Ajker Patrika

এই অ্যালবাম বিনোদন দেওয়ার জন্য বানাননি অনুপম

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১১: ৪৭
এই অ্যালবাম বিনোদন দেওয়ার জন্য বানাননি অনুপম

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাক্ষাৎকারের সময় দিয়েছিলেন অনুপম রায়। ৬টা থেকে হোটেল লবিতে অপেক্ষা। সঙ্গে আজকের পত্রিকার আরও দুই সাংবাদিক নাঈম হক ও তুষার পাল। নির্দিষ্ট সময়ের মিনিট দশেক পরে ব্যান্ড সদস্যদের নিয়ে লবিতে এলেন অনুপম রায়। সেখানে আমরা ছাড়া অপেক্ষায় ছিলেন আরও কয়েকজন। অনুপমের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন তাঁরা। প্রিয় শিল্পীর জন্য নিয়ে এসেছেন পাঞ্জাবি ও রসগোল্লা। ভক্তদের সঙ্গে মিনিট দশেক কথা বলে, ছবি তুলে ও অটোগ্রাফ দিয়ে ফিরে এলেন অনুপম রায়। বসলেন মুখোমুখি। কয়েক বছর পর শুক্রবার (১০ মার্চ) ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। রাতে শো নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে। সাক্ষাৎকারটি শেষ করেই শোয়ের উদ্দেশে বেরোবেন। হাতে তাই সময় খুব কম। 

এবার খুব টাইট শিডিউল, নাকি? 
প্রতিবারই তাই হয়। 

আপনার নতুন অ্যালবাম ‘অদৃশ্য নাগরদোলার ট্রিপ’-এর দুটো গান শুনলাম…
সবে রিলিজ করেছে। 

ছয় বছরের মাথায় আপনার পঞ্চম অ্যালবাম? 
হ্যাঁ। 

অ্যালবামের দুটো গান ‘কেমন আছো অ্যানি হল’ ও ‘অবস’ শুনে মনে হয়েছে, কথায়-সুরে এই গানগুলো আরো ব্যক্তিগত, আরো গভীর। আপনার ভাবনা কী রকম ছিল ‘অদৃশ্য নাগরদোলার ট্রিপ’ অ্যালবামটি করার সময়?

আসলে বহু দিন ধরে সিনেমার কাজ করছি। তারপর সিঙ্গেলের কাজ। আজকাল তো অ্যালবাম তেমন আর হয় না। আমরা আর্টিস্টরা সবাই সিঙ্গেল রিলিজ করি, কারণ মানুষের গোটা অ্যালবাম শোনার ধৈর্য চলে গেছে। তো অনেক গান আমি করেছি বিভিন্ন মিউজিক লেবেলের জন্য। সেখানে একটা বাধ্যবাধকতা থাকে যে, একটু আনন্দের কিংবা মানুষকে একটু এন্টারটেইন করার। এন্টারটেইনমেন্ট ফ্যাক্টরটা খুব ইমপরটেন্ট থাকে আমরা যখন কারো জন্য গান করি। কারণ মানুষ গানবাজনা থেকে এন্টারটেইনমেন্ট চায়। আবার এমন অনেক গান তৈরি হয়, সেখানে কোনো এন্টারটেইনমেন্ট ভ্যালু নেই। বিনোদন দেওয়ার জন্য এই গানগুলো (‘অদৃশ্য নাগরদোলার ট্রিপ’ অ্যালবামের গান) করিনি আমি। কারণ আমি তো আমার জীবন থেকে, আমার দর্শন থেকে গানগুলো বানাচ্ছি। আমার সব সময় দায়বদ্ধতা থাকে না যে মানুষকে বিনোদন দিতেই হবে। সেই জায়গা থেকে অনেক দিন ধরে মনে হচ্ছিল একটা অ্যালবাম করতে চাই, যেখানে এমন কিছু গান থাকবে, যেগুলো মানুষকে বিনোদন দেবে না। সেই রকম কিছু গান নিয়ে এই অ্যালবাম তৈরি করেছি। 

বিনোদন যদি কেউ পেতে চায়, সেটা তাঁর ব্যাপার…
হ্যাঁ, সেটা তাঁর ব্যাপার। কিন্তু আমার কোনো দায়বদ্ধতা নেই। 

[দ্য অনুপম রায় ব্যান্ডের ম্যানেজার রানা সিংহ রায় এগিয়ে এলেন। অনুপমকে জিজ্ঞেস করলেন, কফি বা স্ন্যাকস কিছু চান কি না। অনুপম ‘না’ সূচক জবাব দিলেন। বলে দিলেন, ‘পারলে সঙ্গে করে একটা জলের বোতল নিস।’ রানার সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলাপ শেষ করে আবার সাক্ষাৎকারে ফিরে এলেন অনুপম] অনুপম রায়‘অবস’ গানের ভিডিওতে একটা মানুষ দার্জিলিংয়ের নির্জনতার মধ্যে সারাক্ষণ কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। একটা তারবিহীন টেলিফোনে কথা বলছে। এটা কি অনেকটা নিজের সঙ্গে নিজের কথা? নিজেকে খুঁজে ফেরা? 
 ‘অবস’ আসলে আমার এক দশক আগের লেখা গান। যে ছেলেটির সঙ্গে কাজ করেছি, রাতুল, ও গিটার বাজায়, মিউজিক অ্যারেঞ্জ করতে আমাকে সাহায্য করেছে। ওর সঙ্গে বহু দিন ধরে কাজ করার কথা ছিল। এ গানটা পড়েই ছিল। এটা আমার খুব প্রিয় গান। গানটার মূল যে বক্তব্য, যে ফিল, সেটা হচ্ছে—মানুষ জীবনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে। হিউম্যান রিলেশন নিয়ে গান। (একটা মানুষ) তার কোনো অনুভূতি থেকে গানটা গাইছে এবং সে অবস হয়ে পড়ছে। একটা বিষণ্নতা চেপে ধরছে। কী কারণ, ওগুলো তো ইলাবরেটলি গানের মধ্যে নেই। কিন্তু তার অনুভূতিগুলোই গানের মধ্য দিয়ে বেরিয়েছে। সে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কথাই হয়তো বলছে। এখান থেকেই খুব একটা ডার্ক, একটা মেলানকলি সুর তৈরি হয়েছিল। সেটাই রেখেছি ইচ্ছে করে। কারণ আমি জানি, এটার থেকে কেউ খুব একটা এন্টারটেইন হয়তো হবে না। 

অ্যালবামের দুটো গান তো বেরিয়ে গেল। শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন? 
প্রতিক্রিয়া খুবই ভালো পাচ্ছি। কারণ আমার বহু ভক্ত আছে, বহু শ্রোতা আছে, যারা শোনে আমার গান। যারা আমার ফিলোসফিতে বিশ্বাস করে। এবং কোনো একটা শিল্প কনজিউম করার সময় তারাও হয়তো বিশ্বাস করে, সব সময় যে বিনোদন পেতে কনজিউম করছে তা নয়। নিজেকে ভাবাতে, নিজের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা করছে এবং হয়তো এ গানগুলো সেটাতে সাহায্য করছে। 

 ‘অদৃশ্য নাগরদোলার ট্রিপ’ অ্যালবামে ৯টি গান থাকছে? 
আটটা মনে হয় থাকবে শেষ পর্যন্ত। 

গানগুলো কি এক সপ্তাহ পরপর রিলিজ হবে? 
হ্যাঁ, দুই সপ্তাহ পর ‘অবস’ বেরিয়েছে। এবার দেখি পরের গানটা কবে রিলিজ করে। 

গান তো রেডি হয়ে আছে। তাহলে রিলিজ নিয়ে এত অনিশ্চয়তা কেন? 
গান রেডি হয়ে আছে। তবে সমস্যা হলো, আজকাল গান রিলিজ করা খুব ঝামেলার। প্রতি গানের জন্য ভিডিও লাগে। সেগুলো করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং সেটার জন্য অনেকটা এফোর্ট যায়। সেগুলো করছি, দেখি কবে পারি! কমিট করছি না এখনই কিছু। 

অ্যালবামের নাম দিয়েছেন ‘অদৃশ্য নাগরদোলার ট্রিপ’। এই অদৃশ্য নাগরদোলা বলতে কী বুঝিয়েছেন? 
আমাদের জীবনের কথাই বলা হচ্ছে। আমরা নিজের অজান্তে কখন চড়ে বসেছি এই জীবনের নাগরদোলায় এবং দুলে চলেছি, ঘুরে চলেছি। যখন আমি নাগরদোলার কথা বলছি, সেটা আমি দেখতে পাই। যখনই তার সামনে একটা ‘অদৃশ্য’ শব্দ বসিয়ে দেওয়া হয়, সেটা যেন চোখের সামনে থেকে মিলিয়ে গেল। কিন্তু আসলে সেটা আছে। আমাদের জীবনে এ রকম বহু কিছু আছে, যেগুলো হয়তো আছে অথচ নেই। কিংবা নেই মনে হচ্ছে, কিন্তু আসলে আছে। এই সাবজেক্টটা নিয়ে বিভিন্ন গান তৈরি হয়েছে। 

আরেকটা গান আছে ‘বিচার’ বলে। সব দেশেই বিচারব্যবস্থা আছে। আইন আছে। দেশের অনেক মানুষ সেই আইন সম্বন্ধে জানেই না। জানলেও তারা সেই বিচারব্যবস্থার সুফল জীবনে পায় না। এ রকম ছোট ছোট জিনিস তুলেছি আমি, যেগুলো সমাজে আমরা দেখতে পাই। এবং নিজেরাই বুঝতে পারি না, সেগুলো আছে নাকি নেই! সেই অদৃশ্য নাগরদোলার কথাই অ্যালবামের মধ্যে বলা আছে। 

এক যুগের বেশি সময় ধরে আপনার গান শুনছেন দুই বাংলার শ্রোতারা। নিজেদের প্রেম, বিরহ, উদ্‌যাপন—সবকিছুতে আপনার গানের কাছে একটা আশ্রয় খোঁজেন তাঁরা। নতুন গান তৈরির সময় শ্রোতাদের এই প্রত্যাশা কীভাবে সামলান? 
আমি যখন গান বানাচ্ছি, আমি তো জানি না, আমার যে অনুভূতি তার সঙ্গে আরেকজন একাত্ম হবেন কি না। কারো মনে হতেই পারে আমার অনুভূতিটা ফালতু। আমার সঙ্গে তার কোনো যোগই নেই। সেটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদি একাত্ম হয়ে যায়, সেটাই বরং অ্যাকসিডেন্ট। সেখান থেকে ডেফিনেটলি একটা প্রেসার তৈরি হয় যে, আগেরবার আমি কানেক্ট করতে পেরেছিলাম, এবার পারছি কি না। ফলে আমার ওই দায়বদ্ধতাটা থাকা উচিত না যে, কে কানেক্ট করতে পারছে আর কে পারছে না। আমি গান করছি। যদি কেউ কানেক্ট করতে পারে করবে, যদি কেউ না পারে করবে না। 

এই কানেকশনটা আপনি বলছেন ‘অ্যাকসিডেন্ট’। তবে আপনার গানের সঙ্গে ব্যাপারটা বেশিই ঘটে। এটা চাপ হয়ে যায় কি না? 
ডেফিনেটলি। যখন জীবন শুরু করেছিলাম, তখন কোনো প্রেশারই ছিল না। কেউ শোনেইনি আমার গান। এখন অনেক মানুষ শুনেছে, অনেক মানুষের অনেক রকম অনুভূতি তৈরি হয়েছে। তারা তাদের প্রত্যাশা নিয়ে ফিরে ফিরে আসছে। 

অনুপম রায়। ছবি: সংগৃহীতসমাজের নানা ইতিবাচক-নেতিবাচক ঘটনা, ভ্রমণের অভিজ্ঞতা—সবকিছু আপনাকে নিশ্চয়ই প্রভাবিত করে। আপনার গান কিংবা কবিতা লিখতে ইন্সপায়ারিং ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে কোন বিষয়গুলো? 
একেক দিন একেকটা করে আরকি। একেক সময় একেকটা বিষয় নিয়ে বেশি ভাবিত হই। একেকটা ছবি দেখি বা বই পড়ি, সেটার মধ্যে বেশি ডুবে থাকি। সুতরাং কোনো একটা জিনিস নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। 

[অনুপম যতক্ষণ ছিলেন না, হোটেলের লবি ছিল নির্জন। সেই পিনপতন নীরবতা উধাও তিনি লবিতে আসার পরে। এখানে-ওখানে অনেকে জড়ো হয়েছেন, হয়তো অনুপমের সঙ্গে একটু কথা বা একটা ছবি তোলার ইচ্ছা নিয়ে। লবি এখন গমগম করছে। কথা বলতে ও শুনতে অসুবিধা হচ্ছে। গলার আওয়াজ খানিকটা চড়িয়ে দেন অনুপম রায়]

আমি দীর্ঘদিন বাদে বাংলাদেশে এসেছি এবার, এটা হওয়ার কথা নয়। চার-পাঁচ বছর হয়ে গেছে আমি বাংলাদেশ, ঢাকা, চট্টগ্রামে আসতে পারিনি। এটার থেকে একটা ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়েছে। দেশভ্রমণ বা নতুন জায়গা দেখা বা নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলার অদ্ভুত খিদে আমার আছে। একটা পিপাসা আছে। এখন এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সেটা আমাকে অনেক বেশি তাড়িত করছে। এই যে এসেছি, এটা আমার খুব ভালো লাগছে, এত দিন বাদে আমি ঢাকা শহরে এলাম। এয়ারপোর্টের রোডটা বেশি পাল্টে গেছে। সেটার খবর আমার কাছে ছিল না। রাস্তায় তো কনস্ট্রাকশনে দেখলাম ভরে গেছে। বলুন আর কী জানতে চান…

সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আমরা নানা রকম কনটেন্ট দেখছি এখন। প্রচুর গান, রিলস, ভিডিও। মানুষকে হঠাৎ করে অনেক রকম কনটেন্টের মধ্যে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর ভিড়ে ভালো গান কিংবা যে কোনো ভালো কনটেন্টের প্রতি মুগ্ধতা কীভাবে বজায় থাকবে? 
আসলে দিনের শেষে মানুষের যেটা ভালো লাগবে, সে সেটাই করবে। তার হাতে এখন কন্ট্রোল। আগে যে রকম ছিল, গানের ক্ষেত্রে যদি বলি, রেডিওতে যে গান বাজানো হবে, তাই-ই মানুষকে শুনতে হবে। বাড়িতে যে গ্রামোফোন রেকর্ড কেনা হবে, সে রেকর্ডই বাজবে। এর বাইরে অন্য গান সে শুনতে পাবে না। এখন মানুষের হাতে এত অপশন! ফলে তার সিনেমা দেখার ধরন, গান শোনার ধরন সব পাল্টে গেছে। আগে সিনেমা দেখতে গেলে প্রেক্ষাগৃহে যেতে হতো এবং সিনেমা হলের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন মানুষ মোবাইল ফোনে দেখে। যদি কোনো সিন ভালো না লাগে স্ক্রল করে যায়, ফার্স্ট ফরোয়ার্ড করে দেয়। 

সুতরাং দেখার অভ্যাস পাল্টে গেছে। গান শোনার অভ্যাস পাল্টে গেছে। আগে ক্যাসেটে যেটা হতো, খারাপ লাগলেও গানটা শুনতে হতো, তারপর পরের গানে যেতে হতো। এখন কুড়ি সেকেন্ডের মধ্যে পাল্টে দেওয়া যায়। সুতরাং আমরা যারা শিল্প তৈরি করার চেষ্টা করি, আমাদের জন্য এটা সমস্যার। কারণ মানুষের হাতে এত পাওয়ার চলে গেছে! যার ফলে আমরা কোনো একটা ভুল পদক্ষেপ নিতে পারি না। আমাদের প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপ ঠিক হতে হবে, না হলে মানুষ আমাদের গানও পাল্টে দেবে। 

আপনি বললেন মানুষের দেখার ধরন পাল্টে গেছে। বড় কনটেন্ট দেখার বা শোনার ধৈর্য কমে যাচ্ছে। তো এখন যে দৈর্ঘ্যের গান তৈরি হচ্ছে, ভবিষ্যতে সেটা আরো ছোট হয়ে যেতে পারে কি?
হতে পারে। ভবিষ্যতে কী লেখা আছে আমরা জানি না। এগুলো সবই বিনোদন এবং আনন্দ পাওয়ার জিনিস হয়ে যাচ্ছে। তাতে যদি বিনোদন পায় সে পাবে। সে ওইটাই শুনবে। কিন্তু ক্রিয়েটর হিসেবে আমাকে অতটা ভাবলে চলবে না। আমি যখন কোনো গান বানাচ্ছি, আমি তো অনুভূতিকে কথায়-সুরে প্রকাশ করছি। সেইটা যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয়। এবার গান তিন মিনিটের হলো, নাকি সাত মিনিটের হলো, আমি তো জানি না। কারণ আমার লেখা যত হবে, গানটার লেন্থ তা-ই হবে। তারপর মানুষ কী করবে, সেটা মানুষের হাতে। 

এই যে নানা সময়ে হুটহাট এক-দুটো গান উড়ে আসে। যেটা হয়তো এক-দুই সপ্তাহ ধরে মানুষ শোনে। সেটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক চলতে থাকে। তারপর সেগুলো অতি দ্রুত হারিয়েও যায়। এই ‘ভাইরাল’ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন? 
শিল্পীরাও চায় যে ভাইরাল হোক। নিজেরাই গান বানিয়ে নিজেরাই হ্যাশট্যাগ ভাইরাল লিখে পোস্ট করে। ভাইরাল হওয়া মানে কী? খুব জনপ্রিয় হওয়া। মানুষ জনপ্রিয়তা পছন্দ করে। কারণ জনপ্রিয় হওয়ার অনেক সুবিধা আছে। একটা অদ্ভুত আনন্দ দেয় যে, এত মানুষ ভালো বলছে। তবে শিল্পের খাতিরে যে গান বানাচ্ছি, সব গান ভাইরাল হওয়ার জন্য নয়, সব শিল্প ভাইরাল হওয়ার নয়। কিছু হবে, কিছু হবে না। এবং মেজরিটিই হবে না। তার মানে যে সেগুলো ফেলনা, তা নয়। সেগুলো কোনো মানুষকে কোন সময়ে কী দিয়েছে, সেটা কেউ বুঝে উঠতে পারে না। আমি বলতেই পারি, আমার অনেক প্রিয় শিল্পীর গান যেগুলো অতটা জনপ্রিয় না, কিন্তু আমার কোনো জ্বরের সময় হয়তো সেগুলো শুনেছি এবং সেই গানের মধ্যে ডুবে গিয়েছি। এমন হয়েছে, আমার সারা দিন ভালো যায়নি, তারপর কোনো উপন্যাস পড়েছি। সেই উপন্যাসের মধ্যে এমন ডুবে গেছি, ওই লেখার মধ্যে আমি একটা আলাদা জগৎ, আলাদা জীবন খুঁজে পেয়েছি। সেগুলোর মূল্য কী? সেগুলোকে তো ভাইরাল বা এসব দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। সেগুলো তো আমার জীবনে ঘটেছে। যে শিল্পের মধ্য দিয়ে এটা ঘটেছে, সেই শিল্প তো আমার কাছে অত্যন্ত কাছের। এবং সেটা আজকে দশটা লোক খারাপ বললেও আমার কাছে ভালো লাগার জায়গাতেই থাকবে। সুতরাং আমি অত চিন্তিত নই ভাইরাল নিয়ে। কারণ এর কোনো শেষ নেই। এটা একটা অসম্ভব রাক্ষুসে খিদের মতো ব্যাপার। এ কোনো দিন মেটানো যাবে না। 

[হোটেলের বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। অনুপমের ব্যান্ডের সবাই গাড়িতে উঠে পড়েছেন। অনুপম এলেই গাড়ি ছুটবে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের দিকে। সেখানে রাতে পারফর্ম করবে অনুপমের ব্যান্ড। ম্যানেজার রানা এসে নিচু স্বরে অনুপমকে বললেন, ‘আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমরা রওনা দেব।’ অর্থাৎ আলাপ শেষ করতে হবে। একটু হালকা চালেই তাই শেষ প্রশ্নটা করা হলো]

বসন্ত এলেই চারদিকে আপনার ‘বসন্ত এসে গেছে’ গানটি বাজতে শোনা যায়। আপনার বসন্ত কেমন কাটছে এবার? 
বসন্ত ভালো শুরু হয়েছে, তার কারণ আমি বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। এর আগে প্রতি বছর বা প্রতি তিন মাস অন্তর একবার করে রিকোয়েস্ট আসত, তারপর সেই অনুষ্ঠান হতো না। ফাইনালি এই যে অনুষ্ঠানটি হচ্ছে, স্টেজে গেলে বুঝতে পারব হচ্ছে কি না, সেটার জন্য আমি খুবই আনন্দিত। এটা আমার খুব পছন্দের জায়গা, পছন্দের শহর, পছন্দের মানুষজন। ইচ্ছে করে এখানে এসে অনেক দিন থাকি। সব সময় হয়ে ওঠে না। এইভাবে দেখতে গেলে বসন্ত আমার ভালোই শুরু হয়েছে। 

[আমাদের বিদায় দিয়ে, আরো কয়েকটি সেলফির আবদার মিটিয়ে, হোটেলের সামনে রাখা গাড়িতে গিয়ে বসলেন অনুপম রায়। যাওয়ার আগে বললেন, সকালেই ফিরতে হবে। এবার তো বেশি সময় পাওয়া গেল না। পরেরবার এসে ঘোরাঘুরিটা আরেকটু জমিয়ে হবে।]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৬ বছর পর প্রকাশ্যে এল অপু-মোমরেনাজের বিচ্ছেদের খবর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
রাশেদ মামুন অপু। ছবি: সংগৃহীত
রাশেদ মামুন অপু। ছবি: সংগৃহীত

ছয় বছর আগে ভেঙেছে সংসার। এত দিন গোপন রেখেছিলেন সেই খবর। অবশেষে আজ রোববার তা প্রকাশ্যে এলো। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন রাশেদ মামুন অপু ও মমরেনাজ মোম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে প্রেম হয় দুজনের, সেই প্রেমের পরিণতি বিয়ে, সংসার। রাশেদ মামুন অপু জনপ্রিয় অভিনেতা, মমরেনাজ মোম বেসরকারি টিভি চ্যানেলের নিউজ প্রেজেন্টার। দুজনেই জানালেন, আর একসঙ্গে নেই তাঁরা।

রাশেদ মামুন অপুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা দুজনে আলোচনা করেই নিয়েছি। কারণ, জীবনে সবারই ভালো থাকা জরুরি।’

মমরেনাজ মোম জানিয়েছেন, অনেক আগেই দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন তাঁরা। দীর্ঘদিনের গোপন বিচ্ছেদের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন নিজেদের স্বস্তির জন্য। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অবশেষে ঈশ্বর ক্ষমা করলেন। সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, ভয়, লজ্জার জন্য দীর্ঘ ৬ বছরের বিচ্ছেদ চেপে রাখার সিদ্ধান্ত দুজন মিলে নিয়েছিলাম। গোপনীয়তা বিষয়টি খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছিল দুজনের জন্যই। তাই দুজনের সিদ্ধান্তে আমরা বিষয়টি পরিষ্কার হতে চাই। এখন খুব আন্তরিকভাবে দুজনের সিদ্ধান্তেই আমরা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনছি। বিচ্ছেদ মানেই ধ্বংস নয়, শেষ হয়ে যাওয়া নয়...।’

মোমরেনাজ মোম। ছবি: সংগৃহীত
মোমরেনাজ মোম। ছবি: সংগৃহীত

অপু ও মমরেনাজের সংসারে এক ছেলে রয়েছে। তার সম্পর্কে জানতে চাইলে অপু জানান, সে অপুর সঙ্গেই আছে। অপুর সঙ্গেই থাকবে। তবে বিচ্ছেদের এই ঘটনা নিয়ে বেশি কথা বলতে চাইলেন না অপু। জানালেন, তিনিও একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করে ঘটানাটি জানিয়েছেন। তবে স্ট্যাটাসটি এখন অনলি মি করে রেখেছেন। বিচ্ছেদের ঘটনাকে জীবনের বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা হিসেবে দেখছেন না দুজনের কেউ। বরং জীবনের আরেকটি অধ্যায় বলেই মনে করছেন।

রাশেদ মামুন অপু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে থিয়েটার করেছেন। সেখান থেকেই শোবিজের সঙ্গে সখ্য শুরু। ঢাকায় এসে গিয়াস উদ্দীন সেলিমের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর নিজে চারটি নাটক পরিচালনা করেছেন। অভিনয়ে এসে রাজশাহী ভাষার আঞ্চলিক সংলাপ দিয়ে রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি। সেই থেকে নিয়মিত অভিনয় করছেন, একের পর এক নাটক সিনেমায় অভিনয় করে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ‘প্রিন্স’ সিনেমায় শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে তারকাবহুল ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার শুটিং

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা (সর্ববাঁয়ে) ও অভিনয়শিল্পীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা (সর্ববাঁয়ে) ও অভিনয়শিল্পীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো অভিনয়শিল্পীদের। এতে আরও আছেন আজমেরি হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার ও শ্যামল মাওলা।

হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাসে অসুস্থ মামাকে দেখতে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী চিত্রা। তার সেই ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা নিয়েই এগিয়ে যায় কাহিনি। নির্মাতা সেই গল্পই পর্দায় তুলে ধরবেন, তবে সিনেমার প্রয়োজনে থাকবে কিছু সংযোজন-পরিমার্জন। থাকবে নতুন চমক। তবে কী সেই চমক, তা জানা যাবে বনলতা এক্সপ্রেস মুক্তির পর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে ঢাকায় শুরু হবে শুটিং। চিত্রা চরিত্রে থাকছেন সাবিলা নূর। আগামী রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

পারিবারিক গল্পের উৎসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন একঝাঁক তারকা। এবারও তারকাসমৃদ্ধ পারিবারিক গল্পের সিনেমা দিয়ে দর্শকের সামনে আসার পরিকল্পনা নির্মাতার। বনলতা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে নির্মাতা তানিম নূর বলেন, ‘উৎসব শেষ করার পর নতুন সিনেমা নিয়ে যখন পরিকল্পনা করছিলাম, অনেকে পরামর্শ দিল আরেকটা পারিবারিক গল্প নিয়ে কাজ করতে। তখন ভাবলাম, হুমায়ূন আহমেদের কোনো গল্প নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই কিছুক্ষণ উপন্যাস নিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু।’

অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘চরিত্রের প্রেমে পড়েই এই সিনেমায় যুক্ত হওয়া। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ দারুণ লেগেছে। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি আমার পড়া, সেটার প্রতিও ভালো লাগা আছে। বনলতা এক্সপ্রেসে আমার সহশিল্পী যাঁরা আছেন, তাঁরা আমার অনেক দিনের সঙ্গী। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘তানিম নূরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে। হুমায়ূন আহমেদের গল্প থেকে সিনেমা এই বিষয়টি যেমন দর্শকের আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। তেমনি অভিনেতা হিসেবে আমরাও একটি ভালো সিনেমার অংশ হতে অধীর হয়ে আছি।’

আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘এই সিনেমার নির্মাতা ও সহশিল্পীরা আমার ভীষণ পছন্দের। তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদ যে আমার কত পছন্দের, সেটা সবাই জানে। অনেক বছর পর তাঁর গল্পে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’

জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘বনলতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর ড্রাইভার তানিম নূর। এ ছাড়া যাত্রাপথে সহযাত্রীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমার সহযাত্রীরা সবাই দুর্দান্ত। আশা করি দারুণ একটি যাত্রা হবে আমাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের আয়োজন

৬ ইয়াং স্টারকে নিয়ে ৩ বিচারকের গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত

২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন। কথামতো সেই প্রতিযোগিতার শীর্ষ দশের ছয় প্রতিযোগীকে নিয়ে গান বানালেন তাঁরা। বিজয় দিবস উপলক্ষে তৈরি গানটি আজ বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে লিজার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন লিজা এবং ইয়াং স্টার ২০২৩-এর জাহিদ অন্তু, অনিক, অরিন্দল, আদিবা, অঙ্কিতা ও দীপান্বিতা। সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন ইমন সাহা। ‘আমার মুখে বাংলাদেশ, আমার বুকে বাংলাদেশ, সুখে দুঃখে আমার বাংলাদেশ... আমরা সবাই বাংলাদেশ’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন কবির বকুল।

আমরা সবাই বাংলাদেশ গানটির সার্বিক আয়োজন ও প্রযোজনা করেছেন লিজা। গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন রাজ বিশ্বাস শংকর। শুটিং হয়েছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, শিখা চিরন্তনসহ বিভিন্ন লোকেশনে।

কবির বকুল বলেন, ‘মূলত গানটির উদ্যোক্তা কণ্ঠশিল্পী লিজা। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি সুন্দর একটি দেশের গান উপহার দেওয়ার। এই সুন্দর দেশটার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের যে আত্মিক টান, আবেগমাখা সম্পর্ক, দেশের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা—তা-ই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানের কথায়।’

সুরকার ইমন সাহা বলেন, ‘প্রতিযোগিতার সময় থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল নতুনদের নিয়ে গান করার। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন এই গান। সবাই মিলে একটি সুন্দর দেশের গান উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস গানটি ভালো লাগবে সবার।’

কণ্ঠশিল্পী লিজা বলেন, ‘আমি নিজেও রিয়েলিটি শো থেকে এসেছি। শো শেষে আমাদের বাকি জার্নিটা কিন্তু সলো হয়, দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। নিজের জীবন থেকেই উপলব্ধি করেছি, শুধু নতুন শিল্পী খুঁজে বের করলেই হবে না, তাঁদের প্রপার গাইড করতে হবে। তাঁদের পাশে থাকতে হবে। তাই বিচারকের আসনে থাকার সময়ই বলেছিলাম, নতুনদের জন্য কাজ করব, শুধু কাভার সং নয়, প্রতিটি নতুন শিল্পীর মৌলিক গান হওয়া প্রয়োজন। তাই ইয়াং স্টারদের নিয়ে আমাদের এই দেশের গান। চেষ্টা করেছি একটি সুন্দর গান উপহার দিতে। আমরা চাই গানটি সব শ্রোতার কাছে পৌঁছে যাক, তাই আমার চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হলেও, কোনো ধরনের কপিরাইট রেসট্রিকশন রাখছি না। যে কেউ চাইলে যেকোনো চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রটারড্যাম উৎসবে ‘দেলুপি’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘দেলুপি’ সিনেমার দৃশ্য
‘দেলুপি’ সিনেমার দৃশ্য

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসা পাচ্ছেন তাওকীর। এখনো সিনেমাটি চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এর মধ্যে জানা গেল নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামে জায়গা করে নিয়েছে দেলুপি। এই উৎসবে আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে সিনেমাটির।

আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। যেখানে বিশ্বের সেরা নির্মাতা, উদীয়মান প্রতিভা ও আর্টহাউস সিনেমার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়।

রটারড্যামে দেলুপির যাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুরো টিম। পরিচালক তাওকীর বলেন, ‘রটারড্যাম থেকে আমরা যখন প্রথম মেইল পেয়ে জানতে পারি, তারা সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করতে চায়। সে সময় একটু বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমরা সিনেমা বানানোর সময় দেলুটি ইউনিয়নের মানুষদের কথা দিয়েছিলাম, সিনেমাটা প্রথমে তাঁদের দেখাব। আমাদের এই ইচ্ছা ফেস্টিভ্যালের অর্গানাইজারদের জানিয়েছিলাম। তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। আমরা সিনেমাটি আগে খুলনায় রিলিজ দিই। এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের দর্শকেরা দেলুপি দেখতে পারবেন। তাই আমরা আনন্দিত।’

দেলুপি সিনেমায় যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁরা সবাই খুলনার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিনয় করেছেন চিরনজিৎ বিশ্বাস, অদিতি রায়, রুদ্র রায়, মো. জাকির হোসেনসহ অনেকে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফুটপ্রিন্ট ফিল্ম প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত