Ajker Patrika

বাংলাদেশসহ ১০ দেশ শঙ্কায় থাকবে

হামিদ মীর, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, পাকিস্তান
বাংলাদেশসহ ১০  দেশ শঙ্কায় থাকবে

এখন থেকে ২৫ বছর আগের কথা। তালেবানকে সহায়তা করার দায়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো সরকারের অব্যাহত সমালোচনা করছিলাম আমি। আমার সমালোচনায় খানিকটা বিচলিত হয়ে পড়েছিল তাঁর সরকার। এ অবস্থায় তালেবানকে ‘পাইপ-লাইন পুলিশ’ হিসেবে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।

বেনজির ভুট্টো তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসেরুল্লাহ খান বাবরকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তালেবান সম্পর্কে আমাকে তাঁর সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই মেজর জেনারেল আমাকে ধীরে ধীরে নানা বিষয় জানান। আহমদ শাহ মাসুদ, বোরহানুদ্দিন রাব্বানি এবং গুলবুদ্দিন হেকমাতিয়ার মতো আরও কিছু বিখ্যাত আফগান বিদ্রোহীকে ১৯৭৫ সালে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। বেনজির ভুট্টোর পিতা ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর আমলে সীমান্ত প্রদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফ্রন্টিয়ার কর্পে মহাপরিদর্শক (আইজি)-এর দায়িত্বে ছিলেন।

তালেবানের সাবেক প্রধান প্রয়াত মোল্লা ওমরের সঙ্গেও আমার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছিলেন নাসেরুল্লাহ খান বাবর। তাঁর সঙ্গে আলাপ করে, এ অঞ্চলে তেল নিয়ে যে বড় ধরনের ‘খেলা’ চলছে তা নিয়ে তিনি খুব একটা সচেতন বলে মনে হলো না। আফগানিস্তানে শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠাই তাঁর চিন্তাকে আচ্ছন্ন করে আছে বলে মনে হলো। তা ছাড়া, পাকিস্তান যেন তালেবানের সঙ্গে বিমাতার বদলে ভ্রাতৃসুলভ আচরণ করে সেটাই ছিল তাঁর দাবি।

আফগানিস্তানে তখন এক ব্যাপক টালমাটাল সময়। বোরহানুদ্দিন রাব্বানি সরকারকে হটিয়ে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছে তালেবান। ক্ষমতাচ্যুতরা উত্তরাঞ্চলে গিয়ে তালেবানের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছেন প্রতিরোধ, যা উত্তরাঞ্চলীয় জোট হিসেবে পরিচিত। এ জোটের অন্যতম নেতা বোরহানুদ্দিন রাব্বানি, আহমদ শাহ মাসুদের ওপর নাসেরুল্লাহ খান বাবরের প্রভাব ছিল।

তিনি এ প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাঁদের রাজি করিয়েছিলেন। তা ছাড়া বিখ্যাত উজবেক ওয়ারলর্ড আবদুর রশিদ দুস্তমও তালেবানের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছিলেন।

বাবরের উদ্দেশ্য ছিল সব নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কাবুলে একটি বোর্ডভিত্তিক সরকার গঠন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রর চাপ সত্ত্বেও তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছিলেন বেনজির ভুট্টা। কারণ, পরিকল্পিত তুর্কমিনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত পাইপলাইন (টিএপিআই) নির্মাণের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনোকলের বদলে আর্জেন্টিনার তেল কোম্পানি ব্রাইডাসকে দিতে আগ্রহী ছিল তাঁর সরকার। ইউনোকলকে কাজ দিতে তাঁর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ছিল বলে স্বয়ং বেনজির ভুট্টা আমাকে বলেছিলেন। এই যখন অবস্থা, ঠিক তখনই ১৯৯৬ সালে আচমকা পতন হয় বেনজির সরকারের। ভেস্তে যায় আফগান শান্তি আলোচনা। আর পাইপলাইন প্রজেক্ট চলে যায় ইউনোকলের কাছে।

এ ঘটনার কয়েক মাস পর আমি প্রথমবারের মতো আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নেই। এরপর কান্দাহারে লাদেনের দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি ১৯৯৮ সালে। এখনো স্পষ্ট স্মরণ করতে পারি, দাড়ি না থাকায় সেবার তালেবান আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আর উদ্ধার করেছিল আল-কায়েদা যোদ্ধারা। লাদেনের তৃতীয় সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম নাইন–ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার দুই মাস পর কাবুলে।

ইদানীং অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে, বর্তমান তালেবান ২০০১ সালের তালেবানের চেয়ে আলাদা। তবে আমার বিশ্বাস, তালেবান নিজেদের পুরোনো আদর্শের প্রতি এখনো অনুগত। তবে দুই দশকে তারা নতুন কিছু কৌশল রপ্ত করেছে বলে মনে হচ্ছে। বাহিনীটির নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা ব্যবস্থা মূলত তাদের সেই পুরোনো আদর্শকে কেন্দ্র করেই চলছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গত ১০ বছরে কাতারে তালেবানের যে রাজনৈতিক অফিস গড়ে উঠেছে, সেখানকার কর্মকর্তারা স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ‘রাহবরি শূরা’ বা সর্বোচ্চ পরামর্শসভা এবং আফগানিস্তানে মাঠে প্রতিরোধ সংগ্রামে নিয়োজিত নেতারাই তাঁদের সিদ্ধান্ত ঠিক করে দেন। তবে সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদাই হচ্ছেন তালেবানের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার হর্তাকর্তা। তিন সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি সব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশটিতে গণতন্ত্র কতটুকু সমর্থন করবেন। ভারত সরকার যে কাবুলে নতুন সংসদ ভবন বানিয়ে দিয়েছে, তার কতটুকু ব্যবহার হবে? তাঁরা ধর্মীয় আলোকে নারী স্বাধীনতা, বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহণে সরকার গঠনের কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু পশ্চিমা গণতন্ত্র নিয়ে তাঁদের মধ্যে যথেষ্ট আপত্তি আছে বলে আমার ধারণা। এক তালেবান নেতা আমাকে বলেছিলেন, সৌদি আরবে তো কোনো গণতন্ত্র নেই। তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক আছে। তাহলে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে তাদের সমস্যা কোথায়। তাই মুখে তারা যত কিছু বলুক, তারা মূল আদর্শে কোনো ছাড় দেবে বলে আমার মনে হয় না।

তালেবানের এক প্রজন্ম সোভিয়েত রাশিয়াকে পরাজিত করেছে। আরেক প্রজন্ম যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করেছে ঠিকই। কিন্তু দেশ চালানো আসলেই অনেক কঠিন। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পেলে তালেবানের পক্ষে দেশ চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তালেবান ইতিমধ্যে আশ্বাস দিয়েছে, তাদের ভূমি কোনো বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেবে না। 
কিন্তু এটা তো কথার কথা।

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের ১৫টি প্রদেশে আল-কায়েদার কার্যক্রম রয়েছে। এসব আল-কায়েদা যোদ্ধার মধ্যে আফগান ও আরবের বাইরে অনেক পাকিস্তানি, ভারতীয়, বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের নাগরিক রয়েছে। ফলে এই দেশগুলো শঙ্কায় থাকবে। তাই তালেবানকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে অন্তত বিশ্বের ১০টি দেশকে আশ্বস্ত করতে পারতে হবে। এরা হলো পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, চীন, ইরান, রাশিয়া (চেচনিয়া) ও যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে আশ্বস্ত করতে না পারলে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়বে। কয়েক বছরে তালেবান ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আইএসআইএস, আল-কায়েদা বা কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীকে এসব দেশের বিরুদ্ধে কাজ করতে আফগানিস্তানকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করেছে তালেবান।

এদিকে তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জবিয়ুল্লাহ মুজাহিদ প্রথম সংবাদ সম্মেলনে অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন বটে, কিন্তু ১৯ আগস্ট দেশটির স্বাধীনতা দিবসে পতাকা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। দেশটির পুরোনো জাতীয় পতাকা নিয়ে শোভাযাত্রাকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে তালেবান। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেও কিছু সাংবাদিকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো এবং কিছু নারী সাংবাদিককে কাবুলে কাজে বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসলামের নামে এসব হচ্ছে। কিন্তু এসবের মধ্যে তো কোনো ইসলাম নেই। এসব তো কেবল রাজনীতি। 
এভাবে তালেবানের পক্ষে দেশ চালানো সম্ভব হবে না। তারা দুই দশকে বিদেশি কূটনীতিক এবং গণমাধ্যম মোকাবিলার কৌশল শিখেছে। এখন তাদের দরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা শেখা। নইলে তারা জনভিত্তি তৈরি করতে পারবে না। বুলেট দিয়ে জনমত সৃষ্টি করা যায় না। এ জন্য ব্যালট আবশ্যক। অর্থাৎ তালেবানকে নির্বাচনী ব্যবস্থায় ফিরতে হবে।

২৫ বছর আগে তালেবানকে একটি ‘পাইপলাইন পুলিশ’ হিসেবে আমার কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজকে তালেবান একটি বহুজাতিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তাই ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল স্যার নিক কার্টারের উদ্ধৃতি দিয়ে আমি শেষ করতে চাই। তিনি বলেছেন, ‘নতুন তালেবানকে একটু সুযোগ দেওয়া হোক। তারা তাদের পার্থক্য প্রমাণ করতে পারে কি না, দেখা যাক।’

তবে প্রশ্ন হচ্ছে, তারা এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে তো? না পারলে আফগান সমস্যা আশপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। যা থেকে রক্ষা পাবে না পাকিস্তান, ভারত কিংবা বাংলাদেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় ক্যাথলিক স্কুলের অপহৃত আরও ১৩০ শিক্ষার্থী মুক্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নাইজার রাজ্যের একটি ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুল ৩শর বেশি শিক্ষার্থী অপহরণ হয়। ছবি: এএফপি
নাইজার রাজ্যের একটি ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুল ৩শর বেশি শিক্ষার্থী অপহরণ হয়। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য নাইজারে একটি ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুল থেকে অপহৃত ১৩০ জন শিক্ষার্থীকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

এই ঘটনাকে দেশের অন্যতম ভয়াবহ এক গণ-অপহরণের ঘটনা হিসেবে অভিহিত করে সবার মুক্তির পর একে ‘বিজয় এবং স্বস্তির মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছে নাইজেরিয়ার সরকার।

গত ২১ নভেম্বর পাপিরির সেন্ট মেরি’স ক্যাথলিক স্কুল থেকে ২৫০ জনেরও বেশি শিশু এবং কর্মী অপহৃত হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন শিশুকে চলতি মাসের শুরুর দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

অবশিষ্ট ১৩০ জন শিশু ও কর্মীকে উদ্ধারের’ বিষয়টি নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘একজন শিক্ষার্থীও আর বন্দিদশায় নেই।’

গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র বায়ো ওনানুগা জানান, মুক্ত শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যা এখন ২৩০ জন। অপহরণের পর থেকে ঠিক কতজনকে তুলে নেওয়া হয়েছিল এবং কতজন বন্দিদশায় ছিল, সে বিষয়টি অস্পষ্ট ছিল। সরকার কীভাবে সর্বশেষ এই মুক্তি নিশ্চিত করেছে বা কোনো মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে কি না তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

ওনানুগা আরও জানান, আশা করা হচ্ছে, মুক্ত শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার নাইজারের রাজধানী মিন্নায় পৌঁছাবে।

গত নভেম্বরে ঘটে যাওয়া এ অপহরণের ঘটনাটি উত্তর ও মধ্য নাইজেরিয়ার স্কুল এবং উপাসনালয়গুলোতে ক্রমবর্ধমান লক্ষ্যবস্তু হামলার সর্বশেষ ঘটনা। এ অপহরণের সময় ৫০ জন শিক্ষার্থী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল বলে জানায় ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব নাইজেরিয়া।

এর আগে ১৮ নভেম্বর সেন্ট মেরি’স-এ হামলার ঠিক কয়েক দিন আগে আরও কিছু গণ-অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। কোয়ারা রাজ্যের ক্রাইস্ট অ্যাপোস্টোলিক চার্চে এক হামলায় দুজন নিহত এবং ৩৮ জন অপহৃত হন। এর আগের দিন কেব্বি রাজ্যের গভর্নমেন্ট গার্লস সেকেন্ডারি স্কুল থেকে দুজন নিহত এবং ২৫ জন মুসলিম শিক্ষার্থী অপহৃত হয়েছিল। কোয়ারা এবং কেব্বি হামলার ঘটনায় যাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল, তারা সবাই ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে।

এই অপহরণগুলোর পেছনে কারা রয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে অধিকাংশ বিশ্লেষকের ধারণা, মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে অপরাধী চক্রগুলো এই কাজ করছে।

গত ৯ ডিসেম্বর নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেছিলেন, তাঁর সরকার আমাদের স্কুলগুলোকে নিরাপদ করতে এবং ছোটদের জন্য শিক্ষার পরিবেশকে আরও নিরাপদ ও অনুকূল করতে নাইজার এবং অন্যান্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলা উপকূলের কাছে আরেকটি তেলবাহী ট্যাংকারকে যুক্তরাষ্ট্রের ধাওয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাহাজটিকে “সক্রিয়ভাবে ধাওয়া” করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। ছবি: এএফপি
জাহাজটিকে “সক্রিয়ভাবে ধাওয়া” করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। ছবি: এএফপি

ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাঙ্কার ধাওয়া করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একজন মার্কিন কর্মকর্তা আল জাজিরাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে এই অভিযান ওয়াশিংটনের।

গতকাল রোববার এই অভিযানটি পরিচালিত হয়। এর মাত্র একদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশিত এক ‘ব্লকেডের’ অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় জাহাজ জব্দ করে মার্কিন কোস্ট গার্ড।

আল জাজিরাকে ওই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ‘জাহাজটিকে “সক্রিয়ভাবে ধাওয়া” করছে আমাদের কোস্ট গার্ড। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, জাহাজটি ভেনেজুয়েলার সেই “ডার্ক ফ্লিট”-এর অংশ, যা লাতিন আমেরিকার দেশটির গুরুত্বপূর্ণ তেল খাতের ওপর ওয়াশিংটনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর চেষ্টা করছে।’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, জাহাজটি ‘ভুয়া পতাকা’ ব্যবহার করছিল। একই সঙ্গে এটি একটি ‘বিচারিক জব্দাদেশ’-এর আওতাভুক্ত।

এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ওই ট্যাঙ্কারটি নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। তবে এখন পর্যন্ত জাহাজটিতে কেউ আরোহণ করেনি। জাহাজটির গতিরোধের প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যার মধ্যে সন্দেহভাজন জাহাজের খুব কাছ দিয়ে নৌযান চালানো বা ওপর দিয়ে বিমান ওড়ানোও অন্তর্ভুক্ত।

অভিযানটি কোথায় চলছে বা কোন জাহাজের পিছু নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেননি ওই কর্মকর্তা।

ব্রিটিশ সামুদ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংস্থা ভ্যানগার্ড ওই জাহাজটিকে ‘বেলা ১’ হিসেবে শনাক্ত করেছে। এটি একটি বিশাল আকারের অপরিশোধিত তেলবাহী জাহাজ, যা গত বছর মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় যুক্ত করা হয়। জাহাজটির সঙ্গে ইরানের যোগসূত্র রয়েছে বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি।

ট্যাংকারট্র্যাকার্স ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রোববার ভেনেজুয়েলার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় বেলা ১ খালি ছিল।

ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ (PDVSA)-র অভ্যন্তরীণ নথির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ২০২১ সালে ভেনেজুয়েলার তেল চীনে পরিবহনে ব্যবহৃত হয়েছিল এই জাহাজটি। একই সঙ্গে, একটি জাহাজ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি আরও জানায় যে, জাহাজটি এর আগে ইরানের অপরিশোধিত তেলও বহন করেছিল।

ভেনেজুয়েলার তেল খাতকে লক্ষ্য করে এই অভিযানটি এমন এক সময়ে পরিচালিত হচ্ছে যখন এই অঞ্চলে বৃহৎ আকারে মার্কিন সামরিক শক্তি বাড়ানো হয়েছে। এর ঘোষিত লক্ষ্য হলো মাদক পাচার মোকাবিলা করা। এছাড়াও, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির নিকটবর্তী প্রশান্ত মহাসাগর এবং ক্যারিবীয় সাগরে কথিত মাদক পাচারকারী জাহাজগুলোর ওপর দুই ডজনেরও বেশি হামলা চালানো হয়েছে।

সমালোচকেরা এসব হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে ভেনেজুয়েলা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটির দাবি, বিশ্বের বৃহত্তম তেল মজুত দখলের উদ্দেশ্যেই ওয়াশিংটন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ জব্দের ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে ভেনেজুয়েলা।

এ প্রসঙ্গে গতকাল হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জব্দ করা প্রথম দুটি তেলের ট্যাঙ্কার কালোবাজারে পরিচালিত হচ্ছিল এবং নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশগুলোতে তেল সরবরাহ করছিল।

শনিবার জব্দ করা দ্বিতীয় জাহাজটি পানামার পতাকাবাহী ‘সেঞ্চুরিজ’ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। জাহাজটিতে প্রায় ১৮ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ছিল। ভেনেজুয়েলার এই তেলগুলো চীনে নেওয়ার কথা ছিল।

প্রথম জব্দ জাহাজ ‘স্কিপার’ বর্তমানে টেক্সাস উপকূলে নোঙর করা আছে। জাহাজটিতে থাকা ১৯ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সেখানে খালাস করে যুক্তরাষ্ট্রে পরিশোধনের প্রস্তুতি চলছে।

এই জাহাজ জব্দের ঘটনায় ভেনেজুয়েলা সরকার অভিযোগ করছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের তেল চুরি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৬
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত