Ajker Patrika

কিংবদন্তির মহাপ্রয়াণ

এম এস রানা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৩: ০২
কিংবদন্তির মহাপ্রয়াণ

চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়। ইহজগতের মায় ত্যাগ করে দিলীপ কুমার ঠাঁই নিলেন ইতিহাসের পাতায়। কিংবদন্তির জন্ম আছে মৃত্যু নেই। ভক্তদের হৃদয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন আজীবন। গতকাল সকাল ৮টার কিছু সময় পরে হিন্দুজা হাসপাতাল থেকে যখন নিশ্চিত করা হলো কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের মৃত্যুসংবাদ, শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ল বলিউড ইন্ডাস্ট্রি। পুরো ভারতে নেমে এল শোকের ছায়া।

১৯৪৪ সালে ‘জোয়ারভাটা’ ছবির মাধ্যমে দিলীপ কুমারের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। পেশওয়ারের ছেলে দিলীপ কুমারের আসল নাম ইউসুফ সারোয়ার খান। বাবার নাম মোহাম্মদ সারোয়ার খান। তিনি ছিলেন একজন ফল ব্যবসায়ী। কৈশোরে মুম্বাই থেকে পুনে গিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য পরিচালিত একটি ক্যান্টিনে কাজ নেন ইউসুফ খান। কিছুদিন পর আবারো মুম্বাইয়ে ফিরে বাবার সাথে ফলের ব্যবসায় যোগ দেন। ব্যবসায়িক কারণে মুম্বাই যেতেন তিনি। একসময় পরিচয় হয় সাইকোলজিস্ট ডা. মাসানির সঙ্গে। তিনিই ইউসুফকে পরিচয় করিয়ে দেন 'বোম্বে টকিজ'–এর সঙ্গে। ১৯৪৩ সালে 'বোম্বে টকিজ'-এ চাকরি খুঁজতে গেলে সেখানকার স্বত্বাধিকারী অভিনেত্রী দেবিকা রানী তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। দেবিকা রাণীই মনে করেছিলেন ইউসুফ খান নামটি রোমান্টিক হিরোর জন্য মানানসই নয়। তার অনুরোধেই হিন্দি কবি নরেন্দ্র শর্মা তিনটি নাম প্রস্তাব করেন- জাহাঙ্গীর, বাসুদেব ও দিলীপ কুমার। এর মধ্যে দিলীপ কুমার নামটিই নিজের জন্য পছন্দ করেন ইউসুফ খান। নাম পরিবর্তনের আরেকটি বড় কারণ ছিলো রক্ষণশীল বাবা যেন ইউসুফের নতুন পেশার কথা জানতে না পারেন। সেই থেকে মুসলিম পরিবারের ইউসূফ হয়ে উঠলেন দিলীপ কুমার। যদিও সারাজীবনে মাত্র একবার মুসলিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সেটি হলো ‘মুঘল-ই-আযম’। প্রথম দিকের ছবিগুলো খুব একটা ব্যবসাসফল ছিল না। তবে ১৯৬০ সালে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল সিনেমা 'মুঘল-ই-আজম' দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

অভিনয় স্টাইল

দিলীপ কুমার তাঁর ছয় দশকের ক্যারিয়ারে মাত্র ৬৩টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। হিন্দি সিনেমায় অভিনয় শিল্পকে দিয়েছেন নতুন রূপ। দিলীপ কুমার যখন ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু করেন তখনকার বেশিরভাগ অভিনেতা উচ্চস্বরে একের পর এক সংলাপ বলে যেতেন। এ ধরনের অভিনয়কে বলা হতো ‘লাউড অ্যাক্টিং’। এটি এসেছিলো মূলত পার্সি থিয়েটারের প্রভাবে। অথচ, দিলীপ কুমার ছিলেন অনেকটাই ধীর স্থির আর শান্ত অথচ বলিষ্ঠ। দিলীপ নিচু স্বরে অভিজাত ও দৃঢ়তার সাথে এমনভাবে সংলাপ ছুড়ে দিতেন যা দর্শকের ভক্তি কুড়িয়েছে। খ্যাতিমান লেখক সেলিম খান বলেছিলেন, ‘দিলীপ কুমার যেসব চরিত্রে অভিনয় করতেন তার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব হয়ে যেতেন অথচ সেটাও দর্শকের ওপর গভীর ছাপ রেখে যেত।’

ট্রাজেডি কিং

দিলীপ কুমার অভিনীত অনেক ছবিই রয়েছে যার চরিত্রগুলো ট্রাজিক। মারা গেছেন এমন অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। একটা সময় প্রতি দুটি ছবির একটিতে তিনি এমন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রগুলোতে তাঁর অভিনয় দর্শকের চোখ ঘোলা করেছে, বুক ভাড়ি করেছে অবিরাম। এসব ছবি তাঁকে ট্রাজেডি কিং পরিচিতি এনেছিল। অভিনয়ে দিলীপ এতটাই বাস্তবিক ছিলেন যে এক সময় মৃত্যুর দৃশ্য করতে করতে ‘ডিপ্রেসড’ হয়ে পড়েছিলেন। পরে লন্ডন থেকে বিষণ্ণতার চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দেশে ফিরে ‘কোহিনুর’, ‘আজাদ’, ‘রাম অর শ্যাম’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন যেগুলোতে কিছুটা কমিক উপাদান ছিলো।’

চরিত্রের প্রয়োজনে

দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রতিটি চরিত্রকেই তিনি সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলতে চাইতেন। চরিত্রের প্রয়োজনেই ওস্তাদ আব্দুল হালিম জাফর খানের কাছে বেশ কয়েক বছর সেতার শিখেছেন ‘কোহিনূর’ ছবির জন্য। লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে সলিল চৌধুরীর লেখা একটি দ্বৈত গান গেয়েছিলেন হৃষিকেষ মুখার্জির ‘মুসাফির’ ছবির জন্য। ঘোড়ার গাড়ি চালানো শিখেছিলেন ‘নয়াদৌড়’ সিনেমার জন্য। নির্মাতা সত্যজিৎ রায় তাই দিলীপ কুমারকে বলেছিলেন ‘মেথড অ্যাক্টর’।

স্টাইল আইকন 

মূলত ‘মুঘল-ই-আজম’-এর পর ব্যাপক পরিচিতি পান দিলীপ কুমার। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন সবোর ফ্যাশন আইকন। কপালে ভি-শেপে একগুচ্ছ চুল আছড়ে পড়া তখন যেন জাতীয় ক্রেজে পরিণত হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে দিলীপ কুমার সাদা রং পছন্দ করতেন। প্রায়ই সাদা জামা ও কিছুটা ঢোলা সাদা প্যান্ট পড়তেন। উর্দু সাহিত্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিলো তাঁর। তিনি একই সাথে হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি, পাঞ্জাবী ও পশতু ভাষা জানতেন। এমনকি মারাঠি, ভোজপুরি ও ফরাসিও বুঝতেন, বলতে পারতেন।

মধুবালার সঙ্গে প্রেম, সায়রা বানুকে বিয়ে

অভিনেত্রী নার্গিসের সঙ্গে ৭টি ছবিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন দিলীপ। কোনো একক অভিনেত্রীর সাথে এটাই তাঁর সবচেয়ে বেশি জুটি বাঁধা। তবে মধুবালার সঙ্গে তাঁর জুটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছিলো। এমনকি মধুবালার প্রেমেও পড়েছিলেন দিলীপ। মধুবালার বাবার কারণে এই প্রেমের গল্প বেশিদূর এগোয়নি। মধুবালার বাবা মনে করতেন দিলীপ কুমারের বয়স মধুবালার চেয়ে অনেক বেশি। তার উপরে বি আর চোপড়ার ‘নয়া দৌড়’ সিনেমা নিয়ে আইনগত সমস্যার উদ্ভব হলে মুধবালার বাবা ও দিলীপ কুমারের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এরপর বিয়ের প্রস্তাব দিলে দিলীপকে মধুবালা বলেন, ‘আমি তোমাকে বিয়ে করব কিন্তু তার আগে তোমাকে বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।’ দিলীপ তাতে রাজি হননি। তাই ভেঙে যায় দু’জনের সম্পর্ক। তাদের সম্পর্ক এতোটাই বৈরি হয়ে ওঠে যে ‘মুঘল ই আযম’ সিনেমায় অভিনয়ের সময় তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না। পরে ১৯৬৬ সালে অভিনেত্রী সায়রা বানুকে বিয়ে করেন দিলীপ কুমার।

আগে থেকেই দিলীপ কুমারের প্রেমে পাগল ছিলেন অভিনেত্রী সায়রা বানু।। ‘ঝুক গ্যায়া আসমান’ ছবির সেটে যখন দিলীপ কুমার তাঁকে প্রোপোজ করেন, তৎক্ষণাত ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছিলেন তিনি। নিজের চেয়ে ২২ বছরের ছোট সায়রাকে বিয়ে করে সংসার বাঁধেন দিলীপ। ১৬ বছর সংসার করার পর তাঁকে ত্যাগ করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আসমা রেহমানকে। পরে নিজেই স্বীকার করেন এটা তার ভূল সিদ্ধান্ত ছিল। আবারো ফিরে গিয়েছিলেন সায়রা কাছে। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত দিলীপকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছিলেন সায়রা। হিন্দুজা হাসপাতালে ডাঃ জালিল পারেকার সর্ব প্রথম সায়রাকে দিলীপের মৃত্যু সংবাদ দিলে তিনি আর্তনাদ করে ওঠেন, ‘ভগবান আমার বেঁচে থাকার কারণটাই কেড়ে নিল…।’

শেষ দিন পর্যন্ত সায়রা বানু যেভাবে দিলীপকে আগলে রেখেছিলেন তার প্রশংসা করছেন সবাই। তবে সায়রা বানু বলেছিলেন, দায়িত্ব ভেবে নয় দিলীপ কুমারকে ভালোবাসেন বলেই এভাবেই আগলে রেখেছেন।

শেষ বিদায়ের বেলায়

মৃত্যুকালে দিলীপ কুমারের বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তিঁনি অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ৬জুন শ্বাসকষ্ট হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১১জুন তিনি বাড়ি ফিরে যান। ৩০ জুন অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হিন্দুজা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ৫ জুন তার স্ত্রী সায়রা বানু এক টুইটে জানান, অভিনেতার অবস্থা এখন ভালোর দিকে। ৭ জুন সকাল ৮টার কিছু সময় পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেন দিলীপ কুমার মারা গেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি প্রোস্টেট ক্যানসারে ভূগছিলেন যা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। গত ৩-৪ মাস ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিনি কিডনির সমস্যায় ভূগিছিলেন এবং ফুসফুসে পানি এসে গিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাক্ষস সিনেমায় অভিনয়ের গুঞ্জন নাকচ করলেন ইধিকা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত

শাকিব খানের বিপরীতে ' প্রিয়তমা ' সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় পশ্চিমবঙ্গের ইধিকা পালের । প্রথম সিনেমাতেই নজর কাড়েন অভিনেত্রী । এ বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘ বরবাদ ' সিনেমায়ও দেখা গেছে তাঁকে । খবর ছড়িয়েছে , মেহেদী হাসান হৃদয়ের নতুন সিনেমায়ও অভিনয় করবেন ইধিকা । এবার তাঁর নায়ক সিয়াম আহমেদ । ‘ রাক্ষস ’ নামের সিনেমায় জুটি হচ্ছেন তাঁরা । অথচ অভিনেত্রী জানালেন ভিন্ন কথা । এমন নামের কোনো সিনেমা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নাকি কোনো কথাই হয়নি । রাক্ষস সিনেমায় ইধিকার অভিনয়ের এই গুঞ্জন কয়েক দিন ধরে । ইতিমধ্যে নাকি আলাপও হয়েছে নির্মাতাদের সঙ্গে , এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে । কিন্তু , নতুন এই সিনেমা নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করলে ইধিকা জানালেন ভিন্ন কথা । খুদে বার্তায় আজকের পত্রিকাকে ইধিকা লেখেন , “ এখন অবধি এ রকম ( রাক্ষস ) নামের কোনো সিনেমা নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি । ' একই কথা পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকেও জানিয়েছেন ইধিকা । অভিনেত্রী জানান , সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে কোনো কথা হয়নি ।

আনন্দবাজার জানাচ্ছে , ইধিকা না থাকলেও রাক্ষসে সিয়ামের সঙ্গে থাকবেন টালিউড নায়িকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় । এর আগে এ সিনেমায় সাবিলা নূরের অভিনয়ের খবর ছড়িয়েছিল । রাক্ষস সিনেমায় দেশ - বিদেশের একাধিক অভিনেত্রীর নাম শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাতার কাছ থেকে আসেনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা । বরং প্রযোজক শাহরিনা সুলতানা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন , এই সিনেমা নিয়ে বেশ কয়েকজন নায়িকার সঙ্গে কথা হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কে থাকছে , সেটা সময় বলে দেবে । রাক্ষসের আগে আবু হায়াত মাহমুদের ‘ প্রিন্স ' সিনেমার নায়িকা হিসেবেও শোনা গেছে ইধিকার নাম । সেই দৃশ্যপটও বদলে গেছে ।

এখন শোনা যাচ্ছে , ইধিকা নয় , টালিউডের আরেক নায়িকা জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডুর নাম । তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাসনিয়া ফারিণের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অন্য কারও নাম ঘোষণা হয়নি এখন পর্যন্ত । জানা গেছে , এ মাসেই শুরু হবে প্রিন্স ও রাক্ষস সিনেমার শুটিং । দুটি সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হবে দেশের বাইরে । সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমা দুটি ।

এ ধরনের গুঞ্জনে অবাক হয়েছেন তিনি । গত বছরও শোনা গিয়েছিল ‘ সিকান্দার ' নামের একটি সিনেমায় জুটি হচ্ছেন সিয়াম - ইধিকা । সেই খবরও শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই থেকে গেছে । এদিকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রকাশিত হলো শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার

গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশ পেয়েছিল শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’ গানের টিজার। তবে স্পনসর জটিলতায় আটকে ছিল গানটি। অবশেষে গতকাল প্রকাশ পেল শিরোনামহীনের বহুল প্রতীক্ষিত এই অবেলায় গানের দ্বিতীয় পর্ব। এটি শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান।

‘যদি কোথাও/ কোনো দিন দূরে সরে যাই/ নিসর্গের আঁধারে হারাই/ সমুদ্রের ঢেউ দেখে আমায় রেখো মনে’—এমন কথার গানটি লিখেছেন শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন ব্যান্ডের ড্রামার কাজী আহমাদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। গেয়েছেন শেখ ইশতিয়াক। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেজাহান।

২০১৯ সালের মে মাসে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর প্রকাশ পেল এ গানের সিকুয়েল এই অবেলায় ২।

শিরোনামহীনের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার পাশাপাশি এই অবেলায় প্রকাশ পেয়েছে ইংরেজি ভাষায়। এই ভার্সনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রিমেম্বার মি’। ইংরেজি ভার্সন নিয়ে শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা, “আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা। আশা করছি, বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সনটাও দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মন জয় করতে পারবে। সেটা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ আরও হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হারমোনি অব ফ্রেন্ডশিপে সোনার বাংলা সার্কাস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ান জনকূটনীতির ১০০তম বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে রাজধানীর রবীন্দ্রসরোবরে আয়োজন করা হয়েছে ‘হারমোনি অব ফ্রেন্ডশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের। রাশিয়ান হাউস ঢাকা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকছে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য এবং বাংলাদেশের ব্যান্ড সোনার বাংলা সার্কাসের কনসার্ট।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে এই আয়োজন। শুরুতে থাকবে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য পরিবেশনা, যেখানে শিল্পীরা রাশিয়ান সংস্কৃতির সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরবেন। এরপর গান শোনাবে সোনার বাংলা সার্কাস। এ ছাড়া থাকবে আরও বেশ কিছু সাংস্কৃতিক আয়োজন।

এই বিশেষ আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে রাশিয়ার জনকূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের শতবর্ষ পূর্তি এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস—দুটি ঐতিহাসিক মাইলফলককে, যা বাংলাদেশ ও রাশিয়ার জনগণের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আয়োজকেরা বলছেন, এ অনুষ্ঠান শুধুই একটি কনসার্ট নয়, এটি সংস্কৃতি, বন্ধুত্ব ও একতার উৎসব, যা বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে।

রাশিয়ান হাউস, ঢাকার সহযোগিতায় ওই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে জাম্পস্টার্ট ইনক, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বন্ধুত্ব দৃঢ় করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। সবার জন্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠানটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মিশন: ইম্পসিবল’সহ এসেছে যেসব সিনেমা-সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার দৃশ্য ছবি: সংগৃহীত
‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার দৃশ্য ছবি: সংগৃহীত

অন্তরাত্মা (বাংলা সিনেমা)

  • অভিনয়: শাকিব খান, দর্শনা বণিক
  • মুক্তি: আইস্ক্রিন (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: ছোটবেলায় প্রথমের (শাকিব) মা-বাবা খুন হয় সন্ত্রাসীদের হাতে। বড় হয়ে প্রথম হয়ে ওঠে সন্ত্রাসীদের আতঙ্ক। কিছুরই অভাব নেই তার। তবে সে খুব একা। তার সঙ্গে দেখা হয় রূপকথার (দর্শনা)। তার প্রেমে পড়ে প্রথম। বিয়েও করে। তবু তার জীবনে স্থিরতা আসে না।

বিহান (রাজবংশী ভাষার সিনেমা)

  • অভিনয়: তুষার চৌধুরী, মিরান্দা দাস, সুধির রায়
  • মুক্তি: বঙ্গ (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: উত্তরবঙ্গের এক নিভৃত গ্রামে কানাই আর কোয়েলের নিষ্পাপ প্রেমের গল্প বিহান। ক্রাউড ফান্ডে সিনেমাটি বানিয়েছেন সৌরভ সাহা।

মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং (ইংরেজি সিনেমা)

  • অভিনয়: টম ক্রুজ, হেইলি অ্যাটওয়েল, ভিং র‍্যামস
  • মুক্তি: প্রাইম ভিডিও (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং দিয়ে শেষ হলো ইথান হান্টের যাত্রা। এ পর্বের পর আর এই চরিত্রে দেখা যাবে না টম ক্রুজকে। ১৯৯৬ সালে মিশন ইম্পসিবলের সঙ্গে যে জার্নি শুরু হয়েছিল টমের, ২০২৫ সালে দ্য ফাইনাল রেকনিং দিয়ে শেষ হলো সেই সফর। এ সিনেমায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য লড়াই করে ইথান হান্ট ও তার টিম।

জে কেলি (ইংরেজি সিনেমা)

  • অভিনয়: জর্জ ক্লুনি, অ্যাডাম স্যান্ডলার
  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (৫ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: এক জনপ্রিয় অভিনেতা (ক্লুনি) এবং তার ম্যানেজারের (স্যান্ডলার) মধ্যকার বন্ধুত্বের গল্প। কয়েক দশক ধরে ক্যারিয়ারকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার পর জীবন নিয়ে নতুন উপলব্ধি হয় অভিনেতার। মেয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য ইউরোপের উদ্দেশে রওনা হয়। সঙ্গী হয় ম্যানেজার। এই যাত্রা অভিনেতাকে যেন নতুন জীবন দেয়।

দ্য বিলিভারস ২ (থাই সিরিজ)

  • অভিনয়: তিরাদন সুপাপুনপিনিও, পাচারা চিরাথিভাত, আচিয়ারা
  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: থাইল্যান্ডের এই ক্রাইম সিরিজের দ্বিতীয় পর্বেও তিন উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক উদ্যোগের গল্প দেখা যাবে। একটি বৌদ্ধ মন্দির পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করে তারা। দুর্নীতিগ্রস্ত স্থানীয় রাজনীতি তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তৈরি হয় দ্বন্দ্ব, বিশৃঙ্খলা।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত