গা করে নিচ্ছেন।
গ্রাম ও উপশহরের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারলে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দিকে পা বাড়িয়ে রাখতেই পারেন।
অস্থিতিশীল হয়ে আছে পৃথিবী। এ সময় শক্তিশালী নেতৃত্ব পছন্দ করে মানুষ। এই হিসেবে ট্রাম্পকে শক্তিশালী মানুষ হিসেবেই মনে করে থাকেন বিশ্বনেতারা। ট্রাম্প বলে থাকেন, তিনি হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন কোনো বড় যুদ্ধে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বহু মার্কিন নাগরিক এ সময় ইউক্রেন ও ইসরায়েলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা অপচয় করছে বলে বাইডেনের প্রতি নাখোশ হয়ে আছেন।
পুরুষ ভোটারদের এক অংশ স্রেফ পুরুষ হওয়ার কারণেই ট্রাম্পকে ভোট দেবেন।
এ তো গেল ট্রাম্পের পক্ষের কথা। কমলার বিজয়ের পক্ষেও রয়েছে এ রকম পাঁচটি কারণ। একেবারে প্রথম কারণটি হলো, কমলা ট্রাম্প নন। ট্রাম্পের মতো যখন-তখন যেকোনো কথা বলে ফেলেন না তিনি। যা বলেন, যুক্তি দিয়ে ভেবেচিন্তে বলেন। ২০২০ সালে যখন রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প, তখন সে নির্বাচনে কিন্তু ৭০ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাইডেন। আর এবার কমলা হ্যারিস তো বলে যাচ্ছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে কী সর্বনাশই-না হবে যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলেও প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই মনে করেন, দেশটি বেসামাল হয়ে যাচ্ছে। এই ভোটারদের কেউ কেউ যদি দেশকে নির্দিষ্ট পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কমলার ওপর নির্ভর করে থাকেন, তাহলে কমলার জয় ঠেকানো যাবে না।
কমলা বাইডেনও নন। এটাও তাঁর একটি ইতিবাচক দিক। বাইডেন যদি শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকতেন, তাহলে ডেমোক্র্যাট শিবির মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত যে ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডেমোক্র্যাটরা সংঘবদ্ধ হয়ে কমলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নির্ঘাত পরাজয়ের জায়গায় নিজেরা আবারও জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছে।
নারীদের ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে সোচ্চার কমলা। দেশের নারী ভোটারদের বহুলাংশই কমলাকে ভোট দেবেন। ২০২২ সালে গর্ভপাতবিরোধী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। ফলে নারীরা তাঁদের সুস্পষ্ট অবস্থান নিশ্চয়ই পরিষ্কার করতে চাইবেন এই নির্বাচনে। তা ছাড়া দেশ প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে—এই জায়গা থেকেও নারীদের ভোট কমলার দিকে যাবে।
বলা হচ্ছে, বর্ষীয়ান মানুষ ও উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভোট যাবে কমলার বাক্সে। এই শ্রেণির মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে থাকেন। অপর দিকে ট্রাম্প মূলত তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়। এই তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহ থাকে। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, কমলা ট্রাম্পের কাছে পিছিয়ে আছেন সেই শ্রেণির ভোটারদের কারণে, যাঁরা নিবন্ধিত ভোটার কিন্তু ২০২০ সালে ভোট দিতে যাননি।
আরও একটি কারণে কমলা জয়ী হতে পারেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে অনেক টাকা খরচ করেছেন। কমলা নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন জুলাই মাসে, এরপরই তিনি নির্বাচনী তহবিল হিসেবে এই টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। অপর দিকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকেই ট্রাম্প নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু কমলার মতো এত টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি।
দুই দিকের যুক্তিগুলো দেওয়া হলো। এই লেখা পড়ার সময়ই হয়তো যুক্তিগুলোর কোনটি বাস্তবিক অর্থে কাজ করেছে, তা জেনে যাবেন আপনি। জেনে যাবেন, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন।

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে ততক্ষণে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল একটু একটু করে প্রকাশ পেতে থাকবে। বিজয়ের পাল্লা কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছে, সেটা আজকের পত্রিকার পাঠক ততক্ষণে জেনে যাবেন।
তাই এই লেখাটি তৈরি হবে নির্বাচনের আগের কিছু কথা নিয়ে। কোন কথা ফলল, তা এই লেখা দেখে সবাই একটু ঝালিয়ে নিতে পারেন। মিলিয়ে দেখতে পারেন, জয়ের ব্যাপারে যে ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফলছে কি না।
ট্রাম্পের বিজয়ের ব্যাপারে পাঁচটি কারণ দেখানো হয়েছিল। প্রথমেই বলা হয়েছিল, দেশজুড়ে এই মুদ্রাস্ফীতির কালে ট্রাম্প ক্ষমতায় নেই, সেটাই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের অর্থনীতি যে ভালো নেই, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়তি মূল্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার কারণে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টের প্রতি নাখোশ হচ্ছে জনগণ। করোনার মতো ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্নের পর মুদ্রাস্ফীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা সত্তরের দশকের পর যুক্তরাষ্ট্র আর কখনোই দেখেনি। এ কারণেই ট্রাম্প জনগণকে এই প্রশ্নটি স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন, ‘আপনারা কি চার বছর আগের তুলনায় এখন ভালো আছেন?’
না, ভালো নেই। চার বছর আগেই তো ট্রাম্প ক্ষমতা হারিয়েছিলেন বাইডেনের কাছে।
২০২৪ সালে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। করোনার প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি তার একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের এক-চতুর্থাংশ মানুষ কেবল দেশের অগ্রগতি হচ্ছে বলে মনে করেন। বাকিরা চাইছেন এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নানা ধরনের স্ক্যান্ডালের পরও তাঁর জনপ্রিয়তা কখনো ৪০ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২১ সালে ক্যাপিটলের ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হওয়ার পরও ৪০ শতাংশ মানুষ তাঁর ওপর সমর্থন বজায় রেখেছে। যখন ডেমোক্র্যাটরা এবং রিপাবলিকান দলের একটি অংশ ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলে মনে করছেন, তখন রিপাবলিকান সমর্থকেরা ট্রাম্পকে ‘উইচ হান্টিং-এর শিকার’ বলে মনে করছেন। জনমত জরিপে কমলা আর ট্রাম্পের অবস্থান সমানে সমান। তাই ট্রাম্প আক্রোশের শিকার—এই কথা প্রচার করতে পারলে এবং এ কারণে তাঁর দিকে দোদুল্যমানদের ভোট গেলে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা আছে।
অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ট্রাম্পকে ভোটারদের বহুলাংশে সমর্থন করে। বাইডেনের শাসনামলে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, এটাই ট্রাম্পের জন্য ট্রাম্প কার্ড হয়ে উঠতে পারে।
উচ্চশিক্ষিত নন, এ রকম ভোটাররা একটু বেশি সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ট্রাম্পের ভাগ্য খুলবে। এই শ্রেণির মানুষই মনে করে থাকেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের মনে রাখেনি সরকার। ফলে তাঁদের ভোট অবধারিতভাবে যাবে ট্রাম্পের দিকে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এ কারণেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃত্ব ডেমোক্র্যাটদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, রিপাবলিকানরা সেখানে জায়গা করে নিচ্ছেন।
গ্রাম ও উপশহরের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারলে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দিকে পা বাড়িয়ে রাখতেই পারেন।
অস্থিতিশীল হয়ে আছে পৃথিবী। এ সময় শক্তিশালী নেতৃত্ব পছন্দ করে মানুষ। এই হিসেবে ট্রাম্পকে শক্তিশালী মানুষ হিসেবেই মনে করে থাকেন বিশ্বনেতারা। ট্রাম্প বলে থাকেন, তিনি হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন কোনো বড় যুদ্ধে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বহু মার্কিন নাগরিক এ সময় ইউক্রেন ও ইসরায়েলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা অপচয় করছে বলে বাইডেনের প্রতি নাখোশ হয়ে আছেন।
পুরুষ ভোটারদের এক অংশ স্রেফ পুরুষ হওয়ার কারণেই ট্রাম্পকে ভোট দেবেন।
এ তো গেল ট্রাম্পের পক্ষের কথা। কমলার বিজয়ের পক্ষেও রয়েছে এ রকম পাঁচটি কারণ। একেবারে প্রথম কারণটি হলো, কমলা ট্রাম্প নন। ট্রাম্পের মতো যখন-তখন যেকোনো কথা বলে ফেলেন না তিনি। যা বলেন, যুক্তি দিয়ে ভেবেচিন্তে বলেন। ২০২০ সালে যখন রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প, তখন সে নির্বাচনে কিন্তু ৭০ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাইডেন। আর এবার কমলা হ্যারিস তো বলে যাচ্ছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে কী সর্বনাশই-না হবে যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলেও প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই মনে করেন, দেশটি বেসামাল হয়ে যাচ্ছে। এই ভোটারদের কেউ কেউ যদি দেশকে নির্দিষ্ট পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কমলার ওপর নির্ভর করে থাকেন, তাহলে কমলার জয় ঠেকানো যাবে না।
কমলা বাইডেনও নন। এটাও তাঁর একটি ইতিবাচক দিক। বাইডেন যদি শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকতেন, তাহলে ডেমোক্র্যাট শিবির মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত যে ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডেমোক্র্যাটরা সংঘবদ্ধ হয়ে কমলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নির্ঘাত পরাজয়ের জায়গায় নিজেরা আবারও জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছে।
নারীদের ব্যাপারে ইতিবাচকভাবে সোচ্চার কমলা। দেশের নারী ভোটারদের বহুলাংশই কমলাকে ভোট দেবেন। ২০২২ সালে গর্ভপাতবিরোধী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। ফলে নারীরা তাঁদের সুস্পষ্ট অবস্থান নিশ্চয়ই পরিষ্কার করতে চাইবেন এই নির্বাচনে। তা ছাড়া দেশ প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে—এই জায়গা থেকেও নারীদের ভোট কমলার দিকে যাবে।
বলা হচ্ছে, বর্ষীয়ান মানুষ ও উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভোট যাবে কমলার বাক্সে। এই শ্রেণির মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে থাকেন। অপর দিকে ট্রাম্প মূলত তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়। এই তরুণ ও স্বল্পশিক্ষিত মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহ থাকে। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, কমলা ট্রাম্পের কাছে পিছিয়ে আছেন সেই শ্রেণির ভোটারদের কারণে, যাঁরা নিবন্ধিত ভোটার কিন্তু ২০২০ সালে ভোট দিতে যাননি।
আরও একটি কারণে কমলা জয়ী হতে পারেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে অনেক টাকা খরচ করেছেন। কমলা নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন জুলাই মাসে, এরপরই তিনি নির্বাচনী তহবিল হিসেবে এই টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। অপর দিকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকেই ট্রাম্প নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু কমলার মতো এত টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি।
দুই দিকের যুক্তিগুলো দেওয়া হলো। এই লেখা পড়ার সময়ই হয়তো যুক্তিগুলোর কোনটি বাস্তবিক অর্থে কাজ করেছে, তা জেনে যাবেন আপনি। জেনে যাবেন, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন।

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে
০৬ নভেম্বর ২০২৪
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে
০৬ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে
০৬ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

এই লেখাটি যখন তৈরি হচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ৪ নভেম্বরের রাত সাড়ে ৯টা। বাংলাদেশ ততক্ষণে ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দেখা পেয়েছে। লেখাটি যখন ছাপা হবে
০৬ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে