
মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামমন্দির। আজ সোমবার সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরের ২ দশমিক ৭৭ একর জায়গাকে কেন্দ্র করে মূল দ্বন্দ্ব। এই বাবরি মসজিদ বনাম রামমন্দিরকে ইস্যু করে বিজেপি ক্রমেই জনমত হাসিল করেছে। তার ফলাফল হিসেবে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন নিয়ে প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যা হোক, ১৫২৮ সালে মীর বাকির নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম আপত্তি উত্থাপিত হয় ১৭৫১ সালে। মারাঠারা সে বছর অযোধ্যা, কাশী, মাথুরাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। এর ফলে বেশ কয়েক দফা বিবাদ-সংঘাত সংঘটিত হয়। যদিও এর কোনো রেকর্ড কোনো নথিপত্রে পাওয়া যায় না।
এরপর ১০০ বছরের বেশি সময় পর সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক এক বছর পর ১৮৫৮ সালে নিহাং শিখরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় এবং ‘হওয়ান’ নামে একধরনের আচার পালন করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশের নথি অনুসারে, বাবরি মসজিদ দখলের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা। নিহাং শিখদের পর সে সময় স্থানীয় হিন্দুরা মসজিদে প্রবেশ করে পূজা করেছিল।
তবে আইনি দিক থেকে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৮৮৫ সালে। নির্মোহী আখড়া নামে একটি গোষ্ঠীর সন্ন্যাসী মোহন্ত রঘুবীর দাস উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রঘুবীর দাবি করেন, তাঁকে বাবরি মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে একটি মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক। সে সময় আদালত সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে ‘রাম লাল্লার’ মূর্তি স্থাপন করা হয়। সে বছর ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে একদল হিন্দু মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। অনেকে দাবি করেন, সে সময় রামের সেই মূর্তি ‘অলৌকিকভাবে’ মসজিদের ভেতরে গিয়েছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফয়জাবাদ আদালত মসজিদটিতে মুসলিম ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের জন্যই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সরকারের হাওলায় ছেড়ে দেন।
যা হোক, ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, তা আর সরানো হয়নি। পরে ১৯৫০ সালে সেই মূর্তি পূজা করার অনুমতি চেয়ে গোপাল শিমলা বিশারদ নামে একজন ফয়জাবাদ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রায় ৯ বছর পর নির্মোহী আখড়া আবারও দৃশ্যপটে হাজির হয়। সে বছর গোষ্ঠীটি বাবরি মসজিদের স্থানে মূর্তিপূজার অনুমতি চায়। ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড মসজিদ খুলে দেওয়ার আবেদন করে আদালতে।
১৯৮৪-৮৬ সালের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আদালত হিন্দুদের জন্য বাবরি মসজিদের তালা খোলার অনুমতি দেন। ধারণা করা হয়, সে সময় রাজীব গান্ধীর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৮৬-৮৭ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বাবরি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন জায়গা রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানায়। পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের মতো একটি বিশাল মন্দির প্রতিষ্ঠারও দাবি জানায় গোষ্ঠীটি।
কিন্তু দুই বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের আগস্টে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ পুনর্বহাল করেন। পরে ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি আবেদন করে। আবেদনে বিতর্কিত জায়গাটিকে ভগবান রামের নামের ঘোষণা করার আরজি জানানো হয়।
একই বছরে ফয়জাবাদ আদালতে এ-সংক্রান্ত যত মামলা ঝুলে ছিল, তা হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়। সে বছরের নভেম্বরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিতর্কিত ভূমিসংলগ্ন একটি ভূমিতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। সে মাসেই রাজীব গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ফয়জাবাদ থেকে।
এ বছরই প্রথমবার রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দেয় বিজেপি। দলটি পালামপুর অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব পাস করে। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকেন্দ্রিক বিরোধ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সক্রিয় আইনের মাধ্যমে তা করা উচিত। তবে প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এটা হিন্দুদের বিশ্বাসের বিষয় এবং তাই এটি কোনোভাবেই আইন দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যা অভিমুখে একটি ‘যাত্রা’র আয়োজন করেন। তিনি দাবি করেন, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে বছরের অক্টোবরে বিহারে আদভানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি গ্রেপ্তার হলেও যাত্রা থামেনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির নেতা-কর্মীরা অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা এগিয়ে নেন এবং মসজিদ ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। অক্টোবরের ৩০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ যাত্রায় গুলি করে। ফলে বাবরি মসজিদ সে যাত্রায় রক্ষা পায়।
কিন্তু সেই ঘটনার মাত্র এক মাস ছয় দিনের মাথায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিলেন কল্যাণ সিং। ঘটনার দিন কয়েক হাজার করসেবক (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং বিজেপির সমর্থক) মসজিদ ভেঙে ফেলেন।
তার আগে, বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, নৃত্য গোপাল দাস ও সাধ্বী রীতাম্বরা সমবেত ব্যক্তিদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর করসেবকেরা বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কাঠামো ভেঙে ফেলেন। সে সময় কল্যাণ সিং সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মসজিদের ক্ষতি হবে না—এমন আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ করসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
এই ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে মসজিদ ধ্বংসের জন্য অজ্ঞাত করসেবকদের আসামি করা হয় এবং অপরটিতে বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী ও অন্যদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের আগে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে অবশ্য সবাই অভিযোগ থেকে খালাস পান। এর পরপরই ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিতর্কিত স্থানসহ অযোধ্যায় ৬৭ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরের অক্টোবরে সিবিআই আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জশিট ফাইল করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখেন। একই সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ বিতর্কিত এলাকার সব মামলার শুনানি শুরু করেন এবং সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ বিতর্কিত স্থানটির খনন শুরু করে। ২০০৯ সালে লিবারহান কমিশন গঠনের ১৬ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না; বরং এটি দীর্ঘদিনে শ্রমসাধ্য প্রস্তুতি ও পূর্বপরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে এই বিতর্কিত ভূমিকে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন বলে ঘোষণা দেন। পরে আদালত ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত এলাকাটি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লাল্লার মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে সে বছরের মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং উভয় পক্ষের আপিলের ওপর স্টে অর্ডার দেন।
ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার ২০১৭ সালের মার্চে বিরোধের বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। সে বছরের আগস্টে বিরোধের বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি বিরোধ মামলার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার শুনানির জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সে বছরের ৯ নভেম্বর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা, বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্য সরকারের স্থাপিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রায়ে আরও বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা, আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ রায়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় মুসলমানদের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ করারও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পার্লামেন্টে জানান, মন্ত্রিসভা মন্দির নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সভাপতি হবেন রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সভাপতি ও রাম জন্মভূমি নিবাসের প্রধান মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস। পরে সে বছর ৫ আগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।
পরে মন্দির নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৫ দিনব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি রুপিরও বেশি সংগ্রহ করা হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে মোদি এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৮ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৮ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৮ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। হিন্দুদের বড় একটি অংশের দাবি, এই মসজিদটি হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রামের জন্মভূমির ওপর নির্মিত। সেই সূত্র ধরে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্
২২ জানুয়ারি ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৮ ঘণ্টা আগে