Ajker Patrika

মহাকাশের আরও গভীরে

সাইরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ২২
মহাকাশের আরও গভীরে

দৃষ্টির সীমানায় নীল আকাশ কখনো কালো আঁধারে ছেয়ে যায়। অদ্ভুত ছায়ায় ঢেকে যায় প্রখর সূর্য। আবার গোধূলিবেলায় আকাশ অজানা এক জগতের ছবি আঁকে। রাতের আকাশে বসে তারার মেলা। কখনো চাঁদও হারায় আঁধারে। সূর্য আর চাঁদের এই লুকোচুরি খেলা বহুদিন ধরেই অজানা ছিল মানুষের। বিজ্ঞান একসময় জানাল, ‘গ্রহণ’ নামের প্রাকৃতিক এক খেলায় চাঁদ ও সূর্য হারায় দৃষ্টির আড়ালে। কঠিন প্রশ্নের সহজ এই উত্তর খুঁজে পেতে কেটে গেছে সহস্র বছর। তবে সহজ এই উত্তর কেবল মহাকাশের দরজায় কড়া নাড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। মহাকাশ জয়ে এখনো অনেক পথ বাকি।

মানুষের চেষ্টাও থেমে নেই। মহাকাশে চোখ রাখতে একসময় মানুষ আবিষ্কার করল টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র। দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশে মানুষের চোখ হয়ে কাজ করেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। এই দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কল্যাণেই রাতের আকাশের অজস্র তারা আর উল্কাপিণ্ড চোখের সামনে ধরা দিয়েছে স্পষ্ট হয়ে। কিন্তু যন্ত্রেরও সীমাবদ্ধতা থাকে, থাকে নির্দিষ্ট সীমানা। মহাকাশের আরও গভীরে যাওয়ার তাগিদ থেকে প্রায় তিন দশক আগে আরও আধুনিক টেলিস্কোপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই টেলিস্কোপ অবশেষে মহাকাশে মানুষের চোখ হতে চলেছে। ২২ ডিসেম্বর ইউরোপিয়ান আরিয়ান-৫ রকেটে করে মহাশূন্যে যাবে ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ’ নামের এই দূরবীক্ষণ যন্ত্র।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি উদ্ভাবন ও তৈরিতে দীর্ঘদিন ধরে একযোগে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র। বিবিসির বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্স ফোকাস-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মহাবিশ্বের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ধারণা পেতে অবলোহিত আলোকরশ্মি ব্যবহার করবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ।

সূর্য যে ছায়াপথের সদস্য, সেই মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গাতেই কেবল কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে এমন নয়! প্রতিটি ছায়াপথেই রহস্যময় এমন বৃহদাকার কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। আবার অনেক নক্ষত্র রয়েছে, যাদের রশ্মিতে রকমফের দেখা যায়। এসব নক্ষত্রের উৎপত্তি, আলোর উৎসসহ জটিল সব প্রশ্নের উত্তরও খুঁজবে জেমস ওয়েব। চোখ থাকবে নেবুলাতেও। হাবল যেখানে সাধারণ আলো নিয়ে কাজ করেছে, জেমস ওয়েবের শক্তি সেখানে অবলোহিত রশ্মি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাবিশ্বের রহস্যভেদ করতে হলে অবলোহিত রশ্মিই আপাতত তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় অস্ত্র। কোনো বস্তুর গভীরে যেতে এ রশ্মির জুড়ি নেই।

অজানাকে সামনে এনেছিল হাবল। আর জন্ম দিয়েছিল শত শত প্রশ্নের। জেমস ওয়েব সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে। টেনিস কোর্টের মতো বড় এ টেলিস্কোপের বেশির ভাগ অংশ বানানো হয়েছে সান শিল্ড দিয়ে, যা অবলোহিত রশ্মির প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। মহাকাশে যাত্রার সময় পাঁচ স্তরের উচ্চপ্রযুক্তির এ সান শিল্ড ভাঁজ করা থাকবে। জেমস ওয়েবের মূল আয়নার ব্যাস হবে সাড়ে ৬ মিটার, যা হাবলের প্রায় তিন গুণ। সান শিল্ড স্তরের মতো এই বড় আয়নাও মহাকাশযানে বসানো যাবে না। যাত্রার ক্ষেত্রে এটিই অন্যতম চ্যালেঞ্জিং বিষয়। এটিও বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভাঁজ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

ভারতের কূটনীতিকের সঙ্গে ‘গোপন’ বৈঠকের কথা জানালেন জামায়াত আমির

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত