Ajker Patrika

ঊর্ধ্বমুখী ডলার: স্বপ্নের দেশে উচ্চশিক্ষার বাসনায় বাগড়া

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২২, ২০: ০৪
ঊর্ধ্বমুখী ডলার: স্বপ্নের দেশে উচ্চশিক্ষার বাসনায় বাগড়া

ডলারের বিপরীতে মুদ্রার দামে পতন অব্যাহত। আমদানিনির্ভর পণ্যের বাজারে আগুন। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরাও। অনেকে স্বপ্নের দেশে যাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম খরচের গন্তব্য খুঁজছেন।

চলতি সপ্তাহে ভারতীয় রুপির বিনিময় হার সর্বকালের সর্বনিম্ন স্তর ছুঁয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে এখন রুপির বিনিময় হার ৮০।

দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারত থেকে প্রতিবছর ১৩ দশমিক ২৪ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যান। তাঁদের মধ্যে সর্বাধিক যান যুক্তরাষ্ট্রে (৪ দশমিক ৬৫ লাখ), এরপরেই জনপ্রিয়তম গন্তব্য কানাডা (১ দশমিক ৮৩ লাখ)। অন্যান্য গন্তব্যের মধ্যে অন্যতম সংযুক্ত আরব আমিরাত (১ দশমিক ৬৪ লাখ) এবং অস্ট্রেলিয়া (১ দশমিক ০৯ লাখ)।

বিদেশে পড়তে যেতে ইচ্ছুক ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন হাতছাড়া হতে পারে। কারণ, সেখানে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। অথবা তুলনামূলক কম খরচ হয় এমন দেশ বেছে নিতে হবে তাঁদের।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই উদ্বেগ আমলে নিচ্ছে। এতে বেশি পরিমাণে শিক্ষাঋণের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। তবে বিদেশে অধ্যয়নের পরামর্শদাতারা মনে করছেন, এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অত চিন্তা করার কারণ নেই। বিশেষ করে যাঁরা পড়াশোনা শেষ করার পর যুক্তরাষ্ট্রেই কাজ করার পরিকল্পনা করছেন তাঁদের ভাবনা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রে আইন বিষয়ে পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন একজন শিক্ষার্থী বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দামে রেকর্ড পতন হয়েছে। এটি বিদেশে অধ্যয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে উদ্বেগকে ছড়িয়ে দিয়েছে। ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দুর্বলতা শিক্ষার্থীদের আর্থিক বোঝা বাড়াবে।

ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার অন্য বন্ধুদের জন্য পছন্দ পরিবর্তনটা সহজ হতে পারে। কিন্তু আমার জন্য সেটা সম্ভব নয়। প্রতিটি দেশের আলাদা আইনি ব্যবস্থা আছে, আইনজীবী হিসেবে অনুশীলন করার জন্য বিভিন্ন জ্ঞানের প্রয়োজন। আমি তো তেমন প্রস্তুতি নিইনি।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান এইচডিএফসি ক্রেডিলার এমডি এবং সিইও অরিজিৎ সান্যাল মনে করেন, রুপির অবমূল্যায়ন বিদেশে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হবে। শিক্ষাঋণ দাতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এর ফলে চাহিদার আকার বড় হবে। একজন ঋণগ্রহীতাকে টিউশন ফি এবং আনুষঙ্গিক খরচসহ বাড়তি ব্যয় সংকুলান করার জন্য আরও বেশি টাকার দরকার হবে। অবশ্য এই সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের পর্যায়ে গিয়ে ঋণগ্রহীতার জন্য কাজটা সহজ হবে যদি তিনি সেখানে ডলারে উপার্জন করেন।

বিদেশে পড়াশোনা করার সময় শিক্ষার্থীদের খরচের দুটি খাত থাকে—টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়। এখন রুপির দরপতনের কারণে দুটি খরচই বাড়বে।

অনলাইন শিক্ষাঋণ প্ল্যাটফর্ম কুহু ফিনটেকের প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত এ ভোঁসলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করার পরিকল্পনা যাঁরা করছেন তাঁদের খরচ বাড়বে, কারণ তাঁদের টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় ডলারে পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে, ইউরো এবং পাউন্ডের বিপরীতে রুপি শক্তিশালী হয়েছে, ফলস্বরূপ যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার খরচ কমবে। 

আগের তথ্য-উপাত্ত তুলনা করলে বোঝা যায়, রুপির দরপতন শিক্ষার্থীদের খরচের বোঝা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়। একজন ভারতীয় শিক্ষার্থী ২০১৭ সালে প্রতি ডলারে প্রায় ৬৫ রুপি বিনিময় হারে ফি দিতেন, এখন তাঁকে প্রতি ডলারে ৭৭-৮০ রুপি পরিশোধ করতে হবে।

শিক্ষাঋণ প্ল্যাটফর্ম Credenc. com-এর প্রতিষ্ঠাতা অবিনাশ কুমার বলেন, রুপির দরপতন হলে টিউশন ফি থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার ব্যয়, ভ্রমণ টিকিট সবকিছুরই খরচ বাড়ে।

সাম্প্রতিক দরপতন অনুসারে, ডলারের বিপরীতে রুপির বিনিময় হার ৭৯ দশমিক ৯৯। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে ৪০ হাজার ডলার প্রতি সেমিস্টার ফি হিসেবে গত জানুয়ারিতে যেখানে ২৯ দশমিক ৫৩ লাখ রুপি খরচ করতে হয়েছে, তাঁকেই এখন খরচ করতে হবে ৩১ দশমিক ৯২ লাখ রুপি। প্রতি সেমিস্টারে জীবনযাত্রার ব্যয় প্রায় ৯ হাজার ডলার (৭ লাখ ১৮ হাজার রুপি) এবং ভ্রমণ ব্যয় (৯০ হাজার থেকে ১ লাখ রুপি)-সহ এক সেমিস্টারেই খরচ করতে হবে ৪১ লাখ রুপিরও বেশি অর্থ।

বিদেশে অধ্যয়ন পরামর্শদাতারা মনে করছেন, বিদেশে পড়তে যাওয়ার ব্যাপারটি একটি সুচিন্তিত এবং দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত কিন্তু দ্রুত পরিবর্তন করার সম্ভাবনা কম।

ইউনিভার্সিটি লিভিং-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও সৌরভ অরোরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা এখনো বিদেশে যেতে চাইছেন। তবে তাঁরা ফ্রান্স, জার্মানি, পর্তুগাল, ইতালি এবং স্পেনের মতো নতুন গন্তব্য বেছে নিচ্ছেন যেখানে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার মান এবং খরচ কিছুটা কম।

বিদেশে পড়াশোনায় সহায়তাকারী অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তারা মনে করছেন, মহামারির পরে শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়াশোনা করার আকাঙ্ক্ষা আগের চেয়ে আরও সাহসী হয়েছে। রুপির পতন এই উচ্চাভিলাষে জলা ঢালবে এমন সম্ভাবনা কম। তার মানে ভারত থেকে মেধা পাচারের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থও বিদেশে চলে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত