Ajker Patrika

দখলদারির ছাত্ররাজনীতির শঙ্কায় ছাত্রশিবিরে আস্থা

রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৮
ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় উচ্ছ্বসিত শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় উচ্ছ্বসিত শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ২৮টি পদের মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ২৩টিতে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। তাদের প্রার্থীদের কাছে সেই অর্থে দাঁড়াতেই পারেননি ছাত্রদলসহ অন্য কোনো সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীরা।

ছাত্রশিবিরের এই জয় তাই বড় চমক হয়ে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ফলের বড় কারণ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি, যা চালু ছিল গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত। সরকার পতনের পর ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ডাকসুতে ছাত্রদল বিজয়ী হলে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সেই পুরোনো ধারা ফিরে আসতে পারে। এই ক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের প্রতি আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিবির আর ছাত্রদলের জয়-পরাজয়ের এই হিসাবনিকাশের বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতৃত্বের পরাজয়ের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতাকে।

ছয় বছর পর গত মঙ্গলবার উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণের পর মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। বুধবার সকালে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৩৯ হাজার ৮৭৪ ভোটারের মধ্যে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

ডাকসুর নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের মো. আবিদুল ইসলাম খান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পান। এ ছাড়া ভিপি পদে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবদুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এই পদে ৫ হাজার ২৮৩ ভোট পেয়ে তাঁর পরের অবস্থানে আছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী ৪ হাজার ৪৪ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের মো. আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, ভিন্নধর্মী প্রচারণায় আলোচনায় আসা আশিকুর রহমান এই পদে পেয়েছেন মাত্র ৫২৬ ভোট।

আর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ ৫ হাজার ৬৪ ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী ৩ হাজার ৮ ভোট, প্রতিরোধ পর্ষদের মো. জাবির আহমেদ জুবেল ১ হাজার ৫১১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (মহিউদ্দিন রনি) ১ হাজার ১৩৭ ভোট পেয়েছেন।

এ ছাড়া ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম ঝুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট; আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান ৯ হাজার ৭০৬ ভোট; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট; ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮ ভোট; মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

এর বাইরে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ৭ হাজার ৭৮২ ভোট এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী ৭ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার শিকার সানজিদা আহমেদ তন্বী ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তিনজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

ডাকসু নির্বাচনে ১৩টি সদস্য পদের ১১টিতে শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সাবিকুন নাহার তামান্না (১০,০৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮,৯৮৮), ইমরান হোসাইন (৬,২৫৬), মোছা. আফসানা আক্তার (৫৭৪৭), তাজিনুর রহমান (৫,৬৯০), রায়হান উদ্দীন (৫,০৮২), মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ (৫,০১৫), আনাস ইবনে মুনির (৫,০১৫), মো. বেলাল হোসেন অপু (৪,৮৬৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪,৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪,৩৯০)। বাকি দুজনের মধ্যে প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে হেমা চাকমা ৪ হাজার ৯০৮ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মে উসওয়াতুন রাফিয়া ৪ হাজার ২০৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

ডাকসুর ভিপি পদে ১০ ভোট পেরোয়নি ২৫ জন, জিএস পদে ২ জন

ডাকসুতে ৪৪ প্রার্থী ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ২৫ ভিপি প্রার্থী ১০ ভোটের বেশি পাননি। তিনজন প্রার্থী মাত্র একটি করে ভোট পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সুজন হোসেন, রাকিবুল হাসান, রাসেল হক। এ ছাড়া আমিন ইসলাম পেয়েছেন ১০ ভোট, আসিফ আনোয়ার অন্তিক ৫ ভোট, জালাল আহমেদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল (প্রার্থিতা বাতিল) ৮ ভোট, দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ ৬ ভোট, মাহদী হাসান ৯ ভোট, মুহাম্মদ আবু তৈয়ব ১০ ভোট, আজগর ব্যাপারী ৬ ভোট, শাফি রহমান ৬ ভোট, আতাউর রহমান শিপন ৫ ভোট, আবুল হোসাইন ৭ ভোট, উজ্জ্বল হোসেন ৬ ভোট, নাছিম উদ্দিন ২ ভোট, ফয়সাল আহমেদ ৪ ভোট, মুদাব্বীর রহমান ৩ ভোট, রাসেল মাহমুদ ৭ ভোট, সোহানুর রহমান ২ ভোট, হাবিবুল্লাহ ২ ভোট, হেলালুর রহমান ৩ ভোট, জান্নাতী বুলবুল ৬ ভোট, যায়েদ বিন ইকবাল ৭ ভোট, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ৮ ভোট, শাহ জামাল সায়েম ৩ ভোট।

আর জিএস পদে মো. নিয়াজ মাখদুম ৬ ভোট ও সাইয়াদুল বাশার ৯ ভোট পেয়েছেন।

ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের এমন জয়ের পর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ব্যক্তি ফরহাদ কিংবা ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ফরহাদের অর্জন নয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে অর্পিত একটি আমানত। এটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর বিজয়।’

যে কারণে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের বেছে নিল শিক্ষার্থীরা

জুলাই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের ব্যানারে বর্তমান গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাম সংগঠনসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্ররাজনীতির গণরুম, গেস্টরুম, সিট দখলসহ বিভিন্ন ট্যাগিংয়ের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছিল, তা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আগের দখলদারি সংস্কৃতি ফিরে আসুক, তা চান না শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন একে অপরকে ট্যাগিং ও দোষারোপের রাজনীতিসহ নানা কাজে ও অভ্যন্তরীণ বিভেদের কারণে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। কোনো কোনো ছাত্রসংগঠনের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের নানা কর্মকাণ্ডের ফলেও সেই সংগঠনগুলোর ওপর আস্থার সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। ৫ আগস্টের পর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পানির ফিল্টার স্থাপন করে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম চালায়, যা তাদের ওপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন বাড়ে।

এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ছাত্রশিবির নানা পরিকল্পনা ও কৌশলে কাজ করতে থাকে। ডাকসু নির্বাচনেও নিজেদের একক প্যানেল না দিয়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী রয়েছে তাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট করেছে। পাশাপাশি ভোটের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ-সুবিধার ও নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ইশতেহার দেয় তারা। এই ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্যও তাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন ভোটাররা।

নারী ভোটারদের অভাবনীয় সমর্থন, বিভিন্ন প্যানেলের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় ছাত্রশিবির-সমর্থিত জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তাদের থেকে পিছিয়ে দিয়েছে। এমনকি প্রচার-প্রচারণায়ও ছাত্রদল থেকে এগিয়ে ছিল ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই প্রভাব রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ফলে তাদের এমন অভাবনীয় বিজয় এনে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা আরিফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল একই ধারার রাজনীতি করবে। তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। এই ধারণা থেকেই তাদের বিকল্প কাউকে ভোট দেওয়া হয়েছে।

মো. মামুন সরকার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের নানা কাজে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। ছাত্রদল ভোটে জয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আগের সংস্কৃতিই ফিরে আসতে পারে। এসব বিবেচনায় এই দুই পক্ষের চেয়ে ছাত্রশিবিরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকসুতে জিততে ছাত্রশিবির আগে থেকেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে। তাদের নেটওয়ার্ক বড় এবং তারা সর্বশক্তি ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শিবিরেই আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচন স্থগিত, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জবি প্রতিনিধি, ঢাকা
‎জকসু নির্বাচন স্থগিত, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ‎আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মিটিং শেষে এ তথ্য জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।

নির্বাচন স্থগিতের এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ৯টার পরই এ বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। ‎

জকসু-২

‎এর আগে ৮টা ৩০ মিনিটে ভোট গ্রহণ শুরুর নির্দেশনা থাকলেও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়।

এ সময় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা জানায় প্রশাসন। জরুরি সিন্ডিকেট সভায় জকসু নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিনা মূল্যের বই: মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে ফের বদল, সব বই ছাপা শেষ হয়নি

  • বাদ শেখ মুজিবের বঙ্গবন্ধু উপাধি, ৭ মার্চের ভাষণও নেই।
  • স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে আরও লেখা বইয়ে সংযোজন করা হয়েছে।
  • প্রাথমিকের সব বই সরবরাহ শেষ।
রাহুল শর্মা, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৮
বিনা মূল্যের বই: মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে ফের বদল, সব বই ছাপা শেষ হয়নি

মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে ইতিহাসনির্ভর ঘটনায় আবার বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণির সাহিত্য কণিকা বই থেকে বাদ পড়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ নিবন্ধটি। তাঁর নামের সঙ্গের বঙ্গবন্ধু উপাধি বাদ পড়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে স্বৈরাচারসহ একাধিক বিশেষণ যুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি বইয়ে থাকছে না শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণ। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে প্রাথমিক স্তরের সব পাঠ্যবই সরবরাহ হলেও মাধ্যমিক স্তরের সব শ্রেণির সব বই ছাপা এখনো শেষ হয়নি। ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বই সরবরাহ করা হয়েছে।

পাঠ্যপুস্তকে কিছু বিষয়ে পরিবর্তনের কথা নিশ্চিত করেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছোটখাটো কিছু বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছর পাঠ্যবইয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। মাধ্যমিকের প্রতিটি শ্রেণির বাংলা বইয়ে যুক্ত করা হয় জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে লেখা, কবিতা অথবা কার্টুন। প্রতিটি বইয়ের পেছনের কভারে দেওয়া হয় গ্রাফিতি। ইতিহাসনির্ভর অনেক বিষয়েও পরিবর্তন আনা হয়েছিল। পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হয় পেছনের কভার থেকে শেখ হাসিনার বাণী। শেখ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লেখাও বাদ পড়ে।

এনসিটিবির সূত্র বলছে, মাধ্যমিক স্তরের সব পাঠ্যবইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগের বঙ্গবন্ধু উপাধি বাদ দিয়ে নাম লেখা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি বইয়েও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের (সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) নাম যুক্ত করা হয়েছে। মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের পাশে স্বৈরাচারসহ একাধিক বিশেষণ যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ইতিহাসনির্ভর আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা বইয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গ্রাফিতির ওপর একটি লেখা যুক্ত করা হয়েছে।

মাধ্যমিকের সব পাঠ্যবই ছাপা হয়নি

এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র এক দিন বাকি থাকলেও মাধ্যমিকের সব শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপা এখনো শেষ হয়নি। ছাপা হলেও সরবরাহ বাকি ৪২ শতাংশ পাঠ্যবই। অবশ্য প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই নিয়ে কোনো সংকট নেই। এই স্তরে শতভাগ পাঠ্যবই মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে।

সরকার ২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে নতুন পাঠ্যবই দিচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হচ্ছে।

আগামী বছরের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৩০০টি এবং প্রাথমিক স্তরের (ইবতেদায়ি ছাড়া) জন্য ৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৪টি বই।

এনসিটিবির কর্মকর্তা ও মুদ্রণকারীরা বলছেন, গত কয়েক বছরের মতো এবারও সব শ্রেণির সব শিক্ষার্থী সব পাঠ্যবই ছাড়াই শিক্ষাবর্ষ শুরু করবে। এবার বেশি বেকায়দায় পড়বে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা। বই ছাপা ও সরবরাহের গতি দেখে মনে হচ্ছে আগামী জানুয়ারির মধ্যেও সব বই মাঠপর্যায়ে পৌঁছানো কঠিন হবে।

এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ বই ছাপা ও বাঁধাই শেষ হয়েছে। তবে সরবরাহ-পূর্ব পরিদর্শনসহ (পিডিআই) আনুষঙ্গিক কাজ শেষে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে মাধ্যমিকের মোট বইয়ের ৬০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ মাধ্যমিকের ৩৯ শতাংশের কিছু বেশি পাঠ্যবই এখনো সরবরাহ করা হয়নি।

সূত্র বলছে, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ষষ্ঠ শ্রেণির ৯০ দশমিক ৬৫ শতাংশ পাঠ্যবই ছাপা শেষ হয়েছে। সরবরাহ করা হয়েছে ৭১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। সপ্তম শ্রেণির ৭৮ দশমিক ৩১ শতাংশ পাঠ্যবই ছাপা শেষ হয়েছে, সরবরাহ করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অষ্টম শ্রেণির ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশ পাঠ্যবই ছাপা হলেও সরবরাহ করা হয়েছে ২৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এ ছাড়া নবম-দশম শ্রেণির ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ পাঠ্যবই ছাপা হলেও সরবরাহ করা হয়েছে ৭৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।

অবশ্য শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে। গত রোববার এনসিটিবি কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুরু হবে। এর আগেই প্রায় শতভাগ বই পৌঁছে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ‎ছাত্রনেতাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি দিল কমিশন

জবি প্রতিনিধি‎
আজ সোমবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কমিশন এক সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কমিশন এক সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎আগামীকাল মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন। আগের দিন আজ সোমবার রাতে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।   ‎

‎আজ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক প্রার্থী। ‎

‎নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অনেকেই (রাজনৈতিক দলের) আবেদন করেছেন। তাঁরা পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকতে চান। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি।’ এর আগে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।

তবে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এল—জানতে চাইলে এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি নির্বাচন কমিশনার। তারা বলে, এখনো সময় আছে। কেউ চাইলে আবেদন করতে পারেন।

কোন কোন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন আবেদন করেছে—জানতে চাইলে কমিশন উত্তর দেয়নি। তবে সূত্র জানায়, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির প্যানেলের শতাধিক নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসে ঢোকার এই পাস কার্ডের আবেদন করেছেন। ‎

‎এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান প্যানেলের সমাজসেবা সম্পাদক ফেরদৌস শেখ বলেন, ‘আমরা জানতাম ভোটার নয় এমন কাউকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পর্যবেক্ষক হিসেবে রানিং শিক্ষার্থীরা থাকলেই হয়। কিন্ত হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত আমাদের জানানো হয়নি।’ ‎

‎স্বতন্ত্র আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী সানি বলেন, ‘রাজনৈতিক বা ছাত্রনেতাদের কাউকে ঢুকতে দিলে এটা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এতে শিক্ষার্থীরা প্রভাবিত হতে পারে ও নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থী নয়—এমন কোনো ব্যক্তি যেন না ঢোকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচন: ৬টি মেশিনে ভোট গণনা, ফলাফল দেখা যাবে লাইভে

জবি প্রতিনিধি‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ১২
আজ সোমবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কমিশন এক সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কমিশন এক সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করবেন। পরে সব কেন্দ্রের ফলাফল সমন্বয় করে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করবে। ভোট গণনার জন্য ছয়টি মেশিন ব্যবহার করা হবে এবং ফলাফল লাইভে দেখানো হবে বলে জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫-এর নির্বাচন কমিশন।

‎‎আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।

‎‎এ সময় ড. মোস্তফা হাসান আরও জানান, নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় একটি স্বচ্ছ, সুশৃঙ্খল, গ্রহণযোগ্য এবং ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

‎মোস্তফা হাসান জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। তবে বেলা ৩টার মধ্যে যাঁরা ভোটকেন্দ্র এবং কেন্দ্রের বেষ্টনীর ভেতরে প্রবেশ করবেন, তাঁরা সবাই ভোট দিতে পারবেন। ‎

‎নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, জকসু নির্বাচনে ৩৯টি ভোটকেন্দ্রে ১৬ হাজার ৬৪৯ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ‎

‎ভোট গ্রহণ শেষে প্রতিটি কেন্দ্রে পৃথকভাবে ভোট গণনা করা হবে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এ ছাড়া নিজ কেন্দ্র ছাড়া কোনো প্রার্থী অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি ভোট দেওয়া শেষে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী নিজ কেন্দ্রেও পুনরায় প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানান তিনি। ‎

‎নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি ডিজিটাল বোর্ডের মাধ্যমে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভোট গণনা লাইভ সম্প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ‎

মোস্তফা হাসান আরও জানান, যেসব ভোটারের আইডি কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাঁরা ভোটার তালিকায় প্রবেশ করে কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে মোবাইলে অথবা প্রিন্ট কপি হিসেবে ভোটার আইডি সংগ্রহ করে ভোট দিতে পারবেন। ভোটার তালিকা হবে ছবিযুক্ত।

‎নির্বাচন কমিশন জানায়, ভোটকেন্দ্রে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হবে। সকালে বিভাগভিত্তিক ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হবে। যে শিক্ষার্থী যে বিভাগের ভোটার, তিনি সেই বিভাগেই ভোট দেবেন। ব্যালট পেপারে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা কোড। ‎

‎সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নির্বাচনের আগে আজ ‘মক টেস্ট’ সম্পন্ন করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৩০ জন প্রার্থী অংশ নেন। অতিরিক্ত কোনো ব্যালট ছাপানো হয়নি। ভোট দেওয়া শেষে ভোটারদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে। শুধু প্রার্থী ও বৈধ কার্ডধারীরাই ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন। ‎

‎সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলী, অধ্যাপক ড. জুলফিকার মাহমুদ ও ড. মো. আনিসুর রহমান। এ ছাড়া আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং পিআরআইপি পরিচালক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত