Ajker Patrika

পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি’ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র, ভারতীয় দাবির সত্যতা কতটুকু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ মে ২০২৫, ১১: ২১
ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মুরিদকের সেই কমপ্লেক্সের একটি ভবন। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে
ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মুরিদকের সেই কমপ্লেক্সের একটি ভবন। ছবি: আল-জাজিরার সৌজন্যে

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে ভারতের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান জানিয়েছে, হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ভারতের দাবি, লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসী অবকাঠামো। তবে আল-জাজিরা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পেয়েছে এটি মূলত একটি কমপ্লেক্স। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক ভবন ও মসজিদ রয়েছে। হামলায় একটি মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত ৬ মে দিবাগত রাতে মুরিদকেতে চালানো এই হামলাটি ছিল ভারতীয় সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’—এর অংশ। ভারত বলছে, এটি ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে চালানো প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ। ওই হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মুরিদকে শহরটি লাহোর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। ইসলামাবাদ থেকে চার ঘণ্টার পথ। শহরটির জনসংখ্যা আড়াই লাখের বেশি। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত দাবি করে আসছে, এখানেই লস্কর-ই-তৈয়্যবার (এলইটি) সদর দপ্তর অবস্থিত।

হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ‘সরকারি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কমপ্লেক্স’ নামে পরিচিত একটি বিশাল এলাকা, যেখানে একটি হাসপাতাল, দুটি স্কুল, একটি হোস্টেল ও একটি বড় মাদ্রাসা রয়েছে। ৮০টি আবাসিক ভবনের এই কমপ্লেক্সে সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারসহ প্রায় ৩০০ মানুষ বসবাস করেন। মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানান, হামলার পরপরই কমপ্লেক্সের একটি প্রশাসনিক ভবনে তিনজন নিহত হন। তাঁরা সবাই ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহতদের মধ্যে কেউ কেউ সেখানে জরুরি দায়িত্ব পালনের জন্য অবস্থান করছিলেন। এক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

বুধবার ভারতীয় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি মসজিদও। ঘটনাস্থলে থাকা এক উদ্ধারকারী কর্মকর্তা আল-জাজিরাকে বলেন, হামলার আধঘণ্টার মধ্যেই তিনি সেখানে পৌঁছেছিলেন। প্রশাসনিক ভবনের একটি ঘরের দিকে নির্দেশ করে তিনি বলেন, ‘প্রথম মরদেহ আমিই খুঁজে পেয়েছিলাম।’

সরকারি কর্মকর্তা তৌসিফ হাসান আল-জাজিরাকে বলেন, ‘সেদিন রাতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম মুরিদকেতেই আঘাত হানে।’ তিনি জানান, মাঝরাতের কিছুক্ষণ পর তিনি বিকট দুটি শব্দ শোনেন। শব্দ দুটি দুই মিনিটের ব্যবধানে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা এর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। কী ঘটেছে, আমি ঠিক বুঝতে পেরেছিলাম।’

এই কমপ্লেক্সের মসজিদটির নাম উম্মুল কুরা। এর বিশাল প্রার্থনা কক্ষের ছাদের কিছু অংশ ধসে পড়েছে ভারতীয় হামলায়। ছাদের দুটি বিশাল গর্ত ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার স্থান নির্দেশ করে। তৌসিফ হাসান এবং তাঁর সহকর্মী উসমান জালিস জানান, দুই সপ্তাহ আগে পেহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ মুরিদকে হামলার ঝুঁকির মূল্যায়ন করেছিল। ভারত দীর্ঘদিন ধরে এই শহর ও কমপ্লেক্সটিকে এলইটির সদর দপ্তর বলে দাবি করে আসছে। এই দাবির কারণে হামলার আশঙ্কা ছিল।

উসমান জালিস আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের জানানো হয়েছিল, মুরিদকে হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এ কারণেই আমরা কমপ্লেক্সের কর্মী ও বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম।’ যারা নিহত হয়েছেন, তারা জরুরি কাজের জন্য থেকে যাওয়া সীমিতসংখ্যক কর্মীর অংশ ছিলেন।

মসজিদের বারান্দার একপাশে একটি বড় টেবিলে ভবনগুলোতে আঘাত হানা ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরাগুলো রাখা ছিল। বিস্ফোরকের গন্ধ এবং ধাতব খণ্ডগুলোতে তখনো তপ্ত ছিল। তৌসিফ হাসান ও উসমান জালিস জোর দিয়ে বলেছেন, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কমপ্লেক্সটির প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আরও জটিল।

কমপ্লেক্সটি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন হাফিজ সাঈদ। তিনি জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি) নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানেরও প্রতিষ্ঠাতা। জেইউডি দাতব্য সংস্থা হলেও এটি ব্যাপকভাবে এলইটি-এর ছায়া সংগঠন হিসেবে পরিচিত। কমপ্লেক্সের মাদ্রাসাটির নাম জামিয়া দাওয়া ইসলামি। এই নামটি জেইউডি-র নামে রাখা হয়েছে।

ভারতের অভিযোগ, হাফিজ সাঈদ ও এলইটি ভারতের ভূখণ্ডে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ২০০৮ সালের নভেম্বরের মুম্বাই হামলা। ওই হামলায় কয়েক দিনে ১৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

আবিদ হোসেন নামের ৫১ বছর শিক্ষক এই কমপ্লেক্সেই বসবাস করেন। তিনি জোর গলায় ভারতের দাবি অস্বীকার করেন। ভারত দাবি করেছিল, এটি ‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ বা ‘কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সদর দপ্তর।’ তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, ‘এই কমপ্লেক্সটি সব সময়ই ছেলে-মেয়েদের জন্য একটি শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। আমি গত ৩০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি এবং নিজেই এখানে শিক্ষকতা করি।’

ওই শিক্ষক আরও বলেন, এই এলাকা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো—এমন অভিযোগও সঠিক নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের সাঁতার, ঘোড়া চালানো বা শারীরিক প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়ার মতো মাঠ ও সুবিধা যদি থাকে, তবে কেন এর মানে হবে যে এখানে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?’

২০১৯ সালে পাকিস্তানি সরকার জেইউডি-এর কাছ থেকে এই কমপ্লেক্সটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। সে সময় সাঈদ ও এলইটি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন বন্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া দেশগুলোর ‘ধূসর তালিকায়’ (গ্রে লিস্ট) অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঝুঁকিও ছিল পাকিস্তানের।

মসজিদের পেছনে একটি রাস্তা রয়েছে। সেখানে দুটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। চারদিকে সোলার প্যানেল ও ভাঙা ইট ছড়িয়ে ছিল। হামলার রাতের কথা মনে করে বাসিন্দা আলী জাফর ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোর পেছনের নিজের বাড়িটির দিকে নির্দেশ করেন। তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের শব্দ অন্তত সাত কিলোমিটার দূরে থেকেও শোনা গিয়েছিল।’ তিনি পরিবারের সঙ্গে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। সেই বাড়ির কাছ থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

জাফর বলেন, ‘কয়েক দিন আগে কর্তৃপক্ষ আমাদের জায়গাটি ছেড়ে দিতে বলেছিল। তাই আমরা কমপ্লেক্সের বাইরে চলে গিয়েছিলাম।’ জাফর আরও বলেন, ‘এটা নিশ্চিত ছিল যে, ভারত এই এলাকায় হামলা চালাবে। কারণ, তাদের মিডিয়া বারবার মুরিদকেকে তুলে ধরছিল।’

তৌসিফ হাসান বলেন, শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়ায় মাদ্রাসা ও স্কুল বন্ধ ছিল। তবে পুরো কমপ্লেক্সটি কঠোর সরকারি নজরদারিতে ছিল। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে সরকার প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন নিজের হাতে নেওয়ার পর আমরা নিশ্চিত করেছি যে এখানকার পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাদান সম্পূর্ণভাবে তদারকি করা হয়।’

শিক্ষক আবিদ হোসেন জানান, সরকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সাঈদ আর কমপ্লেক্সে আসেননি। তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে ও ২০০০ সালের শুরুর দিকে তিনি নিয়মিত আসতেন।’ সাঈদের বয়স এখন সত্তরের বেশি। ২০১৯ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২২ সালে পাকিস্তানের একটি আদালত দুটি ‘সন্ত্রাসে অর্থায়ন’ মামলায় তাঁকে ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই ধরনের অভিযোগে ২০২০ সালে তাঁকে আলাদা ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জার্মানিতে হলিউড স্টাইলে ডাকাতি, ব্যাংকের ভল্ট কেটে ৩ কোটি ইউরো লুট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। ছবি: গেলসেনকির্শেন পুলিশ
ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। ছবি: গেলসেনকির্শেন পুলিশ

হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা-সিরিজে হরহামেশাই ব্যাংক ডাকাতির কাহিনি দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবে তেমন হওয়াটা অসম্ভব মনে হলেও এমন সিনেমাটিক স্টাইলে ব্যাংক ডাকাতি হয়ে গেছে জার্মানির এক ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায়। ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা।

পশ্চিম জার্মানির গেলসেনকির্শেন শহরের স্পারকাসে সেভিংস ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটেছে। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বড় ড্রিল ব্যবহার করে আনুমানিক ৩ কোটি ইউরো (৪৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা) নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনাকে ডাকাতির কাহিনিনির্ভর হলিউডের সিনেমা ‘ওশানস ইলেভেন’-এর সঙ্গে তুলনা করে এএফপি বার্তা সংস্থাকে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এটি অত্যন্ত পেশাদারভাবে করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই ডাকাতির সময় অর্থ, স্বর্ণ ও গহনা রাখা ৩ হাজারেরও বেশি সেফ ডিপোজিট বক্স ভেঙে ফেলা হয়েছে।

গেলসেনকির্শেন পুলিশ জানায়, গত সোমবার ভোররাতে ফায়ার অ্যালার্ম সক্রিয় হলে তারা ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে। তখন ক্রিসমাসের ছুটি চলছিল। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বুয়ের জেলায় নিয়েনহোফস্ট্রাসে অবস্থিত ওই ভবনে ডাকাতি চালায়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তারা পাশের একটি পার্কিং গ্যারেজ ব্যবহার করে ব্যাংকে ঢোকে এবং সেখান দিয়েই পালিয়ে যায়।

তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বিবিসি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত শনিবার রাত থেকে গত রোববার ভোর পর্যন্ত ওই ভবনটির গ্যারেজের সিঁড়িঘরে কয়েকজন পুরুষকে বড় বড় ব্যাগ বহন করতে দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজে সোমবার ভোরে ডে-লা-শেভালারি-স্ট্রাসে অবস্থিত গ্যারেজ থেকে একটি কালো অডি আরএস ৬ গাড়িকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। সোমবার ভোররাতে একটি ফায়ার-অ্যালার্ম বাজলে ভূগর্ভস্থ ভল্ট রুমে ঢোকার জন্য করা গর্তটি ধরা পড়ে। এরপর পুলিশ ও দমকল বাহিনী ভবনটিতে তল্লাশি চালায়।

চুরির ঘটনায় ব্যাংকের শাখাটি বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্রাহকদের প্রায় ৯৫ শতাংশ সেফ ডিপোজিট বক্স খুলে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজা-পশ্চিম তীরের ৩৭ ত্রাণ সংস্থার লাইসেন্স ১ জানুয়ারি থেকে স্থগিত করেছে ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে এমন ৩৭টি সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, এসব সংস্থা নতুন নিবন্ধন বিধিমালার আওতায় নির্ধারিত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এসব সংস্থা তাদের কর্মীদের ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অ্যাকশনএইড, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি এবং নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের মতো পরিচিত আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (আইএনজিও) গুলোর লাইসেন্স ১ জানুয়ারি থেকে স্থগিত করা হবে এবং ৬০ দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশ। তারা বলছে, নতুন নিয়মগুলো ‘অতিরিক্তভাবে কঠোর’ এবং ‘অগ্রহণযোগ্য’।

এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, জাপান, নরওয়ে, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর (আইএনজিও) কার্যক্রম জোরপূর্বক বন্ধ করে দিলে স্বাস্থ্যসেবাসহ জরুরি সেবায় প্রবেশাধিকার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি এখনো ‘বিপর্যয়কর’ উল্লেখ করে তাঁরা ইসরায়েল সরকারকে আহ্বান জানান, যাতে এনজিওগুলো টেকসই এবং আগের মতো কাজ করতে পারে।

এদিকে ইসরায়েলের ডায়াসপোরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন এই পদক্ষেপগুলোর ফলে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহে কোনো প্রভাব পড়বে না। মন্ত্রণালয়টি জানায়, জাতিসংঘের সংস্থা, দ্বিপক্ষীয় অংশীদার এবং মানবিক সংগঠনসহ ‘অনুমোদিত ও যাচাইকৃত চ্যানেল’ দিয়ে সহায়তা সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।

তাদের দাবি, সহায়তা সংস্থাগুলোর লাইসেন্স বাতিলের প্রধান কারণ হলো, তাদের কর্মীদের বিষয়ে সম্পূর্ণ ও যাচাইযোগ্য তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানো যা মানবিক কাঠামোয় ‘সন্ত্রাসী অপারেটিভদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ইসরায়েল।

এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা বলেন, অক্টোবর মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় পুষ্টি ও খাদ্য সরবরাহে কিছু উন্নতি হয়েছে। তবে পরের মাসেও প্রায় ১ লাখ মানুষ ‘চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মুখোমুখি ছিল।

তবে গাজার সীমান্ত ক্রসিংগুলো নিয়ন্ত্রণকারী ইসরায়েলি সামরিক সংস্থা কোগাত দাবি করেছে, যেসব সংস্থার কার্যক্রম স্থগিত করা হবে, তারা বর্তমান যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কোনো সহায়তা আনেনি। সংস্থাটি আরও জানায়, অতীতেও তাদের সম্মিলিত অবদান মোট সহায়তার মাত্র প্রায় ১ শতাংশ ছিল।

ডায়াসপোরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে ১৫ শতাংশেরও কম নতুন নিয়ন্ত্রক কাঠামো লঙ্ঘন করেছে।

ওই নিয়ন্ত্রক কাঠামোতে লাইসেন্স বাতিলের একাধিক ভিত্তি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

১. ইসরায়েলকে একটি ইহুদি ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার না করা

২. হলোকাস্ট বা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে চালানো হামলা অস্বীকার করা

৩. শত্রু রাষ্ট্র বা সন্ত্রাসী সংগঠনের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামকে সমর্থন করা

৪. ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অবৈধতা আরোপের প্রচারণা’ চালানো

৫. ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কটের আহ্বান জানানো বা তাতে অংশ নেওয়ার অঙ্গীকার করা

৬. বিদেশি বা আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনাকে সমর্থন করা

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের সংস্থা এবং ২০০টিরও বেশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হিউম্যানিটারিয়ান কান্ট্রি টিম আগেই সতর্ক করে বলেছিল, নতুন নিবন্ধন নীতিমালা গাজা ও পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর (আইএনজিও) কার্যক্রমকে মৌলিকভাবে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

তাদের ভাষায়, ‘এই ব্যবস্থা অস্পষ্ট, খামখেয়ালি ও অত্যন্ত রাজনৈতিক মানদণ্ডের ওপর নির্ভরশীল এবং এমন সব শর্ত আরোপ করছে, যা মানবিক সংস্থাগুলোর পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন না করে বা মানবিক নীতির মূল ভিত্তি ক্ষুণ্ন না করে পূরণ করা সম্ভব নয়।’

হিউম্যানিটারিয়ান কান্ট্রি টিমের মতে, বর্তমানে গাজায় অধিকাংশ ফিল্ড হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা বা সহায়তা, জরুরি আশ্রয় কার্যক্রম, পানি ও স্যানিটেশন সেবা, তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য পুষ্টি স্থিতিশীলকরণ কেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মাইন অপসারণ কার্যক্রম আইএনজিওগুলোর মাধ্যমেই পরিচালিত বা সমর্থিত হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের ডায়াসপোরা বিষয়ক ও ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলা বিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি বলেন, ‘বার্তাটি স্পষ্ট: মানবিক সহায়তা স্বাগত কিন্তু সন্ত্রাসবাদের জন্য মানবিক কাঠামোর অপব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।’

কার্যক্রম স্থগিত হতে যাচ্ছে এমন সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে কেয়ার, মেডিকো ইন্টারন্যাশনাল এবং মেডিক্যাল এইড ফর প্যালেস্টিনিয়ানস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইয়েমেন সংঘাতে মুখোমুখি অবস্থানে সৌদি ও আরব আমিরাত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৬
আমিরাত সমর্থিত ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’-এর সৈন্যরা। ছবি: দ্য টাইমস
আমিরাত সমর্থিত ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’-এর সৈন্যরা। ছবি: দ্য টাইমস

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।

অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।

এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘২০২৫’ নিয়ে ১৯৯৮ সালে করা আমেরিকানদের ভবিষ্যদ্বাণী কতটুকু মিলেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।

একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।

তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।

গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত